somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদি পুস্তক সম্পর্কে জানুন ( পাট-৩ )

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আদি পুস্তক সম্পর্কে জানুন ! ( পাট-১ )
আদি পুস্তক সম্পর্কে জানুন ( পাট-২ )
পৃথক পৃথক উৎসগুলোকে শনাক্ত করতে পুনরাবৃত্তির ও সাদৃশ্যপূর্ণ গল্পের উদাহরণগুলোকে ব্যবহার করা হয়। আদি পুস্তকে এগুলোর অন্তর্গত হলো তিনটি ভিন্ন ঘটনায়ঃ একটি নবীর এই দাবি যে তার স্ত্রী ছিল তার বোন, দুটি সৃষ্টি কাহিনী এবং ইব্রাহিম কর্তৃক হাজেরা ও ইসমাইলকে মরুভূমিতে পাঠানো সংক্রান্ত দুইটা বর্ণনা।এটি লেখনীগুলোর রচনাকাল নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়। বিশ শতকের প্রথমার্ধের পণ্ডিতগণ এই সিদ্ধান্তে আসেন যে জাওহিস্ট উৎসের রচনার উদ্ভব হয় রাজতান্ত্রিক যুগে বিশেষভাবে সুলাইমানের রাজসভায়, খ্রিস্টপূর্ব ১০ম শতকে এবং যাজকীয় রচনার উদ্ভব হয় খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতকের মধ্যভাগে কিন্তু অতি সাম্প্রতিক অভিমত এই যে জাওহিস্ট উৎস রচিত হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকের ব্যাবিলনীয় নির্বাসনের আগে অথবা নির্বাসনকালীন সময়ে এবং যাজকীয় চূড়ান্ত সংস্করণ রচিত হয় নির্বাসন যুগের শেষের দিকে বা সামান্য পরে।পুস্তকটি কেন রচিত হয়েছিল সে সম্বন্ধে একটি তত্ত্ব যা অর্জন করেছে যথেষ্ট কৌতূহল যদিও তা এখনো বিতর্কিত আর তা হলো পারসিক রাজকীয় আজ্ঞা। এই তত্ত্ব প্রস্তাব করে যে হাখমানেশী সাম্রাজ্যের পারসিকরা ৫৩৯ খ্রিস্টপূর্ব তাদের ব্যাবিলন বিজয়ের পর জেরুসালেমকে ব্যাপকভাবে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন প্রদানে সম্মত হয়, কিন্তু তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে গোটা সম্প্রদায়ের সম্মতিতে একটি একক বিধিবদ্ধ আইন রচনা করতে আদেশ করেছিল।সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণে দুটি ক্ষমতাশালী শ্রেণী যাজকীয় পরিবারগুলো যারা মন্দিরের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং মূসা ও মরুভূমিতে নিরুদ্দেশ ভ্রমণের সাথে নিজেদের উৎসকে চিহ্নিত করত অপরদিকে অধিকাংশ ভূমির মালিক পরিবারগুলো যারা ছিল প্রবীণ এবং নিজেদের উৎসকে চিহ্নিত করত ইব্রাহিমের সাথে যে তাদের এই ভূমি প্রদান করেছিলেন এদের মধ্যে অনেক বিষয়ে দ্বন্দ্ব ছিল এবং প্রত্যেকেরই নিজস্ব উৎপত্তির ইতিহাস ছিল কিন্তু সবাইকে ব্যাপকভাবে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের পারসিক প্রতিশ্রুতি একটি একক আইন রচনার কাজে পারস্পরিক সহযোগিতার একটি শক্তিশালী উদ্দীপনা প্রদান করল।

আদি পুস্তককে দেখা হয় সম্ভবত সৃষ্টি পুরাকথার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবে। এটি সাহিত্যের একটি ধরন যেখানে মানুষের প্রথম আবির্ভাবের কথা । পূর্বপুরুষ এবং বীরদের কাহিনী সংস্কৃতি ও নগরীসমূহের কথা বলা হয়েছে।সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য উদাহরণগুলো পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকের গ্রীক ঐতিহাসিকদের কাজে তাদের অভীষ্ট ছিল সমসাময়িক প্রসিদ্ধ গোত্রগুলোকে প্রাচীন এবং শৌর্যপূর্ণ অতীতের সাথে সম্পর্কযুক্ত করা এবং এরূপ করতে গিয়ে তারা পৌরাণিক কাহিনী, কিংবদন্তী এবং প্রকৃত ঘটনার মধ্যে কোনো পার্থক্য রাখেনি। পন্টিফিকাল বিবলিকাল ইন্সটিটিউটের প্রফেসর জিন-লুইস স্কা প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসবিদদের মূল সূত্রকে "নিত্যতা সূত্র" হিসেবে অভিহিত করেনঃ সকল পুরাতনই মূল্যবান,কোনোকিছুই অবিবেচ্য নয়। তাছাড়াও স্কা এরূপ প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসের পিছনের তাৎপর্যের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন জাতিসমূহের ব্যাপারে ইসরাইলীয় ঐতিহ্যগুলোর মূল্য প্রমাণ করতেই প্রাচীনত্বের প্রয়োজন রয়েছে। তদ্রুপ ইসরাইলের নিজেরই মধ্যকার বিভিন্ন সংঘাতগুলোর মাঝে সামঞ্জস্য বিধান এবং তাদেরকে মিলিত করতেও প্রাচীনত্বের প্রয়োজন।


১৯৭৮ সালে ডেভিড ক্লাইন্স প্রকাশ করলেন তার প্রভাবশালী "দ্য থিম অব দ্যা পেনটাটিউক। এটি প্রভাবশালী এই কারণে যে তিনি ছিলেন প্রথম পঞ্চপুস্তকের মূলভাব নিয়ে প্রশ্নকারীদের অন্যতম। ক্লাইন্সের সিদ্ধান্ত এই ছিল যে সামগ্রিকভাবে মূলভাবটি হল নবীদের প্রতি প্রতিশ্রুতি বা আশীর্বাদের আংশিক পূর্ণতা- যার অর্থ দাঁড়ায় আংশিক অপূর্ণতাও।(এখানে,পূর্ণতাকে আংশিক বলে অভিহিত করার মাধ্যমে ক্লাইন্স সেই ঘটনার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করেন,যখন দ্বিতীয় বিবরণের শেষেও লোকেরা কেনানের বাইরেই ছিল)।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৪
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×