বিয়া করছেন নতুন। ভাল কথা, নতুন একজন মানুষ আইল আপ্নের কাছে। আপ্নেরই তো দিন আজকে। কারন আপনি পাইলেন, আপনি ইহাকে পাইলেন। একান্ত আপন করে কাউরে পাইলেন।
সেও আপ্নারে পাইল...কিন্তু...
চোখটা একটু খুলেন ভাইজান।। আপনে যারে পাইলেন, সে কিন্তু আপনারে পাইতে গিয়া অনেক কিছু হারাইতে হইছে। সে তার মা-বাবা, ভাই-বোন, রিলেটিভস সব কিছু ছেড়ে আসছে, আপনার কাছে।আপ্নের তো কোন চিন্তা নাই, খান-দান, ঘুমান।কিন্তু সে অসহায় মেয়েটি এসে পড়েছে পুরো নতুন এক পরিবেশে। সবাই তাকিয়ে আছে তার দিকে, প্রতিটা মুহুর্তের তার আচরন বিচার-বিশ্লেষন চলছে, চুল-চেড়া হিসেব করে। বিচার চলুক সমস্যা নাই, কিন্তু তার প্রতি সহানুভুতি নিয়ে যেন তাকে বিশ্লেষন করা হয় সেটাই কাম্য। তাহলেই তার প্রতি করা হবে সঠিক আচরন। অন্যথায় বাড়বে জটিলতা। একজন নতুন মানুষ যখন নতুন জায়গায় আসে, অনেকেই মনে করতে পারে, সে ব্যাক্তির আগমনে তার কিছু অধিকার, কিছু সুবিধা ত্যাগ করতে হয়েছে। তখন সেই নতুন মানুষটার প্রতি তার আচরন স্বাভাবিক থাকেনা। আর এ সমস্যাটার সমাধান করতে পারে, একমাত্র হাজবেন্ডই। হাজবেন্ড এটা নিশ্চিত করবেন যে কেউই যেন নিজেকে বঞ্চিত কিংবা সুবিধা হারিয়েছেন এমন মনে না করে।
তারপর হাজবেন্ড যা করা উচিত তা হল, সবসময় খেয়াল রাখা স্ত্রী কোন সমস্যা বোধ করছেন কিনা, বা পরিবারের অন্য সদস্যদের কোন আচরনে কস্ট পাচ্ছেন কিনা সেটা জানার চেস্টা করা। স্ত্রীকে যদি এটা বোঝান যায় যে, তার সমস্যায় হাজবেন্ড এগিয়ে আসবেন সবার আগে (সেটা যেমন সমস্যাই হোক না) তাহলে স্ত্রী সবসময় নিরাপদ বোধ করবে এবং সমস্যাও কমে যাবে অনেক। আবার এমনো হতে পারে স্ত্রীর আচরন অনেক সময় আপত্তিকর কিংবা অনেকের কাছে অপছন্দনীয় হতে পারে।তখন তাকে সেটা ঠান্ডা মাথায় যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে যে তার আচরন ঠিক হচ্ছে না, এবং পরিবারের সবাইকে বলতে হবে সেটা নিয়ে অযথা উত্তেজিত না হয়ে ঠান্ডা মাথায় বুঝে-শুনে আচরন করতে। সে নতুন মেয়েটি যেন এটা মনে করতে না পারে যে,এখানে সবাই তার শত্রু/কিংবা তার দোষ খুজতেই ব্যাস্ত। তার সাথে এমনভাবে আচরন করতে হবে যেন সে ভাবে সবাই তার ভাল চায়।
সবারই কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে, আপ্নারো থাকতে পারে। স্ত্রীর সাথে সেসব ব্যাপারে খোলাখুলি শেয়ার করেন। তাহলেই সমস্যা আর থাকবেনা। স্ত্রীকে ছোট ছোট খুশি দিন। যেমন হতে পারে, উইক-এন্ডে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া, অফিসের ব্যাস্ততার ফাকে ফোন দিয়ে জেনে নেয়া সে খেয়েছে কিনা কিংবা অফিস থেকে আসার সময় একটা গোলাপ নিয়ে আসা ইত্যাদি।তখন দেখবেন, স্ত্রীকে যদি দামী কিছু উপহার দিতে নাও পারেন, তাতে স্ত্রী তাতে অখুশি থাকবে না।
মনে রাখবেন, মেয়েরা চায় সবসময় তার প্রতি কেউ যত্নবান হোক, কেউ তার খেয়াল রাখুক। আপনি তার ভাল-মন্দের খেয়াল রাখছেন, এটা যদি স্ত্রী বুঝতে পারে, তবে সেও আপনার জন্যে যেকোন কিছু করতে চিন্তাও করবেনা।আর এভাবেই সুন্দর হতে পারে উভয়ের জীবন।
বি.দ্র.ঃ এই লেখক অবিবাহিত। তাই, ইহা তাহার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে নয়, ব্যক্তিগত ফিলিংস থেকে লেখা। কোন ভুল কিছু লিখে থাকলে, শোধরিয়ে দেয়া বাঞ্চনীয়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১০ রাত ৯:৪৪