জইল্যারে যারা বাংলা সিনেমার পথ প্রদর্শক ভাবতেছেন তাদের প্রতি আমার কিছু নিবেদন।। জইল্যারে নিয়া হইচই এর আড়ালে আসল নায়করে নিয়ে কেউ কথা বলতেছেন না। সেটা কি ঠিক?? সে ব্যাপারে কিছু বলার আগে জইল্যারে নিয়া কিছু সুবচন-
জলিল বাংলা সিনেমার মইদ্যে চেইঞ্জ আনছে বিশাল, আর কেউ কিছু করে নাই, ইহা এক খানা চরম ফাউল কথা।। কেননা বাংলাদেশে লালটিপ, জাগো টাইপের ছবি হইছে।। লালটিপের কাহিনী বাজে হইলেও জইল্যারে যেই কারনে সাপোর্ট করেন তার সব উপকরণ ই আছে। আর জাগো?? বাংলাদেশের আধুনিক ছবির জন্যে এইডা একটা মাইলফলক ছবি।। যেমন কাহিনী, তেমন অভিনয়, সেরকম ই গান।। এক কথায় ঝাক্কাস।। মনপুরা, প্রজাপতি এমন আরো অনেক ছবির কথা ও বলা যায়।। সত্যি বলতে কি এই লাইনে জলিল বরং সবার পিছনে।। পার্থক্য কয়েকটা।। অন্যরা টাকা না থাকার কারনে একটা/দুইটা মুভি বানাইছে, আর জইল্যা বানাইছে অনেকগুলা। বাট জইল্যার মুভিগুলা হইল ফাউলের ফাউল, যেখানে অন্যদেরগুলা জইল্যার মুভির সাথে তুলনা করলে সুপারব।
ভালো লোকেশন আর ভাল ক্যামেরা দিয়া আমি কি করব যদি সিনেমা দেইখা বমি আসে?? এই ব্যাপারে "মোষ্ট ওয়েলকাম" সিনেমার এক খানা সিনের কথা স্মরণ করায় দিতে চাই আপনাদের।। সেটা হল নায়িকার শখ হইছে নায়কের সাথে কফি খাবে। বাট ভাল পোলা জইল্যার কফি খাওনের ইচ্ছা নাই।। জলিল মটর সাইকেলে করে যাইতেছে, নায়িকা ফলো করতেছে গাড়ি দিয়া। বাট ধরতে না পেরে নায়িকা গাড়ি থেকে নাইমা দৌড় দিছে, দেন লাফ দিয়া উঠে গেছে জইল্যার বাইকে, আর সাথে সাথে চুম্মা। জইল্যায় আর কি করে !!?? বাধ্য হয়ে বাইক থেকে নেমে সোজা হেলিকপ্টারে উঠে গেল ব্যাংকক, সেখানে বিচের পাশে এক রেষ্টূরেন্টে বসে কফি খেল।। ভাইরে, এমনে যদি ভাল লোকেশন দেখাতে হয় তাহলে মাফ চাই, দোয়া ও চাই। এই লোকেশন দেখার চেয়ে আত্মহত্যা করাও অনেক ভাল।।
এবার বলি বাংলা সিনেমার সত্যিকারের নায়ক, যিনি সিনেমাকে ভালবেসে এখানে টাকা লগ্নি করেছেন তার কথা। টাকা থাকলে সিনেমার কেমনে উপকার করা যায় যদি জানতে চান, তাইলে বলি শীষ মনোয়ারের নাম শুনেছেন, কিংবা জাজ মাল্টিমিডিয়ার??? ৫০ টা সিনেমা হল চেঞ্জ করে দিছে এই লোক, চেঞ্জ করবে দেশের আরো সাড়ে তিনশ সিনেমা হল, আর আনছে রেড ক্যামেরা, যেটা দিয়া ওয়ার্ল্ড ক্লাস ডিজিটাল মুভি নাকি বানায়।। সিনেমা বানানোর খরচ অনেক কমে গেছে ওনার এই কাজের জন্যে, আর প্রিন্ট?? বেষ্ট, কোন দ্বিধা ছাড়াই।। "ভালবাসার রঙ" দেখেন... ভাল প্রিন্ট, ভাল গান, তুলনামূলক ভাল নাচ। বাংলাদেশের সাধারন জায়গা গুলোকে অসাধারণ সুন্দর করে প্রেজেন্ট করছে এই মুভি।। নতুন নায়ক-নায়িকারে সুযোগ দিছে, আবার আইটেম গান ও আছে। নায়িকার অভিনয় নতুন হিসেবে ভাল, চেহারাও ভাল। তবে নায়ক পুরাই ফ্লপ।। অভিনয়ের কিছুই জানেনা। জলিলের ছুডু ভাই। কাহিনী যদিও মানসম্মত না, কিন্তু শতভাগ চেষ্টা ছিল বলে আমি মাফ করে দিতে বাধ্য হইছি, আপনেও হবেন।।
জাজ মাল্টিমিডিয়া আরো মুভি আনবে, আরো অনেক সিনেমা হলকে চেঞ্জ করবে বলে অনেক আগে ঘোষনা দিয়ে রাখছে।। এই ভদ্রলোক বলতে পারেন যে উনি সিনেমা ভালোবাসেন। কারন উনার চেহারা জইল্যার থেকে অনেক ভালো হলেও ওনার মধ্যে হিরু হবার খায়েশ জাগে নাই এখনও।। যাইহোক, এই টিমকে স্যালুট রইল আমার। যাইহোক কোন দ্বিধা ছাড়াই বলি, "ভালবাসার রঙ" মুভি দেখলে আপনে জইল্যারে লাথি দিতে চাইবেন।।
মাইন্ড খাইলেন ভাই?? জইল্যারে লাথি দেয়ার কথা শুনে?? তাইলে বলি এ কথা এমনে এমনে বলি নাই।। জইল্যা ইংরেজি উচ্চারণ করতে পারে না, সেটা আসলেই কোন সমস্যা না। সমস্যা কোনটা জানেন?? সমস্যা হল সে নিজে ভুল উচ্চারণ করে, আবার রেডিও - টিভিতে গিয়া বলে সমস্যা তাদের যাদের লিসেনিং পাওয়ার ভাল না। সত্যি কথা বলতে কি গার্মেন্টস এর আয়রন ম্যান থেকে জইল্যার উথানের কাহিনী শুনে যত শ্রদ্ধা আসছিল মনে, সেটা চলে গিয়ে ঘৃনা আসছে যখন সে বলছে এ-লেভেল, ও লেভেল করে "ম্যান্সিস্টার" থেকে বিবিএ করছে।। আমার জানামতে বাংলাদেশে যারা এ-লেভেল, ও-লেভেল করছে তাদের মান এত নিচু না যে ঠিকমত ইংরেজি উচ্চারণ ও করতে পারবে না।। তার উপর নাকি "ম্যান্সিস্টার" থেকে বিবিএ করছে। যেখান থেকে বিবিএ করছে সেই জায়গার নাম উচ্চারণ করতেও পারে না।। কত বড় মিথ্যুক শালায়।।
আসলে সিনেমার প্রতি ভালবাসা না, সে নিজে জনপ্রিয়তা চায় সেজন্যেই সে সিনেমায় আসছে।। শো-ম্যান শিপ তার মধ্যে প্রবল ভাবেই যে আছে তার আরেক প্রমান হল হেলিকপ্টারে করে তার শ্বশুর-বাড়ী গমন এবং সেটা নিয়ে পত্রিকায় গর্ব করা।।
সো জইল্যারে যারা বাংলা সিনেমার পথ প্রদর্শক ভাবতেছেন, তাদের অনুরোধ করি আরেকটু ভাবেন।। তারপর আপনার মতামত দেন। ধন্যবাদ।
শীষ মনোয়ারের ফেসবুক পেজ
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১০:১৩