আমি লেখক বা সাহিত্যিক নই, কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক সাহেব ও নই যে, দোকান - রেষ্টুরেন্ট - পার্লার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মডেল মেয়ে - মহিলা নিয়ে লাল ফিতা কেটে কেক খাবো বা র্যাম্প শোতে সেজেগুজে হাজিরা দিবো। আমি ব্যবসায়ী মানুষ - ব্যবসা বুঝি, যখন সরকারি চাকুরী করেছি তখন দিনরাত ডিউটি বুঝেছি তার বাইরে কিছু বোঝার প্রয়োজন ছিলো না। তারপরও ব্লগে লেখার জন্য সময়টাকে ধরে লেখার চেষ্টা করছি।
তারিখ ২০ আগষ্ট, ২০১৯ সময় ভোর ০৪:২৫ মিঃ ঢাকা’র এক প্রান্তে আমাদের উত্তরা মডেল টাউন রাজলক্ষি এলাকায় শফি ভাই মিষ্টির দোকানদার, ফজরের আযানের সময় তাঁর ঘুম ভাঙ্গে তিনি মনে মনে ভাবছেন তাঁর এলাকায় “আনন্দ, অনুষ্ঠান, বিয়ে, জন্মদিন, পরীক্ষা - পাশ” লেগেই থাকুক তাতে মিষ্টি বিক্রি বাট্টা ভালো হবে। ঠিক একই সময় ঢাকা’র আরেক প্রান্তে আজীমপুর গোরস্থানের কবর খোদাই শ্রমিক দলের নেতা মানু মিয়াও আযানের সাথে সাথে বিছানা ছাড়লেন, তিনিও মনে মনে ভাবছেন ঢাকায় আজ কতো জনের মৃত্যু হতে পারে? আর আজীমপুর গোরস্থানেই কতো জনের কবর হবে, তাতে আজকের আয় কতো হতে পারে? - মানুষের মৃত্যুও একটি ব্যবসা কর্ম হতে পারে!!!
বাংলাদেশে বর্তমান সবচেয়ে রমরমা ব্যবসা - ডেঙ্গু ব্যবসা, তাতে লাভবান কারা হচ্ছেন?
১। রাস্তায় অলিতে গলিতে চিপা নালা নর্দমায় গড়ে উঠা ফার্মেসী
২। সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল
৩। সরকারি, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ
৪। ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার
৫। ফার্মাসিউটিক্যালস ল্যাবরেটরিজ কোম্পানী কোম্পানি
৬। মেডিক্যাল কিট, টেষ্ট কিট ও সিরিঞ্জ আমদানিকারক
৭। ডাক্তার
উপরোক্ত সাতটি নামের প্রতিটি নাম একটি আরেকটির সাথে চেইনের মতো সরাসরি জড়িত, একজন আরেকজনের কমিশনিং এ্যাজেন্ট!!! আমি পৃথিবীর কোনো দেশে এতো ফার্মেসী দেখিনি - শুনেছি বলেও মনে পরছে না। এতো এতো হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার আর শত সহস্র ফার্মাসিউটিক্যালস ল্যাবরেটরিজ কোম্পানি পৃথিবীর কোন দেশে আছে তাও জানা নেই। সবার শেষে নাম আসবে ডাক্তার ! ডাক্তার - ইনি মর্তের ভগবান! উপরে ভগবান আর মর্তে আমরা বিস্বাস করি ডাক্তার নামক প্রাণীকে।
ব্যবসাঃ- যারা “ছোট - বড় - মাঝারী” ব্যাবসা করেন তারা জানেন তাদের কাজ কি, তাদের ভোক্তা কারা? মানুষের রোগ অসুখ মহামারী নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের কি প্রয়োজন - ভোক্তা, অসুস্থ্য রোগী নামক প্রাণী !!! সহজ হিসাব। মানুষের মৃত্যুকে পুঁজি করে যাদের ব্যাবসা কর্ম ধর্ম চলছে।
উপসংহারঃ- সরকার, প্রশাসনের কাছে দাবী ও অনুরোধ, এভাবে দেশ চলতে থাকলে একদিন এদেশে শুধু ঔষধ থাকবে - ঔষধ সেবনের জন্য কোনো মানুষ “ভোক্তা” থাকবে না। এমনকি কবর দেওয়ার জন্য গোরস্থানের মানু মিয়া ও তার দলবলও কেউ থাকবে না। মর্তের ভগবান কখনো ডাক্তার হতে পারেনা - না সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠান বহর! মর্তের ভগবান প্রশাসন - আর এই প্রশাসনের গলা চিপে ধরে রাখলে - একদিন সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠান বহর প্রশাসনকে তিন আঙ্গুলের প্রথম ভাজ সমান এক চিমটি লবন দিয়ে খেয়ে হজম করে নিবে।।
ছবিঃ - গুগল
কৃতজ্ঞতাঃ - সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষকে এক দিগন্ত ভালোবাসা ও ধন্যবাদ লেখাটি নির্বাচিত পোষ্টে স্থান দেওয়ার জন্য।