যে কোনো পারিবারিক, সামাজিক, শিক্ষাক্ষেত্রে ও কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন সহিংসতায় দেখা যায় নারী গুরুতর আহত হচ্ছেন কোথাও কোথাও নিহতও হচ্ছেন। বাংলাদেশে দিন দিন অত্যাচার নির্যাতন হত্যার হার বলে দিচ্ছে সমস্যার কোনো আশু সমাধান হচ্ছে না। যদিও বেশী দিন আগের কথা নয়, আমাদের নোয়াখালীর নুসরাত জাহান রাফির কথা মনে আছে। সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ ধর্ষক এস. এম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭) পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ও ষড়যন্ত্র করে ধর্ষক সিরাজ সহ মোট ষোল জনের একটি গ্যাং নুসরাতকে অত্যন্ত নির্মম ভাবে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। এখানে উক্ত মামলাতে মাননীয় বিজ্ঞ আদালত মোট ষোল জনের মৃত্যুদন্ড রায় দেন। উল্লেখ্য উক্ত হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত ছিলো মা্দ্রাসার দুইজন নারী শিক্ষার্থী যথাক্রমে কামরুন নাহার মনি(১৯) উম্মে সুলতানা ওরফে পপি(১৯) এরা নারী হয়েও নারীর প্রতি এ ধরনের সহিংসতার কারণ তদন্ত ও ব্যাখ্যা করা জরুরী শুধু বিচার হলেই বিচারকার্য শেষ হবে না।
অনেক সমস্যায় দেখা যাচ্ছে: - নারী পুরুষ একে অপরকে প্রতিপক্ষ ভাবছে। একে অপরকে ব্যবহার করছে একে অপরের কাঁধে পা রেখে সুবিধা নিচ্ছে। এ ধরনের নারী পুরুষ একে অপরকে ব্যবহার করা যেদিন বন্ধ হবে সেদিন সমতা আসবে। নয়তো এভাবেই উভয় পক্ষ দ্বন্দ্ব আর বৈষম্য নিয়ে চলতে হবে পদে পদে লড়তে হবে। নারী পুরুষ একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠলে উক্ত মহলের পরিবেশ অবশ্যই ভালো থাকার কথা না। আমরা সবাই জানি নারী নির্যাতন হচ্ছে। তবে বর্তমান সমস্যা কেউ কেউ বলছেন পুরুষও নির্যাতন হচ্ছে - এ বিষয়টিকে এখন আর একেবারে হেলাফেলা করার মতো বা ফেলে দেয়ার মতো অবস্থা আর নেই। আর এটি সবাই যেমন বুঝি ঠিক তেমনি সবাই জানি। সম্প্রতি আরেকটি ঘটনা আমি উল্লেখ করতে চাই “স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে স্বামী ডাঃ আকাশের আত্মহত্যা”
দৈনিক যুগান্তর
তারিখ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। প্রকাশিত খবর।
=======================================================================
ডাঃ আকাশের আত্মহত্যা বিষয়ে নিজের মতামত জানালেন নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। আত্মহননকারী যে খুব সৎ, সরল বা মহান বাঙালি সমাজে এমন ভাবনাকে নাচক করে দিয়েছেন তসলিমা। তার মতে, নানা কারণে মানুষ নিজেকে খুন করে ফেলার পথ বেছে নেয়, সে কারণগুলো বিশ্লেষণযোগ্য। উদাহরণস্বরুপ তসলিমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের লাখো কোটি নিরীহ মানুষের রক্তে হাত রাঙানো হিটলারের কথা বলেন। হিটলারও আত্মহত্যা করেছিল। বহু খুনী, সন্ত্রাসী, আপরাধী আত্মহত্যা করেছে যাদের কেউ মহান ছিলেন না বলে জানান তসলিমা। ডাঃ আকাশ বিষয়ে তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো: ‘আত্মহত্যা করলেই সে মানুষ নির্দোষ এমন ভাবার কোনো যুক্তি নেই। মাথায় অসুখ, সে কারণে অনেকে আত্মহত্যা নির্যাতন ও সহিংসতার বিচার একমাত্র সমাধান হতে পারে না, এর সমাধান করতে হলে নির্যাতন ও সহিংসতার কারণ খোঁজে দেখতে হবে। এবার ডাঃ আকাশের আত্মহত্যা বিষয়ে নিজের মতামত জানালেন ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
আত্মহননকারী যে খুব সৎ, সরল বা মহান বাঙালি সমাজে এমন ভাবনাকে নাচক করে দিয়েছেন তসলিমা। তার মতে, নানা কারণে মানুষ নিজেকে খুন করে ফেলার পথ বেছে নেয়, সে কারণগুলো বিশ্লেষণযোগ্য। উদাহরণস্বরুপ তসলিমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের লাখো কোটি নিরীহ মানুষের রক্তে হাত রাঙানো হিটলারের কথা বলেন। হিটলারও আত্মহত্যা করেছিল। বহু খুনী, সন্ত্রাসী, আপরাধী আত্মহত্যা করেছে যাদের কেউ মহান ছিলেন না বলে জানান তসলিমা। ডা. আকাশ বিষয়ে তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো: ‘আত্মহত্যা করলেই সে মানুষ নির্দোষ এমন ভাবার কোনো যুক্তি নেই। মাথায় অসুখ, সে কারণে অনেকে আত্মহত্যা করে। রাগে জেদে হিংসায় ঘৃণায় হিতাহিত জ্ঞান হারিয়েও কেউ কেউ আত্মহত্যা করে। কাউকে খুন করে, অত্যাচার নির্যাতন করে, পালানোর পথ না পেয়ে শাস্তির ভয়ে বা গ্লানিতেও অনেকে করে আত্মহত্যা। বাংলাদেশে এক ডাক্তার ছেলে আত্মহত্যা করেছে কারণ তার ডাক্তার বউটি অন্য ছেলেদের সংগে প্রেম করতো, শুতো। এতে বড্ড রাগ হয়েছে ছেলের, তাই আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যা করার মানেই সে তার বউকে খুব ভালোবাসতো, তা প্রমাণ করে না। বউ তাকে ছেড়ে চলে যাবে, ডিভোর্স দেবে, বউয়ের এত বড় স্পর্ধা তার সহ্য হয়নি। আত্মঅহমিকা অনেক সময় এত অতিকায় হয়ে ওঠে, এতে চির ধরলে মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নিতে দ্বিধা করে না। ডাক্তার ছেলেটির হাত হয়তো নিশপিশ করছিল বউকে আর বউয়ের প্রেমিকদের খুন করতে, কিন্তু দেশের জনগণ জানবে সে খুনী, জনগণ দেখবে তার ফাঁসি হচ্ছে বা তাকে জেলের ভাত খেতে হচ্ছে যাবজ্জীবন! এই ব্যাপারটি তার ভালো লাগেনি।
খুন করতে না পারার এই অক্ষমতাও মানুষকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা দেয়। যাকে আমি আমার অধীন রাখতে চেয়েছি, আমার চেয়ে ক্ষুদ্র, আমার চেয়ে তুচ্ছ, আমার চেয়ে মূর্খ না হয়ে যদি সে আমার হাতের মুঠো থেকে বেরিয়ে আমাকেই টেক্কা দেয়, বা আমাকে অবজ্ঞা করে, তাহলে এ জীবন রাখার কোনো মানে নেই। ঈর্ষা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলে কী করে মানুষ? হয় হত্যা নয় আত্মহত্যা। কেউ একজন আত্মহত্যা করেছে, সুতরাং সে খুব সৎ ছিল, সরল ছিল, মহান ছিল, মহামানব ছিল – এই ধারণাটি মস্ত ভুল ধারণা। কুখ্যাত খুনী হিটলার আত্মহত্যা করেছিল। বহু খুনী , সন্ত্রাসী, আপরাধীই আত্মহত্যা করেছে। বিশ্বাস না হয়, ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন। আজকাল তো ইতিহাস কেউ ঘাঁটে না। সহজ উপায় বলে দিই, গুগুল করুন, ***মারডারারস হু কমিটেড সুইসাইড অথবা ক্রিমিনালস হু কমিটেড সুইসাইড। দেখুন লিস্ট কত লম্বা।
========================================================================
একমাত্র সচেতন ব্লগার’রা বুঝতে পারবেন কি পরিমান পুরুষ বিদ্বেষ থেকে তসলিমা নাসরিন এ ধরনের লেখা লিখতে পারেন। একজন থার্ড স্টেজে থাকা মানসিক অসুস্থ কিন্তু শিক্ষিত ব্যক্তি সমাজের পরিবারের দেশের কতোটুকু ক্ষতি করতে পারে তা এই সংবাদে বিদ্যমান।
নিম্নে আমি কিছু ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করেছি: -
==========================
ডাঃ আকাশ কি অসুস্থ ব্যক্তি ছিলেন = না।
ডাঃ আকাশ কি মাদকাসক্ত ছিলেন = না।
ডাঃ আকাশ কি মানসিক রোগী ছিলেন = না।
ডাঃ আকাশ কি পূর্বে আরোও কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন = না।
ডাঃ আকাশ কি একজন খুনি ছিলেন বা কখনো কাউকে খুন করার চেষ্টা করেছেন = না।
ডাঃ আকাশ কি একজন ক্রিমিনাল ছিলেন = না।
ডাঃ আকাশ কি রাজনৈতিক গুন্ডা, সন্ত্রাস, ভাড়াটে মাস্তান, দাগী আসামী ছিলেন = না।
তাহলে আত্মহত্যার মতো আত্মনির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ভাষ্যমতে ডাঃ আকাশের সাথে হিটলার ও ক্রিমিনালদের উদাহরণ কিভাবে আসে। আকাশ ও মিতু দুজনেই চিকিৎসক তাহলে একজন আরেকজনের অধিনে কিভাবে থাকে বা রাখবে বা এমন মন মানসিকতা রাখবে - একটি কথা এখানে না বললেই নয় অবাধ স্বাধীনতা কখনো কখনো বড় ধরনের ভুলের পথে নিয়ে যেতে পারে। হতে পারে ডাঃ মিতু অবাধ স্বাধীনতা পেয়েছেন! আর অবাধ স্বাধীনতার জেরে অবাধ পরকীয়া। - হতেই পারে।
বাংলাদেশ সরকার একটি বড় ধরনের ভুল করেছেন আর সেই ভুল হচ্ছে তসলিমা নাসরিনকে দেশের বাইরে যেতে দেওয়া। তিনি নির্বাসিত লেখিকা নন, তাঁকে কেউ নির্বাসন দেয়নি, তিনি নিজে নিজে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। একজন অক্ষরজ্ঞান শিক্ষিত মানুষ কলমের লেখায় পরিবার, সমাজ দেশের কি পরিমান ক্ষতি করতে পারে তা তসলিমা নাসরিনের লেখায় বিদ্যামন। সে নারী পুরুষকে সব সময় উস্কানী দিয়ে লিখে থাকেন। তসলিমা নাসরিন পুরুষের প্রতি যতোটা বিদ্বেষ পোষণ করেন তারচেয়ে কয়েকগুণ বেশী বিদ্বেষ পোষণ করেন নারীদের প্রতি। তার নিজের জীবন উচ্ছন্নে গেছে। সে চাইবে দেশের প্রতিটি নারীর জীবন উচ্ছন্নে যাক।
উপসংহার: - নারী পুরুষ প্রতিযোগিতা হোক আর অসুস্থ প্রতিযোগিতা যা কোনোভাবেই আমাদের কাম্য নয়। আর নারী পুরুষ একে অপরের কোনোভাবেই প্রতিপক্ষ নন। যদিও সমাজে নারী পুরুষকে একে অপরের প্রতিপক্ষ করার জন্য গুটিকয়েক “সংগঠন, লেখক লেখিকা, ব্লগার, ফেসবুকার ইউটিউবার” প্ররোচনা দিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। আর নারীবাদী আর পুরুষবাদী দুটি শব্দও আমি মনে করি অত্যন্ত দ্বন্দ্বমূলক - অবশ্যই নারী পুরুষের জন্য আলাদা বাদ, আলাদা চিন্তাভাবনা বা আলাদা আইন হবে না, হওয়া উচিতও নয়। আইন সবার জন্য সমান হতে হবে আর তাতেই পরিবারে সমাজে দেশে সমতা আসবে। নারী পুরুষ আলাদা বিবেচনা আলাদা আইন আলাদা করার মাঝেই আসবে বৈষম্য। আর এই বৈষম্য কখনো শেষ হবার নয়।
আত্মনির্বাসিত:- আত্মনির্বাসিত হচ্ছে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক নিজের ইচ্ছায় বা স্বেচ্ছায় নির্বাসন নেয়া বা প্রক্রিয়াবিশেষ।
আগামী পোস্ট:- পরকীয়া ও পরকীয়ার কারণ।
আত্মকথা:- আমি নিয়মিত থেকে অনিয়মিত ব্লগারে রূপান্তরিত হচ্ছি। আসলে ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক প্রচুর কাজের চাপের কারণে সময় করে উঠতে পারছি না। আর ব্যক্তি আক্রমণের কারণে লেখালেখিতেও আর তেমন একটা আগ্রহ পাচ্ছি না। তাই আগামী লেখা হয়তো দ্রুত পোস্ট দিতে পারি, আবার বেশ সময়ও নিতে পারি। তবে কথা দিচ্ছি লেখা পোস্ট দিবো। ***ব্লগারদের অপ্রাসঙ্গিক ও আক্রমণাত্বক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
সকলের কাছে দোয়া চেয়ে আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি। বিস্তারিত মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্যতে আলোচনা হতে পারে। সবাইকে ধন্যবাদ। খোদা হাফেজ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:- সামহোয়্যারইন ব্লগ। নির্বাচিত পোষ্টে “উক্ত লেখাটি” স্থান দেওয়াতে সামহোয়্যারইন ব্লগ কর্তৃপক্ষকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ছবি ও তথ্যসূত্র:
১। নুসরাত জাহান রাফি হত্যা: ১৬ জন আসামীর সবার মৃত্যুদণ্ড
২। ডাঃ আকাশের আত্মহত্যা নিয়ে তসলিমা নাসরিনের বক্তব্য
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৮