somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

..... ''তুই ডাইল খা''..... :D:D:D

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




সেদিন হঠাত করেই এক পিচ্চিকালের বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে গেল। আমি হাটতে হাটতে যাচ্ছি পেছন থেকে বাইকের হর্ন। আরে আমি তো রাস্তার একপাশ দিয়েই যাচ্ছি, কোন শালা এসে আমার পিছে লাগল। এত বড় ফাঁকা রাস্তা ফেলে আমার পিছে মরতে আসল ক্যান। ভাবলাম আজ দেখব কোন শালার এত বড় সাহস যে আমাকে পেছন থেকে ডাকে। পেছন ঘুরে দেখি বাইকের উপর এক সুন্দরী ললনা বসে আছে। দেখে তো আমার......। মনটা ফ্ল্যাশ ব্যাক করে ফিরে গেল তিন বছর আগে। আহা......।


হঠাত সম্ভিত ফিরে পেলাম একটি ছেলের ডাকে। ছেলেটি দেখতে বেশ মোটা সোটা। ওর দিকে তাকিয়ে কেমন চেনা চেনা মনে হল কিন্তু ঠিক চিনে উঠতে পারলাম না। পরে বুঝলাম অ আমার পিচ্চিকালের দোস্ত মহসিন। আমি তো ওকে দেখে অবাক। আরে কি খবর তুই এই দিকে, আর পিছে ওটা কে? ওকে চিনতে বেশ কষ্ট হল। কারন ও আগের চেয়ে অনেক মোটা হয়ে গেছে।


অনেক গল্পের ফাকে আমি জিগাইলাম তুই তো আগে চেঙ্গিস খান মার্কা আছিলি, কিন্তু তোর এই মোটা হবার পেছনে কারন কি? ও কইল সে এক বিরাট হিস্ট্রি, সেটা শোনার মত ধর্য দরকার। আমিও পাঁচ টাকার বাদাম কিনে বসলাম ওর হিস্ট্রি শোনার জন্য। :):)


দোস্ত তখন কেবল ভার্সিটিতে ঢুকেছি, হলে ওঠার পর মোটামুটি সবাইকে দেখতাম প্রেম করত। তো আমারও সাধ জাগল, কিন্তু আমার মত পোড়া কপালের সাথে কারো মিলবে কিভাবে। যাকেই বলব বলে ঠিক হয় সে আগেই প্লট বুকিং দিছে নয়ত আমারে প্লট নিতে দিবে না। মনে মনে ভাবলাম আমারে প্লট দিবা না, আমার মামারে তুমি চিন? তারে একদিন কইলেই প্লট তো প্লট পুরা এরিয়াই আমারে দিতে হইব। তো নিজে বুকিং দিতে ব্যর্থ হয়ে মামারে পাঠাইলাম, কিন্তু কি আর কমু অভাগা যে দিকে তাকাই সেদিকেই সব শুকিয়ে যায়। সেই প্লট মামা বুকিং পাইল। মনে মনে মামারে কইলাম আপনার এতগুলা প্লট, ফ্ল্যাট থাকতেও আমার মত গরিবেরটার দিকে নজর না দিলে কি হইত না। :((:((:((


এই কথা শোনার পর আমার হাত থেকে ছিলা বাদামটা পড়ে গেল। /:)/:) তখনই ঠিক করলাম যাই হোক এবার নিজেই মাঠে নামবো। যেই কথা সেই কাজ। এর মাঝে একজন বলল প্রেম করব তোমার মত তালপাতার সেপাই এর সাথে! যাও আগে নিজের বডি ফিটনেস সার্টিফিকেট নিয়ে আসো, তারপর ভেবে দেখব। এখন এটা কেমতে পাই। নিজের এলাকা হইলে না হয় একখান ম্যানেজ করা যাইত, কিন্তু এখানে কিভাবে?


এই সার্টিফিকেট এর চিন্তায় যখন ধ্যানে বসলাম তখন আলাদিনের চেরাগের ভিতর থেকে বাইর হওয়া পরির মত এক মাইয়া আমার পাশ দিয়া যাবার সময় এক টুকরা কাগজ ফেলে গেল। প্রেম পত্র ভেবে হাতে নিয়ে খুলে দেখি তাতে লেখা ‘তুই ডাইল খা’।:|:|:| ভাবলাম কেমতে কি, এত কিছু থাকতে আমারে ডাইল খাইতে কইল ক্যা। আমি ডাইল খাই এই কথা যদি শুনে তাইলে তো আমার বাপে আমারে ত্যাজ্য করব।


পরে মামার লগে আলোচনায় বসলাম, কাগজ দেখানোর পর মামা তো হাসতে হাসতে মরে যায় এই অবস্থা। আমি কইলাম মামা কেমতে কি আমি ভাল পোলা আমারে ডাইল খাইতে কইল ক্যা? মামা কইল প্রেম করবা আর ডাইল খাইবা না তা তো হইব না। এই গুলা হইল মডার্ন মাইয়া, এদের লগে চলতে গেলে তোমারে খাইতেই হইব। এখন আমি তো পড়লাম মাইনক্যার চিপায়। কিন্তু কি আর করা শেষ পর্যন্ত মামারে কইলাম আমি রাজি আপনি ব্যাবস্থা করেন। দু’দিন পর মামার ফোন, আমারে কইল এখনই ডাইনিং এ আসো, আমি তোমার ডাইল নিয়া বসে আছি।


আমিতো পড়িমরি করে ছুট লাগাইলাম। এই ছুটতে গিয়ে দুই পায়ে যে দুই কালারের জুতা সেটা খেয়ালই করিনি। আইসা মামারে কইলাম কই দেন, মামা কইল খাওয়ার আগে হাত ধুতে হয় তা কি ভুলে গেছ? আমি তখনই সামনে রাখা গ্লাস ভর্তি পানি নিয়ে আরেকটা পানি ভর্তি গামলার মধ্যে হাত ধুতে যাব এমন সময় মামা কইল, আরে কি করিস তুই ডাইলের মধ্যে হাত ধুবি নাকি? আমি কইলাম মানে কি? এইডা তো এমনিতেই ময়লা পানি এতে হাত ধুইলেও কি না ধুইলেও কি? আমার এই কথা শুনে মামার চোখ তো ছানাবড়া, এই পোলা কই কি? পড়ে মামা যা কইল তাতে বুঝবার পারলাম এই ডাইল মানে হইল ডাল, আর তা আমার সামনে গামলা ভর্তি করে রাখা আছে। আর একটু হইলেই যাতে আমি লাইফবয় সাবানের ফেনা ঢালতেছিলাম। এই ডালের অবস্থা দেখে আমার অবস্থা আর নাই বা বললাম। শেসে মামা কইল, কি আর করবা প্রেম করতে গেলে এটুকু সহ্য করতে হবে। সেদিন থেকেই আমার ডাইল খাওয়া শুরু। প্রথমে কেমন জানি লাগত, কিন্তু কিছুদিন পর ওটা আমার এমন প্রিয় হইল যে, আমি তিন বেলাই খালি ডাইল আর ডাইল খাইতেছি। প্রায় ছয় মাস পর বুঝলাম চেরাগের সেই পরির বানী কামে দিতাছে। আবার শুরু করলাম সেই পরির খোঁজ দ্যা সার্চ। অবশেসে আমি ইহাকে পাইলাম, মানে জয় করিলাম। এই বার বুঝছ তো আমার বাইকের পেছনে কে। ;););)


উৎসর্গঃ মেডিকেলে পড়ার সুবাদে এখন পর্যন্ত অনেক বন্ধু-বান্ধবির অনেক সমস্যার সমাধান দিতে হয়েছে। সেদিন এক বন্ধু ফোন করে জানতে চাইল কিভাবে মোটা হওয়া যায়? হাসতে হাসতে ওকে বললাম ‘তুই ডাইল খা’।
আমার সেই বন্ধু আতিক কে।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×