somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নানা দেশের ফুটবল কৌশল : ব্রাজিল

২৮ শে মে, ২০১০ ভোর ৫:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বকাপে আপনি কোন দল সমর্থন করেন?
এই প্রশ্নটির মুখোমুখি হতে হচ্ছে আমাদের প্রায় প্রতিদিনই।
আর যারা আগে থেকেই জানেন আপনি কোন দলের সমর্থক, তারা হয়তো শরীর জ্বালানো অথবা চমকপ্রদ দু একটা তথ্য দিচ্ছে দেখা হলেই।

কোন দলকে কেন সমর্থন করেন? এই প্রশ্নের আসলে একটা যথাযথ উত্তর না থাকলে কেমন কেমন যেন লাগে।
যেমন ধরুন আপনি ইতলির সমর্থক, এখন যদি আপনাকে কেউ প্রশ্ন করে, কেন ইতলি সমর্থন করেন?
জবাবে আপনি নিশ্চয় বলবেন না, ইতালির খেলোয়াড়েরা দেখতে তুলনামূলক সুন্দর তাই!!! :P
আশা করবো সমর্থনের পেছনে যথাযথ কারন আছে।

এ পোস্টে বিভিন্ন দেশের খেলার বৈশিষ্ট্য নিয়ে সামান্য আলোচনা করবো।

এক এক দেশের আছে এক এক রকম খেলার বৈশিষ্ট্য। কেউ করে ধাক্কাধাক্কি , কেউ চেষ্টা করে সারাজীবনেও বল পা-ছাড়া না করতে, কেউ আবার এক লাথি মেরে মাঠের এক মাথা থেকে অন্য মাথায় বল পাঠিয়ে দেয়, কেউ আবার ১০ ফুট সামনে যেতে না যেতেই ১০টা পাস দিয়ে যায়................ এ রকম আরো অনেক বৈচিত্র্য!

প্রথমে যে দেশ নিয়ে আলোচনা করবো সেটা হলো ব্রাজিল।
ছন্দময় ফুটবলের জন্য বিখ্যাত আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল। আপাতত ব্রাজিলের ছন্দময় ফুটবল খেলার কারনটা খুঁজে বের করি চলুন।

ছন্দময় ফুটবল আসলে কি? খেলোয়াড়েরা নিশ্চয় বল ছেড়ে নাচানাচি করে না! :P
হ্যাঁ, তারা নাচানাচি করে, তবে সেটা বল সাথে নিয়েই। :-*

ড্রিবলিং, গতি, অপূর্ব দলীয় বোঝাপড়া, ছন্দময় অবস্থান পরিবর্তন, ছোট-বড় পাস সব কিছু মিলে ব্রাজিলের ফুটবল।

কিন্তু কেন এই নাচানাচি???? আসুন দেখি... ;)

ব্রাজিলে ফুটবল খেলা আসে ইংল্যান্ড থেকে। তখন দুই দেশের খেলার মধ্যে খুব একটা পার্থক্য ছিলোনা।

খুব সহজেই ব্রাজিলে ফুটবল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। আপন করে নেয় সাধারন জনগণ। ফলে নিজেদের মত খেলা শুরু করে দেয়। ছুঁড়ে ফেলে বাঁধাধরা নিয়মনীতি। নিয়ে আসে সাম্বা নাচের ধাঁচ। নাচতে গিয়ে শুরু হলো ড্রিবলিং।

ড্রিবলিং এর আরেকটি কারণ হলো, তারা চাইতো না প্রতিপক্ষের সাথে ধাক্কাধাক্কি করতে!
কারন!!!! সাদা-কালোর বৈষম্য চলে আসে এখানে। স্থানীয় ব্রাজিলের অধিবাসীরা কালো। বিভিন্ন কাজে যে সব ইংলিশ শ্রমিক সেখানে কাজ করতো তারা ছিল সাদা। সংস্পর্শ থেকে বাচঁতে চাইতো কালোরা!!???

সুতরাং বর্ণ বৈষম্যই যেন জন্ম দিলো ড্রিবলিং এর!!! /:)


আরেকটি তথ্য দেই, ব্রাজিলে এক ধরনের শারিরীক প্রতিযোগীতা হতো (ক্যাপুইরা), বাদ্য-বাজনার তালে তালে একজন আরেকজনকে আঘাত করতো কোন সংস্পর্শ ছাড়া (পা দিয়ে লাথি শুধু মাত্র)। এই সংস্কৃতিও অন্যতম একটি কারণ ড্রিবলিং এর। :-/

যতোই দিন যেতে থাকলো, ইংল্যান্ড এর সাথে তাদের খেলার
পার্থক্য বাড়তে থাকলো। কিন্তু সব কিছু তো আর পরিবর্তন করা সম্ভব না। রক্ষনভাগে তাই কিছুটা ইংলিশ প্রভাব রয়ে যায়।

[আরেকটি মজার তথ্য। দুরপাল্লার শটের ধারণা কিন্তু ব্রাজিল শুরু করে, পরবর্তীতে ইংলিশরা এটা গ্রহণ করে। ইংলিশদের কথা ছিলো যতো সম্ভব কাছে গিয়ে শট নেয়া। (আর্জেন্টিনা এখনো এটা ধরে রেখেছে) ]

যে ইংলিশরা ব্রাজিলে ফুটবল নিয়ে গিয়েছিল, তারা এক সময় ব্রাজিলের বেশ কিছু টেকনিক অনুসরণ শুরু করে। কারণ, লাতিনরা ইউরোপিয়ানদের ধোঁকা দিয়ে বোকা বানিয়ে ততদিনে মাঠে রাজত্ব শুরু করেছে। এবং সেটা এখনো বহাল তবিয়তে টিকে আছে। ইউরোপিয়ান লীগ গুলোতে লাতিনদের সংখ্যা হিসাব করুন তো!

(টোটাল ফুটবল, কাত্তানাচ্চিও'র প্রচলন আরো অনেক পরে)

( তাহলে ১৯৩৪, ১৯৩৮ এ কেন ইতালি চ্যাম্পিয়ন? এ কথা ভাবছেন?? মুসোলিনি, হিটলাররের সামনে দিয়ে কাপ নিয়ে যাওয়ার সাহস ছিলোনা হয়তো!) X((

অন্যান্য দেশের ফুটবলারদের সাথে ব্রাজিলের ফুটবলারদের তফাৎ কোথায় জানেন নিশ্চয়?

অন্যান্য দেশের ফুটবলাররা শুধুমাত্র ফুটবলার। ব্রাজিলের ফুটবলাররা একইসাথে ফুটবলার এবং এক জন শিল্পী।

বস্তির ছেলেগুলো ছেঁড়া মোজা, আর কাপড় দিয়ে বানানো বল দিয়ে খেলতে শুরু করে একসময় পরিণত হয় পেলে, জিকো, সক্রেটিস, রোনালদিনহো, রোনালদোর মত খেলোয়াড় এ। যার কারণেই বলের উপর নিয়ন্ত্রণ এতো অসাধারণ।

[ দুঙ্গার পরিচালনায় যদি সত্যিকারের ব্রাজিলের খেলা দেখতে চান তাহলে আপনাকে হতাশ হতে হবে, আগেই বলে রাখি ] :|




আগামী পর্বে থাকবে: আর্জেন্টিনা

(ব্রাজিলের এত প্রশংসা করলাম দেখে ভাববেন না আমি ব্রাজিলের সাপোর্টার।
আমি আর্জেন্টিনার সাপোর্টার! কেন? সেটা আগামী পর্বে )






সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১০ বিকাল ৪:১৮
১৫টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×