ছেলেবেলায় রোযার প্রথম দিন থেকেই শুরু হত ঈদের অপেক্ষা। খুব ছোট যখন ছিলাম ,রোযা রাখার মত বড় হইনি, তখনও বায়না করতাম রোযা রাখব বলে। দাদী শিখিয়ে দিয়েছিলেন, কল্সীতে হা ঁদিয়ে তোমার রোযা কল্সীতে রেখে ঢাকা চাপা দাও, আর তারপরে তুমি খেয়ে নিয়ে কল্সীর মুখ থেকে নিজের রোযা আবার নিয়ে নাও। এই করে তোমার একদিনে তিনটে রোযা হয়ে যাবে! তো আমি প্রতিদিনই তিনটে করে রোযা রাখতাম।
ঈদের কেনাকাটা শুরু হত রোযার প্রথম দিন থেকেই। আমাদের বিশাল যৌথ পরিবার। সক্কলের জন্যে জামা কাপড় কেনা হত, বাচ্চা থেকে বুড়ো। সবার জন্যে। আমাকে নিয়ে আব্বু যেতেন একেবারে চাঁদরাতে। আর প্রতিদিনই আব্বু ইফতারের জন্যে বাড়ি এলেই আমার ঘ্যানঘ্যানি শুরু হয়ে যেত: আব্বু, চল না! কবে জামা কেনা হবে? মার্কেটে তো সব শেষ হয়ে যাবে! কিছু কি আর থাকবে?
আর ঐ চাঁদরাত আসার আগেই আমার হয়ে যেত আট-দশখানা নতুন জামা। সাথে জুতো, ফিতে আর পুতুল। মামাবাড়ি থেকে আসতো, কাকারা দিতেন, পিসিরা দিতেন। আর সবার শেষে আব্বু। মা নিজের হাতে বানাতেন ফ্রক, নিজের হাতে ওতে কাজ করতেন।
ঈদের আগে হাতে মেহেদি পরতাম। বাড়ির সব মেয়েরাই পরেন। রাতে মেহেদি পরে ঘুম দাও। যত বেশি সময় থাকবে তত লাল! বিছানায়, শরীরে সেই মেহেদি মাখামাখি ঘুমের মধ্যে।
(চলবে)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।

