যতদিন ঐ গাটগুলোতে কাপড় থাকতো তদ্দিন কোন সমস্যা হত না, সমস্যাটা হত কাপড় শেষ হয়ে গেলে। কাপড় শেষ হয়ে গেছে, এবছরের মত যাকাত দেওয়া শেষ বললেও কিছুতেই তারা মানতে চাইত না যে সত্যিই শেষ। দাঁড়িয়েই থাকতো। দাদি তখন নিজের আলমারি থেকে কাপড় বার করে দিয়ে দিতেন, বাড়ির মেয়েদের কাছ থেকে চেয়ে নিতেন পুরনো শাড়ি, দিয়ে দিতেন যাকাতের জন্যে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটিকে। প্রতি বছরই দাদুর উপরে চেঁচাতেন, এই কাপড় বিলি না করে কেন টাকা দিয়ে দেওয়া হয় না তা নিয়ে। দাদুর যুক্তি ছিল, টাকা দিয়ে দিলে ঝামেলা কম হয় বটে তবে তা দিয়ে এই মানুষগুলো তো কাপড় কিনবে না, খরচ করবে অন্য কাজে, ঈদে এদের কারোরই নতুন কাপড় হবে না তাহলে।
দাদু চলে যাওয়ার পর এই কাজটা দাদি করেছেন। জানালার পাশে চেয়ারে বসে থেকে কাপড় বিলি করার কাজটা। এখন আব্বু করে। আমার সেই ছেলেবেলায় কোন বছর হয়ত আমরা দেশে যেতাম না। রোযার প্রথম সপ্তায় আব্বু বাড়ি গিয়ে যাকাতের কাপড়ের ব্যবস্থা করে আসত কিন্তু পরে, দাদু চলে যাওয়ার পর প্রতিটি ঈদেই আব্বু দেশে যায় সবাইকে নিয়ে। দাদু, দাদির শূণ্যস্থান এতে পুরণ হয় না কিন্তু যে কাজটা ওরা করতেন সেটা থেমে যায়নি।
(চলবে)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।

