somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হরর মুভি দেখে আমরা ভয় পাই কেন? - একটি ব্যাপক গেয়ানধর্মী আলোচনা B-)

২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমরা অনেকেই ভূতের সিনেমা দেখতে ভয় পাই কেনো?

যেখানে হলিউডের বেশির ভাগ ভৌতিক সিনেমা সেইম টাইপের হরর এলিমেন্ট ব্যবহার করে। হঠাত চমকে দেয়া শব্দ, দরজার ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে খুলে যাওয়া, শাদা পাউডার মাখা ভূত কিংবা সিজিআই ইফেক্ট- যা দেখেই ললনারা চাদর দিয়ে মুখ ঢাকে। আর বলিউডের কথা তো বাদই দিলাম।

আমরা আসলে সবাইই জানি যে সিনেমা স্টুডিওতে সেট সাজিয়ে-মেক আপ মাখিয়ে বানানো কিছু দৃশ্য ধারন। আর ইউটিউবে গেলেই বিহাইন্ড দ্যা সীন ফুটেজে সব রহস্য ফাঁস!

ভয়ের কারনটা আসলে সেটা নয়।
তাহলে?

আমি আমার মত করে ব্যাখ্যা করছি। জানি না আপনাদের সাথে মিলবে কিনা।

আমরা ছোটবেলা থেকেই ভুত-জ্বীন-পরীর গল্প শুনে বড় হয়ে এসেছি। মেছো ভূত, শ্মশানের পোড়া ভূত, অপঘাতে মরা ভূত- ভুতোপ্রকারের অভাব নেই। লোডশেডিং হলেই হারিকেনের আলোয় জমে উঠতেও গল্পের আসর। শিশু বেলায় বুকে ধরফর ওঠানো জ্বীনের ঘটনা শুনেও আনন্দ পেতাম।

সেই সাথে যার যার ধর্ম তো আছেই। আমাদের ইসলাম ধর্মেই আছে আল্লাহ আমাদের পাশাপাশি জ্বীন জাতিকেও সৃষ্টি করেছেন। আর আমরা বড় হওয়ার সময়টাতে বাবা-মা-দাদা-দাদীর মুখে এই জ্বীন ঘটিত অনেক ঘটনা শুনেছি। আমরা বাঙালিরা নিজেদের ধর্মভীরু হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসি। পালন করি আর না করি। সেসব ঘটনাকে আমরা প্রশ্ন তোলা ব্যতীত মেনে নিই। যে হ্যাঁ! এরকম হয়তো ঘটেছিল।

সিনেমা দেখার সময় আচমকা শব্দ হলে অতিসাহসীরও পিলে চমকে যেতেই পারে। এটাতে সিনেমার ক্রেডিট বলে আমি মনে করি না। অন্ধকারে ‘হাউ!’ করে চিৎকার করে উঠলে আপনিও ভয় পাবেন।

আমরা সিনেমা দেখার সময় নিজেদের অবচেতন মনে নিজেদের ভৌতিক অভিজ্ঞতা কিংবা কারো মুখে শোনা কাহিনীগুলোকে রিলেট করতে থাকি। তবে, ব্যাপারটা এমন না, যে সিনেমা দেখা আর রিলেট করা- দুটোই একসাথে করছেন আপনি। আপনার অবচেতন মনে গেঁথে আছে সেই বাস্তব ঘটনা বা শোনা কাহিনীটা। সেটার উপরেই এই সিনেমাটা প্রভাব ফেলছে।

এর জন্যই অনেকে রাতের বেলা ভৌতিক সিনেমা দেখতে ভয় পান। কারন আমরা সাধারণত রাতের বেলা ইনসিকিউরড ফিল করি। কেউ একলা ঘুমাতে ভয় পায়, কেউ বাথরুমে যেতে। যদি এমন কিছু দেখে ফেলি বাথরুমের আয়নায়? যদি অন্ধকারে কারো ছায়া দেখি তাহলে কি করব?
সিনেমা তো বিনোদনের জন্য। ভৌতিক বিনোদন দেবেই আপনাকে। কিন্তু সেটা দেখার পরের অবস্থা আপনি মোকাবেলা করতে পারবেন তো?

আমি নিজের কথাই বলি। ব্যাপক আলোচিত ‘Dabbe: Cin Çarpmasi’ সিনেমাটা আমি দেখা শুরু করি দুপুর বেলা। শেষ করতে করতে মাগরিবের আজান শেষ হয়েও ৩০ মিনিট হয়ে যাওয়ার পরে সিনেমা শেষ হয়। এই সন্ধ্যা বেলায়ও আমার বুক কাঁপছিল নিজের রুমের উজ্জ্বল আলোর নিচে বসে থেকেও।

আমি বেশ ভালোমত নাড়া খেয়ে গিয়েছিলাম সিনেমাটা দেখে। যারা দেখেছেন তারা জানেন যে শেষ দৃশ্যে দেখা যায় যে ফিমেইল ক্যারেক্টার ইব্রুকে কাঠের কফিনে বন্দি করে কবর দিয়ে দেয়া হয়। তারপর বিষধর সাপের দল তাকে কামড়াতে শুরু করে। যেটা আমাদের মৃত্যুর পরবর্তী কবরের আজাবের কথা মনে করিয়ে দেয়। যেমনটা করিয়ে দিয়েছিল ‘2012’ সিনেমাটা কেয়ামতের কথা। যদিও সেটা হরর মুভি না।
আমি আরো বেশকিছু দৃশ্যে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম বা বুক ধক করে উঠেছিল নির্দ্বিধায় স্বীকার করব। কারন সিনেমাটা ইসলাম ধর্মের রীতিতে কুফুরি কালাম, খারাপ জ্বীনের প্রভাবের ভয়ংকরতম ব্যাপার গুলো তুলে ধরেছে যৌক্তিক ভাবে। এখানে এই দাব্বে আমাকে প্রভাবিত করতে পেরেছিল আমার ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে কাবু করে।

সেরকম ভাবে অন্যদের কাবু করে তাদের দুর্বলতাকে পুঁজি করে। আর এখানেই একজন সফল হরর মুভির ডিরেক্টরের সাফল্য নির্ভর করে।

তবে হ্যাঁ সব সময় যুক্তি দিয়েই ভয় পেতে হবে ব্যাপারটা তেমনও না। নিছক বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে হরর মুভির তুলনা নেই।

হ্যাপি মুভি ওয়াচিং ব্লগার্স!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৩১
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×