একবার কয়জন বন্ধুরা বেশ গল্প করছিলো। আড্ডা বসেছিলো খামারবাড়ির পিছনের এক খোলা টেবিলের পাশে। একটু একটু বাতাস। বিকেলের সূর্য আস্তে আস্তে হেলে পড়ছে।
তখনই একজন বলে উঠলো সামনের উৎসবে ভাবছি জুতো কিনবো। পুরনো জুতো জোড়া গুলো ক্ষয়ে গেছে একদম। সাথে কিনতে হবে ডজনখানে মোজাও। পকেটে নেই কিছুই, চার চারটে জুতো কি করে কিনি তাই ভেবে পাই না আমি।
আরেকজন বলে উঠে, ভাই চুপ করে যাও দেখি। এসব ঢং ফং আর সইতে পারি না। তাও আমার সামনে। আমার যে তোমার চেয়ে দ্বিগুন জুতো মোজা কিনতে হবে তা কি ভুলে যাচ্ছো? তার উপর টেকসই জুতোর বড় দরকার আমার। তার সাথে তুমি ভাই ছেলে-মানুষ তোমার আর কি লাগবে? আমাদের মেয়েদের প্রয়োজন সুন্দর ফ্যাশনেবল ডিজাইন সমৃদ্ধ জুতো। লেইস লাগানো মোজা আর টুপি না কিনলে তো আমি সামনের আড্ডাতে যেতেই পারবো না। বিশেষ এক প্রদর্শনী আছে আমার সামনে। তুমি এসব মেয়েদের ঝামেলা ভাই বুঝবেই না।
প্রথম জন অবস্থা বেগতিক দেখে গেলো চুপ মেরে।
একটু দূরে বসে বিকেলের সূর্য দেখছিলো আরেকজন। সে একটু খুক খুক কাশি দিয়ে বললো তোমরা দুজনই চুপ করে থাকো একদম। আমার যে কত কেনাকাটা আছে ভাবতেই গা শির শির করছে। বলে সে আবার প্রকৃতি দেখাতে ডুবে গেলো।
দ্বিতীয়জন মনে মনে লজ্জিত হলেও মুখে তা প্রকাশ করলো না।
আড্ডা হঠাত বেশ চুপচাপ হয়ে পড়লো।
এর মাঝে কোথা থেকে জুড়ে বসলো আরেক অতিথি। সে ফেচ ফেচ করে হাসতে হাসতে বললো, হে হে তোমাদের যে কত কেনাকাটা। আমার ভাই নেই কোনো ঝামেলা। একটা মোজা কিনে পড়ে থাকবোখন। এতেই আমার আনন্দ। বলে সে মাটিতে গড়াগড়ি করতে লাগলো আনন্দে। অন্যরা বিরক্ত হলো এই শেষ ব্যক্তির ব্যবহারে। সভ্য সমাজে থাকে একটু যদি কি করে কথা বলতে হয় জানতো এই ভেবে প্রথম দু'জন ইচ্ছে মতো গজগজ করতে থাকলো নিজেদের মাঝে। তৃতীয় জন প্রকৃতি দেখাতে এতই ব্যস্ত ছিলো শুনেই নি হয়তো।
এর মাঝে টুক করে শব্দ হলো যেনো। সবাই চমকে তাঁকিয়ে দেখলো খামারবাড়ির মালিক যেনো এদিকেই আসছে। তা দেখে পড়ি কি মরি ছুট।
বিকেলের চা নাস্তা খেতে মালিক হেঁটে আসছিলো টেবিলের দিকেই। দূর থেকে খামারের মালিক দেখলো এক টিকটিকি, মাকড়সা, চ্যালা ও কেঁচো যেনো ছুটে পালালো। সে চোখ কচলে মাথা চুলকালো। ভাবলো কিছু কি দেখলাম?
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:২৫