somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক বৃক্ষের বাগান...

১৭ ই মার্চ, ২০১১ সকাল ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা কে? কার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সমগ্র জাতি এগিয়ে গেছে মুক্তির জয়গান গেয়ে? আমরা এতটা অকৃতজ্ঞ নই যে স্বাধীনতার স্থপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান-এর অবদান অস্বীকার করব। আমরা যে দল বা গোষ্ঠী সমর্থন করি না কেন আমরা সবাই তো একথা মানি।

“on behalf of Sheikh Mujib”- এ কথা বলে স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করাতেই যে মেজর জিয়া বাঙ্গালীদের যুদ্ধে যেতে ঊদ্বূদ্ধ করেছেন তাতেও তো আমাদের কার দ্বিমত নেই। আমার মনে হয় আমরা স্বাধীনতার ঘোষক হিসবে জানি মেজর জিয়া কে।


মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক কে? আমাদের কাছে প্রায় ভুলে যাওয়া একটি নাম – এম এ জি ওসমানী।

মুক্তিযুদ্ধে আমরা আমাদের সেনাবাহীকেও পেয়েছি। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতকেও পেয়েছি। তবে পাকবাহিনী কেন ভারতের জগজীৎ সিং আরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করলো, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানী তখন কোথায় ছিলেন তা সম্পর্কে আমি এমন কিছু জানতে পারি নি যাতে আমি সন্তুষ্ট হতে পারি।

আমাদের চার জাতীয় নেতার কথা মনে আছে কার? তাদের বউ-বাচ্চারা তো মূলধারার রাজনীতি থেকে অনেক দূরে।


সে যাই হোক...যুদ্ধ পরবর্তি এই দেশে অনেক কিছু হয়েছে। অনেক সামরিক অভ্যুথ্থান হল। জল অনেক দূর গড়াল...রক্তও গড়ালো।

এখন দেশে চলছে নীরব গৃহযুদ্ধ। এক দল আরেক দলকে সহ্য করতে পারে নাহ। এক ধরনে তিতা তিতা সুখ লাগে যখন গণতন্ত্রের তসবি জপতে থাকা দলগুলোকে মূখোমুখি হতে দেখি।

তবে আমার মনে হয় আমাদের প্রজন্ম আস্তে আস্তে মূলধারা থেকে অনেক দূরে চলে যাবে। আজ যদি কেউ আমাদের নেতা শেখ সাহেব কে নিয়ে কিছু বলার দুঃসাহস দেখায় তবে আমরা তার জন্য কাকে দায়ী করতে পারি? পত্রিকা, টেলিভিশন, রেডিও –ধরে নিলাম সবাই মিথ্যে বলছে। কিন্তু চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনা ভুলে যাব কিভাবে? স্মৃতি এতটা দূর্বল ও নয়, প্রতারক ও নয়।

হাসি পায় যখন দেখি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তিকে ভোট যুদ্ধে জেতার জন্য একজন সামরিক শাসক,কিছু ফতোয়াবাজ কাঠমোল্লা আর বামপন্থীদের সাথে জোট বাঁধতে হয়। আমাদের উপর বিশ্বাস নেই? আমরা তো বঙ্গবন্ধুর আপোষহীন আওয়ামী লীগ দেখতে চেয়েছিলাম।

সে যাই হোক...এখন দেশে যেমন চলছে তা হল – কেউ যদি বিএনপি করে তাহলে সে হল দূর্নীতিবাজ,রাজাকার এর সহযোগী। কেউ যদি জামায়াত করে তাহলে সে পাকিস্তানের দালাল,রাজাকার,পাক-বাহিনীর জারজ সন্তান। কেউ যদি আওয়ামী লীগ করে, তাহলে সে নিজেই নিরাপত্তাহীন; কখন কোন পাতিনেতা ধরে চর-থাপ্পর লাগায়।

অবশ্য এখন সবাই নিরাপত্তাহীন। খুন,ধর্ষণ,লুট আর চাঁদাবাজী- যা ই হোক না কেন গ্রেপ্তার হবে শুধু বিরোধী দল। একট কথা আমরা সবাই ভুলে যাই তা হল- মুজিব হত্যা, জিয়া হত্যা, রমনা বটমূল বোমা হামলা, ২১ আগষ্ট গ্রেণেড হামলা- এসব ঘটনার যদি পরিপূর্ন তদন্ত না হয় তাহলে এ জাতি নিরাপত্তা পাবে না কখনই।

ক্ষমতা কোন দল/ব্যাক্তি চিরকাল পায় না। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সরকার হতে হয় দলীয় পরিচইয়ের ঊর্ধে। আজ আওয়ামী সরকার যদি নিজেদের পূণর্গঠন (তৃনমূল পর্যায় থেকে) এবং বিরোধী দলের বঞ্ছিতদের পূণর্বাসন করত তাহলে আমাদের মনে হত আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বাস করি। কিন্তু পরিস্থিতি এখন সম্পুর্ণ ভিন্ন। আমি যদি সরকারের গঠনমূলক সমালোচনাও করে থাকি তাতেও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার এবং দেশদ্রোহি আখ্যায়িত হবার সম্ভাবনা প্রচুর। (এর মধ্যে যদি মারা যাই তাহলে তো লাশ নিয়ে কারাকারি পড়বে)

তবুও খুব বলতে ইচ্ছে করে... দেশটা তো আমাদের সবার,তাই না? আসুন না...সবাই একট সহনশীল হই... নিজে যে দল করেন,তার বিরোধী দলের একজনকে নিয়ে বসে চা-নাস্তা খান...গল্প করেন। দেখবেন আপনারা সবাই বুকে পূষে রাখছেন একটি দেশ...বাংলাদেশ।

আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগরূক আওয়ামী লীগের উচিৎ এটা অনুধাবন করা যে মুজিব আমাদের সবার নেতা...আমাদের বট-বৃক্ষ। যার ছায়ায় আমরা স্বাধীনতার সীমানা খুঁজে নিয়েছি। এটা নিয়ে এই প্রজন্ম দ্বিধাবিভক্ত নয়। সেই সাথে আওয়ামী লীগের এটাও অনুধাবন করা উচিৎ, এক বৃক্ষে বাগান হয় না। বৃক্ষের ছায়ায় অন্যদেরও বেড়ে উঠতে দিন। আমাদের স্বপ্ন দেখার অধিকার ছিনিয়ে নেবেন না...
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×