বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে বাংলাদেশ
দেশজুড়ে অব্যাহত বোমা হামলা চলছে। সেই সাথে নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে আত্মঘাতি বোমা হামলা।আত্মঘাতি শব্দটি শুনতেই আমাদের মনে পড়ে ইরাক, ইসরাঈল, ফিলিস্তিন কিংবা বিভিন্ন বড় বড় ভূ-খন্ডের কথা যেখানে সারা বছরই লেগে থাকে যুদ্ধ, বোমা বিষ্ফোরন এবং আত্মঘাতি হামলা।কিন্তু বাংলাদেশে আত্মঘাতির পরিচয় মেলে 29 শে নভেম্বর গাজীপুরে।
গাজীপুরে আদালত প্রাঙ্গনে আত্মঘাতি বোমা বিষ্ফোরনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে আত্মঘাতির সূচনা ঘটে। আর আত্মঘাতি বোমা বিষ্ফোরনের সাথে বাংলাদেশকে পরিচয় করে দেবার মত মহৎ কাজটি সম্পাদন করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতুল মুজহিদিন পার্টির (জে এম বি ) এর সক্রিয় সদস্য। গনতন্ত্রের এ ছোট দেশে অকল্পনীয় বিষয়টি সাধিত হয়েছে। অপর প েদেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আত্মঘাতি হামলাকে কেন্দ্র করে একে অপরকে দোষারোপ করছে প্রতিটি বারের মতোই। আসুন দোষা দোষি বাদ দিয়ে প ্রধান রাজনৈতিক দল সহ সকল রাজনৈতিক দল গুলো একত্রিত হয়ে জঙ্গীবাদ প্রতিহত করি।আবার মুক্তির সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার ডাক দেই।দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আজ একই পথে চলছে। কিন্তু তাদের অভিমুখ পরস্পর বিপরীতমুখী।বিপরীতমুখী চলমান হওয়ার ফলে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে তাদের মাঝে দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে। সময়ের পরিবর্তনের সাপে েযখন একটি রাজনৈতিক দল থেকে অন্য একটি রাজনৈতিক দলের দূরত্ব নীল নদের দু পারের অবস্থা হয় ঠিক তখনেই তাদের মাঝে জঙ্গীবাদদের উদ্ভব ঘটে। দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের বোকামির সুযোগ নিয়েছে জঙ্গীরা। দু দলের বোকামিতে 29 শে নভেম্বর ও 1 লা ডিসেম্বর গাজীপুরে একই স্থানে আত্মঘাতি বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এত নিরাপত্তার পরেও কেন একই স্থানে প্রথম বোমা বিষ্ফোরনের রেশ কাটতে না কাটতেই যে বোমা বিষ্ফোরিত হল ? কি আছে এর উত্তর । কে , কিভাবে দিবে এর উত্তর ?
আত্মঘাতি বোমা বিষ্ফোরনের পর প্রধান বিরোধী দলকে দেখা গেছে সরকারের উপর দোষ চাপাতে। অপর প েদোষারোপে পিছিয়ি নেই সরকারী দলও। তারাও বোমাহামলার মদদ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রধান বিরোধী দলকে। আইনজীবি সমিতি 29 শে নভেম্বর আত্মঘাতি বোমা বিষ্ফোরনের প্রতিবাদে 1লা ডিসেম্বর সারাদেশে সকাল সন্ধা হরতাল পালন করেছে। আইনজীবি্ সমিতির সাথে যুক্ত হয়েছে আওয়ামী লীগ সহ 14 দল। যেখানে দেশের গণমান্য রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ রয়েছে। কিন্তু দায়িত্বশীল বিরোধী দলের কাছ থেকে কি এ ধরনের কর্মকান্ড আশা করেছিল দেশবাসী ?
আমরা রাজনৈতিক দল গুলোর বোমা হামলার পরবতর্ী পদপে সুন্দর ভাবে দেখে আসছি। কিন্তু কখনোই দেখিনি বোমা হামলা সমাধানে কোন উদ্যোগ গ্রহন করতে। এ সমাধানে মহা পরিকল্পনা গ্রহন করা জরুরী। মহাপরিকল্পনার সঙ্গী হবে দেশের 15 কোটি মানুষ। 15 কোটি মানুষের ভিড়ে জঙ্গীবাদ থাকলে তাদের সনাক্ত করন ও নির্মূল করার গুরু দায়িত্ব জনগনেরই।কিন্তু ঐ জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তাদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য প্রয়োজন নিজেদের মাঝে সুসম্পর্ক স্থাপন। তা না হলে দেশের জনগন ঐক্যবদ্ধ হবে না। কিন্তু আমাদের দেশের সরকারী দলগুলো সেই পদ্ধতিই অনুসরন করছেন যেখানে দেশের সমগ্র জনগন ঐক্যবদ্ধ হবে না। নিজেদের মাঝে সমঝোতা না আসলে জঙ্গীবাদদের নির্মূল করা যাবে না।
আমরা দেখেছি 21 শে আগষ্টের বর্বরচিত গ্রেনেড হামলা । যেখানে বাদাম বিক্রেতা থেকে শুরু করে প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের প্রাণ হাত্দরাতে হয়েছে। আমরা দেখেছি হবিগঞ্জের বোমা বিষ্ফোরনে আওয়ামী লীগ নেতা শাহ্ এস এম কিবরিয়াকে জীবন দিতে হয়েছে। প্রতিটি বোমা বিষ্ফোরনের পরপরেই প্রধান রাজনৈতিক দল একে অপরকে দোষারোপের মধ্য দিয়ে হয়ে গেছে এর তদন্ত কাজ। কিন্তু সুষ্ঠু পরিবেশ , রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা , অসহযোগীতা ও একে অন্যের দোষারোপের কারনে তদন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়নি। ফলে প্রতিবারেই ধরা ছোয়ার বাইরে থেকেছে আসল অপরাধী। ধরা পড়েছে নিরীহ জনগন যারা কিনা জীবনে গ্রেনেড দেখেনি।অথচ তাদেরকে জনসভায় গ্রেনেড নিেেপর অপরাধে অভিযুক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যাই মদদ দাতারা।মদদ দাতার ধরা ছোয়ার বাইরে থাকার ফলে বার বার দেশে বোমা বিষ্ফোরিত হচ্ছে। বোমার আঘাতে প্রাণহানী ঘটছে নিরীহ দেশবাসীর।
1971 সালে দেশ স্বাধীনের জন্য যেমন ডাক দিয়েছিল শেখ মজিবুর রহমান এবং তার ডাকে সাড়া দিয়ে দেশবাসী যেমন করে একত্রে জাতি ,ধর্ম , বর্ণ নির্বিশেষে দেশ স্বাধীন করেছিল এবারেও তাই প্রয়োজন। কিন্তু তা কি করে সম্ভব ? সম্ভবের জন্য প্রয়োজন নিজেদের মাঝে ঐক্য আর বন্ধুত্ব বাড়ানো। তা সম্ভব না হলে দেশে একটা সময় আসবে যখন 1971 সালের মতো অবস্থা হবে। '71 এ বাংলার ছেলেদের ঐক্যবদ্ধতার ফলে স্বাধীনতা রা হয়েছিল। কিন্তু আমরা যদি কোন নেতার সাথে থেকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে জঙ্গীবাদদের প্রতিহত না করিতে পারি তবে দেশে জঙ্গীবাদদের শাসন কায়েম হবে। আর আমাদের মেনে নিতে হবে জঙ্গীদের দেওয়া নিরর্থক ও নির্মম বিধান যা কোন ধর্মে কোন কালই ছিলনা।
মো:তৌহিদুল ইসলাম সূচী
কলামিষ্ট
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






