খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পরীক্ষা চলছে । পরীক্ষার্থী মাত্র ৪ জন । আমি , সাইফ , এমরান আর শাকিল । লেখার জন্য সবাই যে যার প্রয়োজন মত কাগজ কিনে নিয়ে এসেছে । আমি এনেছি ওষুধ কোম্পানির একটা স্পাইরাল বাইন্ডিং করা প্যাড ! পরীক্ষার সময় ৩ ঘন্টা । সবাই একটা খাটের উপর বসে লিখছি ! আমার পরীক্ষার প্রতি কোন আগ্রহ এবং মনোযোগ নেই । অন্য সবাই খুব গম্ভীর হয়ে হুলস্থূল করে লিখছে । হল গার্ড খাটের পাশেই একটা টেবিলে ডেস্কটপ কম্পিউটার নিয়ে বসেছেন ! তাঁর সামনে কম্পিউটারের মনিটরে পরীক্ষার সব প্রশ্নের উত্তর লেখা ! তিনি গভীর মনোযোগে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে উত্তর গুলো দেখছেন । আমি ছাড়া বাকি সবাই হল গার্ডের চোখ এড়িয়ে তাঁর পেছন থেকে কম্পিউটার মনিটরে উঁকি মেরে মেরে উত্তর দেখছে আর লিখছে ! অথচ গার্ড ব্যাপারটা টেরই পাচ্ছেন না !! আমার মনিটর দেখে লিখতে আলসি লাগছে । তাই শাকিল আমাকে প্রথম প্রশ্নটার উত্তর লেখা একটা কাগজ দিলো । কাগজটা খাটের পাশের একটা আলমারির গায়ে স্কচটেপ দিয়ে লাগিয়ে নিলাম । আয়েসি ভঙ্গীতে আলমারিতে সাঁটানো নকল দেখছি আর আস্তে আস্তে লিখছি । দুই এক শব্দ লিখি আর তাড়াহুড়ো করে লিখে যাওয়া অন্যদের দিকে সকৌতুকে তাকিয়ে দেখি । মনে মনে ভাবি “ব্যাটারা এত তাড়াহুড়া করার কি আছে ? চুলার উপর কি খিচুড়ি চাপিয়ে রেখে এসেছিস যে তাড়াতাড়ি না গেলে পুড়ে যাবার ভয় আছে ?” এরপর আবার একটু লিখি আর জানালা দিয়ে বাইরে কবুতরের বাসায় কবুতর ‘বাক বাকুম’ করছে , সেটা দেখি কিংবা কম্পিউটার নিয়ে বসে থাকা হল গার্ডকে দেখি । এসব করতে করতে আড়াই ঘন্টা পার হয়ে গেল । তাকিয়ে দেখি অন্য সবার লেখা প্রায় শেষ । আর আমি কেবল একটা প্রশ্নের উত্তর লিখেছি । হঠাৎ মনের ভেতর থেকে প্রচণ্ড তাগিদ অনুভব করলাম , যেভাবেই হোক পরীক্ষায় পাস করতেই হবে । এমরান বললো , “প্যাডের মধ্যে লিখছিস কেন ? এটা তো জমা নিবে না ।” বললাম , “তাহলে কাগজ দে ।” সবাই তাদের বেঁচে যাওয়া কাগজ গুলো আমাকে দিলো । কাগজের উপর বিষয়ের নাম লেখার জন্য জিজ্ঞেস করলাম , “কি বিষয়ের পরীক্ষা হচ্ছে রে ?” সাইফ একটা পাঠ্য বই সামনে ধরে বললো , “এই বিষয়ের পরীক্ষা ।” বইয়ের উপর লেখা ‘ব্যবসায় শিক্ষা’ । হতাশ গলায় বললাম , “এই বিষয়ের তো নামই শুনিনি কোন দিন (!)” আমার কথা শুনে সবাই উচ্চ শব্দে হেসে উঠলো । হাসির শব্দে জেগে দেখি আমিও হাসছি !
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা
তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান
উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!
এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।
"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন
কে কাকে বিশ্বাস করবে?
করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।
সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন