-আচ্ছা তুমি এমন কেন বলোতো?
-কী, লক্ষীটি?
-আমি কত করে তোমাকে বলি এভাবে থাকবেনা, সেইভ করবে। তুমি আমার কথা পাত্তাই দাও না।
সজীব একটু হাসে,
-আই, হাসছো কেন? খুব মজা পাচ্ছো বুঝি? যাও এর পর থেকে এভাবে এলে আমি আর তোমার সাথে দেখা করবো না।
সজীব এর মুখটা মলিন হয়ে যায়।
-আচ্ছা, বাবা! এখন থেকে আর এমন থাবোনা, ঠিক আছে? আর রাগ করোনা! প্লিজ।
-এভাবে কানের কাছে প্লিজ প্লিজ প্লিজ করবেনা। ভাল লাগেনা।
-জান, ঠিক আছে তো, এবার না হয় ভুল করেছি, আর হবেনা, দেখেনিও তুমি!
নীলা কিছুই বলেনা, শুধু চুপ করে থাকে।সজীব দৌড়ে এক তোড়া ফুল নিয়ে আসে। এক গুচ্ছ গোলাপ। নীলার চোখে হঠাৎ পানি এসে পরে।
-তুমি জানোনা আমার তোমাকে এভাবে দেখতে একদম ভাল লাগেনা, কেন শুনোনা তুমি আমার কথা, বলোতো? এমনটা আর করবেনা বলে দিচ্ছি।
-আচ্ছা, আচ্ছা, বাবা, আর হবেনা!
কলোনীর পার্ক-টা থেকে বের হয়ে, দু’জন নিউমার্কেটের দিকে যায়। সামনে যথারীতি ছোলাওয়ালা।সজীবের ছোলা মাখানো বেশ পছন্দ, কিন্তু নীলা ওকে এটা বেশি খেতে নিষেধ করে। কারণ, সজীবের এসিডিটি আছে। ছোলা খাওয়ার পর, উহ আহ শুরু করবে।সজীব নীলার দিকে কাত্র চোখে তাকায়।নীলা বলে,
-আচ্ছা, খাও।
-আসলেই কিনবো?
নীলা মাথা নাড়াতেই, ১০টাকার কিনে বসে। নীলা খাওয়া শুরু করার আগেই সজীব ৫ আঙ্গুল দিয়ে খাওয়া শুরু করে। নীলা কিছু বলেনা। চুপ করে তাকায় সজীবের দিকে।সজীব বুঝতে পারে বড্ড ভুল হয়ে গিয়েছে তার। এভাবে খ্যাত ভাবে খাওয়া নীলা দেখতে পারেনা। আর আজ-ই?
-ইয়ে মানে, না মানে।
-কী?
-আসলে, মানে, ইয়ে।
-থাক আর কিছু বলোনা, বাসায়ে যাব আমি।
-এখনি যাবে।
-হ্যা, এখনি।
-একটুপর না হয় যেও…
নীলা কিছুই বলেনা।বাড়ির পথে হাটে। সজীব রিকশা ঠিক করতেই উঠে পড়ে নীলা। সজীব তাকিয়ে থাকে ওর দিকে।মন এ মন এ দুসে, ধুর, কি যে আমি একটা। মেয়েটাকে কষ্ট দিলাম শুধু শুধু। ছোলা আর খাওয়াই হয়না তার।
নীলা সজীবকে অনেক বেশী ভালবাসে, সজীবের কোন খুঁতই সে দেখতে পারেনা। এটা ওটা নিয়ে সারাক্ষণ সজীবকে বকতে থাকে, সজীবও বাধ্য হয়ে সে সব কথাই শুনে।দু’একটা কথা এদিক ও দিক হলেই ঘটে বিপত্তি। যেমনটা আজ হল।
***************************************************
মা-র ডাকে হঠাৎ-ই জ্ঞান ফিরে নীলার।
-নীলা
-কোথায়ে গেলি?
-নীলা
-আসছি মা।
চোখটা মুছতে মুছতে নীলা মা-র কাছে গেল।
-প্রিয়ন্তী কতক্ষণ ধরে কাঁদছে, কই ছিলে তুমি? খিদেতে কাতরাচ্ছে মেয়েটা।
নীলা প্রিয়ন্তীকে নিয়ে খাওয়াতে চলে গেল।
প্রিয়ন্তী, নীলা আর সজীবের একমাত্র মেয়ে। মেয়েটার বয়স সবে মাত্র ১ বছর। ছ’মাস আগে সজীব একটা সজীবের হঠাৎ স্ট্রোক হয়। সব কিছু ঠিক ঠাক-ই চলছিল, হঠাৎ রাতে বুকে ব্যথা হ্য়ছিল সজীবের, হাসপাতাল নেয়ার আগেই মারা যায় ও। সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়ে নীলার।আজ হঠাৎ-ই রাস্তায় এক দাড়ি ভর্তি ছোকরাকে দেখে নীলার এসব মনে পড়ছিল।
**************************************************
জীবন চলতে থাকে, রেখে যায় কিছু ক্ষত, যা কখনোই ভুলবার নয়। ভাল থাকবেন সবাই।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




