somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুটবুদ্ধি?

২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ রাত ৯:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুটবুদ্ধি আর কুটচালের যোগ্যতা বিচারে আওয়ামী লীগের কাছে বিএনপি সবসময়েই দুগ্ধপোষ্য শিশু। এর বিপরীত কোন ধারণাকে পাত্তা দিতে আমি এখনও রাজি নই। তবে, কথায় আছে-অতি চালাকের গলায় দড়ি! প্রবাদটা আওয়ামী লীগের জন্য এখন পদে পদে সত্যি হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার বিশ্লেষণ দেখা যাক।

ইকোনোমিষ্ট পত্রিকায় প্রকাশিত গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বস্তায় বস্তায় ভারতীয় রূপী সহায়তা গ্রহণ অভিযোগটির পাল্টাপাল্টি হিসেবে খালিজ টাইমস্ এ ’৯১ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার পাঁচ কোটি পাকিস্তানী রূপী নেয়ার কাহিনীটা ব্যাটা দুররানীর কারণে ঠিকমতো জমলো না আবার ইকোনোমিষ্টের অভিযোগটিও খন্ডানো গেলো না। প্রথম আলো পিঠটান দেয়ায় বরং খালিজ টাইমস্ এর ঘটনা পুরো বুমেরাং হয়ে ওঠার যোগাড়! অথচ বিএনপি কিন্ত এই ঘটনায় আগাগোড়া রক্ষণাত্মক খেলে গেছে, নাটকের শেষভাগে ঘটনাক্রম পক্ষে বহমান হওয়ার পরও ফায়দা লুটতে সক্ষম হয়নি।

এরপর সুরঞ্জিত বাবুর এপিএস এর টাকার বস্তা কাহিনী। সুরঞ্জিত বাবু জানালেন, যেহেতু তিনি সন্ধ্যায় ঘুমিয়ে পড়েন এবং ঘুমন্ত অবস্থায় ঘুষ নেন না কাজেই প্রায় মাঝরাতে ঐ টাকার বস্তা নিশ্চিতভাবেই তার বাসায় যাচ্ছিল না। শুরু হলো হৈচৈ আর পাশাপাশি ধামাচাপার প্রক্রিয়া! কিন্তু এক ঢিলে দুই পাখি মারার লোভ যাবে কোথায়? সুরঞ্জিত বাবুকে পদত্যাগ করিয়ে একদিকে সংস্কারবাদিতার প্রতিশোধ অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দুধে ধোয়া ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ নিতে গিয়ে লেজে-গোবরে হয়ে গেলো সব। বাবু সুরঞ্জিত ক্ষমতাশালী মহলের দৃষ্টিতে পরিত্যাগযোগ্য না হওয়ায় এখন তাকে উজিরে খামাখা করে রাখতে হচ্ছে। লাভ হলো না কিছু, মাঝখান দিয়ে আ্ওয়ামী দুর্নীতি আর ক্ষমতার উৎসের অবয়ব জনমনে সুস্পষ্টতর হলো। প্রথমদিকে চিল্লাপাল্লা করলেও এই নাটকের শেষভাগে বিএনপিও পালন করেছে দর্শকের ভূমিকা, কারণ অবশ্য বোধগম্য।

সবশেষ ঘটনা বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়া। প্রথমদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী স্বাভাবিক আচরণ করলেন। বললেন- সরকার বিব্রত, ইলিয়াসের সন্ধান করা হচ্ছে। কিন্ত অতিচালাকির স্বভাব যাবে কোথায়? বিএনপিকে পঁচানোর উদ্দেশ্যে একদিকে বলা হলো ইলিয়াস নাকি বিএনপি নেত্রীর নির্দেশেই লুকিয়ে আছে। আবার অন্যদিকে নিখোঁজ হ্ওয়ার পরের রাতে তাঁর বিরুদ্ধে ১০ বছর আগের একটি ঘটনার মামলা দেয়া হলো। মামলাটি করতে দেরী হয়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে বিএনপি ‘গুম গুম’ রবে বিরাট হৈচৈ শুরু করে দেয়। সময়মতো মামলা না হওয়ায় শ্যোন অ্যারেস্টও দেখানো যায়নি, ফলে বিকট প্যাঁচ। পানি অত্যধিক ঘোলা হয়ে যা্ওয়ায এখন ইলিয়াসকে গেলাও যাচ্ছে না ওগরানোও যাচ্ছে না! এইবার অবশ্য বিএনপি নাটকে ভালোভাবেই অংশ নিচ্ছে। দেখছি কী সব শর্তের কথা পত্র-পত্রিকায় আসা শুরু হয়েছে। দেখি নাটকের কী যবনিকাপাত হয়? নীট ফলাফল আ্ওয়ামী লীগের দানবীয় চেহারা দেশে-বিদেশে প্রকটতর!

প্রশ্ন হলো, এসব ঘটনা সাদাচোখে যে রকম দেখা যায় সে রকমভাবেই কি ঘটছে? নাকি জনগন ফুসে রয়েছে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকে আড়াল করার উদ্দেশ্যে রচিত এই উটকো নাটকগুলো? সেই অভিযোগও কিন্তু রয়েছে। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় আর ক্রয়-প্রক্রিয়ার দায়মুক্তি দিয়েও বিদ্যুত সমস্যা মেটানোর ব্যর্থতা, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, বিচারবিভাগসহ প্রশাসনে সর্বোত্র লজ্জাষ্কর দলীয়করণ, দ্রব্যমুল্য-বেকারত্ব নিয়ন্ত্রনে অসাফল্য, ট্রানজিট-নৌপ্রটোকল দিয়েও তিস্তা-টিপাইমুখ সমস্যা নিরসনে ব্যর্থতা, দাতাসংস্থাগুলোর সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে পদ্মা সেতু নির্মান অনিশ্চিত করে ফেলা, যুদ্ধাপরাধীদের বিশ্বাসযোগ্য বিচার অনুষ্ঠানের অযোগ্যতা, ইত্যাদি ঢাকতে যদি এইসব নাটকের আশ্রয় নেয়া হয়ে থাকে তাহলে বলতে হবে রোগের চেয়ে ঔষধই সামনের দিনগুলোত আ্ওয়ামী লীগের জন্য বেশী ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×