শীতের এক দুপুরবেলা আমি হেটে হেটে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছি। আমার হাতে কতগুলো পুরস্কারের প্যাকেট। সেদিন ছিল ১৬ ই ডিসেম্বর। বিজয় দিবস উপলক্ষে স্কুলের কতগুলো প্রতিযোগিতায় পুরস্কারগুলো পেয়েছিলাম আমি। অনেকে জোড়াজোরি করছিল প্যাকেটগুলো খোলার জন্য। কিন্তু আমি খুলতে দেই নি। আমার যেকোন মজার বিষয় বা প্রাপ্তি আগে ভাইয়াকে দেখাই।প্যাকেটের রঙ্গিন কাগজগুলোর দিকে তাকিয়ে মনে মনে একটা গল্প সাজিয়ে নিচ্ছিলাম বাড়িতে গিয়ে বলার জন্য। বাড়িটা আমার জন্য তখন ভয়ঙ্কর একটা দুঃস্বপ্নের মত। আমার একমাত্র সঙ্গি আমার বড়ভাই। প্রতিদিন বাবা-মায়ের ঝগড়া থেকে ভাইয়া আমাকে অাগলে রাখত। মোটামুটি আমার দেখাশুনার সবকিছুই করত সে। কারও আদেশে না শুধু ভালোবাসা থেকে। আমার বলা যেকোন কথাই ভাইয়া খুব মনোযোগ দিয়ে শুনত। সোজা কথায় আমার মা-বাবার আদরের অভাবটা ভাইয়াই পূরণ করে দিত।
মনে মনে সাজিয়ে নেওয়া গল্পটা কখনো বলা হয় নি ভাইয়ার কাছে। বাড়িতে গিয়ে শুনলাম বাবা মায়ের ডিভোর্স হয়ে গেছে। আমি তখন ডিভোর্সের মানে বুঝতাম না। খুব বড় কিছু না ঘটলেও ছোটখাট কিছুওযে ঘটে নি তা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলাম সেদিন। বাড়িভর্তি লোকজন। সবাই কেমন চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। অনেকে অনেক কথা বলতেছিল। আমার এখন সেগুলোর কিছুই মনে নেই। আমার শুধু মনে পড়ে বাড়িভর্তি লোকের মধ্যে ভাইয়াকে খুজছিলাম আমি। অনেক খুজে শেষে আমার পড়ার রুমে খুজে পেয়েছিলাম তাকে। ছোট হলেও তখন ঠিকই বুঝেছিলাম স্কুলের গল্প করার সময় এটা নয়। বোকার মত প্রশ্ন করে বসেছিলাম "ভাইয়া তুমি কি কাদছ?" ভাইয়া আমার দিকে কেমন যেন ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে ছিল। ভাইয়ার এই ফ্যালফ্যালে দৃষ্টি আজও চোখে লেগে আছে আমার। নিচু গলায় আমাকে প্রশ্ন করেছিল
- তুই একা থাকতে পারবি না? বাবার সাথে।
আমি কিছু না ভেবেই মাথা ঝাকিয়েছিলাম নিচ দিকে।
- আমি মার সাথে চলে যাব, তুই থাকবি বাবার সাথে।
আমি গলা ধরে আসা কি তা বুঝতাম না তখন। কিন্তু আমি নিশ্চিত ভাইয়ার গলাটা তখন ধরে এসেছিল। আমি বাবা মায়ের ডিভোর্সের কথা শুনে যতটা আঘাত পেয়েছিলাম তারচেয়ে হাজার গুণ বেশি কষ্ট পেয়েছি ভাইয়ার কথায়। কিন্তু আমি সেটা প্রকাশ করতে পারিনি। কষ্ট শেয়ার করলে নাকি কষ্ট কমে যায়। আমার সেই দিনের কষ্টটা এখনো বুকে গেথে আছে। আর কতদিন বয়ে বেড়াতে হবে তা বলতে পারব না। এখনও এর প্রভাব রয়ে গেছে আমার মধ্যে। তা না হলে সবাই যেখানে সুন্দর সুন্দর গল্প কবিতা লিখছে আমি সেখানে এমন একটা বিষয় নিয়ে লিখছি।
সেই দিনটা আমার ছোটবেলার দিনগুলোর মধ্যে একটা আনন্দময় দিন হিসেবেও থাকতে পারত। ছোটবেলার অনেকটা আদর সেদিন পেয়েছিলাম মার কাছ থেকে। মা কখনো আমার খেয়াল রাখত না। কিন্তু সেদিন মা আমাকে নিজ হাতে গোসল করাল, খাইয়ে দিল। আমার কেমন যেন অন্যরকম একটা অনুভূতি হচ্ছিল যা আমি লিখে প্রকাশ করতে পারব না। বাবা কোথায় তা বলতে পারব না। ঝগড়াবিহীন একটা দিন কেটেছিল আমাদের বাড়িতে। কিন্তু তখন মনে হচ্ছিল অাগের ঝগড়া করার দিনগুলোই ভাল ছিল।
পরদিন যখন মা ভাইয়াকে নিয়ে চলে যাচ্ছিল আমি তখন বাড়িতে একা। বাবা ফিরে আসেনি। আমার স্মৃতিতে সেই দিনটা স্পষ্ট হয়ে গেথে আছে এখনও। মা শুধু যাওয়ার আগে একবার আমার দিকে ফিরে তাকিয়েছিল। সে তাকানোতে কি ছিল আমি জানি না। আমার শরীরটা কাটা দিয়ে উঠেছিল। এই তাকানোটা আমি সহ্য করতে পারিনি। কেদে ফেলেছিলাম। আমার কান্নাটা কেউ দেখেনি। মা তখন অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আমাকে নিয়ে ভাববার সময় হয়ত উনার ছিল না তখন।
তারপরের কয়েকটা দিন কেটেছে আমার ভয়াবহ যন্ত্রনায়। বাবা বাইরে যেতে নিষেধ করে দিয়েছে। আমি সারাদিন ঘরে বসে থাকি। বাইরে বেরুলেই সবাই এসে ঝেকে ধরে আমাকে। নানান প্রশ্ন করে। আমি কিছুই বলতে পারি না। বাবাই আমাকে এ থেকে মুক্তি দিল। তৃতীয় দিন আমাকে নিয়ে বেরিয়ে গেল কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। কয়েকটা দিন খুবই আনন্দে কাটল আমার। বাবা আমাকে ভাল রাখার জন্য অনেক কিছু করত। আমিও খুব মজা পেতাম তাতে । কয়েকদিন সেখানে কাটিয়ে আবার ফিরে আসলাম পুরাতন জীবনে। পুরাতন জীবন হলেও সেখানে অনেক পরিবর্তন হয়েছিল। বাবা আমার খেয়াল রাখত সবসময়। মাঝে মধ্যে স্কুলেও দিয়ে আসত। সবকিছুই সয়ে নিয়েছিলাম, শুধু ভাইয়ার অনুপুস্থিতিটা অস্বাভাবিক লাগত আমার।
আমার সময় কোনদিন থমকে থাকেনি। মাঝে মধ্যে অসহ্য মনে হয়েছে, সারারাত ছটফট করে কেটেছে। কিন্তু সময় দাড়িয়ে থাকেনি। বয়ে চলেছে তার মত করেই। আমিও বড় হয়ে উঠেছি অনেকটুকু। ডিভোর্সের মানে আমি বুঝতে শিখেছি। সবকিছু স্বাভাবিকের মত চললেও সেই ছোটবেলার স্মৃতিটা আমাকে তাড়া করে বেড়াত প্রায় সময়ই। বাবার সঙ্গ আস্তে আস্তে কমে গেল। আবারও একা হয়ে পড়লাম আমি। সময় কাটানোর জন্য একসময় বই বেছে নিলাম আমি। স্কুল থেকে আসার সময় বই নিয়ে আসতাম। সারাদিন এগুলো নিয়েই পড়ে থাকতাম। নিজের মত করে একটা জগত তৈরি করে নিয়েছিলাম আমি।
মার সাথে আমার দেখা হয়েছিল তিন বছর পর। সেদিনও স্কুল ছুটির পর আমি হেটে হেটে বাড়ি যাচ্ছিলাম। রাস্তায় মা ভাইয়াকে নিয়ে দেখা করল আমার সাথে। মা এমনিতেই খুব সুন্দরী ছিল। চোখে কালো গ্লাস লাগানো মাকে পরীর মত লাগছিল সেদিন। ভাইয়াকে দেখে আমি থমকে গিয়েছিলাম কিছুক্ষনের জন্য। ভাইয়ার মুখ থেকেই শুনতে পেরেছিলাম মা এখন অনেক বড় অভিনেত্রী। মা আগেই একটু আধটু অভিনয় করত। এ নিয়েই বাবা মায়ের ডিভোর্স হয়েছিল। ভাইয়ার সাথে বিকেল পর্যন্ত কথা বললাম আমি। এর মধ্যে মায়ের চোখে কতবার তাকিয়েছিলাম তার কোন হিসেব নেই। শুধু সেই চাহনিটা খুজে বেরিয়েছি আমি মায়ের চোখে। আমার কাছে ভয়ঙ্কর সুন্দর এটা। যেটাদেখার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম বিকেল পর্যন্ত। কিন্তু দেখতে পাই নি। মা এর মাঝেই অনেক কিছু কিনে নিয়ে এসেছে আমার জন্য। আমি সেগুলো বাড়িতে নিয়ে যেতে পারিনি। বাবার অনুমতি পাই নি। আমি ততদিনে বাস্তবতা বুঝতে শিখেছি। তাই মন খারাপ করিনি।
আমাদের ঘরে বড় একটা টিভি ছিল। আমি কখনো টিভি দেখতাম না। সারাদিন বই নিয়েই পড়ে থাকতাম। কিন্তু সেদিনের পর থেকে টিভি দেখা শুরু করলাম। আমি মায়ের অভিনয় দেখার জন্য টিভি দেখতাম না, শুধু তার চাহনিটা খুজে বেড়াতাম। সত্যি সত্যিই মাকে একদিন টিভিতে দেখলাম। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম টিভির পর্দায়। সম্পূর্ণ অপরিচিত কারো মত লাগছিল মাকে। একটানা কতক্ষন তাকিয়েছিলাম মনে নেই। মাঝখানে শুধু বাবাকে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে উঠে যেতে দেখলাম। একটা ঘোরের মধ্যে পড়ে গেলাম আমি। তারপরে আমার রুটিনে একটা বিরাট পরিবর্তন আসল। অবসর সময়টা যখন বই পড়ে কাটাতাম সেই সময়টাতে টিভি দেখি। আমার ভেতরেও বড় একটা পরিবর্তন আসছে বুঝতে পেরেছিলাম। পরিবর্তনটা শুভ না অশুভ তা ভাবিনি কখনো। নিজেকে নিয়ে ভাবতাম না তখন। আমার উদাস আর অবাধ্য ভঙ্গিটা বাবার চোখেও পড়েছিল। একদিন স্কুল থেকে ফিরে এসে দেখলাম টিভি নেই। আমি কিছু জিজ্ঞাসা করিনি বাবাকে। বাস্তবতাকে মেনে নিয়েছিলাম সহজভাবেই।
তারপর অারো অনেকদিন কেটে গেল। অনেকদিন বলতে কয়েকদিন না কয়েক বছর। মা নাকি আবার বিয়ে করেছে।টিভিতে দেখানো হয়েছে। আমি জানতে পেরেছি বান্ধবীদের কাছ থেকে। আমি বাস্তবতা বলে সেটাও মেনে নিয়েছি। অনেকের কটুক্তি বা নিগেটিভ কমেন্টও মেনে নিয়েছি মাথা নিচু করে। মায়ের সাথে আমার দেখা হয়নি আর। আমি নিজেকে মানিয়ে নিতে শিখেছি একাকীত্বের সাথে। আগের জগতটা আবার গড়ে নিয়েছি একটু পরিবর্তন করে। বই পড়ি পাশাপাশি ছবি আকি। মায়ের চেহারাটা ঝাপসা হয়ে এসেছে একটু। শত চেষ্টা করেও মায়ের ছবি আকতে পারিনা। মাঝে মাঝে প্রচন্ড ঝোক চাপে। মায়ের ছবি আকবোই। সেদিন সারারাত নির্ঘুম কেটে যায়। পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ছবি একে যাই। কিন্তু আমার মনমত হয় না। মাঝে মধ্যে বান্ধবীরা এসে ছবি নিয়ে যায় আমার কাছ থেকে। একদিন ক্লাসের ম্যাডামও এসেছিল। অনেক ভালো লেগেছিল আমার কাছে। এত অগোছালো থাকায় বকাও শুনতে হয়েছে অনেক। তারপরও ভালো লেগেছে।
কয়েকদিন ধরে ভেতরের পরিবর্তনটা প্রকট হয়ে দেখা দিল আমার মাঝে। বাবার চোখেও সেটা পড়ল তীক্ষ্ণভাবে। একদিন ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল আমাকে। বাবার চোখে একটা দুশ্চিন্তা লক্ষ করেছিলাম আমি। আমার খুব ভালো লেগেছিল। আমার জন্য কেউ ভাবছে এটাইবা কম কি? অসুস্থতাকে প্রশ্রয় দিতে ইচ্ছে হল। বাবা নিজ হাতে ঔষুধ খাইয়ে দিত আমাকে। তারপরও সুযোগ পেলেই ফাকি দিতাম। এক ভয়ঙ্কর খেলায় হারিয়ে গিয়েছিলাম আমি। আমি চাচ্ছিলাম আমার অসুখটা বেড়ে যাক। সবাই আমাকে দেখুক।
স্কুলে অনেকে বলত আমি নাকি খুব সুন্দরী। আমি পাত্তা দেইনি। কিন্তু যেদিন ডাক্তার বাবাকে বলল "আমার এমন সুন্দরী একটা মেয়ে থাকলে আমি সারাদিন তার পেছনেই পড়ে থাকতাম" সেদিন সত্যিই নিজেকে সুন্দরী ভাবতে লাগলাম। না ভেবেই উপায় কি? সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়। কেমন ঘোর লাগা একটা জগত। চারদিকের সবকিছু অন্যরকম লাগে। হাসপাতালের সাদা বিছানাও রঙ্গিন মনে হয়। ভাবাভাবি ছাড়া আর কোন কাজ নেই আমার। অনেক সময় আমার এখন। পড়াশুনা করতে হয় না, স্কুলে যেতে হয় না। ভাবনায় কেটে যায় সারা দিন। মাঝে মধ্যে স্বপ্ন দেখি। সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন। স্বপ্ন ভেঙ্গে যাবে বলে ঘুম থেকে উঠতে চাই না আমি। কিন্তু তারপরও ভেঙ্গে যায়। প্রচন্ড যন্ত্রনা হয় তখন। বাবা আমার পাশে বসে থাকে অনেকটা সময়। আমার মাথায় হাত বুলায়। বাবাকে দেখলে খুব মায়া হয়। সারাদিন মুখ ভার করে রাখে। আমি বাবার সাথে কথা বলি। মজার মজার কথা। বাবা মজা পান না। আমার অসুখের কথা কেউই আমাকে বলে না। আমিও জানতে চাই না কারন আমি ঠিকই জেনে গেছি আমার ক্যান্সার। কিভাবি জেনেছি তা বলতে পারব না। ভয়ঙ্কর অসুখ হলে নাকি মানুষের ইএসপি বেড়ে যায়। আমারও মনে হয় তেমন কিছু একটা হচ্ছে। সেটাও একটা মজার অভিজ্ঞতা। অনুমান করে অনেক কিছুই বলে দিতে পারি আমি। কয়েকদিন আগে সকালবেলা মনে হয়েছে আজ সারাদিন খুব আনন্দে কাটবে। দুপুরেই ম্যাডাম আমাদের ক্লাসের সবাইকে নিয়ে উপস্থিত হয় আমার কাছে। যার সাথে কখনো কথা বলতাম না এমনকি যাকে আমি চিনিওনা সেও দেখছি গভীর আগ্রহে আমার শরীরের অবস্থা জানতে চাচ্ছে। সবার সাথে হাসাহাসি করেছি আমি। অসাধারন একটা বিকেল কেটেছিল অনেক দিন পর। যাবার সময় ম্যাডাম বলে গিয়েছিল আমার আকা একটা ছবি নাকি জাতীয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে। আমার অসুখের খবর শুনে নাকি রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করেছে। উনি নাকি আমাকে দেখে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। আমি মুগ্ধ হয়ে শুনি। এক ধরনের আনন্দ হয় মনের মাঝে। নির্ভেজাল আনন্দ। কোনকিছুরই তুলনা হয় না এর সাথে।
তার কয়েকদিন পরই মা আসলেন আমাকে দেখার জন্য। তার সাথে একটা ফুটফুটে বাচ্চা। ভাইয়াও এসেছিল সাথে। মা একটা কথাও জানতে চায় নি। আমার শরীরের অবস্থাও জিজ্ঞাসা করেনি। বাবাকে খুজেছিলাম সেদিন। বাবা আর মা একসাথে দাড়িয়ে আছে এমন একটা ছবি অনেকবার কল্পনা করেছিলাম মনে মনে। আমি জানি এটা আর কখনোই সম্ভব নয় কিন্তু কল্পনাতে তো কোন বাধা নেই। মায়ের বাচ্চাটা কত দুষ্ট। সারাক্ষন আমার সাথে দুষ্টামি করেছে। চলে যাওয়ার সময় মা অনেক্ষন কেদেছে আমার পাশে বসে। আমি কাদবেনা কাদবোনা করেও কেদে ফেলেছিলাম একসময়।
আমি অনেক কিছুই ভাবি এখন। শুধু ছোটবেলার কিছু স্মৃতি ভাবনা থেকে সযত্নে সরিয়ে রেখেছি। সেগুলো মনে করতে চাইনা আমি। আমাকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সিঙ্গাপুর পাঠানো হবে চিকিৎসার জন্য। সবাই নাকি আমার খবর জানে এখন। কিভাবে তা আমি বলতে পারব না। কিন্তু এতে মায়ের অবদান রয়েছে তা আমি বুঝতে পারি। বাবা সারাক্ষনই কি যেন ভাবে এখন। হয়ত বাবাও বড় কোন অসুখে পড়তে যাচ্ছে। সেদিকে আমি মনোযোগ দেই না। কিছু হবে না জেনেও কয়েকদিন ধরে ব্যাগ গুছাতে শুরু করেছি আমি। বাবা আমাকে ব্যাগ গুছাতে সাহায্য করে। বাবা মজার মজার কথা বলে আমার সাথে। আমি খুব হাসি সেই কথা শুনে। বাবাও হাসে কিন্তু সেই হাসিতে কি যেন নেই। আমি সেই হাসিটাকেই আকড়ে ধরে রাখি। আমার পৃথিকী এখন অনেক বেশি সুন্দর। সবকিছুই রঙ্গিন। ভালো কিছু স্বপ্নের মত যা দেখি বা যা করি তাই ভাল লাগে। জানিনা এটা অন্যায় আবদার কিনা আরো কয়েকদিন বেচে থাকতে ইচ্ছা করে সুন্দর এই পৃথিবীটাতে।
অামার ফেসবুক প্রোফাইল
অাপনার জেলাকে হাইলাইট করতে যুক্ত হোন অামাদের ফেসবুক গ্রুপে