somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসমাপ্ত গল্প

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অসমাপ্ত গল্প
লেখকঃ তোফায়েল আহমেদ
১.
আশ্বিন মাস প্রায় শেষ হয়ে আসছে। শীত আসতে আর বেশি দেরি নেই। চারদিকের পরিবেশ তাই জানান দিচ্ছে। দিনের বেশিরভাগ সময় গরম পড়লেও মাঝরাতের দিকে বেশ শীত পড়ে।আর শেষরাতের দিকে ফোটায় ফোটায় কুয়াশ পড়তে থাকে টিনের চালে। কুয়াশার ফোটাগুলো টিপ টিপ শব্দ করে শীতের আগমন বার্তাটা প্রকাশ করে দিচ্ছে। সকালের স্নিগ্ধ আলোয় মুক্তোর মত চিকচিক করছে এগুলো। পাকতে শুরু করা ধানগুলোকে সকালের শিশিরভেজা রোদে সোনার মতই লাগে। একটু দূরে দৃষ্টি দিলেই সোনালী সবুজ মাঠের পর বড় তালগাছের সারিটা স্পষ্ট দেখা যায়। তারপরই কলকল শব্দে বয়ে চলা নদী। তারপর সবুজ মাঠ আর দিগন্তজোড়া মাটি ছোয় আকাশ ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না। হঠাৎ দেখলে মনে হয় কোন দক্ষ শিল্পীর নিপুন হাতে আঁকা ছবি এটা। সবুজ ক্যানভাসে সোনালী ধান, তারপর গাছপালা, তারপর তালগাছের বিস্তৃত সারি, তারপর ছোট্ট এক নদী তারপর আরো অনেক কিছু।
ছবির মত এই গ্রামেই ছোট থেকে বড় হয়েছে রাজু। গ্রামের সৌন্দর্যগুলো আলাদাভাবে তাকে এখন আকর্ষন না করলেও গ্রামকে প্রচন্ড ভালবাসে সে। সারাদিন সে গ্রামের এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত ঘুরে বেড়ায়। কত কাজ তার। কারো বাড়িতে মেহমান এসেছে। বাজারের দোকান থেকে বিস্কুট চানাচুর আনতে হবে - রাজুকে ডাক। রান্না করতে গিয়ে লবন শেষ - রাজুকে ডাক। ক্ষেতের কামলাদেও দুপুরে খাবার পাঠাতে হবে - রাজুকে ডাক। সারাদিন সে কোথায় থাকে তার কোন খোজ খবর কারো কাছে না থাকলেও কাজের সময় সে ঠিকই উপস্থিত হয়ে যায় ঠিক জায়গায়। আর দশটা গ্রাম্য ছেলেমেয়ের মত দৌড়াদৌড়ি বা ছুটাছুটি করার অভ্যাস নেই তার। পাখি ধরা বা মাছ ধরা এগুলোর প্রতিও কোন আগ্রহ নেই তার। থাকবেই বা কিভাবে? সেতো আর দশটা গ্রাম্য ছেলেমেয়ের মত বাবা-মায়ের আশ্রয়ে বড় হয় নি। তার একমাত্র আনন্দ গ্রামটাকে পাহাড়া দিয়ে। সে মনে করে এটাই তার একমাত্র কাজ।
গ্রামের বড় রাস্তাটা দিয়ে হাটতে হাটতে গ্রাম সম্পর্কেই ভাবছিল রাজু। বড় রাস্তাটা কয়েকদিন আগেও কাচা ছিল। এখন পাকা হয়েছে। সবার সে কি আনন্দ। ছোটখাট আরো কয়েকটা রাস্তা থাকলেও সেগুলো দিয়ে কেউ চলাচল করেনা এখন। ছোট রাস্তাগুলোকে কেমন যেন নিঃসঙ্গ মনে হয়। রাজু ভাবে এই রাস্তাগুলো যখন প্রথম তৈরি হয়েছিল তষনও কি সবাই এত খুশি হয়েছিল? ভাবতে ভাবতে যখন প্রাইমারি স্কুলের কাছে আসল তখনই দেখা হল চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে। চেয়ারম্যান সাহেবের নাম রহিম শেখ। রহিম শেখ বর্তমান চেয়ারম্যান না হলেও সবাই তাকে চেয়ারম্যান সাব বলেই ডাকে। সবসময় হাসিমুখে থাকলেও রাজু তাকে সবসময়ই এড়িয়ে চলতে চায়। গ্রামের মধ্যে একমাত্র চেয়ারম্যান সাহেবকেই সে কিছুটা ভয় পায়। কয়েকদিন আগেই চেয়ারম্যান সাহেব তাকে একঘন্টা কানে ধরে দাড়া করিয়ে রেখেছিল। তার অপরাধ মিলিকে সে পড়ার সময় খেলতে নিয়ে গিয়েছিল। মিলি চেয়ারম্যান সাহেবের ছোট মেয়ে। রাজু থেকে সে দু-এক বছরের বড় হলেও তাকে রাজু ভাই বলে ডাকে। গ্রামের সমবয়সী ছেলেময়েদের মধ্যে রাজু একমাত্র মিলির সাথেই খেলতে পছন্দ করে। এছাড়া সে কারো সাথে তেমন মিশে না।
চেয়ারম্যান সাহেব রাজুকে দেখতে পেয়েই হাত ইশারা করে তাকে কাছে ডাকলেন। একবার ভাবল সে যাবে না। কিন্তু পরক্ষনেই দৌড় দেওয়ার ইচ্ছাটাকে দমন করে টিপটিপ বুকে চেয়ারম্যান সাহেবের সামনে গিয়ে দাড়াল। চেয়ারম্যান সাহেব তাকে জিজ্ঞাসা করলেন-
- কিরে কই যাস?
- কোনখানে না চাচা।
- সারাদিন কি দৌড়াদৌড়ি ছাড়া কোন কাম নাই তর?
রাজু মাথা নিচু করে থাকে। এই প্রশ্নের উত্তর তার জানা নেই। সে মনে করে এটাই তার একমাত্র কাজ। তাকে চুপ থাকতে দেখে চেয়ারম্যান সাহেব আবারও বলে উঠে-
- বিকালে আমার বাড়িতে আইবি। বুঝলি?
রাজু মাথা ঝাকিয়ে তাড়াতাড়ি বিদায় হল চেয়ারম্যান সাহেবের সামনে থেকে। চেয়ারম্যান সাহেব কেন তাকে বাড়িতে ডেকেছে তা সে বুঝতে পারছে না। হয়ত আবার কোন অপরাধের শাস্তি দেবে। মনে মনে ভাবতে লাগল কি অপরাধের শাস্তি পেতে পারে সে। তেমন কিছুই মনে করতে পারল না বলে ভয়টা আরো একটু বেড়ে গেল।
প্রাইমারি স্কুলের পেছন দিয়ে গ্রামের ভেতরে একটা রাস্তা চলে গেছে। বড় রাস্তা পাকা হওয়ার পর এই রাস্তা কেউই ব্যবহার করে না। একেবারে পরিত্যক্ত। রাজু ছোট রাস্তাটা দিয়ে গ্রামের দিকে হাটা শুরু করল। রাস্তার মাথায় হরিদাস বাবুর ছোট বাড়িটা চোখে পড়ছে। বাড়ির বাইরে একটা প্রকান্ড আমগাছ। অনেকেই বলে গ্রামের সবচেয়ে পুরোনো গাছ এটা। গাছের আমগুলো যেমন বড় বড় তেমনি মিষ্টি। এইবার কত আম খেয়েছে সে এই গাছের। হাটতে হাটতে বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই অবাক হয়ে গেল সে। বাড়িতে কেউই নেই। শূন্য বাড়ি দুপুরের কড়া রোদে খা খা করছে। মনে হয় কোথাও বেড়াতে গেছে। রাজুর মনটা খারাপ হয়ে গেল হঠাৎই। গ্রামের একটা পরিবার বেড়াতে চলে গেল অথচ সে কিছুই জানে না। গতকালও সে হরিদাস বাবুর বাড়িতে এসেছিল। তারাও তখন কিছু বলেনি। হঠাৎ হয়ত কোন কাজ পড়ে গেছে ভেবে রাজু বাড়ি থেকে বের হয়ে আসল। হরিদাস বাবুর বাড়ির পাশের বাড়িটাই রফিক চাচার। রাজুকে অনেক আদর করেন রফিক চাচা। রফিক চাচার বাড়ি আসলে চাচী কখনো না খাইয়ে ছাড়েন না। একটা উঠান পেরোলেই রফিক চাচার বাড়ি। যাবে না যাবে না করেও রফিক চাচার বাড়িতে ঢুকল রাজু। বাড়িতে কেমন যেন সাজ সাজ রব। মনে হচ্ছে বিয়ে বাড়ি। সবাই সেজেগুজে বসে আছে। মনে হয় কোথাও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। উঠোনের শেষ মাথায় দেখা হল রফিক চাচার ছোট ছেলে রাশেদের সাথে। ব্যস্তভঙ্গিতে কোথাও যাচ্ছিল সে। রাজুকে দেখেই থমকে দাড়াল। অন্যসময় হলে কিছুই বলত না রাজু। কারন রাশেদের কথা বলার রোগ আছে। একবার কথা বলা শুরু করলে আর থামতে চায় না। কথা শেষ না করে চলেও যাওয়া যায় না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্যরকম। তাই তাকেই জিজ্ঞাসা করলঃ
- কিরে কই যাবি তরা?
- তুই জানছ না?
বলেই চোখ বড় বড় করে রাজুর দিকে তাকিয়ে রইল সে। যেন না জানাটা বিরাট অন্যায়।
- না। আমি জানমু কেমনে?
- আমরা নানার বাড়ি যাইতাছি। তুই জানস না চেয়ারম্যান সাবের বাড়িত পাকিস্তানি আইছে। আরো অনেক লোক আইব। সারা গ্রামে নাকি আগুন লাগাইয়া দিব।
- ক্যান, আমরা কি করছি?
রাশেদের চোখ আরো বড় হয়ে গেল। সে চোখ বড় বড় করেই বলল-
- তুইতো দেহি কিছুই জানস না। আব্বা কইছে দেশে যুদ্ধ হইতাছে। আরো অনেক কিছু কইছিল আমার মনে নাই। আব্বার কাছে জিগাইলে জানতে পারবি।
রাজুর মুখে আর কোন কথা ফুটল না। রাশেদ ঐদিকে অনবরত কথা বলেই যাচ্ছে। কিন্তু রাজুর কানে কোন কথাই পৌছুচ্ছে না। তার মাথায় একটা শব্দই ভনভন করে ঘুরছে - যুদ্ধ। কি এটা? যার জন্য পাকিস্তান থেকে লোক এসেছে। রাজু বিশ্বাস করতে পারছে না তাদের গ্রামে কেউ এসে আগুন লাগিয়ে দেবে। রাজুর মাথার ভেতরটা কেমন যেন ফাকা ফাকা লাগছে। ঘরের ভেতর থেকে চাচী ডাক দিল তাকে-
- রাজু। এদিকে আয়ত।
- কী চাচী?
- আমাদের ট্রাঙ্কগুলো একটু ঘাটে দিয়া আয়তো।
রাজু মহা আনন্দে ট্রাঙ্কগুলো মাথায় তুলে নিয়ে নদীর দিকে হাটতে শুরু করল। ঘাটে একটা বড় নৌকা বাধা। রাজু নৌকার গলুইয়ে ব্যাগগুলো রেখে নদীর ধারে বসে রইল। এখনও মাথার ভেতর থেকে শব্দটা দূর করা যাচ্ছে না। রফিক চাচার কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারলে হত।
কিছুক্ষন পরই রফিক চাচা সবাইকে নিয়ে আসল। রাজু জিজ্ঞাসা করার কোন সুযোগ পেল না চাচাকে। কিন্তু নৌকায় উঠার সময় চাচা তাকে অনেক কথা বলে গেল।
- তুই তো কোথায় যাবি না। আমাদের বাড়িটাতে থাকবি। আমরা যতদিন বাড়িতে থাকবোনা ততদিন এই বাড়িটা তোর। আর বাড়ি থেকে বেশি বেরুবি না। বাজারের দিকে পাকিস্তানিরা ক্যাম্প করতে পারে। ঐদিকে যাবি না। বুঝলি?
রাজু কিছু না বুঝলেও মাথা ঝাকাল। নৌকা ঘাট ছেড়ে চলে যাবার পরও কতক্ষন বসে রইল নদীর ধারে। তারপর উঠে আসল বড় রাস্তায়। কিছুক্ষন বড় রাস্তা দিয়ে হেটেই রাস্তা ছেড়ে মাঠে নেমে গেল সে। হাটতে লাগল ধান ক্ষেতের আইল ধরে। দুপুরের খা খা রোদেও কেমন মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে ধানের সোনালী শীষগুলো। দেখলেই হাত বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু সে জানে হাতের স্পর্শ পেলেই ঝরে পড়তে পারে ধানগুলো। তাই হাত গুটিয়েই হাটতে লাগল সে। এবারের ধানের ফলন নাকি অন্যবারের তুলনায় অনেক ভাল হয়েছে। অনেকের মুখেই এমন কথা শুনেছে সে। মুহুর্তের মধ্যেই মুখে হাসি ফুটে উঠল তার। নির্ভেজাল একটা হাসি। হঠাৎই মনে পড়ল চেয়ারম্যান সাহেবের কথা। উনার বাড়িতে যাওয়া দরকার এখন। না হয় আবার ধরে নিয়ে শাস্তি দিতে পারে। চেয়ারম্যানের বাড়ির দিকে হাটতে শুরু করল সে।
বাড়িতে ঢুকতে গিয়েই একটা ধাক্কার মত খেল রাজু। বাড়ির উঠোনে অনেকগুলো চেয়ার পাতা। সবগুলোতেই একজন করে লোক বসে আছে। সবাই বিদেশী তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। রাজু কখনো তার গ্রামের লোকদের ছাড়া কারো সাথে কথা বলেনি। সচরাচর শহর থেকে কেউ বেড়াতে এলে তাদের সাথে কথা বলেছে। এর বেশি নয়। এক অজানা আশঙ্কায় বুক কেপে উঠল তার। তারাই কি পাকিস্তান থেকে আসা লোক যারা তার গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেবে।
রাজুকে দেখতে পেয়েই চেয়ারম্যান সাহেব তাকে হাত ইশারা করে কাছে ডাকল। সে দুরু দুরু বুকে সামনে গিয়ে দাড়াল। তাকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে পাশে বসা একজনের সাথে কি যেন বলল চেয়ারম্যান সাহেব। রাজু কিছুই বুঝতে পারছে না। হা করে তাকিয়ে আছে সে। কিছুক্ষন কথা বলার পরই চেয়ারম্যান তার উদ্দেশ্যে বলল-
- কাল পাকিস্তান থেকে অনেকে আসব। সবাইরে তুই গ্রামডা ঘুরাইয়া দেহাবি। পারবি না?
রাজু কিছু না বলে মাথা ঝাকাল।
- আচ্ছা যা তুই এহন।
বাড়ি থেকে বেরুতেই মিলির সাথে দেখা হল তার। মিলি মহা উৎসাহে কথা বলতে লাগল তার সাথে-
- রাজু ভাই। কই থাহ তুমি? আমরার বাড়িতে আইও না ক্যান?
রাজু এবারও কিছু না বলে চুপ করে রইল। তার মাথায় নানা চিন্তা ঘুরাফেরা করছে এখন। মিলি আবার বলল-
- চল রাজু ভাই গাঙ্গের ধারে যাই। ওইখানে অনেকগুলা ইস্টিমার আছে। আব্বা আমারে কইছে।
- চল।
রাজু আর মিলি বড় রাস্তাটা দিয়ে নদীর দিকে হাটতে লাগল। রাজুর মাথায় এলোমেলোভাবে অনেকগুলো চিন্তা ছুটাছুটি করছে। রাশেদ বলেছে পাকিস্তান থেকে লোক এসে গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেবে। আবার চেয়ারম্যান সাহেবের বাড়িতে পাকিস্তান থেকে অনেকে এসেছে। আরো লোক আসবে। তবে কি সত্যিই তাদের গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেবে তারা। তবে তো তা চেয়ারম্যান সাহেবের জানার কথা। রাজু আর কিছু চিন্তা করতে পারছে না। সামনে ঘাটে লাগিয়ে রাখা তিনটা স্টিমার দেখা যাচ্ছে। বিকালের আলোতে কেমন যেন ম্লান লাগছে এগুলোকে। এই প্রথম স্টিমার দেখল মিলি আর রাজু। কার আগে কে স্টিমারের কাছে পৌছুতে পারে তা নিয়ে প্রতিযোগিতা বেধে গেল তাদের মধ্যে। সবকিছু ভূলে দৌড়ঝাপ শুরু করল দুজনেই।
২.
আজ বেশ সকাল সকাল ঘুম ভেঙ্গে গেল রাজুর। বাইরে ভোরের আলো মাত্র ফুটে উঠতে শুরু করেছে। চোখ বন্ধ করেই এপাশ থেকে ওপাশে ফিরল সে। কয়েকদিনেই হঠাৎ শীত অনেকটুকু বেড়ে গেছে। সকালের দিকে হাড় কাপানো শীত পড়ে এখন। কুয়াশার ফোটাগুলো প্রথমে গাছের পাতায় তারপর সেখান থেকে ফোটায় ফোটায় টিনের চালে পড়ছে। এতে ঘরের ভেতর শীতকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। রাজু পায়ের নিচ থেকে পাতলা চাদরটা টেনে বুক পর্যন্ত উঠিয়ে দিল। তারপর আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকাল। বেড়ার ফাক দিয়ে অল্প একটু আলো এসে পড়ল তার চোখে। ঘুম ভাঙলেও বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করছে না। পাদুটো ভাজ করে বুকের কাছে নিয়ে এল রাজু। কিন্তু তারপরও শীত কমছে না। বাধ্য হয়েই উঠে বসল সে। চারদিকে একবার চোখ বুলাল। তারপর চৌকি থেকে নেমে বাইরে বেরিয়ে আসল। বাইরে বেরুতেই চোখ পড়ল মাঠের সোনালী ধানগুলোর দিকে। এগুলোর ভাগ্যে কী আছে তা এখনও কেউ বলতে পারে না কেউই। রাজু শুনেছে মাঠে নাকি বিশাল বড় ক্যাম্প তৈরি করা হবে। এই ক্যাম্পে পাকিস্তানিরা থাকবে। এর মধ্যেই পাকিস্তান থেকে অনেক লোক এসে পড়েছে। তারা বাজারের দিকে একটা খালি জায়গায় থাকে। রফিক চাচা ঠিকই বলেছিল। পাকিস্তানিরা বাজারের দিকে ক্যাম্প করতে পারে। রাজু এখন রফিক চাচার বাড়িতেই থাকে। সারাদিন বাড়িতে শুয়ে বসে কাটিয়ে দেয় সে। মাঝে মধ্যে চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে ডাক আসে তার। সেদিন সে কয়েকজনকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়। সে কিছু বলে না। শুধু গ্রামের চারপাশ দিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে আসে তাদের। ইদানিং গ্রামে একটা বড় পরিবর্তন লক্ষ করেছে রাজু। বেশিরভাগ লোকই গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে। যারা আছে তারাও গ্রাম ছেড়ে যেকোন সময় চলে যেতে পারে। তাছাড়া কেউই তেমন বাড়ি থেকে বের হয় না।
রাজু অনেক কিছু জানে এখন। রফিক চাচা বলে তাকে। মাঝে মধ্যে গভীর রাতে আসে তারা। তিনজন বা চারজন। যেদিন উনারা আসেন সেদিন অনেক কিছু রান্না হয় রাতে। সবাই খেয়েদেয়ে আবার রাতেই চলে যান। রাজু জানে অনেকে মিলে মুক্তিবাহিনী তৈরি করছে। রফিক চাচাও মুক্তিবাহিনীর সদস্য। রফিক চাচা রাজুকে যুদ্ধের কথা বলেন, তাদের দলের কথা বলেন। রাজু গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনে। কেন যুদ্ধ হচ্ছে, পাকিস্তানিরা কী চায় সব জানে সে। শুনতে শুনতে তারও মাঝে মাঝে ইচ্ছা জাগে যুদ্ধ করার। কিন্তু রফিক চাচা বলেছেন সে এখনও অনেক ছোট। সে যুদ্ধ করতে পারবে না। রাজু ভাবে সে যখন বড় হবে তখনও কি যুদ্ধ থাকবে? বেশি ভাবতে গেলে মাথা গুলিয়ে যায় তার। তখন সব ভাবনা বাদ দিয়ে আগের দিনগুলোর কথা ভাবে। সে জানে আবার তাদের গ্রামে আগের সেই দিনগুলো ফিরে আসবে।
শীতে কাপছে রাজু। এই সময়ে বাইরে বের হওয়া ঠিক হয়নি। শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে। এখন ঘরের ভেতরে গেলেও শীত করবে। বাড়ির বাইরে এসে বাজারের দিকে একবার তাকাল সে। কিন্তু কুয়াশায় বেশি দূর দেখা যাচ্ছে না। শুধু আবছাভাবে ক্যাম্পটা চোখে পড়ছে। কোন মানুষ দেখা যাচ্ছে না। রাজু আবার ঘরের ভেতর গিয়ে শুয়ে পড়ল।
এভাবেই কেটে যায় আরো অনেক দিন। মাঠের সোনালী ধানগুলো কাটার উপযুক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু গ্রামে ধান কাটার মত কেউই নেই। যারা আছে তারাও ধান কাটতে মাঠে যাবে না। মাঝে মধ্যে দূরে আগুনের ধোয়া উঠতে দেখা যায়। রাজু বুঝতে পারে পাশের কোন গ্রামে আগুন লাগিয়েছে পাকিস্তানিরা। যেদিন মুক্তিযোদ্ধারা আসেন সেদিন গুলাগুলির শব্দ হয় একটু আধটু। তারপরই সব শান্ত। বেশিরভাগ রাতই না ঘুমিয়ে কাটে রাজুর। যদি রফিক চাচারা আসে সেই ভাবনায় জেগে থাকে সে। যেদিন তারা আসে রাজুর খুব ভাল লাগে তখন। চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে এখন আর ডাক পড়ে না তার। তারা নিজেরাই চিনে নিয়েছে সবকিছু। তাদের নিষ্ঠুরতা নাকি মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে। রফিক চাচা বলেছে যেকোন সময় চূড়ান্ত যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। রাজু অপেক্ষা করে সেই দিনের যখন তার গ্রাম আবার আগের মত হয়ে আসবে। সে আবার হাটতে থাকবে গ্রামের এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত। মাঝে মধ্যে ডাক পড়বে তার এবাড়ি ওবাড়ি থেকে। সে মহাআনন্দে কাজ করতে থাকবে।
৩.
গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেল রাজুর। চোখ মেলতেই বাইরে আগুনের লাল আভা চোখে পড়ল তার। দড়ফর করে শোয়া থেকে উঠে বসল সে। বাইরে বেরুতেই দেখতে পেল রফিক চাচার বড় ঘরটাতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। রফিক চাচা কয়েকদিন আগে বলেছিল সে যে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়েছে এটা নাকি চেয়ারম্যান জেনে গেছে। তাকে এবাড়ি ছেড়ে অন্য কোন জায়গায় চলে যেতে বলেছিল রফিক চাচা। কারন যেকোন সময় তার উপর আক্রমন করে বসতে পারে তারা। কিন্তু রাজু বাড়ি ছেড়ে যায় নি। একা একা উঠানে দাড়িয়ে আছে সে। তার সামনে আগুনে পুরে যাচ্ছে আস্ত একটা বাড়ি। বাড়ির সাথে সাথে পুরে যাচ্ছে একটা পরিবারের অনেক দিনের স্মৃতিসহ অনেক কিছু। রাজু তার মাঝে একটা গভীর আক্রোশ অনুভব করছে। আগুনের লালচে আভায় তার চোখদুটো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। মনে হচ্ছে কোন ভয়ঙ্কর প্রাণী তার শিকারের উপর ঝাপিয়ে পড়ার অপেক্ষায় আছে। সারাদিন সে একবারও বাড়ি থেকে বের হয় নি। উঠানে বসেই কাটিয়ে দিয়েছে। বিকেলের সূর্য যখন দিগন্তে মিশে যাচ্ছে তখন ঘর থেকে বের হল সে। কিছু জিনিস যোগাড় করতে হবে তাকে। একটু কেরোসিন তেল, কিছু ছেড়া কাপড় আর একটা দেশলায়। অন্য সময় হলে তার জন্য এটা কোন ব্যাপারই ছিল না। কিন্তু এখন সময় অন্যরকম। গ্রামে বলতে গেলে কোন পরিবারই নেই। তাছাড়া বাজারটাও পাকিস্তানিদের দখলে। একটু কষ্ট করতে হবে। খুজতে হবে অনেকদূর। রাজুর জন্য কোন সমস্যা না। সে আনন্দের সাথেই খুজতে বের হল।
জিনিসগুলো যখন যোগাড় করে নিয়ে এল তখন চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। অন্ধকারে নিজের শরীরটা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। পুরো গ্রাম একেবারে নিস্তব্ধ। মাঝে মধ্যে দূর থেকে কুকুরের দু’একটা ডাক ভেসে আসছে। রাজু আন্দাজের উপর হেটে হেটে রফিক চাচার বাড়িতে ফিরে আসল। সারাদিন কিছু খাওয়া হয় নি। প্রচন্ড খিধে পেয়েছে। কিন্তু সেদিকে তার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। সে যোগার করা জিনিসগুলো নিয়ে মাটিতে বসে পড়ল। প্রথমে পুরোনো কাপড়টা ছিড়ে অনেকগুলো টুকরো করে নিল। ছোট ছোট টুকরাগুলো কেরোসিন দিয়ে ভিজিয়ে জবজবে করে একটা ছোট টিনের কৌটায় ভরে নিল সে। তারপর টিনের কৌটা আর দেশলাইয়ের বাক্সটা হাতে নিয়ে হাটা শুরু করল বাজারের দিকে।
ঘুটঘুটে অন্ধকারে একহাত দূরের জিনিসও দেখা যাচ্ছে না। তার উপর প্রচন্ড কুয়াশা। রাজুর পরনে একটা হাফ হাতার গেঞ্জি। শীতে ঠকঠক করে কাপতে কাপতে নগ্ন পাদুটো ছোট ছোট পদক্ষেপে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। রাস্তা ছেড়ে মাঠে নেমে গেল রাজু। সাথে সাথে পায়ে ঠান্ডা শিশিরের স্পর্শ অনুভব করল সে। শীতের অনুভূতিটা আরো বেড়ে গেল। মনে হচ্ছে বরফের উপর দিয়ে হেটে যাচ্ছে সে। দেশলায় আর টিনের বাক্সটা কুয়াশা থেকে যতটা সম্ভব আগলে রেখে হেটে যাচ্ছে রাজু। ঘুটঘুটে অন্ধকারের কারনে মুখের ভাবটা দেখা যাচ্ছে না কিন্তু নিশ্চিতভাবে বলা যায় সেখানে ভয়ের কোন চিহ্ন নেই।
বাজারের পাশের খালি জায়গাটায় যেখানে মিলিটারি ক্যাম্প করেছে তার তিনদিকেই ধানের জমি। সামনের দিকটা খালি। সেদিক থেকে বাজারের দিকে একটা রাস্তা চলে গেছে। কোথায় কী আছে সব রাজুর মুখস্ত। কারন সে আগেও বেশ কয়েকবার এসেছে এখানে। তখনই দেখে নিয়েছে সবকিছু। রফিক চাচা তাকে দেখে যেতে বলেছিল। বড় ক্যাম্পটার পেছনে দাড়িয়ে একবার পেছনটা ভাল করে দেখে নিল সে। কেউ নেই কোথাও। থাকলেও অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। দুটা ধান ক্ষেতের মাঝখানে বসে টিনের বাক্স থেকে কেরোসিন ভেজানো টুকরোগুলো বের করে নিল সে। দেশলাইয়ের প্যাকেট থেকে একটা কাঠি বের করে বাক্সটার বারুদ লাগানো অংশটায় ঘষল একবার। শীতে একটু মিইয়ে আছে বলে প্রথমবারে আগুন ধরল না। দুবার ঘষা দেবার পরই আগুন ধরে উঠল কাঠিটায়। একসাথে তিনটা কাপড়ের টুকরোয় আগুন দিল সে। তারপরই হাতে নিয়ে দৌড় দিল। প্রথমেই দৌড়ে গেল সে বড় ক্যাম্পটার ডানপাশের ছোট ক্যাম্পটায়। এটাতেই সব অস্ত্রশস্ত্র রাখা হয়। দুইটা কাপড়ের টুকরো ছুড়ে দিল সামনে। একটা পড়ল উপরের দিকে আর একটা নিচে যেখানে তাবুর খুটিটা এসে মাটি স্পর্শ করেছে সেখানে পড়ল। আর একটা কাপড়ের টুকরো বড় ক্যাম্পটার দিকে ছুড়ে দিয়ে আবার আবার জায়গায় ফিরে আসল সে। আরো তিনটা কাপড়ের টুকরোয় আগুন লাগিয়ে ছুটে গেল ছোট ক্যাম্পগুলোর দিকে। প্রথমে ছুড়ে দেওয়া টুকরোগুলো থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে আস্তে আস্তে। সেদিকে তাকিয়ে দৌড়ে যেতেই কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেল সে। কাপড়ের টুকরোগুলো মাটিতে পড়ে সেখান থেকেই জ্বলছে লালচে আগুন। এই লালচে আগুনেই মুখটা দেখতে পেল রাজু। গভীর মমতা আর দৃঢ় একটা মুখ। রফিক চাচা। পর মুহুর্তেই হাতে একটা টান অনুভব করল রাজু। দুজনে ছুটতে লাগল ধানক্ষেতের দিকে। ক্যাম্পের ভেতর মনে হয় সবাই জেগে উঠেছে। সামনের দিকে ছোটাছোটির শব্দ শুনা যাচ্ছে। তার মধ্যে মাথা নিচু করে ছুটে চলছে দুজন। একটা ধানক্ষেতের মাঝখানে এসেই হঠাৎ দাড়িয়ে পড়ল তারা। তারপর শুয়ে পড়ল দুটো ধানগাছের সারির মধ্যে। আগুনের বড় শিখাটা এখান থেকেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। প্রচন্ড ক্লান্তি লাগছে রাজুর। সেখানেই ঘুমিয়ে পড়ল সে গভীর প্রশান্তি নিয়ে।
৪.
২০১৫ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর।
মাঠে ধানের ছড়াছড়ি। গ্রামের সবাই ধান কাটায় ব্যস্ত। তারপরও আজকের দিনটা আলাদা। সবার চোখে ধানকাটার আনন্দের পাশাপাশি বিজয়ের আনন্দ, মুক্তির আনন্দ। শুধু আনন্দ নেই মিলির মনে। সে নদীর ধারে একটা তালগাছের নিচে দাড়িয়ে আছে। ১৯৭১ সালে এখানেই নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছিল রাজুকে। মিলি এখন অনেক বড় হয়েছে। তারপরও সেইদিনের কথা ভূলতে পারেনি সে। রাজুর ঠোটের কোনায় লেগে থাকা হাসিটা এখনও চোখে ভাসে তার। মনে হয় এইতো কয়েকদিন আগের ঘটনা। সেদিনের ঘটনার পরই পাকিস্তানিরা কোনঠাসা হয়ে পড়ে এখানে। আর তারা মাথা তুলে দাড়াতে পারেনি। কিন্তু চলে যাওয়ার পূর্বে গ্রামের সবাইকে যেখানে পেয়েছে সেখানেই হত্যা করেছিল তারা। সেই দিনটা ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন হয়ে আছে তার জীবনে। প্রতিবছর বাড়িতে আসলেই মিলি এখানে এসে দাড়ায়। এখানে দাড়ালেই মনে হয় রাজু মারা যায় নি। এখনও সেই ছোট্ট শিশুর মতই বেচে আছে সে....
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×