somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তেীহিদুল ইসলাম শওকত
এখানে কিছু লিখলে দু দিন পর পর এসে ইডিট করে পরিবর্তন করতে হয়। একজন জীবিত ব্যাক্তির সম্পর্কে স্থায়ী কিছু লেখা যায় না কারন সব কিছুই পরিবর্তনশীল তাই আমার সম্পর্কে এখন লেখার মত কিছু নেই।

বাবরি মসজিদ রায় কে জিতল কে হারলো

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম ধর্মীয় বিভেদ এবং ক্ষতের নাম বাবরি মসজিদ। বাবরি মসজিদ সম্রাট বাবরের আমলে নির্মিত হলেও এটা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় ব্রিটিশ আমলে। ব্রিটিশ আমলে একদল হিন্দু জিগির তুলে যে মসজিদের জায়গায় রামের জন্মভুমি ছিল এবং সেখানে মন্দিরও ছিল। আর সেই মন্দির ভেঙ্গেই নাকি মসজিদ হয়েছিল। সেই থেকে আস্তে আস্তে এই বাবরি মসজিদ ইস্যুতে ভারতের ধর্মীয় রাজনীতি উত্তপ্ত হতে থাকে। একটা সময় এই মসজিদই হয়ে উঠেছিল সাম্প্রদায়িক রাজনিতিকদের ক্ষমতা যাওয়ার সিড়ি। বাবরি মসজিদের জল অনেক দূর গড়ালেও বাবরি মসজিদের উপর সব চেয়ে বড় হামলাটি আসে ১৯৯২ সালে।



সেই বছর বিজেপি শীর্ষ নেতাদের মদদেও আরএসএস , ভিএইচপি কর্মীদের কে নিয় লাল কৃষ্ণ আদভানি বাবরি মসজিদ মুখী মার্চ করে এবং তারা মসজিদের মুল ফটকে ঢুকে মসজিদ গুড়িয়ে দেয়। যদিও মসজিদটি ১৯৪৯ সালের পর থেকে বন্ধ ছিল আর সেই সালে মুসলিমরা সর্বশেষ মসজিদটিতে নামাজ পড়তে পেরেছিল। ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে পুরো ভারত বর্ষ মুহূর্তেই তেতে উঠে। সে সময় পুরো ভারত ব্যাপী হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেই দাঙ্গা ভারত জুড়ে প্রায় ২০০০ মানুষ নিহত হয় এবং অসংখ্য ঘর বাড়ি, দোকান এবং স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলে যার বেশির ভাগই মুসলিম এবং মুসলিমদের ছিল।
সেই দাঙ্গার তপ্ত আগুন বাংলাদেশ, পাকিস্থান এবং মিডল ইস্টে পৌঁছে যায়। সেই দাঙ্গার আগুনে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই দাঙ্গার রেশে প্রায় বাংলাদেশে ১০ জনের মত নিহত হয়। ১৯৯২ সালের সেই দাঙ্গার পরে বিজেপি নতুন শক্তিতে উজ্জেবিত হয়ে মোটামুটি ভোট পার করার একটা পথ পেয়ে যায়। বাবরি মসজিদ ইস্যুতে অবশেষে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় প্রদান করে। রায়ে নিম্নের পয়েন্ট গুলো জানা যায়।

১) বাবরি মসজিদের নিচে কোন মন্দির বা ধর্মীয় স্থাপনা পাওয়ার যথাযোগ্য কোন প্রমাণ নেই
২) তবে বাবরি মসজিদ একেবারে খালি জায়গাও বানানো হয় নি সেটার নিচে স্থাপনার ধংশাবশেষ পাওয়া গিয়েছে তবে সেটা ইসলামিক বা হিন্দু ধর্মীয়ও না। সাধারন স্থাপনা থাকতে পারে।
৩) শুধু মাত্র বিশ্বাসের উপর ভর করে কাওকে বঞ্চিত করা যায় না।
৪) মসজিদ ভাঙ্গা সম্পূর্ণ আইন বিরোধী কাজ ছিল
৫) সুন্নি ওয়াকপ বোর্ড জমির সম্পূর্ণ মালিকানা দেখাতে পারে নাই।
৬) মসজিদের বিতর্কিত জায়গা সরকারকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সেখানে রাম মন্দির নির্মান করা যাবে।
৭) মুসলিমদের কে মসজিদ বানানোর জন্য অযোধ্যা ৫ একর জায়গা বরাদ্দ দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মোটামুটি এই ছিল রায়ের পর্যবেক্ষণ বা অবস্থান। এই রায়কে কেন্দ্র করে ভারতের অনেক গুলো রাজ্য ইস্কুল কলেজ বন্ধ এবং উত্তর প্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করে রাখা হয়েছে।

উক্ত রায় সুন্নি ওয়াকপ বোর্ড মেনে নিয়েছে এবং তারা হাইকোর্টের রায় কে মেনে চলবে বলে জানিয়েছে। উক্ত রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে মুসলিমদের মধ্য।
তবে রায় থেকে এতটুকু বলা যায়, এত দিন আরএসএস এবং বিজেপি যেই ধরনের প্রচারণা চালিয়েছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সেটাতে কিছুটা টান পড়বে। বিজেপি এবং আরএসএস এর প্রপাগান্ডা সেল গুলো এতদিন প্রচারণা চালিয়েছে যে, মুসলিমরা মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ বানিয়েছে সেটা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
এই রায়টি আসলে একধরনের সমজতা রায় বলে মনে হচ্ছে কারন হিন্দু মন্দিরের কোন প্রমাণ নেই আবার ওয়াকপ বোর্ড জমির মালিকানা প্রমানে ব্যার্থ। সংখ্যাগুরুর সেন্টিমেন্ট কাজ করেছে স্পষ্ট ভাবে রায়ের উপর। আর মুসলিমদের সান্তনা হিসেবে ৫ একর জমি অযোধ্যার কোন ভাল জায়গায় দিয়ে শান্ত রাখা হচ্ছে। যাইহোক ভারতের মুসলিমরা মেনে নিয়ে যদি শান্তি বজায় রাখতে পারে সেটাই কাম্য। আর ভারতের বিষয়ের কারনে আমাদের দেশে যেন কেউ হেইট ক্রাইমের শিকার না হয় সেটা আমাদের সবার কাম্য।

কারেকশন: সুন্নি ওয়াকপ বোর্ড রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং তারা জানিয়েছে তারা সম্পূর্ণ রায় পড়ে পরবর্তী করনীয় ঠিক করবে। তাদের আইনজীবী জানিয়েছে এটা এক টুকরো জমির মালিকানার বিষয় নয় এটা আগামী ভারতে মুসলিমদের অবস্থান বা অস্ত্বিত রক্ষার বিষয় এবং আগত দিনে মুসলিম স্থাপত্য বাচিয়ে রাখার সংগ্রাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৯
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×