কারো বিরুদ্ধে চেকের মামলা হলে মামলার খবর শুনে অনেকে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। কারণ, চেকের মামলার রায় হলে অবশ্যই ৫০% টাকা আদালতে জমা দিয়ে জামিন নিতে হয়। শুধু তাই নয়, এই ধারায় অপরাধ করলে ওই ব্যক্তি এক বছর কারাদণ্ড বা চেকে লিখিত টাকার তিনগুণ অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
আমরা আজকে আলোচনা করবো চেকের মামলা হলে আপনার করণীয় সংক্রান্তে। একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, মামলা হলেও আপনার যুক্তি তুলে ধরতে পারলে কিংবা আইনজীবী যদি আপনার যুক্তি আদালতের নিকট তুলে ধরতে পারেন তবে আপনি রেহাই পেতে পারেন। কারণ, অভিযুক্ত হলেই নিশ্চিত করে বলা যাবে না যে কেউ অপরাধী। আইনের চোখে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত নিরপরাধ বলে গণ্য। প্রাথমিকভাবে যেন এ মামলা সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা করে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয় সে চেষ্টা করতে হবে।
যেকোনো চেকের মামলা দায়ের করা হয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কর্তৃক মামলাটি গ্রহণ করলে আসামীর বরাবর সমন দেওয়া হয়। সমনে আসামী উপস্থিত হয়ে জামিন নিতে হয়, জামিন না নিলে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়।
এক্ষেত্রে অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করে কিংবা গ্রেফতার হলে জামিন চাইতে পারেন।
জামিন নিলে আপনার মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলি হবে। অভিযোগ গঠনের দিন আপনাকে হাজির হয়ে নতুন করে পূর্বশর্তে জামিন চাইতে হবে এবং জামিননামা সম্পাদন করতে হবে। তখন আপনি মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করতে পারেন। অব্যাহতির আবেদন নাকচ হলে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।
আর আপনি কোনো কারণে আদালতে হাজির না হলে আপনার নামে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি হতে পারে। এতে হাজির না হলে আপনার মালামাল ক্রোকের আদেশ হতে পারে এবং আপনার অনুপস্থিতিতেই বিচার হতে পারে। তাই মামলা হলেই আপনি অপরাধী নয়, আইনের সহায়তা নিন।
কারণ, একবার আপনার অনুপস্থিতিতে একতরফা রায় হলে আপনার কিছুই করার থাকবে না এবং চেকের মামলার রায় হলে অবশ্যই ৫০% টাকা আদালতে জমা দিয়ে জামিন নিতে হয়।
এখানে একটি বিষয় বলে রাখা ভালো, বেশিরভাগ মানুষই ধরে নেয় চেকের মামলা মানে শাস্তি নিশ্চিত। আসলে বিষয়টি এমন নয়, বরং আপনি আপনার যুক্তি তুলে ধরে কিংবা আপনার আইনজীবী মামলার কোন আইনগত ত্রুটি রেব করতে পারলে এবং আপনার স্বপক্ষে ভালো ট্রায়াল করতে পারলে আপনি খালাসও পেতে পারেন। নিম্ন আদালত খালাস কোন কারণে খালাস না দিলেও মামলায় প্রতিদন্ধিতা করার কারণে আপীল আদালতেও আপনি প্রতিকার পেতে পারেন। তাই মামলা হলে এড়িযে না চলে অবশ্যই আইনজীবীর শরণাপন্ন হন্ আর আপনি যদি চান তাও মামলা চলাকালীন সময়ে অনায়াসে করতে পারেন।
-এম টি উল্যাহ
আইনজীবী
01733 594 270
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:৫৮