কুমিল্লা জেলা যুবদলের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গতকাল রবিবার বিবদমান দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সম্মেলনস্থল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় উভয় গ্রুপ প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি রিভলবার উদ্ধারসহ ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কুমিল্লা টাউন হলে গতকাল সকালে জেলা যুবদলের সম্মেলন শুরু হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা কান্দিরপাড় এলাকার টাউন হল মাঠে যাওয়ার সময় গেটে তাঁদের বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে পাশের চৌরঙ্গী মার্কেটের ওপর থেকে কে বা কারা একটি ককটেল নিক্ষেপ করে। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতাদের অভ্যর্থনা জানাতে টাউন হল গেটে জড়ো হওয়া যুবদলের দুই গ্রুপ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। জেলা বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু সমর্থিত গ্রুপের যুবদল নেতা-কর্মীরা প্রথমে ভিক্টোরিয়া কলেজ রোডে অবস্থান নিয়ে টাউন হল মাঠে ও পূবালী চত্বরে অবস্থান নেওয়া প্রতিপক্ষকে ধাওয়া করে বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও গুলি চালায়। জবাবে প্রতিপক্ষ জেলা বিএনপি নেতা হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন সমর্থিত গ্রুপের যুবদল নেতা-কর্মীরাও ধাওয়া করে বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও গুলি চালায়। সংঘর্ষকালে লাঠিসোঁটা হাতে এক পক্ষ অন্য পক্ষকে ধাওয়া করার পাশাপাশি মুহুর্মুহু ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষে অন্তত ২৫-৩০টি ককটেল বিস্ফোরণ ও অর্ধশতাধিক গুলি বিনিময় হয়। এ সময় বিএনপি অফিসের সামনে কালো কাপড়ে মুখঢাকা কয়েকজন অস্ত্রধারীকে দেখা গেছে। তাদের হাতে পিস্তল, পাইপগান, এলজিসহ বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে। এ সময় দুই গ্রুপের ছোড়া ইটের আঘাতে পুলিশের এসআই মোসাদ্দেকুল মাওলা, এসআই শ্যামল চক্রবর্তী, কনস্টেবল নাঈম ও শামীম আহত হন। সংঘর্ষে সাক্কু গ্রুপ সমর্থিত যুবদলকর্মী মিলন গুলিবিদ্ধসহ আহতরা হলেন রাসেল, ফেরদৌস, সাদনান প্রমুখ। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ মিলনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৫ জনকে আটক করে পুলিশ। এরা হলো, সুমন, মোস্তাফিজ, হৃদয়, পাভেল, রকিবুল, জহির, আনু, রুবেল, ফিরোজ, রিপন-১, রনি, রিপন-২, আবুল হাসান, মনির ও ইয়াছিন।
কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহজাহান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২০ রাউন্ড টিয়ারশেল এবং ২৪ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে বলে তিনি জানান।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা যুবদলের কাউন্সিলরদের নিয়ে কমিটি করতে চাইলেও দুই পক্ষের আপত্তির কারণে শেষ পর্যন্ত কমিটি চূড়ান্ত হয়নি। এর আগে করা আহ্বায়ক কমিটিতে রয়েছেন আহ্বায়ক আমিরুজ্জামান আমির, যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর রহমান মাসুদ ওয়াসিম ও নজরুল ইসলাম ভঁূইয়া স্বপন।
Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




