somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১ দিনে ভারত ভ্রমন, পর্ব-০২।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ দিনে ভারত ভ্রমন, পর্ব-০১।


সুপ্রিয় ব্লগারবৃন্দ, সবাই কেমন আছেন? বইমেলা কেন্দ্রিক ব্যস্ততা এখন সবার, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তারপরও, আমি কথা দিয়েছিলাম কয়েকদিন পর ভারত ভ্রমনের ২য় কাহিনী নিয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে। তার-ই প্রেক্ষিতে আজ আবার আপনাদের সামনে হাজির হলাম। আজ আপনাদের জানাবো, "১ দিনে ভারত ভ্রমন- পর্ব ০২" তথা শেষ পর্ব।

এই বিষয়ের শিরোনামটি এভাবেই করেছি কারণ সেই দিন রাতেই আমাকে ঢাকা ফেরত আসতে হয়েছিল। কেননা পরদিন সকাল নয়টায় আমাকে অফিসে পৌছতেই হবে। তাই তাড়াহুড়ো করে ভারত ভ্রমন শেষ করতে হয়েছে। এখন প্রশ্ন হতে পারে, এতো তাড়াহুড়ো’র কি-ই বা প্রয়োজন ছিল? হ্যাঁ, এই প্রশ্ন করতে পারেন! বলছি, শুনুন... ১ বছর আগে ভারতের ভিসা লাগিয়েছিলাম, যাওয়া হয়ে উঠে নি। অফিসের এক কলিগ বললো, ভিসা পাবার পর যদি ভারতে না ঢুকেন তবে পরবর্তীতে ভারতের ভিসা পেতে ঝামেলা করবে। শুধুমাত্র পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন সিল মারার জন্য ভারতে ঢুকতে হয়েছে!

এবার আসি মূল আলোচনায়। মূল আলোচনার পাশাপাশি ছবিও আপলোড দেবো আশা করছি। বাংলাদেশ ও ভারতের ইমিগ্রেশন কিভাবে ক্রস করলাম তা ১ম পর্বে বলেছি। দ্বিতীয়বার বলার প্রয়োজন বোধ করছি না! চ্যাংড়াবান্দা দিয়ে ঢুকার পর ভাবলাম যেহেতু আমি মাত্র ৪/৫ ঘন্টা ভারতে অবস্থান করবো, তাই ভাবলাম আত্নীয়’র বাড়ীর জন্য কিছু না নিয়ে গেলে কেমন হয়। চ্যাংড়াবান্দা বর্ডার থেকে অটোতে করে দুর্গামন্দির মোড় পর্যন্ত গেলাম। অটো ওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আচ্ছা এখানে কোন মার্কেট আছে কি? জবাবে বলল, দাদা এখানে কোন মার্কেট পাবেন না, মার্কেট করতে হলে আপনাকে যেতে হবে ময়নাগুড়ি। আমি তো পড়লাম মহা বিপদে। আমি বললাম, দাদা ময়নাগুড়ি এখান থেকে কতদূর? বলল, লোকাল বাসে যেতে ৩০/৪০ টাকা(পশ্চিম বঙ্গের লোকজন রুপি কে টাকা বলে) লাগবে। পরে আমি ভাবলাম যে না আমাকে ময়নাগুড়ি যেতেই হবে। ঐ মোড়ে দাড়াতেই একটা লোকাল বাস আসলো। আমি বাসে উঠলাম। বাসটি রাজ্য সড়ক ১২-এ দিয়ে সাঁ সাঁ করে চলতে থকলো।রাস্তাটা বেশ বড় এবং সমান। রাস্তার দুপাশে অনেক চা বাগান দেখতে পেলুম এবং ধানকাটার পর বাংলাদেশের জমি গুলো যেমন দেখা যায় ঠিক তেমন জমিও চোখে পড়ল। আধঘন্টা পরই ময়নাগুড়ি পৌছলাম। পুরো রাস্তাটাই আমাকে দাড়িয়ে যেতে হয়েছে!

(লোকাল বাসগুলো দেখতে এমনই, তবে আমাদের দেশের মতো লঙ্কর ঝক্কর না)

বাসটি ময়নাগুড়ি লোকাল সাব পোষ্ট অফিসে নামিয়ে দিল। এদিকে খিদেয় আমার পেট চো চো করছিল। রাস্তার পাশে একটি দোকান থেকে ঝালমুড়ি ও ছোলাবুট সেদ্ধ মাখা খেলাম, অন্যরকম স্বাধ! বাংলাদেশের কোন এক মফস্বল শহরের মতোই মনে হল। তবে রাস্তাঘাট বেশ ফাঁকা। রাস্তায় রিকশাও চলতে দেখলাম। তবে আমাদের বাংলাদেশের মতো বিশৃঙ্খল যান চলাচল না। নেই তেমন জানজট। ওখানে নেমে হাটলাম। জারদা ব্রিজ পারহয়ে নতুন বাজার, বাজারে ঢুকতেই একটি কনফেকশনারী দোকান চোখে পড়ল। ওখান থেকেই বেশকিছু চকোলেট, স্নাক্স, চিপস এবং কিছু কসমেটিক্স খরিদ করলাম।

(ময়নাগুড়ি নতুন বাজার)

জারদা ব্রিজ ধরলা নদীর উপর। নদীর উপর থেকে আর একটি মন্দির চোখে পড়ল। মন্দিরের সংখ্যাধিক্য মনে হল। হবেই তো কেননা হিন্দু প্রধান দেশ। নদীটি মোটমুটি গভীর মনে হলো। বর্ষাসময় হয়তো বেশ জল গড়ে।

(নদীর ওপারে মন্দির)

(ধরলা নদী)

নতুন বাজারে কেনাকাটা করে যেখানে নেমেছিলাম সেদিক হাটা ধরলাম। হাটতে ভালই লাগছিল। নতুন জায়গায় হাটতে আমার সবসময় ভালো লাগে। ওখানে আর আমাদের দেশের মেয়েদের মাঝে একটিই পার্থক্য পরিলক্ষিত করলাম, ওখানে ওরা ওড়না পড়ে না আর আমাদের মেয়েরা ওড়না পড়ে। আর তাছাড়া ময়নাগুড়ি শহরটা বাংলাদেশের কোন এক মফস্বল শহরের মতোই। রাস্তার মোড়ে মোড়ে মন্দির। তবে শহরটা বেশ পরিষ্কার মনে হলো।

(মহিষের মূর্তি)

আরও হাটলাম। হাটতে হাটতে বাসস্টপ পর্যন্ত এসে পাশের দোকান থেকে আরও কিছু চকলেট খরিদ করলাম। এরপর চ্যাংড়াবান্দার দিকে রওয়না, টাটার তৈরি প্রাইভেট কারে চ্যাংড়াবান্দা পৌছাই। ভাড়া বেশি নিয়েছিল, সে হয়তো বুঝেছে এই বাঙ্গালী এখানে নতুন। ৩৫০ রুপি দিতে হয়েছে তাকে। এখন বাংলাদেশে ঢুকার পালা। বর্ডারেই নেটওয়ার্ক পেলাম। আমার আত্নীয়কে ফোন দিয়ে কথা হলো। সে ওপারে দড়িয়ে আছে আমাকে রিসিভ করার জন্য। আমি একটু ভয়ে ছিলাম। এত দ্রুত ঢুকলাম আবার দ্রুত বের হলাম। ইমিগ্রেশনে কিছু বলে কি না, এই নিয়ে বেশ দুঃচিন্তায় ছিলাম। বুকে ফু দিয়ে ঢুকলাম ইমিগ্রেশন অফিসে, ধপাধপ সিল মেরে আমাকে পার করে দিল। বি এস এফ আমার বেগ চেক করল।

(এই সাইবোর্ড দেখে প্রাণ ভরে গিয়েছিল)

তারপর আমি বাংলাদেশে ঢুকলাম। ওখানে বি জি বি আমার লাগেজ চেক করার পর আমি চলে গেলাম ইমিগ্রেশন অফিসে। ওখানে এরাইভাল সিল দিয়ে আমাকে বিদায় করে দিল। পাশেই আমার আত্নীয় আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। আমাকে দেখে একগাল হাসি দিলো, বললো ভালই তো ভারত ভ্রমন করলেন এবার চলেন। বুড়িমারি বর্ডার থেকে আরও কিছু কসমেটিক্স খরিদ করলাম। পরে মটর সাইকেলে আমার আত্নীয়র বাড়ি।

সন্ধায় তার বাড়ি থেকে ঢাকার দিকে রওয়ানা হই। পরদিন সকাল ৭ টায় সহিসালামতে ঢাকায় পৌছাই।



সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৫
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×