somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ মা

২০ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ধুকধুক করে কিসের যেন শব্দ হচ্ছে। সে চমকে ওঠে, একটু ভয় ভয়ও করে। এদিক ওদিক নড়াচড়ার চেষ্টা করতেই সে বুঝতে পারে পুরোপুরি ডুবন্ত অবস্থায় আছে সে। সামনে বা পিছনে যাবার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত সে শান্ত থাকে। কিন্তু শরীরকে কোনভাবেই আয়ত্বে আনা যাচ্ছে না, শরীরটা ঘুরেই যাচ্ছে, ঘুরেই যাচ্ছে। ধুকধুক শব্দটা মনে হচ্ছে তার ভেতর থেকেই আসছে। আতংকে চেঁচাতে চায় সে, কিন্তু কার উদ্দেশ্যে চেঁচাবে? সে আসলে কে? কারো কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে, মনে হচ্ছে দেয়ালের ঠিক ওপর পাশে কেউ কথা বলছে। দেয়ালে কান পাতে সে।

“অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু। যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে”। কারো রুক্ষ স্বর শোনা যায়।
“আমি কি করবো? আমি তো দুইবার চেষ্টা করলাম। কুলসুম খালা তো একটু হলেই আমাকে মেরেই ফেলেছিলো। এভাবে তো লোক জানাজানি হয়ে যাবে”। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদার শব্দ শোনা যায়।
“আমি কি জানি?” আবার রুক্ষ স্বর। “আমার সম্মান নিয়ে টানাটানি দেখলে আমি তোমাকে গলা টিপে মেরে নদীতে ফেলে দেবো। যাচ্ছি এখন”।

ইনিয়ে বিনিয়ে কান্নার আওয়াজ শোনা যায়। কাকে যেন উদ্দেশ্য করে ক্রন্দনরত কন্ঠ বলে, “মর, তুই মরিস না কেন। বেজন্মা কোথাকার, মর তুই”।
সে চিন্তায় পড়ে। রিনরিনে কন্ঠস্বর কাকে মরতে বলে? যাকেই মরতে বলুক, তার এসব নিয়ে ভাবনা কি? মুখ হা করে সে পানি খেতে থাকে। ভীষন ক্লান্ত লাগছে, এখন সে বিশ্রাম নেবে। সে কে, কোথায় আছে এসব নিয়ে পরেও ভাবা যাবে।


দিন যায়। প্রকৃতির নিয়মে সে আস্তে আস্তে বুঝতে শেখে। সে বোঝে, এই ঘরটা তার। এই পানিভরা ঘরে সে সম্পূর্ন নিরাপদ। ঘরটা অবশ্য তার একার না, রিনরিনে কন্ঠের মানুষটা তাকে এই ঘরে থাকতে দিয়েছে। মানুষটা নিশ্চই তাকে অনেক ভালোবাসে, নতুবা নিজের ঘরে কি আর অন্যকে কেউ থাকতে দেয়? মানুষ বলে ডাকতে তার ভালো লাগে না, কি বলে ডাকা যায়? ভাবতে ভাবতেই সজোরে দুলে উঠলো সে। মানুষটা কোন কিছুর সাথে ধাক্কা খেয়ে ব্যথা পেয়েছে। কঁকিয়ে ওঠে মানুষটা, “ও মাগো, কি ব্যথা। মাগো তুমি কোথায়?” মা শব্দটা কানে বাজে তার, কি সুন্দর ছোট্ট একটা শব্দ। রিনরিনে কন্ঠস্বর বিপদ এলেই মা নামের কারো কাছে যেতে চায়, বারবার মাকে ডাকে। মা নিশ্চই অনেক শক্তিশালী, সব বিপদ থেকে রক্ষা করে। এই মানুষটাকে সে মা বলেই ডাকবে, তার জগতে এই মানুষটা ছাড়া আর কে আছে? বুকের অন্তঃস্থল থেকে শব্দটা উঠে এসে তার গায়ে কাঁপন ধরিয়ে দেয়, টের পায় মা শব্দটা বলার সাথে সাথে বুকের ভেতরের ধুকধুক শব্দটা যেন আরো দ্রুত হচ্ছে। এখন আর সে শব্দটাকে ভয় পায় না, সে জানে এটা তার নিজের শরীরের শব্দ। মা মা বলে সে হাত বুলায় দেয়ালে, দেয়ালের ওপরপাশেই যে তার মা।


সপ্তাহ যায়। এখন সে অনেক কিছু বোঝে। সে বোঝে, তার মা অনেক দুঃখী। লুকিয়ে থাকে, মাঝে মাঝে কারো কাছে কান্নাকাটি করে। যার সাথে কথা বলে, সে মাকে অনেক বকাঝকা করে। ফোন নামে একটা জিনিসের মাধ্যমে তার মা ঐ মানুষটার সাথে যোগাযোগ করে। কারন কিছুক্ষণ পরপর তার মা বলে, “প্লিজ আর যাই করো, আর ফোনটা কেটো না। আমার কথাটা শোনো”। ফোন নামক জিনিসটা কেটেই তার মা কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে। আহারে, তার মার কি কষ্ট। তার চোখ দিয়েও পানি ঝরে, হাহাকারে বুক ফেটে যায়। একবার যদি সে এই ঘর থেকে বের হতে পারে, তবে মায়ের সব দুঃখ সে দূর করে দেবে। পানির মাঝে ঘুরতে ঘুরতে সে দেয়ালে হাত বুলায়, “মা, আমি তোমার কাছে আছি তো মা। তুমি কেঁদো না”।


মাস যায়। একদিন খ্যানখ্যানে কন্ঠস্বরের এক মানুষ আসে। কি বিশ্রী স্বর। ভয়ে সে গুটিয়ে যায়। বারবার সে মাকে বলে, “মা তুমি এর সাথে কথা বলো না”। মা কিছু বোঝে না, তার মাটা বড্ড বোকা। একা একা থাকে তো, তাই যাকেই পায় তার সাথেই কথা বলে। বিশ্রী কন্ঠস্বর এসেই পেট টিপাটিপি শুরু করে,
“পেট তো অনেক বড় হইয়া গ্যাছে। চেহারাও তো দেখি হইছে মহারাণীর মত। ছেলে হইবো মনে হয়”।
রাগে তার পুরো শরীর জ্বলতে থাকে। ইচ্ছে করে ধমক দিয়ে মার কাছ থেকে মানুষটাকে সরিয়ে দিতে। তখন তার মার গলা শোনা যায়,
“খালা, একটা কিছু করেন। যেভাবেই হোক খালা, আপনাকে কিছু করতেই হবে। ৫ মাস হয়ে গেলো, আর কতদিন মিথ্যা বলে এখানে লুকিয়ে থাকবো?” ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে তার মা।
“পেট বান্ধানোর সময় মনে আছিলো না?” কুৎসিত ভাবে ধমক দেয় খালা নামের সেই মহিলা। “দেখি কি করা যায়। তোমার নাগর আসবো কালকে? তাহলে কালকেই ব্যবস্থা করতে হবে”।
কিসের ব্যবস্থা? নাগরটাই বা কি জিনিস? তার চিন্তা হয়। এই খালাকে তার একটুও পছন্দ হচ্ছে না, যদি এই দুষ্ট মহিলা তার মার কোন ক্ষতি করে? প্রাণপণ চেষ্টা করে সে ঘর থেকে বেরুবার জন্য, তার মাকে বাঁচাতেই হবে।
“উফ মাগো” পেটে হাত দিয়ে তার মা ফুঁপিয়ে ওঠে। ইশ, একটুও খেয়াল ছিলো না, পায়ের আঘাত দেয়ালে লাগতেই মা ব্যথা পেয়েছে। তাড়াতাড়ি সে মাকে হাত বুলিয়ে আদর করতে থাকে।


ঘুমিয়ে ছিলো সে, হঠাৎ কিছু একটার খোঁচা লাগতে উঠে পড়ে। তার মার কাতর ধ্বনি শোনা যাচ্ছে, মাকে কেউ অনেক ব্যথা দিচ্ছে।“চুপ কর বেটি। কোন শব্দ করবি না” ধমক দেয় খালা। সে চমকে ওঠে, তার ধারনা ঠিক ছিলো। খালা তার মার ক্ষতি করতে এসেছে। আবার খোঁচা লাগতে সে কেঁদে ওঠে, তার পরম আদরের ঘরটা খালা সূচালো কিছু দিয়ে ভেঙ্গে দিতে চাইছে। কাঁদতে কাঁদতে সে হাত পা ছুড়তে থাকে। তার মার কান্নার শব্দে সব ঢাকা পড়ে। রুক্ষস্বরের মানুষটা দৌড়ে কাছে আসে।
“কি করতেছো কুলসুম খালা? মাইরা ফেলবা নাকি? মানুষ মারা মামলায় ফেলবা? এখনি হাসপাতালে নিতে হইবো”।
“হাসপাতালে নেওন যাইবো না। ডাক্তার বুইঝা ফেলবো যে কি করতে চাইছি”।
“আমি তাকায় তাকায় রুবির মৃত্যু দেখতে পারুম না। এখনি হাসপাতালে নিবো আমি”।

সে কান্না থামায়। তার মার নাম তাহলে রুবি। রুক্ষস্বর মাকে হাসপাতালে নিতে চায়। এই খালার কাছ থেকে মাকে দূরে সরাতে পারলেই হবে।


হাসপাতাল নামক জায়গাটা ভালোই। কি সুন্দর করে তার মার ব্যথা সারিয়ে দিলো একজন মানুষ। গম্ভীর গলার স্বর, তার নাম নাকি ডাক্তার।তার ভীষন ইচ্ছে হতে থাকে ঘর থেকে উঁকি দিয়ে ডাক্তারকে দেখতে।
“আপনারা কি মানুষ না অমানুষ? জানেন আপনারা যে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন, তাতে বাচ্চা তো অবশ্যই, আপনারো জীবন সংশয় হবে? জানেন না ১২ সপ্তাহের পর আর বাচ্চা নষ্ট করা যায় না?” ধমকে ওঠে ডাক্তার।
তার মা চুপ করে থাকে। রুক্ষস্বর এবারে তার গলার স্বর অনেক নরম করে ফেলে।
“ডাক্তার আপা, আমরা বুঝি নাই। আমাদের মাফ করে দেন”।
“বাচ্চার অবস্থা কি এখনো জানি না। আলট্রাসোনগ্রাম করে দেখতে হবে বাচ্চার কি ক্ষতি হলো”।
“আপা, আপনি যা বলবেন তাই করবো”।
“ঠিক আছে, আপনারা অপেক্ষা করেন”।

ডাক্তারের পায়ের শব্দ দূরে মিলিয়ে যায়। এবারে রুক্ষস্বর বলে,
“চলো, ডাক্তার আসার আগেই বের হও। এসব পরীক্ষা টরীক্ষা করাতে পারবো না। আবার বলবে বাচ্চার চিকিৎসা করাতে। চলো”। তার মা কোন কথা বলে না।


মাসের পর মাস যায়। মা ভালো করে খায় না, চিৎকার করে কাকে যেন শুধু অভিশাপ দেয়। তার শক্তি কমে যেতে থাকে। আজকাল হাত পা নাড়াতেও কষ্ট হয়। পানির পরিমাণও অনেক কমে গেছে। কি খাবে সে? নির্জিব হয়ে শুধু সে মাকে ডাকতে থাকে। মার কান্না আর সহ্য হয় না। কবে সে বের হবে এই ঘর থেকে? মাঝে মাঝে কুলসুম খালা আসে। টিপে টুপে দেখে। একদিন উল্লসিত কন্ঠ শোনা যায়,
“খোদা মুখ তুলে চাইছেন রে রুবি। তোর বাচ্চা তো আর নাই। আর কি নড়ে?”
মার দুর্বল গলা শোনা যায়, “না খালা। অনেক দিন হয়ে গেছে, নড়ে না”।
খালা উত্তেজিত গলায় বলে, “দেখছিস? আমি কোনদিন ব্যর্থ হইনাই”।

কিছুদিন পরেই হঠাৎ একদিন সে পাগল হয়ে যায় বাইরে বেরুবার জন্য। তার মা ব্যথায় চিৎকার করতে থাকে। সে প্রাণপণ চেষ্টা করে মাকে ব্যথা না দেবার জন্য। নিজেকে ধমক দেয়, কিন্তু কিসের এক টানে তার মাথা নিচের দিকে যেতে চায়। আশে পাশে অনেক কোলাহল শোনা যায়, সবার উত্তেজিত কন্ঠ, “হাসপাতালে নিতে হবে”। সে খুশী হয়, হাসপাতালে গেলেই তার মার ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। আর এবারে সে ডাক্তারকেও দেখবে; গম্ভীর গলার ডাক্তার।

চারপাশে ভীষন ছুটাছুটি, হৈ চৈ। মাকে একটা জায়গায় শুইয়ে রেখে সবাই কোথায় যেন চলে গেলো। তার মা যে ব্যথায় মরে গেলো! একটু পর পর একজন মানুষ এসে মাকে দেখে যাচ্ছে। কি যেন দেখে আর বলে, “নাহ, এখনো ফুল ডায়লেটেশন হয় নাই। মা, আপনাকে আরেকটু কষ্ট সহ্য করতে হবে”। মা দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে, “অসুবিধা নাই ডাক্তার। আমার বাচ্চা তো নাই, আমি আগেই জানি”। ডাক্তার তখন আর বেশী গুরুত্ব দেয় না।
“আলট্রাসোনোগ্রাম করা আছে?”
“হ্যাঁ আছে”।


সে অবাক হয়। নাহ, এই শব্দটা তার চেনা। এটা তো মা করেনি, রুক্ষস্বর মাকে করতে দেয়নি। মা অন্যরকম বললো কেন?
মা ব্যথায় চিৎকার করে উঠতেই এবারে সবাই ছুটে আসে। ডাক্তার গ্লাভস দাও, সিজার আনো বলে কাকে যেন নির্দেশ দিতে থাকে। মার সুতীব্র চিৎকারের সাথে এবারে সে ঘরের বাইরে বের হয়। চোখ খুলতে গিয়েই বন্ধ করে ফেলে, সাদা রঙের কি যেন তার চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। এটাকেই বুঝি আলো বলে? এটা ঘরের বাহির যাকে সবাই পৃথিবী আর জগৎ ডাকে? সবাইকে তার জানাতে ইচ্ছে হয় যে সে এসেছে, সে এসেছে তার অধিকার বুঝে নিতে। গলা ফাটিয়ে কাঁদতে থাকে সে, ফাঁকে ফাঁকে তার কানে ভেসে আসে ডাক্তারের কন্ঠ, “আরে, বাচ্চার তো চমৎকার লাংস। ইশ, মাটা অজ্ঞান হয়ে গেছে। প্রথম কান্না শুনতে পেলো না”।


“ছেলে হয়েছে, ছেলে!” চারিদিক থেকে অনেকে তাকে টানাটানি করতে থাকে। দুইজন মহিলা তাকে নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেয়। যে তাকে পাবে, সেই নাকি বকশিশ পাবে বেশী। সে আনন্দ নিয়ে উপভোগ করে এসব। বাহ, ছেলে হওয়া তো খুব ভালো। তার মাও নিশ্চই খুশী হবে। তাকে একজন সুন্দর করে সাদা কাপড় দিয়ে পেঁচায়। মা কোথায়? মাকে কখন দেখবে? মার গন্ধ অনেকক্ষন ধরে সে পায় না। এতক্ষনে চোখে আলো একটু সয়ে এসেছে। দূর থেকে দেখেই সে কি করে যেন বুঝতে পারে সে ওই বিছানায় শোয়ানো মানুষটাই তার মা। আয়া হাসিমুখে তাকে মার কাছে নিয়ে যায়।

“এ মরে নি?” মার আতংক ভরা কন্ঠ শোনা যায়।
সবাই চমকে ওঠে। ডাক্তার ছুটে আসে। “কি বলছেন আপনি! ছেলে বেঁচে আছে, শুকরিয়া করেন। একটু আন্ডারওয়েট, কিন্তু বাচ্চা বাঁচবে”।
“না আমি এ বাচ্চা নেবো না। কে বলেছে আপনাকে বাচ্চাকে বাঁচাতে? আমার বাচ্চা নাই”।
ডাক্তার তাকে তার মায়ের পাশে শুইয়ে দেয়। “আপনার বাচ্চাকে একবার দেখুন”।

মা তাকায় না। তীব্র বেদনায় সে ছটফট করে ওঠে। সে কিছুই বুঝতে পারছে না। সাড়ে ৯ মাস যে মা তাকে নিজের ঘরে থাকতে দিয়েছে, এখন কেন এত ঘৃণা? মা ছাড়া তো সে আর কাউকে চেনে না, মাকে ছাড়া সে কি করে থাকবে? আলোকে অগ্রাহ্য করে সে জ়োর করে তার চোখ খোলে, মাকে সে দেখবেই। মা মুখ ঘুরিয়ে রাখে। অভিমানে সে চোখ বন্ধ করে, তার মা তাকে চায় না। সে কি দোষ করেছে? চিৎকার দিয়ে কেঁদে ওঠে সে। তার কান্নায় আয়া আর ডাক্তারের চোখও ছলছল করে ওঠে, কিন্তু মা নির্বিকার। হাতের আঙ্গুলের ব্যবহার এখনো সে পুরোপুরি শেখেনি, তারপরেও মায়ের আঁচল ধরার চেষ্টা করে একবার। “মর তুই শয়তান”- মা তাকে ঠেলে সরায়, ডাক্তার না থাকলে সে পড়েই যেতো। এবারে সে বুঝতে পারে এতদিন তার মা তাকেই অভিশাপ দিয়েছে, তারই মৃত্যু কামনা করেছে দিন-রাত। ডাক্তার তাকে কোলে নিয়ে হাঁটতে শুরু করে। চারপাশ থেকে ফিসফিস কথা শোনা যায়, ডাক্তার তাকে এনআইসিইউতে নিয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে তাকে অনাথ আশ্রমে পাঠানো হবে। আর কোনদিন সে তার মাকে দেখতে পাবে না। অনেক মাস আগে যে ধুকধুক শব্দ শুনে সে ভয় পেয়েছিলো, সেই শব্দের উৎসস্থল হৃদপিন্ডের মাঝ থেকে একটি মাত্র শব্দ দলিথ মথিত হয়ে করুণ আর্তনাদ করে উত্থিত হয়, “মা”।


*********
উৎসর্গঃ সেই অজানা বাচ্চাকে, যাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লেবার রুমে ডেলিভারি করানোর পর তার মা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলো। উৎসর্গ সেই কর্তব্যপরায়ণ আপুকে, যিনি বাচ্চাটির ক্ষতির আশংকায় ডেলিভারির পর নিজ দায়িত্বে বাচ্চাটিকে নিরাপদ করার জন্য যতটুকু করা যায়, করেছিলেন।যদি বেঁচে থাকে, তবে বাচ্চাটির বয়স হয়েছে এখন দেড় বছরের মত। সে হয়ত কখনো জানবেও না যে তারও একজন মা ছিলো।
*********



৭৬টি মন্তব্য ৭৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×