somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পারিবারিক অশান্তি, কিছু বাস্তবতা ও ফ্যাক্ট

১৪ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৪:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রাচীনকালে পরিবারগুলোর ভেতরে শান্তি কতটা ছিল জানি না তবে আমাদের নানা-নানু, দাদা-দাদি এবং বাবা-মা, খালা-খালুদের ভেতরে যে বাঁধনটা এখনো দেখতে পাই এখনকার বেশিরভাগ কাপলদের ভেতরে তার দশ শতাংশও দেখতে পাই না। এর কারণ কী কেউ কখনো ভেবে দেখেছেন? এর জন্য কেউ দায়ী করেন পরিবর্তনশীল সমাজকে, কেউ সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে। এই উভয় শ্রেণীই বিষয়টাকে খুব সীমিত দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করে থাকেন। যাহোক, আমি আমার কিছু পর্যবেক্ষন ও চিন্তাভাবনা তুলে ধরি। আলোচনা হতে পারে...

১) সম্পর্ক এমন একটা জিনিস যা তৃতীয় ব্যক্তির পক্ষে কখনো পুরোপুরি বোঝা সম্ভব না, তাই সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তির পরামর্শ বা হস্তক্ষেপ সব সময়ই খারাপ ফল বয়ে আনে।
২) সমস্যা যতটা নিজেদের ভেতরে রাখা যায় তত সহজে এবং সুন্দর ভাবে সেটার সমাধান হয়ে যায়।
৩) অনেকই পুরুষই জানে না সে কেন বিবাহ করছে বা জানলেও ভুল ভাবে জানে, তাদেরকে আগে বুঝতে হবে কেন সে বিয়ে করবে। অনেক মেয়েরও পুরুষদের সম্পর্কে স্টেরিওটাইপ কিছু ধারণা আছে যা সুন্দর একটা সম্পর্ক নির্মাণের জন্য বাঁধা স্বরুপ। এদের উভয়কেই বিষয়গুলো নিয়ে গভীর ভাবে ভাবতে হবে, জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে।
৪) বউ কোন সাপোর্ট টুল না বরং হিউম্যান অপারেটিং সিস্টেমের একটা মেজর আপডেট, এই ফ্যাক্টটা ছেলেদের এবং তাদের মা'দের মাথায় রাখা জরুরি।
৫) জামাই কোন বারোমাসি শস্যক্ষেত্র না। এটা বউদের এবং তার দিকের আত্মীয়দের মাথায় রাখা জরুরি।
৬) নারীদের উপরে পুরুষদের চাইতে অন্য নারীরাই বেশি নির্যাতন করে থাকে, পুরুষদের উচিত বিষয়গুলো খেয়াল রাখা।
৭) আমাদের বেশিরভাগ মা'য়েরা নিজের মেয়ের শ্বশুরবাড়ির যে কাজগুলোর সমালোচনা করতে ছাড়ে না সেই কাজগুলো নিজের বউদের সাথে করতে একটুও কার্পন্যবোধ করে না। তাদের সামাজিক কাউন্সিলিং প্রয়োজন।
৮) অনেক মেয়ে আছে যারা শশুড়বাড়ির সকল কথা ও বিষয় নিজের বাড়িতে বা অন্য লোকের সাথে শেয়ার করে এবং পরামর্শ গ্রহণ করে সে অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে নিয়ে যায়। এদের জানা থাকা উচিত বাইরে থেকে একটা ফ্যামিলির কাজকর্ম যথাযথ মূল্যায়ণ কোনদিনও সম্ভব না সুতরাং পরামর্শ ভুল হতে বাধ্য যা তাদের জীবনকেই দূর্বিষহ করে ফেলে।
৯) অনেক শাশুড়ি আছেন যারা তাদের বউদের নামে পরিবারের বাইরের কোন সদস্যের কাছে ক্রমাগত নালিশ করতে থাকেন। এরা বোঝেন না ঐ ব্যক্তি বা পরিবার কোনদিনও তার জন্য টানা একমাসও কিছু করবে না, করলে বউ-ই করে যাবে পুরো জীবন। এদের হেদায়াত জরুরি।
১০) আমাদের দেশের মেয়েদের জন্য কিছু কাজের ব্যবস্থা করা জরুরি যাতে এরা অলস থাকতে না পারে। বেশিরভাগ পারিবারিক সমস্যার মূল কেন্দ্র এই অলস অলস নারীগোষ্ঠী।
১১) আমার পর্যবেক্ষন বলে, টিভি সিরিয়াল যে ফ্যামিলিতি যত জনপ্রিয় সেখানে অশান্তি তত বেশি। ছেলেদের উচিত বিয়ে করার আগে কৌশলে মেয়ে সিরিয়াল পছন্দ করে কিনা ও তার ফ্যামিলিতে সিরিয়াল কতটা জনপ্রিয় জেনে নেওয়া। সিরিয়াল ভক্ত মেয়ে বা ফ্যামিলিগুলো বাদ দিয়ে সম্পকর্ গড়লে সমসাময়িক অনেকগুলো সমস্যা/ক্যাচাল থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব (নিতান্তই ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষন ও মতামত এটা)।

আরো অনেক ফ্যাক্ট ও বাস্তবতা আছে এবং থাকতে পারে যেগুলো মাথায় রাখা জরুরি। সময় স্বল্পতা কারণে ও ব্লগের স্বল্প পরিসরে সেগুলো সব তুলে ধরা গেল না বা অনেক ফ্যাক্ট আমার নিজেরও জানা নাই। যারা এসব নিয়ে ভাবেন তাদের ভাবনা শেয়ার করলে ও আলোচনা করলে এই বিষয়গুলো আরো পরিষ্কার হতে পারে। যাই হোক, আমার একটা ব্যক্তিগত ভাবনা দিয়ে শেষ করছি, আমি বিশ্বাস করি- 'পৃথিবীর কোন মানুষই খারাপ না, বেশিরভাগ মানুষ অনেক কাজ ভাল ও সঠিক মনে করে করে কিন্তু অন্যের কাছে সেটা খারাপ। এটাকে আমরা কনসেপচ্যুয়াল এরর বলতে পারি। একটু সময় নিয়ে ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে খতিয়ে দেখলে অনেক সমস্যাই সমাধান করা খুব সহজ হয়ে যায়। এটা সকলের জন্যই প্রযোজ্য।
২৫টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×