মৃত্যু যেন আনন্দের। আর এই আনন্দ যেন প্রতিশোধের। আবু বকর মারা গেল কেউ যেন কিছু বলছিলনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্ত্রব্য সেসময় মুখরোচক আলোচনার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছিল। নোমানী মারা গেল ব্লগ জুড়ে বিজয়োল্লাস শুরু হল একটা ছাগু লিডার কমল। আর এখন ফারুক যখন গেল জীবিত ছাগুদের পোষ্টমর্টেম চলছে।
এভাবে আর কতদিন। আর কত রক্ত ঝরলে আমাদের শিক্ষাঙ্গণগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ বিরাজ করবে। রাবিতে ইতিপূর্বে যে সংঘর্ষ হয়েছিল সেসময় পুলিশ হলগুলোতে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল শিবিরকে। আর গত ৮-৯ফেব্রুয়ারী রাতে যে বর্বরতা চললো সেদিন পুলিশ কি করলো। তাহলে কি বলতে হয় পুলিশের ভূমিকা নোমানীর লাশ ফেলতে ছাত্রলীগকে সহযোগিতা করেছিল আবার একই পুলিশের নীরবতায় শিবির তাদের নেতা নোমানী হত্যার বদলা নিতে বেপড়োয়া হয়ে পড়েছিল।
তাহলে চালকের আসনে শিবির-ছাত্রলীগ নাকি মহামান্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনগত বীর পুলিশ বাহিনী।
স্বয়ং আইজি রাবিতে অবস্থান করছে। ইতিপূর্বে ছাত্রলীগের হামলায় পলিটেকনিকে নিহত হয়েছিল ছাত্রমৈত্রী নেতা। শীর্ষ চেয়ারের কেউ কোন মন্তব্য করেনি। ফারুক নিহতের পর দেশজুড়ে যে অরাজকতা শুরু করেছে ছাত্রলীগ; আরো লাশ যে পড়বে না তাতে কোন সন্দেহ নেই। ইতিমধ্যে জামাত-শিবিরের অফিস ও প্রতিষ্ঠানসমূহে হামলা শুরু হয়ে গেছে। রাজশাহীতে গুলী করে হত্যা করা হয়েছে শিবির কর্মী সন্দেহে এক যুবককে। পাবনায় প্রেসক্লাবে, বুয়েটে, গাইবান্ধায়, কুমিল্লা সহ বেশ কিছু জেলায় হামলা হয়ে জামায়াত ও শিবিরের অফিস ও প্রতিষ্ঠানসমূহে। তাদের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ৩০জন।
শিবিরের বর্বরতা সামলাতে পুলিশ যাচ্ছিল রাবিতে। যাওয়ার পথে প্রাণ হারাল ৬জন। এপর্যন্ত আইজি বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী তাদের নিহতের পরিবারকে শান্তনা দিতে একটি মন্তব্যও করেননি। সেখানেও থেমে গেছে ৬টি পরিবারের স্বপ্ন। শুধু তাই নয় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের সমালোচনা আমরা একটু বেশিই করি। কিন্তু মিডিয়া যেভাবে ফারুকের মায়ের আর্তনাদ দেখাচ্ছে তেমনি ঐ নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের ছোট্ট শিশুটির আর্তনাদ আর তার বিধবা স্ত্রীর বিলাপের কোন তথ্য কি উপস্থাপন করছে? ধিক বর্বরতাকে। ধিক মানুষ খুনীদের। ধিক্কার তাদেরও যারা নতুন করে বর্বরতায় মেতে উঠে তাদের।
বকর কি মানুষের কাতারে পড়ে না। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টেন্ডারবাজ সোনার ছেলেরা এতটাই বেপড়োয়া যে, রক্ত নেশা তাদের এমনভাবে পেয়ে বসেছে যে নিজেদের রক্ত চুষতে তারা আজ নিজ বন্ধুদের শির কাটছে। দীর্ঘদিন পর রাবিতে নোমানী হত্যার বদলা নিল শিবির। আর ছাত্রলীগ প্রতিদিনই টেন্ডার আর আধিপত্যের লড়াইয়ে অস্ত্র উচিয়ে উল্লাস করছে তাদের পৈত্রিক তালুক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। ধিক শিবির ধিক ছাত্রলীগ। ধিক এই অসভ্য বর্বর ছাত্ররাজনীতিকে।
যদি আক্ষেপ করে বলি কবে থামবে এই নারকীয় তান্ডবতা? তবে বলবো না থামবে না। এই জাতি কখনো সভ্য হবার নয়। ক্ষমতার পালাবদলে মুখোশ পরিবর্তন হবে কিন্তু সেখান থেকে মাহাথির বা নেলসন ম্যান্ডেলা তৈরী হবে না।
আর তাই আমার একটি দুঃস্বপ্ন হল- চাই রক্ত, চাই লাশ, চাই গণকবর। তবে হ্যা এটা হবে আমাদের বিকৃত মস্তিষ্কের।