কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে খুন হয়েছেন জামায়াত নেতা ডা. তাহেরের চাচাতো ভাই। বিকেলে স্থানীয় ইউপি মেম্বার নুরে আলম ২৫/৩০জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে নিয়ে ডা. তাহেরের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় আলাউদ্দিন তাদের এই বেপড়োয়া আচরনের কারণ জানতে চাইলে কতপিয় ক্যাডার বাক্কা, জামাল তার উপর লাঠির আঘাত করে। এসময় নূরে আলম নিজের পিস্তল দিয়ে আলাউদ্দিনকে গুলি ছোড়ে। গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। নুর তখন তাকে খুব কাছে থেকে পেটের দিকে গুলি ছুড়ে। সাথে সাথেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আলাউদ্দিন। এসময় সন্ত্রাসীরা শ্লোগান দিতে দিতে এলাকা ত্যাগ করে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, আওয়ামীলীগ ক্যাডাররা এ্যম্বুলেন্সে করে তাকে কুমিল্লা আনতেও বিলম্ব করায়। হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয় আলাউদ্দিনের। সে জামায়াতের আলকরা ইউনিয়ন ৪নং ওয়ার্ড সভাপতি।
এদিকে তার মৃত্যু সংবাদে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রতিবাদ মিছিল বের করে উপজেলা জামায়াত। পুলিশ মিছিলে লাঠিচার্জ করলে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। মহাসড়কে প্রায় ১০টি গাড়ি ভাংচুর করে বিক্ষুদ্ধ জামায়াত কর্মীরা। থানার সামনে একটি পুলিশ ভ্যানও ভাংচুর করা হয়। এসময় প্রায় ১ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকে। এসময় পুলিশ প্রায় অর্ধশতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। ঘটনার পর থেকে চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড়ে প্রায় ২৫জনকে আটক করা হয়েছে যাদের জামায়াত কর্মী বলছে পুলিশ। এদের মধ্যে অনেক পথচারীও রয়েছে।
ঘটনার প্রতিবাদে আগামী সোমবার কুমিল্লা জেলায় অর্ধদিবস হরতালের আহবান করেছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াত। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কও হরতালের আওতায় থাকবে।
জামায়াত নেতারা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জামায়াতের কর্মীদের হয়ারানি বন্ধ না করলে, খুনীদের গ্রেফতার করা না হলে লাগাতার কর্মসূচি দেয়া হবে।
জামায়াত নেতা খুনের ঘটনায় কুমিল্লা নগরীতে ও চৌদ্দগ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সন্ধ্যার পর কুমিল্লা নগরীতে একটি বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। মিছিলকারীরা এ হত্যাকান্ডের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও রেলমন্ত্রী মুজিবুল হককে দায়ী করেন। তার বলেন রেলমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ মদদে সন্ত্রাসীরা চৌদ্দগ্রামে রক্তের নেশায় মরিয়া হয়ে আছে।
গত সংসদ নির্বাচনে এই এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। শুক্রবার দীর্ঘদিন পর জামায়াত চৌদ্দগ্রাম থানার ২শ গজের মধ্যে প্রায় ৩হাজার লোকের কর্মী সম্মেলন করে। এরপরই রাজনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। নিহত আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে শুক্রবারের সম্মেলনে বিপুল সংখ্যক জামায়াত কর্মী যোগদদান করেন। আওয়ামীলীগ কর্মীদের বাধা ও পুলিশের হয়রানির কারণে চট্টগ্রামের অন্যতম জামায়াতের ঘাটি বলে পরিচিত চৌদ্দগ্রামে কোন সমাবেশ করতে পারছিলনা জামায়াত।
জামায়াতের কর্মীসম্মেলনের পরদিন জামায়াত নেতা খুনের ঘটনায পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।