তুমি হঠাৎ এগিয়ে আসলে, আমার সযতনে রাখা জ্যোৎস্না গুলো আঁচলে বেঁধে দিলে! সেকি! আমি কি করে ভুলেছি জ্যোৎস্নাবিলাস! "ও হ্যাঁ! আর আমার জোনাকির ফুল?" নাকে গুঁজে দিলে পরম ভালবাসায়!
-আরও কিছু ছেড়েছি নাকি?
- স্বচ্ছ বৃষ্টি বিন্দু!
আলতো করে ঠোঁটে ছুঁইয়ে দিলে! বিন্দু জলের ছোঁয়ায় মাতালী হলাম নাকি তোমার ঠোঁটে বুঝিনি! এ পাশ ফিরবো ভাবছি! আলতো করে খোঁপায় জড়ালে লু হাওয়া! পাগলা চুল গুলোকে বেঁধে দিলে! তবু কপালের এক মুঠো অশান্ত চুল বারবার তোমার চিবুক ছুঁয়ে আসছিল!
-আমার তিতলী নেয়া হয়েছে তো?
-দাও নুপুর বানিয়ে দেই!
আমার কিছু পোষা প্রজাপতি আছে, আমি নাম দিয়েছি তিতলী! তোমার দিকে পা বাড়ালাম, পকেট থেকে গুনে গুনে বের করেছিলে তিনটি তিতলী! পড়িয়ে দিলে!
নতুন পথের দিকে হাঁটবো ভাবছি! মনে পরে গেল পুকুর পাঁড়ের শিউলি গুলোর কথা? অথবা রক্তজবা! কি করে ছেড়ে যাই এদের!
তুমি ছাড়তে দিলে না! তুলে এনেছিলে, তোমার ছোঁয়ায় আলতা হয়েছিল ফুল গুলো! খুব শখ করে মেখেছিলাম হাতে পায়ে!
-কিছু বাদ পরে গেল নাকি!
-নাহ!
সত্যিই কিছু বাদ দিতে হয়নি! আমার সাথে বেড়ে ওঠা প্রকৃতির প্রতিটি টুকরোকে তুমি ঠিক আমার মতন জুড়ে নিয়েছ তোমার সাথে! নদীর পাঁড়ের কাশফুল গুলো দিয়ে মালা বানিয়েছ, ঝিনুকের টুকরো গুলো কোমরে সাজিয়েছ, ঘাস ফুল পড়িয়েছ কানে! আর কিছু রোদ এনে হাসি বানিয়ে দিলে!
বাকি ছিল কেবল আমার আকাশের কালো মেঘ গুলো!
-জানি কি করবে! চোখ নিয়ে এত আদিখ্যেতা কেন!
-ঐ চোখেই আমার সমস্ত কিছু! সমস্ত বিষাদ,সমস্ত প্রেম! সর্বনাশা চোখ!
তারপর? ঐ তো! এক চিলতে কালো মেঘ এনে পড়িয়ে ছিলে চোখে! আমি হয়েছিলাম সুনয়না! অথবা কিছু টুকরো প্রকৃতি নিয়ে আপন মনে চলতে থাকা কোন বালিকা! যে বালিকা মেঘ কালো চোখ নিয়ে তোমার সাথে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখে! অথবা কেবলই এমন কেউ যার চোখে তুমি তোমার সমস্ত পৃথিবী দেখ! আমি সেই! সুনয়না!
উৎসর্গঃ ভয়ংকর মাতাল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে! চুলের সাথে এলোমেলো করে যাচ্ছে সমস্ত আমি টাকে! ঠিক এই সময় খুব বৃষ্টি চাইছি, অথবা আকাশ ভর্তি করা জ্যোৎস্না! কোনটাই পাওয়া যাচ্ছে না! তাই লিখে লিখে সুনয়নাকে দেয়া সমস্ত কিছু আমার করে নিলাম! তাই কালো মেঘ দেয়া অচেনা বালককে উৎসর্গ করা হল! বালক তুমি সুখী থেকো, মেঘময় থেকো! সুনয়নার নয়নাভিরাম মুগ্ধ করুক তোমাকে, সবসময়!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:৩৩