"তা'লমিে মা'রফোত" বইয়রে কভার পজেে লখিা; মরহুম আমরিুশ শরয়িৎ, মোডয়িে সুন্নাৎ, হাদয়িে জামান, হযরত মাওলানা শাহ সুফী হাজী মোহাম্মদ আবুবকর ছদ্দিীকী হানাফী সাহবেরে অনুমোদনক্রমে বাকরেগঞ্জ জলিার ছারছীনী নবিাসী সুপ্রসদ্ধি আল্লামা কুতুবে রব্বানী মাহবুবে ছোবহানী হাদীয়ে জমান হযরত শাহ সুফী আলহাজ মাওলানা নেছারুদ্দিন সাহেব কতৃক প্রণীত।
এই বহু বিশেষণে বিশেষিত একজন পীরের অনুমোদিত বহু বিশেষণে বিশেষিত একজন পীরের লেখা উক্ত “তা’লীমে মা’ রেফাত” কেতাবের ৬৭ নং পৃষ্ঠায় লিখিত মুরীদানদের প্রতি আরোপিত ১২ নং আইনটি হচ্ছে ঃ
১২) “পীরের কোনও কথাই অদুল (অমান্য) করিবে না; যদিও মুরীদের কথাই সত্য হয় তথাপি পীরের গলৎ কে নিজের সহীহ হইতে উত্তম মনে করিবে।”
৬৬ নং পৃষ্ঠার ১১ নং আইনঃ
১১) “পীরের আওলাদ-ফবজন্দকে পীরের জাত হিসাবে পীরের তুল্যই সম্মান করিতে হইবে। তাহাদের যোগ্যতা কামেলিয়াৎ বিচার করিবে না।ঃ
৬৪ পৃষ্ঠার ৬ নং আইনঃ
৬)“পীর যাহা আদেশ করেন বিলম্ব না করিয়া তখনই তাহা পালন করিবে; কাজ সম্পন্ন করিবার পূর্বে কোনও প্রকার প্রতিবাদ করিবে না।”
৬৫ পৃষ্ঠার ২নং আইনঃ
২) “পীরের কাছে অপরের সালাম নিয়ে আসা আদবের খেলাফ।”
৬৩পৃষ্ঠার ৫নং আইনঃ
৫) “মুরীদ এমন স্থানে দাড়াইবে না যাহাতে পীরের শরীর কিংবা কাপড়ের উপর মুরীদের ছায়া পতিত হয়।”
৬৩ পৃষ্ঠার ৬নং আইনঃ
৬) “পীরের জায়নামাজের উপর পাও রাখিবে না; তাহার অজু গোছলের স্থানে অজু গোছল করিবে না; পায়খানা পেশাব খানা সম্বন্ধেও এইরূপ জানিবে।”
৬৩ পৃষ্ঠার ১০নং আইনঃ
১০) “পীরের সকল কাজ ভাল মনে করিব। যদিও প্রকাশ্যে উহা ভাল মনে না হয়। কেন না কামেল জীর আল্লাহ তা’তালার তরফ হইতে “এলহাম” প্রাপ্ত হইয়া কাজ করিতে থাকেন।”
৬৩ পৃষ্ঠার ১১ নং আইনঃ
১১) “খানা পিনা ও লেবাছাদি পরিধান করা ইত্যাদি ছোট বড় সব কাজে পীরের অনুসরণ করিবে। এই প্রকার নামাজ পড়াও পীরের ত্বরিকা মতে আমল করিবে।”
৬৬ পৃষ্ঠার ৭ নং আইনঃ
৭) “জান মাল সন্তান সন্ততি সবই পীরের প্রতি কোরবান করিবে।”
প্রতিবাদঃ
আবু দাউদ শরীফের হাদীসে রয়েছে জনৈক ব্যক্তি এসে রসূল (সঃ) কে বললেন, “আপনাকে আমার আব্বা সালাম দিয়েছেন।ঃ শুনে আল্লাহর রাসূল (সঃ) বললেন, “ওয়া আলাইকা ওয়া আলাইহিস সালাম।” বুখারী শরীফের হাদীসে আছে, ওমর (রাঃ) তাঁর পুত্র আবদুল্লাহ (রাঃ) মারাফত মা আয়েশা (রাঃ) এর কাছে সালাম পৌঁছে দিয়ে কবরের ঐ জায়গাটুকুর জন্য আবেদন জানিয়ে ছিলেন।
তা’হলে আল্লাহর রাসূল (সঃ) এর কাছে অপরের সালাম পৌঁছে দেয়া আদবের খেলাফ হল না; মা আয়েশার (রাঃ) কাছে ওমর (রাঃ) এর সালাম পৌঁছে দেওয়া আদবের খেলাফ হল না, আর পীরের কাছে অপরের সালাম নিয়ে আসা আদবের খেলাফ হয়ে গেল ? এবার চিন্তা করুন পীরগিরি কাকে বলে।
একজন মানুষের ছায়া একজন মানুষের গায়ে পড়তে পারবেনা এমন আইন ইসলামে আছে কি ? পীরকি মাহানবী (সাঃ) এর থেকেও বড়? নবী (সাঃ) তো এমন কথা কোন সাহাবীকেও বলেননি; তাহলে পীর সাহেব কি খুব অহংকারী ?
নবী (সাঃ) যেখানে ওযু করতেন, পায়খানা পেশাব করতেন সেখানে কোন সাহাবী বা অন্য কারো প্রবেশ করা নিষেধ ছিল এমন কথাতো কোন হাদীসে শুনি নাই। তাহলে পীর সাহেব নিজেকে কি প্রমান করতে চাইছেন ? আর তার মুরীদরা কি এজন্য ভাবছেন তিনি আল্লাহর পাঠানো স্পেশাল কেউ ? আসলে ওনারা বড়ই স্পেশাল !!
মহান আল্লাহ বলেন, “যারা আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করে, তাদের থেকে অধিক যালেম কে হবে ? অথবা বলে যে, আমার প্রতি ওহী হয় (ইলহাম আসে, ফয়েজ আসে) অথচ তার প্রতি কিছুই ওহী করা হয় না, অথবা যে বলে যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন আমিও অনতিবিলম্বে অনুরূপ নাযিল করব, (ফায়েজ দান করব)। আর আপনি যদি দেখতেন ! যখন যালেমরা মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতর, তখন ফেরেশতাগণ তাদের হাত বিস্তার করে বলবে তোমরা তোমাদের আত্মা বের কর, আজ তোমাদেরকে অবমাননাকর শাস্তি দেয়া হবে, যেহেতু তোমরা আল্লাহর উপর অসত্য কথা বলতে।” (সুরা আনআম, আয়াত-৯৩)
আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ “আল্লাহ তা’আলা ফিরিশতাগণ ও মানুষের মধ্যে থেকে রাসূলগণকে মনোনিত কনের।” (সুরা হজ্জ্ব, আয়াত-৭৫)
অথচ পীরগণ দাবী করে বসলেন, আল্লাহর তরফ থেকে “এলহাম” আসে, অর্থাৎ ইসারা আসে, ফায়েজ আসে, নির্দেশ আসে। আল্লাহ নির্দেশ প্রাপ্ত হয়েই নাকি পীর সাহেবগণ সমস্ত কর্ম-কান্ড করে থাকেন বলে দাবী করেন। নবী-রাসূল এবং ফিরিশতাগণ ছাড়া আল্লাহর প থেকে কারো নিকট কোনকিছু আসে না। পীর সাহেব কি নিজেকে ফিরিশতা বা নবী বলে দাবী করেন ? যেমন গোলাম আহাম্মদ কাদীয়ানী নিজেকে আল্লাহর নবী বলে দাবী করেছিল, যার পরীপেেিত বাংলাদেশের সমস্ত মুসলিমগণ তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে কাদীয়ানীদেরকে অমুসলিম ঘোষনা করে তাদের সমস্ত প্রচারনা বন্ধ করে দেবার জন্য সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন।
পীর সাহেবগণ যে দাবী করেন উনাদের নিকট আল্লাহর নির্দেশ, এলহাম, ফায়েজ, ইসারা বা অহী আসে তার জন্য বাংলাদেশের মুসলিমগণ পীর সাাহেবগণকে অমুসলিম ঘোষনার জন্য সোচ্চার না হয়ে, মহান আল্লাহর দাসত্ব ছেড়ে পীর সাহেবগণের দাসত্ত করে চলেছেন তার রহস্য বুঝা বড় কঠিন।
আল্লাহ বলেন আমার রাসূলের অনুসরণ কর, আর পীর বলেন, “তোমরা আমার অনুসরণ কর।’ পীরগিরির কি চমৎকার আইন !
মহান আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ “হে ঈমানদারগণ ! তোমরা আল্লাহর অনুগত্য কর এবং রাসূলের অনুসরণ কর, আর তোমাদের আমলগুলি বিনষ্ট করিও না।” (সুরা মোহাম্মদ, আয়াত-৩৩)
আল্লাহর আদেশ অমান্য করে পীরের আদেশ মানলে, আল্লাহর স্থানে পীরকে বসানো হলো, এটাই মুরীদদের আল্লাহর সাথে পীরকে শরীক করা। এতে করে মুরীদানগণ মুশরেক হয়ে গেল।
সর্বশেষ ৬৬ পৃষ্ঠার ৭নং আইনে পীরতো এমন কিছু দবী করল যা আল্লাহ দাবী করেন। এই আইন মানলেই মুশরেক, আর কোরবান করার প্রয়োজন পড়বে না। জান মাল কোরবান আল্লাহ উপভোগ করেন না; পান্তরে পীর সাহেবগণ মুরিদানদের কোরবান স্বপরিবারে ভণ করেন। যদি কেউ পীরগিরির ফাঁদে পা দেয় তাহলে একদিন সে নিজেই কোরবান হয়ে যাবে !
এত কিছুর পরও দেখবেন এক শ্রেণীর উম্মাদ আছে যারা মাজারে গিয়ে মাথা ঝাকিয়ে পীর সাহেবের কাছে ফরিয়াদ করে। তাদের বিরুদ্ধে কিছু লিখলে বা বললে মারতে পর্যন্ত উদ্যত হয়। আল্লাহ এদের অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন। যত হাদীসই দেখান না কেন তার কোন মূল্য তাদের কাছে নেই। পীরদের দেওয়া যুক্তিকে সম্বল করে নবীর সহীহ হাদীসকে খন্ডন করার জন্য ব্যতিব্যস্ত। যদিও আল্লাহ এদের হেদায়েত দিবেন না তার পরও তাদের জন্য দোয়া করি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




