somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাহাদাত উদরাজী
সাহাদাত উদরাজী'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - 'গল্প ও রান্না' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

সম্পদ থাকলেই কি একজন মানুষকে ধনী বলা যায়?

২১ শে মে, ২০২১ বিকাল ৩:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্পদ থাকলেই কি একজন মানুষকে ধনী বলা যায়! আবার সম্পদ নাই অনেক টাকা ক্যাশ আছে, তাকে কি ধনী বলা যায়! জীবন যাত্রার মান কেমন হলে বা সে মাসে বছরে কেমন আয়/ব্যয় করে তা দেখে কি তাকে ধনী বলা যায়! আসুন, আমার দেখা এক বন্ধুর ঘটনা আপনাদের জানাই!

আমার এই বন্ধু কোন কাজের সাথে জড়িত নয়, গত বছর দুয়েক আগে পিতা থেকে পাওয়া চারখানা ফ্লাট আছে শহরের মাঝে, দাম একেকটা সোয়া বা দেড় কোটি করে হবেই। সেই হিসাবে ধরা যায়, সে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এখন আসুন বিস্তারে, সে একখানা ফ্লাটে থাকে, অন্য তিন খানা ভাড়া, এই ভাড়ার টাকার আয় থেকেই সে সংসার চালায়। বাকী যে তিন খানা ফ্লাটা আছে সব গুলো ত্রিশ হাজার টাকায় ভাড়া (সার্ভিস চার্জ পাঁচ হাজার আলাদা ভাড়াটিয়ার, বিদ্যুৎ ভাড়াটিয়ার, গ্যাস সিলিন্ডার ভাড়াটিয়ার), এই হিসাবে সে তিনটে ফ্লাট থেকে মাসে নেট ৯০ হাজার টাকা পাবার কথা! এই ৯০ হাজার হলে সে তার সার্ভিস, বিদ্যু, গ্যাসের বিল দিয়ে, সন্তানদের পড়ার খরচ দিয়ে আরামে চলার কথা। কিন্তু এমন হচ্ছে না, তিনটে ফ্লাটের মাত্র একজন তাকে নিয়মিত ভাড়া দেয় ৩০ হাজার টাকা। বাকী দুই ফ্লাটের একজন ইন্ডিয়ান কলকাতার বাবু, মতিঝিলে কি যেন করত, এখন করোনাতে চলে গেছে কলকাতা, ফ্লাট ছাড়ে নাই, বার বার বলেও গত এক বছরে কিছু করা যায় নাই, শুধু আসছি আসছি, ফলে তার জিনিষপত্র পড়ে আছে, কিছুই করা যাচ্ছে না। আর একটা ফ্লাটে মুন্সীগঞ্জের একজন ভাড়া নিয়েছিলেন, তিনিও ভাড়া দেন না, শত চেষ্টা করেও তাকেও উঠানো যাচ্ছে না, শুধু গায়ে হাত বাকী, গায়ে হাত দিলে তো বিরাট পুলিশ কেইস হয়ে যাবে, কে এই ভেজাল সামলাবে! দেন দরবারের সব মাথা এই ভাড়াটিয়া খেয়েছেন, কত বিচার কত শালিশ, শুধু বলেন দিবেন, কিন্তু সার্ভিস চার্জও দিচ্ছেন না, গত দুই বছরে এমনি চলছে।

এখন বাস্তবতা দেখুন। তার মাসে ৩০ হাজার টাকাই সম্বল, এই থেকে সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস দিয়ে কি করে দুই সন্তান নিয়ে এই শহরে খেয়ে পরে বাঁচা যায়! উপরি অন্য দুই ফ্লাটের সার্ভিস চার্জ তার মাথার উপর জমছেই, প্রতি মাসে ১০ হাজার করে! চার ফ্লাটের মালিক এই বন্ধুর সাথে দেখা হলে অনেক বন্ধুরা ভয়েই থাকে যে, তাকে টাকা ধার দিতে হবে এবং এর মধ্যেই ওর অনেক টাকা ধার, এমন এমন জায়গা থেকে ধার করে বসে আছে যে, শুনলে নিজেই লজ্জা পাই! আমিও তাকে অনেক টাকা ধার দিয়ে বসে আছি গত চার বছরে, সেও আমাকে দেখলে বলে, দিচ্ছি পাবি, তোর টাকা মেরে খাব না! ইত্যাদি।

এবার আর এক ছোট বেলার বন্ধুর কথায় আসি, সে একটা প্রাইভেট কোম্পানীর জিএম, বেতন মাসে এক লক্ষ ত্রিশ হাজার নেট, গাড়ি কোম্পানী দিয়েছে, তেল ড্রাইভার আছে, সে গুলশানে ৪৫ হাজার টাকার এক বাসায় ভাড়া থাকে। একদিন সে কথায় কথা জানিয়েছিল, তার দেড় কোটি টাকা ক্যাশ আছে, ফিক্স ডিপোজিট, কয়েকটা ডিপিএস চলায়, ইন্সুরেন্স চালায় কয়েকটা, এই শহরে তার ফ্লাট, জমি বা ফ্লাট নেই। আমি আমার এই বন্ধুর জীবনযাত্রার মান দেখে সব সময়েই চমকিত হই, সব কিছুই তার ঝকঝকে, ফিটফাট, ওর বসবাস দেখলে যে কোন সাধারন মানুষ আমার মতই চমকিত হবে!

তা হলে উপসংহারে আসি, একজন বন্ধুর সম্পদের দাম ৫ কোটি টাকা হবার পরেও বলা চলে সে ভিখারি, আর একজনের দেড় কোটি ক্যাশ টাকা আছে, চাকুরী থেকে ইনকাম হয়, সে মহাধনীদের কাতারে! ভেবে দেখুন কার কি লাইফষ্টাইল!

আমার স্কুল বেলায় আমার অনেক বন্ধুর শান্তিনগরের মত জায়গাতে তাদের বাবাদের জমি ছিলো, কারো কারো দেতালা বাড়ী ছিলো, হুট হাট করে বাসায় গেলে এবং আড্ডা দিয়ে খাবারের সময় হলে তাদের সাথে খেতে বসতাম, বেশির ভাগ সময়েই পাতলা ডাল, ছোট মাছের চটছটি বা আলু পটলের পাতলা ঝোলের রান্না দেখতাম। বন্ধুদের মাকে এক অসহায় অবস্থায় দেখতাম, কখনো একটা ডিমের অম্লেট করে দিলে, খোদ সেই বন্ধুকেই দেয়া হত না কারন এত বড় জায়গা/বাড়ি থাকলেই আলাদা ইনকাম ছিলো না, অভাব ছিলো! এখন সেই সব জায়গাতে বড় বড় বিল্ডিং মার্কেট উঠেছে, আমাদের অনেক বন্ধু এখন এমন ধনী যে, তারা নিজেরা কিছু করে না, তবুও দুই চারটে গাড়ি, সব কিছুই ঝকঝকে। এখনো তেমন আড্ডায় খাবার সময় হলে খেতে বসি, টেবিলে খাবারের সমাহার দেখে মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলি, বড় মাছ, বড় দেশি মুরগী আছেই। কিংবা জিজ্ঞেস করে, বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে নেই এবং অনেক সময় আনিয়েও থাকে।

এখন মুল কথায় আসি, এই হচ্ছে দুনিয়া এবং এবং নিজের সহায় সম্পদ নিয়ে ভাবলে বুঝতে পারি, সব কিছুই ভাগ্য! তবে যে কোন অবস্থাতেই নিজকে একজন দক্ষকর্মী হতে হবে, অলসতা এই জীবনে চলেই না! পিছনে থেকেও বুদ্ধিমাতার জোরে সামনে চলে যাওয়া যায়!

কি ভাবছেন?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০২১ বিকাল ৩:০৮
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×