বই হচ্ছে একজন মানুষের মননশীলতার সেরা উদাহরণ, যিনি লিখতে পারেন বা লেখার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন তিনিই লেখক বা লেখিকা। এই লেখায় কাউকে বাঁধা দেয়া কারোই উচিত না, জীবনে যা ঘটে বা ঘটবে তার থিম তিনি তুলে দিতেই পারেন। নিজের কর্ম বা আশে পাশের লোকের চরিত্র তুলে দেয়াই যেতে পারে, লেখার চরিত্র তো আকাশ থেকে আসবে না, তবে যদি কারো সঠিক নাম প্রকাশ করা হয় তবে সেটার জবাব দেয়ার জন্য লেখক/লেখিকা তৈরী থাকবেন, যদি তার ঘটনা মিথ্যা হয় তবে লেখক/লেখিকাকে শাস্তি পেতে হবে। কার্যত লেখক/লেখিকারা এইজন্য কল্পিত নাম ব্যবহার করেন, দেখা চরিত্রকে ভিন্ন নামে প্রকাশ করেন। যে লেখক/লেখিকা চরিত্রের সত্য নাম প্রকাশ করেন তিনি সময়ের চেয়ে সাহসী নিঃসন্দহে এবং এটাও লেখক/লেখিকার স্বাধীনতাও। বইয়ে উঠে আসা ঘৃণ্য চরিত্রও একজন পাঠকের জানা দরকার, উপরি সমাজের লাভ, যারা প্রকাশ্যে ভাল তারা ভিতরে কত ঘৃণ্য ও নোংরা!
লেখা এবং বলাটা হচ্ছে ব্যক্তি পর্যায়ে একজন মানুষের স্বাধীনতা, ভুল/মিথ্যা লেখা এবং ভুল/অসত্য বলার জন্য যে সে নিজে দায়ী হবে এটা সবাই জানে, এমন না হলে আরো কত কি দেখতে হত এবং এটা আইন দিয়ে সংরক্ষন করা আছে। একজন লেখক/লেখিকা বা বলার ব্যক্তি যে কোন পেশার বা যে কোন বয়সী হতে পারেন, তার বিরুদ্ধে আপনি আমিও বলতে পারি, তার লেখা পড়া না পড়াও আপনার আমার ইচ্ছা। একটা দেশের মানুষের যদি লেখা বা বলার স্বাধীনতা না থাকে তা হলে সব চেয়ে বড় বেনেফিশিয়ারি হয় সেই দেশের অপশাসক এবং এই অপশাসকেরা এটাই চায়, কিছু বলতে ও লিখতে পারবেন না, এতে তার ভান্ডা ফাঁস হবে না, তিনি নিরাপদে অপকর্ম করেই যাবেন। ফলে যে যা বলে শুনে নিন, যাই লিখে পড়ে দরকার হলে ডাস্টবিনে ফেলুন, তবুও কাউকে থামিয়ে দেবার চেষ্টা করবেন না, কারন এতে একজন সাধারন নাগরিক হিসাবে আপনার হাতেই হ্যান্ডকাপ যাচ্ছে।
এখন যে কোন ইতিহাস হাতের লাগালে, মোবাইল নিয়ে গুতা দিলেই পেয়ে যাবেন, তথ্য জানুন, নাইলে আপনার সময় আরো দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। আপনারা কি ইউরোপের ছোট দেশ আলবেনিয়ার ইতিহাস জানেন? কখনো কি 'আনোয়ার হোজা'র নাম শুনেছেন, তিনি ৪০ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, সারা দেশে হাজার হাজার মাটির নীচে পারমানবিক হামলা নিরোধক ব্যাংকার করেছিলেন, দেশের প্রায় প্রতিটা পরিবারের কোন না কোন সদস্য গুম হত্যার স্বীকার হয়েছিল, কি ভয়াবহ বিষয়, কখনো নিরলে ভেবে দেখবেন। নিজের কপালে নিজে দূর্ভাগ্য ডেকে আনবেন না, ফলে যারা লিখতে পারে তাদের লিখতে দিন, যারা কথা বলে তাদের বলতে দিন, না হলে পাবেন সেই গোলামীর জীবন আপনি না হয় আপনার পরের জেনারেশন, চোখ খুলেন!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:২৪