সাধারন গ্রামের একজন মেম্বর, ইউনিয়নের একজন চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র এরা সবাই এখন ধাপে ধাপে কোটিপতি! কি বিশ্বাস হয় না, তা হলে নিজ গ্রামের, ইউনিয়নের, উপজেলার, পৌরসভার এমন কারো সাথে একটু ভাইল দিয়ে একটা দিন চলেন, বুঝতে পারবেন, আমি মিথ্যা না সত্য বললাম! এদের একেজন ব্যক্তি প্রায় ১৫ বছরের বেশি একই স্থানে কাজ করছে, তেমন জবারদিহীতা নেই, সরকারের বরাদ্ধ, নানান কাজ, অর্থ তাদের কাছে পৌঁছায়, নিজদের মত করে বন্টন করছে, ইচ্ছামত পকেটে পুরছে, এখন আর খাতা কলমের দরকার হচ্ছে না, এক্সেল শীটে ফরমেট আছে সেটা পুরুন করে দেখিয়ে দিলেই হল, আর নিচ থেকে উপরের দিকে রিপোর্টের সাথে টাকা দিয়ে দাও, ব্যস! এভাবে কাজ না করেও ঘরে বসে এই লোক গুলো কামিয়ে নিচ্ছে, নিজদের বাড়িতে বিল্ডিং উঠছে, ভাল খাচ্ছে, পরছে, কি আরাম!
এই তো গেল, এক ধরনের ইনকামের কথা, আর যে বড় ইনকাম আসে তাদের তা বলি, সেটা হচ্ছে সেই স্থানের লোকেদের চাকুরী, ব্যবসা, জমিজামা এবং বিবাহশাদী নিয়ে বিরোধের মীমাংসা ইত্যাদি ইত্যাদি! সংক্ষেপে কয়েকটা পয়েন্ট আলোচনা করছি!
১) ছেলের চাকুরী হল, ইঙ্কোয়ারী যাবে, মেম্বার চেয়ারম্যানকে টাকা না দিলে আপনি ও আপনার ছেলে হয়ে যাবেন 'রাজাকার'! ব্যস এক শব্দেই জীবন শেষ! ফলে মানুষ এখন আগেই বলে রাখে, টাকা দিয়ে দেয়, আমার ছেলের ইঙ্কোয়ারী এলে ভাল বলিও!
২) ব্যবসা করছেন, এরা কাছে এসে বলবে, ভাতিজা কিছু খরচাপাতি দিও (চাঁদা আর কি)। ব্যস, না দিলে আপনি তাদের রেশানলে পড়লেন!
৩) জমিজামা নিয়ে বিরোধ পুরানো, এই বিরোধে এদের কাছে যেতেই হয়, গেলেই এদের আসল রুপ বুঝতে পারবেন। টাকা খেয়ে এরা সালিশের বিচার এমন করবে যে, আপনি টাকা না দেয়ার হয়ত নিজকেই খুন করতে চাইবেন, ভাববেন এই কি হল খোদা! সালিশ বিচারে এরা দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কারনে খুব দাড়িবাজ হইয়েছে এরা!
৪) বিবাহশাদী, এই নিয়ে আর কি বলবো, আজকাল ডিভোর্সের হার দেখেই তো বুঝতে আপনাদের পারার কথা। এই মেম্বার চেয়ারম্যান বিবাহের সালিশে এমন কারবার করে যা নিয়ে ধারাবাহিক নাটক বানানো যায়, সাথে দুই পক্ষ থেকে টাকাও খায়, আবার ঘটনা নিয়ে হাসে!
ইত্যাদি ইত্যাদি নানান খাত আছেই!
আশা করি বুঝতে পারছেন, না বুঝলে এলাকার কোন এমপি, মন্ত্রীর বাড়ি যান, তারা আপনারে বুঝাইয়া দিবো, তারাও কি করে আটো ধনী হয়ে যাচ্ছে! ঘর ঘরে থেকে এই টাকার ভাগ যে তাদের কাছেও যায়, নানান ফরমেটে, ক্যাশ কিংবা উপহার হিসাবে! হা হা হা।
একটা মানুষ যখন দীর্ঘদিন একই পোষ্টে কাজ করে সে সব ফাঁকফোকর বুঝে যায় এবং কারে তেল, কারে বাটি, কারে ঘটি, কারে আইক্ষ্যা বাঁশ সব বুঝে যায়, আর এই বুঝার ফলেই সে কামিয়ে নেয়! তবে আর এক্টূ চালাক যারা তারা এই টাকা নিজে নেয় না, ইমেজ ক্লিন রাখার জন্য, তারা এক শ্রেনীর এলাকা ভিত্তিক এসিস্ট্যাট রাখে, যারা দালাল নামে পরিচিত, এরা স্বল্পশিক্ষিত কিন্তু খুব চালাক, এরাই সমস্যায় পড়লে আপনার সাথে কন্টাক করবে এবং টাকা নিয়ে ওদের দিবে, নিজেরাও কিছু রাখবে, যেমন ঘুষের টাকার মত! হা হা হা
এত লেখার পরেও মনে হচ্ছে আপনাদের বুঝাতে পারি নাই, তা হলে বলেন, তেমন কোন ব্যবসা বানিজ্য না করে উল্লেখিত পদ পদবীর বাড়িতে এত সুন্দর বিল্ডিং উঠছে কি করে? যাদুর খেলা নাকি!
সরকারের বড় প্রশাসন কি এই সব জানে না? আমি নিশ্চিত (!) এদের নিয়ে এত ভাবনার সময় আপাতত সরকারের হাতে নেই! কোটিতে যেখানে হিট নেই, লক্ষের দিকে চোখ যায় কি করে? আর এরাই তো মাঠে আছে!
(আমি সাংবাদিক নই, ব্লগার - যা চোখে দেখি বুঝি তাই লিখে ফেলি, আপনি আমার যুক্তি খন্ডাতে পারেন, মোষ্ট ওয়েল কাম!)