সিগারেটের সাধটা বড় অদ্ভুত, এই সাধটা জিহ্বায় নেই এটা শ্বাসনালী দিয়ে সরাসরি ফুসফুসে চলে যায়। সাধটা মনে হয় ফুসফুস ই সবচেয়ে বেশি অনুভব করে। কেমন যেনো একটা জ্বালা জ্বালা ভাব। মনে হয় সিগারেটের আগুনে ফুসফুস পোড়াচ্ছি। ঠোট পোড়ানোটা অজুহাত কেবল মাত্র। এই সিগারেটের কারনেই হয় পৃথিবীতে আত্মহত্যার পরিমান কম। ছেলেরা সিগারেট না খেলে মনে হয় যেখানে সেখানে সুইসাইডের খবর পাওয়া যেত।
জাপানের Sea of trees যেতে পারতাম তাহলে হয়ত একটা স্বিদ্ধান্ত নিতে পারতাম খুব সহজে। খুব ভীতু আমি, হ্যা আমাকে কাপুরুষ ও বলা যায়। কারন আত্মহত্যা করার মত যথেষ্ট সাহস আমার নেই। যারা আত্মহত্যা করতে চায় না তাদের জীবনের প্রতি যথেষ্ট মায়া থাকে অথবা বেঁচে থাকার আনন্দটা আরেকটু পেতে চায়। কিন্তু কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে আমার ঠিক এইটুকু ইচ্ছাও নেই। জীবনের প্রতি মায়া নেই কিন্তু আত্মহত্যা করার মত সাহস ও নেই।
অদ্ভুত দোটানায় চলছে জীবন, কখনো এটা ভাবি আবার কখনো ওটা ও ভাবি। এভাবে ভাবতে ভাবতেই হয়ত এখনো বেঁচে আছি। মাথার উপর তিনটা পাখার ফ্যান ঘুরছে আর আমি মানুষগুলোর হাস্যকরভাবে আত্মহত্যার চেষ্টাগুলোর কথা ভাবছি। সিলিং এ ঝুলে থাকা ফ্যানে কিভাবে যেনো একটা দড়ি অথবা ওড়না বেধে মানুষ ঝুলে যায়। ড্রয়ারে স্লিপিং পিলগুলোর দিকে প্রায়ই তাকিয়ে থাকি। কোন একসময় নিয়ে আসছিলাম একসাথে খেয়ে ফেলবো বলে।
কিন্তু সুইসাইডের এসব প্রক্রিয়াগুলো আমার কাছে একটু বেশি হাস্যকর মনে হয়। এভাবে মরলেই মানুষ ভাববে হয় ভালবাসা জনিত নাহয় জীবন নিয়ে হতাশা জনিত। কিন্তু আমার কাছে তো এই বিষয়টার কারন তা না। আমি জীবনের জন্যই বাঁচতে চাই না। কারন জীবনের আমাকে প্রয়োজন নেই। বৃথাই জীবনটা চালিয়ে যাচ্ছি। না পৃথিবীকে কিছু দিতে পারছি না পৃথিবী থেকে কিছু নিতে পারছি। অপ্রয়োজনীয় কোন কিছু নিজের জীবনেই রাখিনি কিন্তু আমি পৃথিবীর কাছে অপ্রয়োজনীয় হলেও পৃথিবী কেনইবা আমাকে বাচিয়ে রাখছে তা আমার কাছে অপার রহস্যের আধার।
চারপাশে প্রচুর মানুষজন, সবার নিজস্ব পৃথিবী নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবনা নিয়ে বসবাস করে। কারো কাছে মাস শেষে মায়ের জন্য একটা শাড়ী কিনে দেয়াতেই আনন্দ আবার কারো কাছে ছোটবোনের স্কুল ড্রেস কিনে দেয়াতেই আনন্দ। বাবার ঔষধ নিয়েও ভাবতে হয় আবার ছোটভাইয়ের কলেজের বেতন নিয়েও ভাবতে হয়।
ঠিক এজন্যই কি আমাদের পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে???
এইটুকু বেঁচে থাকাতে আসল আনন্দটা কোথায়?? নিজের মত কিছু পাবেনা আবার হারাতেও ইচ্ছে করবে না।
আচ্ছা, পৃথিবীর সবচেয়ে বীভৎস আত্মহত্যার পদ্ধতিটা কি ছিল? এর চেয়ে বীভৎস কোন পদ্ধতি খুঁজে বের করা যায় না?
হ্যা, আমারো একটা পরিবার আছে। বাবা, মা, আদরের ছোটবোন, দুইটা ছোটভাই আছে। তাদের কথা ভাবতে গেলে মনে হয় আরে কয়েকটা দিন নাহয় বেঁচে থাকি। যে ছোটভাইটা এখন এত আদরের সেই ছোটভাইটার সাথেই হয়ত কোন একসময় সম্পত্তি নিয়ে কোন ঝামেলায় জড়াবো। যে আমাকে এখন এত্ত ভয় পায় সেই ভাইটা হয়ত একসময় আমাকেই গালিগালাজ করবে দুই শতক জমির জন্য। কত ভালোভাবেই আছি এখনো কিন্তু আমি সেই ভাই চাইনা যে ভাইটা আমার সাথে ঝগড়া করবে।
ঝগড়া না করলেও মনের মধ্যে হাজারটা খারাপ ভাবনা নিয়ে ঘুরবে এই আমাকে নিয়েই। ছোটবোনটা বিয়ের পর বায়না ধরবে তার স্বন্তানের জন্য কিছু কিনে দিতে।
আর আমি ভাবতে থাকবো কিভাবে নিজের পরিবারের ভালো করা যায়। আদরের ছোটবোনটাকে এড়িয়ে স্বার্থপরভাবে নিজের কথাই ভাববো। এমন আমার আমিকে আমি নিজেই চাই না কখনো এমন হই।
আমি চাইনা আমার ছোটবোনটা অথবা ভাইটার সাথেই আমি একশতক জমির জন্য ঝগড়া করি।
বেঁচে থাকাটা আসলে কি? কিছু টাকা উপার্জন করে সবাইকে খুশি করানো আর নিজের বিলাসিতা কেবল???????????
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৫ রাত ১২:১৯