Chena হট স্প্রিং দেখতে যাওয়ার সময় একটু ধীরে চালাচ্ছিলাম, এই রাস্তায় তুলনামূলকভাবে গাড়ী আছে অনেক, মাঝে মাঝে ট্যুরিস্ট বাস৷ ঠিক কেন জানি না জিপিএস সিগনাল ঠিকমত কাজ করছিল না৷ আলাস্কায় এসে এরকম বেশ কয়েকবার হয়েছে যে জিপিএস ঠিক মতো পজিশন বের করতে পারছে না ম্যাপের স্বাপেক্ষে৷ বারোটার দিকে পৌছলাম হটস্প্রিং এর ওখানে, একটা বড় লজিং ছিল, অনেক লোকজন এত রাতেও৷ অবশ্য পথেও অনেককে দেখেছি ক্যাম্পিং করছে৷ হটস্প্রিং লোকজন জামা কাপড় খুলে গোসল করছে, আমরা যখন পৌছেছি ততক্ষনে গোসলের এলাকার ভীড় হালকা হয়ে গেছে৷ তাও আশেপাশে বেশ কিছুক্ষন ঘুরঘুর করলাম, মনে মনে নামতেও ইচ্ছা হচ্ছিল, একা থাকলে হয়তো তাই করতাম, কিন্তু এত পরিচিতদের মধ্যে আর সাহস করলাম না৷
এখানে আসার আসল উদ্দ্যেশ্য হলো অরোরা দেখা৷ অরোরা হচ্ছে সুর্য থেকে আসা সোলার পার্টিকলের সাথে পৃথিবীর ম্যগনেটিক ফিল্ডের সংঘর্ষে এক ধরনের আলোর বিচ্ছুরণ৷ দুই মেরু এলাকাতে দেখা যায়৷ বিশেষ করে আর্কটিক কিংবা এন্টার্কটিক সার্কেলের আশেপাশে৷ যে সময় সোলার এ্যাক্টিভিটি বেশী থাকে যেমন সানস্পট (সৌরকলঙ্ক) গুলো যখন দেখা যায়, তখন অরোরাও বেশী এ্যাক্টিভ থাকে৷ দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা যে সময় গিয়েছিলাম ঐ সময় অরোরাল এ্যক্টিভিটি কমের দিকে ছিল৷ সবুজাভ ছাড়া আর কোন রঙের অরোরা দেখার সুযোগ হয় নি, যাওয়ার আগে ছবিতে নানা রঙের অরোরা দেখে ঐরকম দেখবো ভেবেছিলাম৷
অরোরার আশায় মোটেলটার সামনে ঘোরাঘুরি করছিলাম আমরা৷ অন্ধকার কিন্তু অনেক লোকজন, মোটেলের ভাড়াটেরা তো আছেই আমাদের মতো এরকম বহিরাগতও অনেক৷ সবাই অরোরার আশায়, একজায়গায় এক দোকানদার আবার একটা টিভিতে অরোরা দেখাচ্ছিল, প্রথমে ভেবেছিলাম লাইভ বুঝি, পরে দেখি নাহ পুরোনো কোন আমলের একটা মুখস্থ ভিডিও চালাচ্ছে কাস্টমার আকৃষ্ট করার জন্য৷ আলাস্কা আসার অল্প আগেই ক্যাননের নতুন এসএলআর টা কিনেছিলাম, তাড়াহুড়ায় ম্যানুয়ালটা পড়াও হয় নি৷ অপেক্ষা করতে করতে ভাবলাম তাহলে একবার একটা মহড়া দিয়ে নেই৷ ৩০ সেকেন্ডের লম্বা এক্সপোজারে ছবি তুলতে হবে৷
ঠিক তখনই ঝামেলা বাধিয়ে ফেললাম৷ কি যেন একটা সেটিংস চেঞ্জ করার পর দেখি এখন আর ম্যানুয়াল এক্সপোজার হচ্ছে না৷ কয়েকবার এদিক ওদিক ছবি তোলার চেষ্টা করলাম, নাহ কোন ছবিই উঠছে না৷ ঘটনা কি? সেলফোনের আলোতে ম্যানুয়াল পড়ে বোঝার চেষ্টা করতে লাগলাম, কোথায় গন্ডগোল হলো৷ এর মধ্যে দেখি লোকজনের চিৎকার অরোরা দেখা যাচ্ছে৷ পাহাড় ঘেষে অল্প অল্প করে সবুজাভ ঢেউ ছড়িয়ে পড়তে লাগলো, ক্রমশ বেশী৷ ঢেউটা একসময় মাঝ আকাশে চলে এলো, দুঃখে-কষ্টে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসছিল, শালার ক্যামেরা এই সময় গোলমাল শুরু করছে৷
দেখতে দেখতে মিলিয়ে গেল অরোরা৷ দৌড়ে মোটেলের লবিতে গেলাম, ম্যানুয়ালটা এখন বুঝতে হবে, নিশ্চয়ই কোথাও আছে৷ লবিতে একটা স্টাফড বল্গা হরিন, ওটার দিকে ক্যামেরা রেখে চেষ্টা করতে দেখি এখন ঠিক হয়েছে৷ আবার আকাশের দিকে তাক করলে সেই একই সমস্যা৷ কোথায় যে ঘাপলা হয়েছে বুঝলাম না৷ হুম, কম আলোতে ছবি তুলতে গেলেই সমস্যাটা হচ্ছে, কিন্তু প্লেনে বসেও তো এভাবে ছবি তুলেছি তখন সমস্যাটা হয় নি৷ একজন বুদ্ধি দিল সব অটোমেটিক মোড বন্ধ করে দিতে, ম্যানুয়াল ঘেটে ঘটে তাই করলাম, কাজ হয়েছে বলতে হবে৷ এখন ছবি উঠছে৷
এবার খুব সিরিয়াসলি অপেক্ষা করতে লাগলাম অরোরার জন্য৷ মাঝে মাঝে সামান্য দেখা গিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে কিন্তু বড় আকারে আর হচ্ছে না৷ তবুও যা দেখা যাচ্ছে ছবি তুলে নিলাম৷ ফেরা দরকার, ঘড়িতে রাত দুটো বাজে৷ বাসে যে সব লোক এসেছিল তারা ফিরে যাচ্ছে৷ আমরাও গোছগাছ করে রওনা হলাম, অনেকে এর মধ্যে প্রথম দফা অরোরা দেখে গাড়ীতেই ঘুমিয়ে গেছে৷
হট স্প্রিং এলাকার গেট থেকে বের হয়ে ৫/১০ মিনিট আসতেই দেখি আবার বড় করে অরোরা দেখা যাচ্ছে৷ তাড়াহুড়ো করে রাস্তার পাশে গাড়ী দাড় করালাম, এমন ঘুটঘুটি অন্ধকার রাস্তার পাশে ঠিক কতটুকু জায়গা আছে বোঝা যাচ্ছে না৷ রেন্টাল কার নিয়ে খাদে পড়লে এখানে উদ্ধার পেতে সকাল হয়ে যাবে৷ একজন গাড়ী থেকে নেমে ছবি তোলা শুরু করলো (ছবিগুলো দিয়েছি এখানে)৷ বাকীরা গাড়ীতে বসে রইলাম৷ আমার একটু ভয় ভয় করছিল, বেয়ার কান্ট্রি, রাস্তার দুপাশেই খোলা জঙ্গল, কোন লোকালয়ের চিহ্ন নেই৷ অনেক ডাকাডাকির আমাদের বন্ধু ফেরৎ আসলো গাড়ীতে, একটু ওভার এক্সাইটেড হয়ে গেছে অরোরা দেখতে গিয়ে৷ ঠিক তখনই খেয়াল করলাম আমাদের গাড়ীর একটু সামনেই বাছুরের সমান সাইজের একটা সাদা নেকড়ে৷ হেড লাইটের আলোতে চোখগুলো জ্বলজ্বল করছে৷
বাকী রাস্তা নেকড়েটা আক্রমন করলে কি হত তা নিয়ে আর আমাদের বন্ধুর নির্বুদ্ধিতার জন্য সবাই মিলে কি বিপদে পড়তে যাচ্ছিলাম এই নিয়ে আলোচনা করতে করতে সময় কেটে গেল৷
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।