somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভৌতিক গল্প- এক নাস্তিকের মৃত্যু

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিকেল শেষ হব হব করছে। শীতবিকেল হঠাৎ জাগা কামের মত, তেতে ওঠার আগেই ফুড়ুৎ। কিছু করার ছিল না বলে, ইউটিউবে ভিডিও দেখছিলাম। বাইক স্ট্যান্ডের। নিজের বাইক নেই, থাকলেও, স্ট্যান্ড করার উপযোগী বাইক কিনতাম না নিশ্চয়ই। গুরু বলেন, বাঙালির হাতই সম্বল (বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত)! সুতরাং স্ট্যান্ড করে সেটাই যদি ভেঙে ফেলি তবে আর থাকল কী! নিজেকে বাইকারের জায়গায় কল্পনা করে, দুধের সাধ ঘোলে মেটাচ্ছি(তা কি আর মেটে রে পাগলা? সায়েদ জামিল কি আর গুপ্ত বাবুর জায়গা নিতে পারে?)।
আচমকা সজীবের ফোন আমাকে হতচকিয়ে দেয়। ব্যাটা অনেকদিন খোঁজ খবর নেয় না। কাল একবার ফোন দিয়েছিল। আজও দিল; রহস্যময় ব্যাপার!
“কী খবর দোস্ত, জিএফ ছ্যাকা দিছে নাকি?”
“যে ফ্রেন্ড বছরেও একবার খোঁজ নেয় না, সে যদি আপনার খবর নেয়, ফোন দেয়, টেক্সট করে- তবে বুঝতে হবে তার গার্লফ্রেন্ড ভেগেছে নয়তো নতুন প্রেম শুরু করেছে”- ফেবুর এক লাফাঙ্গা ফ্রেন্ডের স্ট্যাটাস। আমি সেই থিয়োরিই খাটালাম।
“বাজে কথা রাখ! খবর শুনছিস?”
“কীসের খবর! মুজাহিদের ফাঁসি হইছে, শুনছি...”
“ধুর বাল। সোহেলের বাপ মারা গেছে শুনছিস?”
টাস্কি খেলাম। জানতাম না। “কবে? কখন?”
“চারটার সময়। সোহেল ফোন দিছিল। রাতেই মাটি হবে।”
সোহেলের বাবা মারা গেছে শুনে যতোটা খারাপ লাগা উচিৎ ততোটা লাগল না। অথচ ও আমার ওয়ান অফ দ্যা বেস্টেস্ট ফ্রেন্ডস। কেউ মারা গেলে, মাটি দেয়াটাও আমার স্বভাববিরুদ্ধ। খুব খারাপ লাগে। এতগুলো মনমরা মুখের সাথে নিজেরটাকে মেলাতে পারি না। কিন্তু বন্ধুর বাবা মরে গেলে, মাটি দিতে, জানাজা পড়তে বাধ্য হয়েই যেতে হয়।
পঞ্চপাণ্ডবের বাকি দুজনকেও জানালাম। আমার ছাত্র ইউনিয়ন করা বন্ধু শিশির এখন অ্যামেরিকায়। হোয়াটস্যাপে ভয়েজ সেন্ড করলাম। বাবলু চিটাগাং-এ। সেও আসছে না। আমি আর সজীবই কাছাকাছি আছি। আমরা দুজনই যাচ্ছি তবে মাটি দিতে।
আমাদের পাঁচজনের ‘ইয়ে দোস্তি হাম নেহি তোরেঙ্গে’ টাইপ বন্ধুত্ব ছিল। ছিল বলছি কারণ বন্ধুত্ব আমরা ভাঙিনি বটে, তবে আমরা আর এক নেই। স্কুল জীবনে এমন কোন অ এবং কু উপসর্গযুক্ত কাজ ছিল না যা আমরা করিনি। ফল পাকুড় চুরি থেকে শুরু করে মসজিদের দানবাক্সের তালা ভেঙে টাকা চুরি পর্যন্ত- সব করেছি। পাঁচজনের মধ্যে সবচেয়ে ডানপিটে ছিল সোহেল। সে যেমন লম্বা, তার মুখও তেমন লম্বাটে। সেকালে বয়লার মুরগীর ডিম(আসলে বয়লার ডিম দেয় না; যেসব মুরগী ডিম দেয়, তাদের লেয়ার বলে। লে মানে পাড়া) আর হরলিক্স কোনটাই আমাদের খাওয়ানো হতো না। সুতরাং কীভাবে সোহেল এতো নাদুসনুদুস পাকা কুমড়োর মত শরীর পেল সেটা ওর সৃষ্টিকর্তা জানেন। ওর বাবা খুব পরহেজগার লোক ছিলেন তাই হয়তো আল্লাহ তার শরীরে ত্রিশ কেজি এক্সট্রা মাংস দিয়েছেন! লম্বা ছিল বলে কিছুটা রক্ষা! নয়তো তারও অনন্ত জলিলের মত বক্ষবন্ধনীর প্রয়োজন হতো। সেই ছিল আমাদের নেতা। মানুষ ভাল কাজ করলে আল্লাহর নাম নিয়ে শুরু করে; আমরা যেহেতু ভাল কাজের ধার দিয়েও যেতাম না, তাই সোহেলের নামাবলী গেয়েই শুরু হয়ে যেতাম। সে ছিল চরম নাস্তিক। নাস্তিকের প্রকারভেদ আছে, নিঃসন্দেহে। কেউ মুর্খ নাস্তিক (সাধারণত যারা ফেসবুক পোস্ট পড়ে নাস্তিক হয়েছে), ভেক ধরা নাস্তিক(আস্তিক হলে আপনি মধ্যযুগের- এটা অত্যাধুনিক এক খনার-বচন, সুতরাং নিজেকে আধুনিক প্রমাণ করতে এরা নাস্তিক), অতি পণ্ডিত নাস্তিক (এদের সম্পর্কে কিছু বলার নেই) আবার ‘নিজ পুটু নিজেই মারি’ অর্থাৎ ঢাকঢোল বাজিয়ে পাড়া মাথায় করা টাইপ নাস্তিক। কিন্তু সোহেলকে আমি উপরের টাইপগুলোর মধ্যে ফেলতে পারি না। সে হল বিচ্ছু নাস্তিক। ওর বাবা মস্ত দরবেশ কাম মসজিদের ইমাম কাম কবিরাজ আর লেটেস্ট যে তকমাটা তার গায়ে জ্বলজ্বল করছে সেটা হল হাজী। সুতরাং সোহেলকেকে ছোটবেলায় কোরান-হাদিস বিস্তর হরকৎ-নোকতা সহ যাকে বলে তাজবিদের সহিত আবৃত্তি(তিলোয়াত) এবং মুখস্থ করতে হয়েছে।
কিন্তু সোহেল তো সোহেলই। সে সুযোগ পেলেই আস্তিকদের বলাৎকার করতে ছাড়ত না। একেবারে নাংগা করে ছেড়ে দিত। আস্তিকেরাও মায়ের দুধ খেয়ে বড় হয়েছে সুতরাং তারাও ‘মা’ থেকে শুরু করে বোন, নানি এমনকি তার হবু বৌকেও ছাড়েনি, সবাইকে মুখের চচ্চড়িতে প্রেগন্যান্ট করে ছেড়েছে!
একটা ঘটনা বলি, তাহলে বুঝতে পারবেন, সে কেমন ছিল। একবার আমাদের গ্রামে এক তাবলিক পার্টি এলো। তারা যা করে আরকি, ধরে ধরে মসজিদে নিয়ে যায়(?)। সময়ে অসময়ে হাদিস শোনায়(?)। ধরুন চারটা বেজে গেছে, গার্লস স্কুল ছুটি দিয়ে দিয়েছে, আপনি দৌড়ে দৌড়ে রাস্তার মোড়ে যাচ্ছেন, পাখি হয়তো চলেই গেছে, দেখা হবে কি হবে না-এই সাসপেন্সে কপালে দেখা দিয়েছে ঘামের রেখা, এমন সময় ওদের আগমন, আপনাকে সালাম দিয়ে বলছে, “তরুণ বয়সের ইবাদত আল্লাহ বড়ই পছন্দ করে”! কিংবা বাপমায়ের চোখ বাঁচিয়ে বিড়ি ফুঁকছেন, তারা এসে বলছে, ‘আসুন আমাদের মসজিদে, আমরা এসেছি, আপনিও সামিল হয়ে জান্নাতের রাস্তায় পা বাড়ান”! ইত্যাদি ইত্যাদি। কেমন লাগবে ভাবুন!
সেদিন আমরা স্কুল পালিয়ে গ্রামের একমাত্র বাজারে উপস্থিত হয়েছি। ভাল লাগে না আর পড়াশুনা, অ্যাজইউজুয়াল। মাঝেমাঝেই ইচ্ছে হয়, রবিনসন ক্রুসোর মত ভেলা ভাসিয়ে চলে যাই। কিন্তু সমুদ্র অনেক দূরে আর নদী নেহায়েত ছোট, ভেলা বানানো ভীষণ ঝক্কির কাজ- এসব ভেবে আর যেতে পারি না। আমরা সুতরাং বিড়ি ধরিয়ে ‘চরম উদাস’ হয়ে আকাশ পানে চেয়ে সোনালী ডানার চিল দেখি। সেদিনও তাই করছিলাম। এমন সময় সেই মুন্সীকুলের আগমন। সালাম দিল। নিলাম। বাধ্য হয়ে নিভিয়ে ফেললাম বিড়ির আগুন। তাদের ‘জিম্মাদার’ আমাদের আছপাছ কিছু কথা বলার পর বললেন, “আচ্ছা, আপনার বাড়ির পাশে যদি একটা নদী থাকে আর আপনি যদি দিনে পাঁচবার সেখানে গোসল করেন তাহলে কি আপনার গায়ে কোন ময়লা থাকবে?”
আমি পার্ভাট মনের অধিকারী। মনে মনে ভাবলাম, ‘কে সেই আসল পুরুষ যার দৈনিক পাঁচবার গোসল করার প্রয়োজন পরে! সে খায় কী?”। সে সময় চ্যানেলে চ্যানেলে শক্তি প্রাসের বিজ্ঞাপন দিত না। সেই বিজ্ঞাপন দেখলে নিঃসন্দেহে বলতাম, ‘শক্তিপ্রাস খায় বুঝি?”
কিন্তু মুখে বললাম, “না, ময়লা থাকবে না।”
এবার হুজুর বললেন, “নামাজও সেইরপ। কেউ যদি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করে, তবে তারও কোন পাপ থাকবে না। সুতরাং আসুন আমরা নামাজ আদায় করি।”
এসব বলে তারা চলে যেতে উদ্যত হলে, সোহেল বলে, “হুজুর একটা প্রশ্ন ছিল?”
আমাদের বোঝাচ্ছিলেন যেজন, সেজন কিছুটা তরুণ ছিলেন। তাকে হুজুর সম্বোধন করায় তিনি যতপরনাই আহ্লাদিত হলেন। বললেন, “অবশ্যই অবশ্যই”
সোহেল বলে, “আচ্ছা ধরুন, আপনার এক আত্মীয় আপনার পাশের গ্রামে থাকেন। এখন আপনি যদি প্রতিদিন পাঁচবার তার বাড়ি যান তবে কি তিনি প্রতিবার আপনাকে আপ্যায়ন করবেন? চা বিস্কুট খাওয়াবেন?”
হুজুর থতমত খেয়ে যান। তিনি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। সোহেল বলে, ‘খাওয়াবে না। যদি প্রতিদিন একবার যান, তবে চা পাবেন বটে, তবে মাঝেমাঝে কটু কথাও শুনতে হতে পারে। আর যদি সপ্তাহে একবার যান, তবে চায়ের সাথে টায়ের ব্যবস্থাও হতে পারে। ধরে নেই হবে। আর যদি মাসে একবার করে যান তবে দুপুরের খাবারটা খেয়ে আসার গ্যারান্টি দেয়া যায়। কিন্তু যদি বছরে দুবছরে একবার করে যান, তবে? তবে কিন্তু সেই হাইফাই ব্যাপার। আপনার জন্য স্পেশাল করে রান্না হবে। বাজার থেকে মাংস কিনে নেয়া হবে, পুকুর থেকে মাছ। বুঝলেন ব্যাপারটা? অনেকটা দুর্গা পূজোর মত, তুলসী ঠাকুরকে প্রতিদিন পূজা করতে হয় বলে তার পূজায় জাঁকজমক নেই। আর দুর্গা পূজা বছরে করতে হয় একবার, সেইজন্যই তার পূজায় এতো মাতামাতি! বুঝলেন কিছু? ”
হুজুর যে বোঝেননি সোহেল সেটা বুঝতে পারে। সে বলে, “মসজিদ তো আল্লাহর ঘর, নাকি? ঘর মানেই বাড়ি। এখন আপনি ভাবুন তো, আপনি প্রতদিন পাঁচবার করে মসজিদে যান আর আমি বছরে দুবছরে একবার করে মসজিদে যাই, কাকে মূল্য আল্লাহ বেশি দেবেন? বেশি আপ্যায়ন করবেন কাকে? আপনাকে না আমাকে?”
হুজুরের মুখে রাগের চিহ্ন দেখা যায়। সোহেল আরও বলে, “আপনারা তো মসজিদে থাকেন। মসজিদ আল্লাহর ঘর হলে, আপনারা সেই ঘরের নিস্কর্মা অন্নধ্বংসকারী! আপনাদের যে পাচায় লাথি দিয়ে বের করে দেয় না সেটাই তো বড় ব্যাপার। আবার জান্নাতে যেতে চান? জান্নাত কি বাংলা সিনেমা যে হলে গেলাম, টিকিট কাটলাম আর দেখে ফেললাম?”
হুজুর ক্ষেপে ছিলেন। সোহেলের শেষ কথায় ওর রাগ একেবারে মাথা থেকে হাতে নেমে এলো। শুরু হল মারামারি। সেই মারামারির বিচার হয়েছিল। সোহেলের বাবাই বিচার করেছিলেন। তিনি নিজের হাতে সোহেলকে বাটা স্যান্ডেল দিয়ে একগ্রাম লোকের সামনে দশটা থাপ্পড় মেরেছিলেন। অবশ্য সেই তাবলিক পার্টিও আর গ্রামে টিকতে পারেনি। সেই দিন বিকেলেই তারা গ্রামছাড়া হয়েছিল।
সেসময় নজরুলের ‘আয় বেহেশতে কে যাবি আয়’ কবিতাটা প্রায়ই আবৃত্তি করতাম আমরা-
“যুবা-যুবতীর সে-দেশে ভিড়,
সেথা যেতে নারে বুঢঢা পীর,
শাস্ত্র-শকুন জ্ঞান-মজুর
যেতে নারে সেই হুরী-পরীর
শরাব সাকীর গুলিস্তাঁয়।
আয় বেহেশতে কে যাবি আয়।”
ভাগ্যিস নজরুল এ যুগে জন্মাননি, জন্মালে নিশ্চিত নাস্তিক ট্যাগে ট্যাগাংকিত হয়ে চাপাতির কোপে মরতে হতো!
আরও এমন কতো কী করেছি আমরা, একসাথে! সেই সোহেলের বাবাই মারা গেলেন! সোহেলের সাথে তার বাবার কথা হয় না বলেই জানি। তাই তার মৃত্যুতে খুব একটা কাহিল যে সে হবে, এটা মনে হচ্ছে না। তবে বাবা তো বাবাই।
যখন পৌঁছলাম, রাত হয়ে গেছে। সজীব, আমি আসার আধঘণ্টা আগে পৌঁছেছে। আমাকে দেখেই হাসিমুখে এগিয়ে এলো। তার হাসি দেখে মনে হল না যে মরার বাড়ি এসেছি!
জিজ্ঞেস করলাম, “সোহেল কৈ?”
“দেখি নাই।”
এই পরিস্থিতিতে কাউকে সোহেলের কথা জিজ্ঞেস করতেও লজ্জা লাগছে। ওর বৌ কাঁদছে দেখলাম। দুবছরের বাচ্চাটা মায়ের সাথে তাল মিলিয়ে কেঁদে চলেছে। মাদার’স চাইল্ড!
সোহেলকে পেলাম পুকুর পাড়ে। গাছের গুড়িতে হেলান দিয়ে আছে। সজীব একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বলল, “মাটি কখন?”
“রাত দশটায়”
পুকুরটা বিশাল, আক্ষরিক অর্থেই। কতদিন এই পুকুরে গোসল করেছি। এখন কেমন অচেনা লাগছে। পুকুরের পাড়ে নারিকেল গাছের সারি ছিল। এখনও কয়েকটা আছে ইতস্তত সান্ত্রীর মত, কিন্তু নারিকেলবীথি যাকে বলে, সেটা আর নেই।
“কীভাবে মারা গেল”, জিজ্ঞেস করি আমি। এখন ওকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু নীরবতার চাদর খুব অস্বস্তিকর।
“নামাজ পড়তে পড়তেই মারা গেছে।”
পরে জানলাম, অসুস্থ বলে মসজিদের ইমামতি ছেড়ে বাড়িতেই নামাজ পড়তেন গত ক’মাস ধরে। অবশ্য জুমার নামাজ তিনিই পড়াতেন।
বেশ শীত লাগছে। পুকুরের পরেই বিশাল খোলা মাঠ। বাতাস হুহু করে আসছে। জ্যাকেট পরে এসেছি অবশ্য। কিন্তু জ্যাকেটের সাধ্য কী এই শীত আটকাবে! শরীর গরম করতেই সিগারেটটা ধরালাম। সোহেলকেও দিলাম একটা। গ্যাস ওর পকেটেই ছিল, নিজেরটা জ্বালিয়ে আমারটা জ্বালিয়ে দিল।
“লিপ ভাল্লাগে না আর। শরীর পার্মিট করে না” সোহেল একটা টান দিয়ে বলে।
“পিনিক এইটারই সবচে’ বেশি। বাকিগুলা খাওয়ার চাইতে হুঁকা টানা ভাল”, জবাব দেই আমি।
সোহেলের বাবা মারা গেছে আর আমরা সিগারেটের ব্র্যান্ড নিয়ে কথা বলছি! মানব চরিত্র আজব।
চাঁদ উঠেছে। অনেকদিন চাঁদ দেখি না। আজ হয়তো শুক্লা একাদশী কিংবা দ্বাদশী। সদ্য বিকশিত কিশোরীর মত চাঁদ; পূর্ণতা পাবে পূর্ণিমায়। সেদিন তার চোখের আভায় কোন অনিশ্চয়তা থাকবে না।
চার্জার জ্বালিয়ে কয়েকজন তাল্লিম একসাথে কোরান পড়ছে। তাদের তিলোয়াত কান্নার সাথে মিশে কান্নার মতই লাগছে অনেকটা। এখনও অনেকেই আসছে দেখতে। সোহেলের বোন এখনও আসেনি। তার জন্যই এতক্ষণ দেরী। নয়তো আগেই মাটি হয়ে যেত। মুরুব্বিগোছের লোকেরা চেয়ারে বসে আছে। সবাই প্রায় দাঁড়িওয়ালা।
“চল ভিতরে যাই। আব্বাকে দেখছিস?” সোহেল বলে। ওর কথায় লজ্জা পাই আমি। সত্যিই আমি এখনও ওর বাবাকে দেখিনি।
“না দেখি নাই।”
সজীব আর আমি ওকে অনুসরণ করে ভিতরে যাই। সব কিছু কেমন থেমে আছে। শুধু সোহেলের ছোটভাই রাজনের কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে। বিশ্রি লাগে আমার। এতো কাঁদার কী আছে? এই লোকটা কোনদিন বেঁচে ছিল? যে লোক আজীবন স্বর্গ-নরক, জান্নাত-জাহান্নাম করে করেই জীবন কাঁটিয়ে দেয়, তার বেঁচে থাকাটাকে বেঁচে থাকা বলে না। এই কিসিমের লোক মরার জন্যই জীবন কাঁটায়। এদের জীবনের সুত্র হল, “ধরে নাও, এই খাওয়াটাই তোমার জীবনের শেষ খাওয়া” কিংবা “এই জুম্মাই তোমার জীবনের শেষ জুম্মা”। সুতরাং মরেছে মরেছে। যেখানে যেতে চেয়েছে, গিয়েছে। তোর বাপু অসুবিধাটা কোথায়?
কিন্তু সোহেলের বাবার মুখ দেখেই আমার এসব চিন্তা উড়ে যায়। তার দেহ কাফনে ঢাকা। গোসল করানো হয়েছে। কিন্তু এখনও মুখে হাসি লেগে আছে। চোখ বন্ধ আছে ভাগ্য ভাল। নয়তো মনে হতো, আমার মুখের দিকে তাকিয়েই হাসছেন তিনি।
সোহেলকে বললাম, “হাসি লেগে আছে দেখলি?”
“হাসি না। মুখটা কুঁচকে গেছে, ভাল করে দেখ”। সোহেল বলে। নিজের বাবার ব্যাপারে এতোটা নির্লিপ্ত হতে কাউকেও দেখিনি আমি।
মুখটা একদম সাদা হয়ে গিয়েছে। চোখের নিচের কাঁটা দাগটা লাল হয়ে গেছে অনেকটা। নাকের নিচে নজর যেতেই ফোরফোরটি ভোল্টের ছ্যাকা খেলাম আমি। আমার মনে হচ্ছে নাসারন্ধ্রটা কাঁপছে। নাকের নিচের লোমগুলো দেখতে পাচ্ছি আমি চার্জারের মৃদু আলোতে। নড়ছে, খুব আস্তে আস্তে, অনেকটা মাকড়শার জালের মত। গোঁফ ক্লিন সেভড। আমি আলতো করে আঙুলটা নাকের নিচে নিয়ে গেলাম। আমি বুঝতে পারি আমার আঙুল কাঁপছে। স্বাভাবিক একটা মৃত্যু- বুড়ো হয়েছেন, মরে গেছেন; এতে ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু ভয় লাগে আমার। নাহ, নিঃশ্বাস নেই। উষ্ণতার বদলে শীতল সে স্থান। নাকটা আঙুলের ডগায় লাগার সাথেসাথেই শিউড়ে উঠলাম, অন্ধকার ঘরে হঠাৎ শব্দ শুনলে যেমন হয় তেমন। জীবনে অনেক মৃতদেহ স্পর্শ করেছি, কিন্তু এমন অনুভূতি কখনোই হয়নি। হাতটা সরিয়ে নিতেই মনে হল নাসারন্ধ্র একটু কাঁপল যেন আবার। চোখ সরিয়ে নিলাম। কে একজন মুখটা ঢেকে দিল।
সোহেল বসে আছে লিচু গাছটার নিচে। মাটিতে বিছানো চাদরে। “ডাক্তার আনছিলি?”
“হুম”।
আমি বাতির আলো থেকে চোখ সরিয়ে চাঁদের শরীরে পাঠিয়ে দেই। চাঁদের শরীরের উচ্ছলতা কমে এসেছে; মেঘের হিজাবে আবৃত করে রেখেছে শরীর, শুধু হাস্কি চোখটা জ্বলছে থেকে থেকে।
সোহেলের বোন আসলে সুপ্ত কান্নার স্রোতটা স্রোতস্বিনী নদীর রুপ ধারণ করে। রাত সাড়ে নটা বাজে। লোকজন খুব একটা নেই, যারা এসেছিল, দেখেই চলে গেছে। আত্মীয় আর পাড়াপ্রতিবেশী মিলে একশজনের বেশি হবে না।
দশটার দিকে লাশ তোলা হল। কবর দেয়া হবে পারিবারিক গোরস্থানে। নদীর তীরে গোরস্থান। আগে নাকি সেখানেই বাড়ি ছিল সোহেলদের। নদী সরতে সরতে বাড়ির কাছাকাছি চলে এলে সোহেলের দাদা বাড়ি সরিয়ে এখানে নিয়ে আসেন। কিন্তু গোরস্থানটা সেখানেই রয়ে গেছে। সোহেলের দাদীর কবরও ওখানে। সোহেলের দাদী যেদিন মারা যায় সেদিন আমাদের ক্লাস এইটের বৃত্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছিল, আমার খেয়াল আছে।
কিন্তু লাশ তোলার সাথে সাথেই এমন ঘটনা ঘটলো, যার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না। পশ্চিম দিক থেকে বাতাস দেয়া শুরু হয়ে গেল। সে কী বাতাস। কালবৈশাখীর উইন্টার ভার্সন। ওদের রান্নাঘরের পিছনে যে বাঁশবাগানটা আছে সেখান থেকে ঝড়ে পড়া পাতা উড়ে আসতে লাগল। হঠাত একটা মোটা ডাল ভেঙে পড়ল কাঁঠালের। এতো মোটা ডাল এই বাতাসে ভেঙে পড়তে পারে, না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। অবস্থা বেগতিক দেখে লাশটাকে বারান্দায় নেয়া হল। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয়ে গেল বৃষ্টি। বৃষ্টির ছটা বারান্দাতে আসছে। ভিজে যাবে এক মুহুর্তেই লাশটা। তাই ঘরে নিয়ে যাওয়া হল। তার নিজের ঘরে, যেখানে তিনি থাকতেন।
লাশকে কবরে নেয়ার জন্য উঠিয়ে আবার ঘরে ফিরিয়ে আনা, এটা খুব বিরল একটা ব্যাপার। ঘরে রেখে সবাই বেড়িয়ে এলাম। ঘরটা ছোট, বেশি লোকের জায়গা হবে না। শুধু সোহেল রয়ে গেল ভিতরে। কিন্তু এর পরের ঘটনা দেখে আমার মাথায় রাগ চেপে গেল। সোহেল একটা সিগারেট ধরিয়ে মুসল্লির(খাটিয়া) পাশে বাবার বিছানায় বসে আছে! অনেকেই অবাক হয়ে গেছে ব্যাপারটা দেখে, কিন্তু কেউ কিছু বলছে না, অবশ্য এটা নিয়ে বলার মত পরিস্থিতি নেই এখন। সিগারেটটা শেষ করে বেড়িয়ে এলো সোহেল। আর ও বেড়িয়ে আসার সাথে সাথেই দড়াম করে লেগে গেল দরজাটা ঘরের। হতচকিয়ে গেলাম। সজীব দরজাটায় হালকা ধাক্কা দিল। খুলছে না। এবার একটু জোরে ধাক্কা দিল ও। না খোলার কোন নামগন্ধই নেই। আমার মতই সবাই হতচকিয়ে গেছে। ভেতর থেকে লাগিয়ে দিল নাকি কেউ! এবারে আমিও গিয়ে ধাক্কা দিলাম। না, খুলছেই না। আমার কপালে ঘাম দেখা দিয়েছে ইতোমধ্যে।
আমি বললাম, “ব্যাপারটা কী?”
“বুঝতেছি না”। বলল বজলুল ভাই। তার মুখ দেখে খুব অসহায় মনে হল। ঘরে ঢোকানোর সময় মহিলাদের কান্নার রোলটা রেরেছিল। কিন্তু এখন এই দরজা বন্ধ হওয়ার ঘটনায় সবাই চুপ হয়ে গেছে। শোকের জায়গায় মনে দেখা দিয়েছে ভয়, আর তারই ছাপ পড়েছে মুখে। কেউ কোন শব্দ করছে না। শুধু বৃষ্টি আর বাতাসের মিলনের শীৎকার এই নিঃশব্দতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
রাত এগারটার দিকে বৃষ্টির বেগ কমে এলো। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি এখনও পড়ছে। বাতাসটা আছেই। আধঘণ্টার মধ্যেই বৃষ্টি বাতাস দুটোই বন্ধ হয়ে গেল। আর বাতাস কমে যাওয়ার সাথেসাথেই ক্যাঁচ শব্দ করে খুলে গেল দরজাটা। আমরা একসাথে সবাই ঘরের ভিতরে তাকালাম। ঘুটঘুটে অন্ধকার ঘরে আর কীসের যেন গন্ধ আসছে। তীব্র সেই গন্ধ নাকে এসে ঝাপটা দিলে দরজা থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেই আমি। অনেকটা মুরগীর চামড়া পোড়ালে যেমন গন্ধ হয়, তেমন। কেউ ভিতরে যাওয়ার সাহস পাই না। এমনকি চার্জারগুলো যে সেই দিকে মুখ করে দেবে সে চিন্তাও কারো এলো না।
প্রথমে ভেতরে ঢোকে সোহেল, ওর পিছনে আমরাও যাই। গন্ধটা ঘরে একটু বেশি। মনে হয়, লাশটা থেকেই আসছে। কারেন্ট চলে আসে সে মুহূর্তে। আমি ঘরের কোন পরিবর্তন দেখতে পাই না। কিন্তু লাশের দিকে তাকাতেই শরীর হিম হয়ে আসে, মনে হয় কেউ পিন ফুটিয়ে দিয়েছে পিঠে। আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত রক্তের স্রোত দ্রুত বয়ে যায়, থ হয়ে যায় সবাই আমার মতই। ঘরের দরজা বন্ধ হওয়ার আগে লাশের মুখ ঢাকা ছিল আর এখন মুখ খোলা! আর এখন মুখে সেই হাসিহাসি ভাবটাও নেই। বরং হাসির বদলে রাগের চিহ্নই দেখা যায় সেখানে। যেটা সবচেয়ে বেশি আমাকে অবাক করল, তা হল নাসারন্ধ্রটা কাঁপছে মাঝেমাঝে, এখনও! আর গন্ধটার উৎস কোথায়?
আরেকবার সবাইকে মুর্দাকে দেখার সুযোগ দেয়া হলে বেরে যায় মেয়েদের কান্না।
আমরা লাশটা কাঁধে নিয়ে হাঁটছি। প্রায় বিশজন হাত দিয়েছে মুসল্লিটায়(খাটিয়া)। গোরস্থান বাড়ি থেকে বেশ দূরে। কয়েকটা বাঁক ঘুরে বাঁশঝাড় আর দীঘি পেড়িয়ে নদীর ধারে। আমাদের পিছনে আরও অনেকে আসছে।
এখন মেঘ ফুঁড়ে আবার চাঁদ হাসছে। চাঁদ প্রায় হেলে পড়েছে পশ্চিমে। আমাদের ছায়া মাটির রাস্তায় হেলেদুলে চলেছে। গোরস্থানের বাঁশঝাড়ের ভিতরের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আরেকটা ছ্যাকা খেলাম। যা ঘটল, সেটা শুধু শুনেই এসেছি, কিন্তু দেখিনি কোনদিন। এবার চাক্ষুষ প্রমাণ মিলল সে কথার। আমাদের সামনে অর্থাৎ লাশবাহী কাফেলার সামনে একটা বাঁশ হেলে পড়ে রাস্তা বন্ধ করে দিল! থেমে গেলাম আমরা।
সবাই এতটাই বিহ্বল হয়ে পড়েছি যে যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম, সেখানেই থাকলাম, নড়লাম না এক পাও। এই প্রথম দেখলাম সোহেল ভয় পেয়েছে। বিড়বিড় করে কী যেন বলছে ও। ওর কাছে যেতেই শুনতে পেলাম, “লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ আলিয়ুল আজিম” বারবার বলছে। মনে মনে বললাম, ‘আজ তবে কি এক নাস্তিকের মৃত্যু হল?”
কিন্তু বাঁশ যেমন ছিল তেমনই থাকল। ছোটবেলায় শুনেছি এরকম অবস্থায় বাঁশে প্রসাব করে দিতে হয়। বাঁশে প্রসাব লাগার সাথেসাথেই তড়াক করে নাকি বাঁশটা লাফিয়ে ওঠে। কিন্তু এতো লোকের সামনে প্রসাব করবে কে? একবার ভাবলাম, প্যান্টের চেন খুলে স্টার্ট করে দেই মেশিন। কিন্তু প্রসাব করলেই চক্ষুলজ্জার খাতিরে হলেও ওজু করতে হবে, সেই ভয়েই করলাম না। ভূততুথের চেয়ে ঠাণ্ডা পানিকে আমি বেশি ভয় পাই।
পিছিয়ে আনা হল কাফেলা। আমরা এবার মাঠ দিয়ে গোরস্থানে পৌঁছলাম।
কবরে পানি জমেছে। সেঁচে ফেলা হল পানি। কবরে লাশ নামানো মাত্রই ভেঙে পড়ল কবরের একটা অংশ। এবার আর কেউ থামল না। মাটি হয়ে গেল।
জানাজার নামাজ পড়ানোর সময় স্পষ্ট দেখতে পেলাম কেউ একজন কবরে পাশে বসে আছে। আরেকজন কী যেন একটা এনে বিছিয়ে দিল কবরের উপর। নামাজে মনোযোগ দিলাম। কোনদিনই আশপাশ না তাকিয়ে নামাজ শেষ করতে পারিনি। আজকের নামাজটা অন্তত ভালভাবে পড়ি!
নামাজ শেষ হলে দুয়া পড়ে আরেকবার কবরের দিকে তাকালাম। কী যেন একটা ভারী জিনিস চাপানো। সজীবকে বললাম, “ওইটা কীরে?”
সজীবও বলতে পারল না। “চল তো দেখে আসি”, বললাম আমি।
“পাগল নাকি? ওখানে গিয়ে মরার ইচ্ছা নেই।”
সোহেলকে বলতেই বলল, “আয় তো”।
কবরের উপরের জিনিসটি দেখে আমরা হা এবং থ দুটোই হয়ে গেলাম। বিশ্বাস করতে পারলাম না নিজের চোখকে। এটা কীভাবে সম্ভব?
সেই কাঁঠাল গাছের মোটা ডালটা কবরের উপর চাপানো! বিশাল সেই ডালের অসংখ্য পাতার আড়ালে কবরটা প্রায় অদৃশ্য হয়ে গেছে।
“এটা এখানে কেন?”
সোহেল হেসে বলল, “ছাগু ছিল তো! আই মিন পাকিস্তানের পা’চাটা। তাই হয়তো ফেরেশতারা কাঁঠালপাতা দিয়ে গেছে!”
সোহেলের হো হো হাসি বাতাসে শুনতে পেলাম। আর শুনলাম শিশির পতনের শব্দ।
২৬ নভেম্বর, ২০১৫।
কাল্পনিক ভালবাসার ‘ব্যক্তিগত কিছু আধিভৌতিক ঘটনা- যার ব্যাখ্যা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট নই-১’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা। পিওর হরর লিখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এমন হয়ে গেল!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৯
৫৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×