somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিবির বিরোধী আন্দোলন 2

১২ ই অক্টোবর, ২০০৬ রাত ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঐ দিন রাইতেই ছাত্রদল সিদ্ধান্ত নিলো তারা নিজেগো নিরাপত্তার স্বার্থে এক হলে থাকবো। আর তাই ছাত্রদলের সব কর্মীরা আল বেরুনী মেইন বিলডিং-এ গিয়া উঠলো। জাবি-এর চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী বিরোধী দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ প্রায় অনুপস্থিত ক্যাম্পাসে, যারা ছিলো তারাও অনেকে ভয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লো। আর আমরা গণতান্ত্রিক ছাত্র ঐক্য ভূক্ত দুই সংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট আর বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা যে যার হলে। আমি থাকতাম মাওলানা ভাসানী হলে, ছাত্র ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক আহসানও ছিলো। একই হলে দুই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক! ছেলেরা আগে কিছুটা প্রতিদ্্বন্দ্বিতার দেখা পাইতো।কিন্তু শিবির বিরোধী আন্দোলনে আমরা একদম একাট্টা। সব বিরোধ তুইলা রাখছিলাম শিকায়।
ইনফরমেশন ছিলো গেরুয়া গ্রামে শিবিরের ঘাটি। আওয়াল কন্ট্রাক্টরের বাড়িতে মিটিং কইরাই তারা ক্যাম্পাস আক্রমণের পরিকল্পণা করছিলো। ভাসানী হল ছিলো গেরুয়ার সবচেয়ে কাছে, গেরুয়া গ্রামের বট গাছের ছায়ায় দাঁড়াইয়া ভাসানী হলের ছাঁদে দাঁড়ানো যে কাউরে গুলি কইরা ফালাইয়া দেওন সম্ভব, এতো কাছে! আর তাই শিবির মুক্ত করার রাতেই আমাগো হলে ফিরা পাহারা দেওনের প্ল্যান করতে হইলো, হলের বিভিন্ন ব্লক কার দায়িত্বে থাকবো, ছাত্ররা কেমনে পালাক্রমে হল পাহারা দিবো, হলের ছাঁদে ইট উঠাইবো কারা, কখন। হলগেইটে আমরা বসলাম।আমি আর আহসান। আমদের কোন নির্দিষ্ট দায়িত্ব ছিলো না। আমরা সবখানেই। এক জুনিয়র ছেলে আমাগো নাম দিলো পাংখা! ব্লকের দায়িত্ব ছিলো যাগো তাগো নাম দিলাম কমান্ডার। অনেক থ্রিলিং লাগতেছিলো ব্যাপারটা। তারপর হল মু্যভ শুরু করলাম, কারন ভাসানী হলের বেশ কয়জন শিবির কর্মী ধরা পরছিলো আমাগো হাতে। তারমানে আরো অনেকেই হয়তো আছে...নিভৃতে। আমার ব্যাচমেট চৌহান ধরা পরছিলো, অর্থনীতিতে পড়তো। একেবারে হল কালচারের পোলা, নিয়ম কইরা ডাইনিং, কমনরুম আর টিভি দেখতে যাওয়া ছেলে। এমনকি হলে পর্নো ছবির আয়োজনেও চৌহানরে দেখছি সবসময় আগাইয়া থাকতে। সেই চৌহানের রুমমেট হাসান সারাদিনের কান্তির শেষে হলে ফিরা একটা চিরকূট পাইলো চৌহানের পড়ার টেবিলে, পরম সত্য পথের সন্ধান পেয়ে চললাম, বন্ধু কিছু মনে করিস না, একই পথে এলে দেখা হবে। চৌহানের সত্য পথ ছিলো ইসলামী শাসনতন্ত্র কায়েমের পথ। যার লেইগা হল দখল সংস্কৃতিও অনুমোদিত! ইউরোপিয়ান পিস্তল নিয়া, লোহার রড দিয়া সাধারণ ছাত্ররে পিটাইয়া প্যানিক তৈরী কইরা হল দখল হইলো চৌহানের পরম সত্য পথের যাত্রা কৌশল। এইটাই কি কোরান কণিকায় তোলা সেই জিহাদ?
যাই হোক আমরা ছাঁদে উঠার নিয়ম করলাম ছাত্রগো। খুবই কষ্টের রাত। শীতের শিশির মাথায় নিয়া একেবারেই না ঘুমাইয়া ছাঁদ পাহারা। ছেলে পেলেরা যেই পরিমাণ ইট তুইলা ফেললো দুই আড়াই ঘন্টার মধ্যে তাতে মনে হয় হলের আরেক তলা ঢালাই দেওন যাইতো। মহা উৎসাহ সবাইর...এই উৎসাহ কোথথেইকা আইছিলো? আজো প্রশ্ন করি নিজেরে...কোন উত্তর নাই।
আমরা হল মু্যভ করতে গিয়া পাইলাম আমার এক কমরেড বাবুলভাইয়ের রুমমেট শিবির কর্মী। বাবুল ভাই কইলো সে নাকি ঐ ছেলের সাথে সংগঠন নিয়া কথা কইতো, এই ছেলে নাকি আমাগো সংগঠনের সমর্থক এই সবই বলছিলো তারে। ভয়ঙ্কর! যদি শিবির হল দখল করার সিদ্ধান্ত এই মুহূর্তে না নিতো!? তাইলে কি এই ছেলে আমাগো সংগঠনের ছায়ায় ঢুইকা যাইতো? ভাবতেও গায়ে কাঁটা দিতেছে। পরে অবশ্য আরো ভয়াবহ ঘটনা ঘটছিলো। যাই হোক মাথায় শিশির আর টেনশন, শরীরে কান্তি নিয়া একটা নিঘর্ুম রাত কাটাইলাম। শুরু হইলো আমার অন্যরম অভিজ্ঞতা!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭


ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

পহেল গাঁয়ে পাকিস্থানি মদদে হত্যাকান্ডের জন্য ভারত পাকিস্থানে আক্রমন করে গুড়িয়ে দেয় , আফগানিস্থান তেহেরিক তালেবানদের মদদ দেওয়ার জন্য, পাকিস্থান... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×