ভাইবা বোর্ডে আশরাফ সাহেব
জিহাদের CV টা দেখেই বিরক্তি
মুখে
ম্যানেজার কে বললেন,
__আপনাকে কতবার বলেছি,ঢাকা
বা
বুয়েটের স্টুডেন্ট ছাড়া কাওকে
ভাইবাতে ডাকবেন না।
__ইয়ে মানে স্যার,ছেলেটার
CGPA
ভালো....তাছাড়া লিখিত
পরীক্ষাতেও ভালো করেছে।
__তাতে কি,সুনামধন্য কোন
ভার্সিটির
স্টুডেন্ট ছাড়া আমি এই পোস্টে
অন্যকাওকে এলাও করবো না।
এমডি'র কথাগুলি শুনে জিহাদ
নিজের
ফাইলগুলি গুছিয়ে মাথা নিচু করে
ভাইবা রুম থেকে বের হয়।
কারন,জিহাদ নামেমাত্র একটা
পাব্লিক ভার্সিটির স্টুডেন্ট।
,
আচ্ছা চাকরি করতে যদি কোন (?)
ভার্সিটি থেকে পাশ করে
এসেছে
সেটাই বড় মাথা ব্যাথার কারন
হয়,তাহলে কি দরকার নতুন নতুন
ভার্সিটি চালু করার? কি দরকার
এগুলির পিছে এত টাকা খরচ করার?
,
আর একটা কথা,সুনামধন্য বলতে
বাংলাদেশে
ঢাকা,জাহাঙ্গীরন
গর,বাকৃবি,বুয়েট সহ
আর দুই একটা কেই তো বুঝায়?
হা হা হা,শুনে হাসি
পেলো,কেননা
বিশ্ব
ভার্সিটি র্যাঙ্কিং এ যাদের
নাম
আতশি কাচ দিয়েও খুজে পাওয়া
যায়
না।
যাদের পিছনে সরকার শিক্ষা
বাজেটের সিংহভাগ বরাদ্দ দেয়
তাদের কোন স্টুডেন্ট বা
টিচারদের
নেই কোন চমক লাগানো
আবিষ্কার বা
গবেষনা।
থাকবে কিভাবে বলুন, তারা তো
ব্যস্ত
কোন
দেশে পারি জমানো যায়
কিভাবে!!!
তাদের নাকি এদেশের বেতনে হয়
না!!!
আরে ভাই,যে দেশ তোদের ছোট
থেকে এ পর্যন্ত করতে পারলো সে
দেশের জন্য তোদের কথিত
মেধাবী
মাথা কিছুটা খাটালেও তো
দেশ
অনেক ধন্য হয়,বুঝিস না কেন!
[ হয়তো বা বলবেন,আমি এইসব
জাগায়
চান্স পাই নি বলে ওদের বিরুদ্ধে
লিখছি।না ভাই,আমি আপনাদের
বিরুদ্ধে লিখছি না।লিখছি
প্রচলিত
নামের উপর চলা প্রথার বিরুদ্ধে
যারা
এটার চর্চা করছে।]
.
একটু ভুল হলো মনে হয়....
© বুয়েট ইন্টারমিডিয়েটে কলেজ
চয়েজের জন্য একটা সিস্টেম চালু
করেছে যার মাধ্যমে আমার এক
ছাত্র....
আই রিপিট, আমার এক ছাত্র চাঞ্জ
পেয়েছে ভিকারুন্নেসায়!!!...
বাকি
কাহিনী নাই বললাম।
© বাকৃবি কয়েকদিন পরপরই নতুন ও
উন্নত
প্রজাতির বিভিন্ন ধান ও মাছের
পোনা উৎপন্ন করে যা
নিঃসন্দেহে
দেশের জন্যে ভালো।
কিন্তু দেখেন,স্বংয় ময়মনসিংহের
বিখ্যাত কই মাছগুলিই কিরকম
সন্দেহজনক,তাদের উৎপন্ন নতুন
ধানের
ভাত কিরকম প্যাচপেচে (পানি কম
বেশি
যাই দেন)। তাছাড়া, তাদের এসব
উদ্ভাবনী প্রজাতি গুলি এখনো
আলোর
মুখ দেখে নি উত্তরবঙ্গের খেটে
খাওয়া মানুষের কাছে।
শুধু নিজেদের বিশাল
ক্যাম্পাসের পুকুর
আর হর্টিকালচার ফিল্ড এর সৌন্দর্য
বাড়ালেই কি উদ্ভাবন সিদ্ধ??
© অন্যদিকে, ঢাকা,
জাহাঙ্গীরনগর বা
আরো শীর্ষ দু'এক ভার্সিটির
মেধাবী
শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দেশীয় ও
আন্তর্জাতিক উদ্ভাবনী
প্রতিযোগিতায় গিয়ে অংশ
নিয়ে
দেশের শ্রেষ্ঠত প্রমান করে।
কিন্তু,সেই উদ্ভাবনী থিওরি গুলি
যদি
দেশে প্রয়োগ না করে ক্লোজ আপ
ওয়ানের নোলক বাবুর মত ঝলক
দেখিয়েই
হাওয়া হয়ে যায়... তখন কি লাভ
এসব
লোক দেখানো থিওরির?
বিদেশীরা তো ঠিকও আমাদের
থিউরিটা কপি করে উন্নত হচ্ছে!
তবে, এদিক থেকে দু'তিন
বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয় ভালো অবস্থানেই
আছে বলতে হবে।
আর হ্যা,কচ্ছপের গতিতে আগানো
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা
কি আর
বলবো....১২মাসের কোর্স তারা
৮মাসে নিয়ে সুপার সনিক বিমান
গতিতে সেশনজট কমানোর
ধান্দায়
আছে...পোলাপান কি শিখলো বা
বুঝলো তা দেখার সময় নেই।অনার্স
শেষ
হলেই হলো।
.
কিন্তু যুদ্ধ তো অনার্সের পরেই শুরু
হয়...!
সরকারী চাকরির অপ্রতুলতায় যখন
শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট জবের
পিছনে
দৌড়ায় তখন বাধা হয়ে দাড়ায়
ভালো
ভার্সিটি আর উচ্চ সিজিপিএ'র
দুর্ভেদ্য
দেয়াল যা পাড়ি দেওয়া সম্ভব
না
টিউশনি করে চলা জাতীয় বা
নামমাত্র ভার্সিটি থেকে পাশ
করা
নিম্ন/মধ্য মধ্যবিত্ত
শিক্ষার্থীদের।
কিন্তু,ওইসব টপ লেভেলের
বিশ্ববিদ্যালয়ের মত আমাদের
বিশ্ববিদ্যালয়ও তো ইটের তৈরী,
আমাদেরও হল আছে,আছে
ক্যাফেটেরিয়া, দক্ষ শিক্ষক,সুষ্ঠ
একাডেমীক ব্যবস্থা....হয়তো
তাদেরটা
বড় পরিসরে আমাদের টা ছোট।
।
কিন্তু চাকরি ক্ষেত্রে সেগুলি বড়
ফ্যাক্ট হয়ে দাড়াবে কেন???
।
জিহাদের মত কিছু জিহাদ
আমাদের
ডিজিটাল দেশে নর্দমায় পড়ে
অঙ্কুরে
বিনষ্ট হচ্ছে আর কিছু জিহাদ
ভাইবা
বোর্ডে গিয়ে নীরবে, নিভৃতে
নিগৃহীত আর অপমানিত হচ্ছে।
আর কত জিহাদ ভাইবা বোর্ড
থেকে
ফেরত আসবে ছোট ভার্সিটির
স্টুডেন্ট
বলে?
আর কত গরীব জিহাদ জমি বিক্রি
করে
টেবিলের নিচ দিয়ে টাকা
দিয়ে
চাকরি নিবে?
আর কত কাল মামা-খালুদের কাছে
নূন্যতম একটা চাকরির জন্যেও
দুর্নীতির
হাত বাড়াতে হবে?
আর কত বৈষ্যমের শিকার হতে
হবে??
ভবিষ্যৎ যে অন্ধকার....এই দেশের
উন্নতি
এইসব হতাশাগ্রস্ত তরুনদের কে
৩২বছর
পর্যন্ত সার্টিফিকেটের বোঝা
বহন
করালে কিভাবে সম্ভব???
[হয়তোবা অনেক নেগেটিভ কথা
বলেছি,কিন্তু আপনার মনেও কি এই
কথাগুলি ফনা ধরে আছে না? যা
মনের
ভিতরে খুব দুঃখে চেপে
রেখেছেন?]