কয়েকটা হত্যা যদি করতে পারতাম অনায়াসে একদিন
তবে কেনই বা হতাম আত্মহত্যাপ্রবণ?
কেনই বা মনে হত জীবনটা দুঃসহ! প্রতিদিন দুর্দিন-
মনে হত কেন?
নরকে যাবার অনুপুযুক্ত পশুদেরও দিতে হয় সহস্র সালাম
কুর্ণিশ সসম্ভ্রমে, দিতে হয় আত্মঅহং স্বাভিমান বোধ-
পিশাচের পায়ের তলায়, নচেৎ বেঁচে থাকা দুষ্কর।
যদি দু'একটা দানবের মুন্ড ফেলে দিতাম মুত্রত্যাগের স্থানে
মুত্রত্যাগের মত পরম শান্তিতে, অতিশয় সুখকর-
শিশ্নটা নেড়ে; তবে কেনই বা চলতে হত হেঁটমুন্ড হয়ে
শঙ্কিত, কম্পিত, দম্ভহীন প্রাণে ধরণীর পর
কীট পতঙ্গের চেয়ে নিকৃষ্ট হয়ে?
কয়েকটা বুকের হাড় যদি চিবোতে পারতাম অক্লেশে
তবে কি এই আমৃত্যু ক্ষুধার ভার বইতে হত আমার বুকে!
পায়রার ডানা ছিঁড়ে নেবার মত করে উৎফুল্ল হৃদয়ে
যদি ছিঁড়ে নিতাম কয়েকটা হৃৎপিন্ড, ফুসফুস, যকৃত
ভীমসেনের মত পারমার্থিক সুখে- কয়েকটা দুঃশাসনকে
যদি দাসত্ব দিতাম পাঞ্চালীর এলোকেশে
তবে কি এতটা যন্ত্রণা, এতটা সুগভীর ক্ষত
পেতনা স্বান্তনা?
কয়েকটা মৃত্যু চাই,
নয়ত ফুলেরা মরে যাবে, কুঁড়িরা ঝরে যাবে,
নদীরা সকলে হবে অন্তঃসলিলা।
কয়েকটা যুদ্ধ চাই
নয়ত ইন্দ্রপ্রস্থ দিয়ে দাও দুর্যোধনের হাতে
আর ধরণীকে দিয়ে দাও দুর্যোগের রাতে
সে ধর্ষিতা হোক, হোক পাশাখেলা,
রাজবধূ বিবস্ত্রা দরবারে, তবুও যুদ্ধ চেওনা-
বরং লাঞ্ছিতা হোক ঘরের কুমারী বালা
পথে ঘাটে মাঠে!
যদি দু'একটা কীচকের কঠিন স্কন্ধ গুঁড়িয়ে দিতে পারতাম
বার্লিনের দেয়ালের মত করে, জ্বালিয়ে দিতে পারতাম
যেভাবে পম্পেই জ্বলেছে সেভাবে
তবে কি তোমাকে বাঁচতে হত স্তনে ওড়না টেনে, মানুষ হয়েও
পেতে ভয় অন্য মানুষ দেখে চায়ের দোকানে
অথবা রাস্তার মোড়ে?
আমি কেন হব না আত্মহত্যাপ্রবণ!
যখন তোমার মূল্য ঝুলে আছে তোমার দু'জোড়া নিরীহ স্তনে?
অজস্র শকুনের দল ক্রমাগত শীষ দেয় জোরে
তবু তুমি যুদ্ধ চেওনা, সবকিছু স্বাভাবিক, -ভেবে নিও মনে।
তবু তুমি যুদ্ধ চেওনা, শান্তির সংলাপ সভ্যতার দিনে
মুখস্থ করে রেখো।