somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শীতে পর্যটকদের ক্যাম্পিংয়ের জন্য অন্যতম মারায়ন তং

১৮ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা: মারায়ন তং পাহাড়টি বান্দরবানের আলীকদম থানার মিরিঞ্জা রেঞ্জে অবস্থিত একটি পাহাড়। এটির পূর্বপাশে রয়েছে চিম্বুক রেঞ্জ এবং মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে মাতামুহুরী নদী। পাহাড়টি মূলত ক্যাম্পিং করার সাইট হিসেবে পর্যটকদের নিকট জনপ্রিয়। মিরিঞ্জা রেঞ্জের এই পাহাড়ে রয়েছে ত্রিপুরা, মারমা, মুরংসহ বেশ কয়েকটি আদিবাসীদের বাস।

বান্দরবান জেলার আলীকদম থানার মিরিঞ্জা রেঞ্জে অবস্থিত একটি পাহাড় মারায়ন তং। ত্রিপুরা , মারমা, মুরংসহ বেশকিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বসবাস এই পাহাড়ে। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৬৪০ ফুট অবস্থায় মারায়ন তংয়ের চূড়া অবস্থিত।

শীতের এই সময় সাদা মেঘে ঢেকে যায় পাহাড়ের চূড়া। আপনার মনে হবে আপনি সাদা মেঘের জমিনের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। চাইলেই এই শীতে ঘুরে আসতে পারেন মারায়ন তং।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬৬০ ফুট ওপরে দাঁড়িয়ে অন্যরকম রোমাঞ্চকর অনুভূতি হয়, শুধু অনুভূতি নয় কিছু চ্যালেঞ্জ ও থাকে পাহাড় জুড়ে। পাহাড়ের চূড়ায় ছুঁয়ে দেখার তীব্র লালসায় ও যাওয়া যায় বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার মারাইংতং-এ।

মারায়ংতং-এর সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠতে গেলে হাঁটতে হবে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পাহড়ি রাস্তা। যেখানে কোথাও এক ফুটের জন্য রাস্তা নিচের দিকে নামেনি! শুরু থেকে শেষ অব্দি একদম পুরোটাই রাস্তা খাড়া।

মারায়ংতং-এর চূড়ায় ক্যাম্পিং করাটা অনেকটা দুঃসাহসিক ব্যাপার। ‘মারায়ংতং’, ‘মারাইংতং’, ‘মেরাইথং’ বিভিন্ন নামেই ও ডাকা হয় এই পাহাড়কে। চূড়ায় উঠেই সবার প্রথমে চোখে পড়ে বিশাল এক জাদি। জাদি হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মীদের এক পূণ্যস্হান। এমনভাবে জাদিটি বানানো যেন সে দূর কোনো প্রান্তের দিকে তাকিয়ে প্রকৃতির রহস্য নিয়ে ভাবছে আর স্মিত হাসি ফুটে উঠছে তার ঠোঁটে। জাদির চারদিকে খোলা ও ওপরের দিকে চালা।

পাহাড়টির ওপরের অংশটুকু সমতল। যত দূর দৃষ্টি যায় কেবল পাহাড় আর পাহাড়। পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে জনবসতি। নিচে এঁকে-বেঁকে বয়ে চলেছে মাতামুহুরী নদী। নদীর দুই কূলে দেখা যায় ফসলের ক্ষেত। এ পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন আদিবাসীদের বসবাস। এদের মধ্যে ত্রিপুরা, মারমা ও মুরং অন্যতম।

এই পাহাড়ের নিচে থাকে মারমারা। আর পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে মুরংদের পাড়া। এরা পাহাড়ের ঢালে বাড়ি বানিয়ে তারা বসবাস করে। মাটি থেকে সামান্য ওপরে এদের টংঘর।টং ঘরের নিচে থাকে বিভিন্ন গবাদি পশু যেমন-গরু, ছাগল, শূকর ও মুরগি। গবাদি পশুর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জ্বালানি কাঠও রাখা হয় স্তূপ করে রাখা হয়।

বিকেল বেলা সূর্য যখন পাহাড়ের কোলে ঘুমিয়ে পড়ে প্রকৃতির অনন্য একটা রূপের দেখা পাওয়া যায় এখানে। মনে হবে পাহাড় নিজের ছায়াতলে খুব সযত্নে আলতো করে সূর্যটাকে লুকিয়ে রেখে দিচ্ছে। বিকেলের স্নিগ্ধ আলো আর সন্ধ্যার রক্তিম আকাশের মিষ্টি একটা পরিবেশ পাহাড়ের চূড়ায় থাকা সবাইকে গভীরভাবে আলিঙ্গন করে নেয়। চারিদিক স্তব্ধ হয়ে গেলে চূড়ায় থাকা সবকিছুকে খুব গভীরভাবে অনুভব করা যায়, খুব কাছ থেকে প্রকৃতির হিংস্র রূপ দেখে আসা যায় আবার প্রকৃতির করুণা ও উপভোগ করা যায়। ক্ষনিকের জন্য মনে হবে সাজেকের চেয়েও সুন্দর মারায়ংতং!

রাতের আকাশে সুবিন্যস্ত তারকারাজির অমায়িক একটা দৃশ্য ক্রমশই ভুলিয়ে দেয় দিনের বেলার সকল পরিশ্রম, ভয়াবহতা, ক্লান্তি–গ্লানিকে। রাত কাটালে স্রষ্টার নিকট আপন মনে চাওয়া হয় এই রাত যেন শেষ না হয়। প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে ঘুরে আসতে হবে মারায়ংতং।

‘মারায়ংতং, ‘মারাইংতং, ‘মেরাইথং বিভিন্ন নামেই ডাকা হয় এই পাহাড়টিকে। বান্দরবানের আলিকদম এই পাহাড়ের ঠিকানা। উচ্চতা প্রায় ১৬৪০ ফিট। পাহাড়ের চূড়ায় উঠেই যেটা সবার প্রথমে চোখে পড়ে, তা হল বিশাল একটি জাদি। জাদি মানে বৌদ্ধদের পূজা-অর্চনার জন্য বানানো বুদ্ধমূর্তি। এমনভাবে জাদিটি বানানো যেন সে দূর কোনো প্রান্তের দিকে তাকিয়ে প্রকৃতির রহস্য নিয়ে ভাবছে আর স্মিত হাসি ফুটে উঠছে তার ঠোঁটে। জাদির চারদিকে খোলা ও ওপরের দিকে চালা।

ওপরের অংশটুকু সমতল। এখান থেকে যত দূর দৃষ্টি যায় শুধু পাহাড় আর পাহাড়। সেসবের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে জনবসতি। নিচে সাপের মতো এঁকে-বেঁকে বয়ে চলেছে মাতামুহুরী নদী। তার দুই কূলে দেখা যায় ফসলের ক্ষেত। এ পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন আদিবাসীর বসবাস। এদের মধ্যে ত্রিপুরা, মারমা ও মুরং অন্যতম।

এই পাহাড়ের নিচে থাকে মারমারা। আর পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে মুরংদের পাড়া। এরা পাহাড়ের ঢালে তাদের বাড়ি বানিয়ে বসবাস করে। মাটি থেকে সামান্য ওপরে এদের টংঘর। এসব ঘরের নিচে থাকে বিভিন্ন গবাদি পশু যেমন-গরু, ছাগল, শূকর, মুরগি। কখনো গবাদি পশুর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জ্বালানি কাঠও রাখা হয় স্তূপ করে। পাহাড়িদের পাশাপাশি বাঙালিরাও তাদের নিত্যদিনের আয়-রোজগারের জন্য এই পাহাড়ের ওপর নির্ভরশীল। বাঙালিদের অনেকেই পাহাড়ে জন্মানো মুলি বাঁশ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই অঞ্চলটাতে প্রচুর পরিমাণে তামাকেরও চাষ হয়।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে চকরিয়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে চান্দের গাড়ি দিয়ে আলীকদম যাওয়ার পথে আবাসিকে নেমে যাবেন। আবাসিকে নেমে ডান পাশের রাস্তাটা ধরে প্রায় আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন আলীকদমের সবচেয়ে উঁচু পাহাড় মেরাই থংয়ে। সেখানে খাবার ও পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, কাজেই শুকনো খাবার ও পানি সমতল থেকেই নিয়ে যেতে হবে।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারো বলছি দেশে জঙ্গী নেই উহা ছিল আম্লিগ ও ভারতের তৈরী

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৮


আওয়ামী নস্টালজিয়ায় যারা অন্তরের ভিতর পুলকিত বোধ করে তাদের কাছে বাংলাদেশ মানেই হলো জঙ্গী, অকার্যকর অথবা পাকিস্তানের মতো ব্যর্থ রাষ্ট্র। ৩৬ জুলাই পরবর্তী মহা-গণবিস্ফােরনকে কোনাভাবেই মানতে পারেনি তারা ভয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী-লীগের ছায়া দায়িত্ব নিয়ে তারেক জিয়া এখন দেশে

লিখেছেন অপলক , ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৬



সংবাদের টাইটেল অনেক কিছু বলে দেয়। ভেতরেটা না পড়লেও চলে। বস্তুত: এতদিন ধরে ভারতের গ্রীন সিগনাল পাচ্ছিলেন না, তাই তারেক জিয়া দেশে আসার সময় বারবার পিছাচ্ছিলেন। এখন চুক্তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভোটের পর, আমরা পাকীদের বুটের নীচে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩২



পাকীরা অমানুষ, অপসংস্কৃতির ধারক ও বাহক; ওরা ২টি জাতিকে ঘৃণা করে, ভারতীয় ও বাংগালীদের; ওরা মনে করে যে, বাংগালীদের কারণেই পাকিরা হিন্দুদের কাছে পরাজিত হয়েছে ১৯৭১... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফুড ফর থট!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৫



একটা বিশাল আলোচনাকে সংক্ষিপ্ত আকার দেয়া খুবই কঠিন, বিশেষ করে আমার জন্যে। তারপরেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাবলাম কিছু কথা বলা উচিত। দেশের আভ্যন্তরীন বা আঞ্চলিক রাজনীতিতে ক্রমাগত বড় বড় ভূমিকম্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

তারেক রহমান আসবে, বাংলাদেশ হাসবে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৮


আমি যখন স্কুলে পড়তাম, দুপুরের শিফটে ক্লাস ছিল। একদিন স্কুলে যাওয়ার আগে দেখি ছোটো মামা সংসদ টিভিতে অধিবেশন দেখছেন। কৌতূহল হলো, মামা এত মনোযোগ দিয়ে কী দেখছেন। আমিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×