somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

waled ahmed
আমি একজন ছাত্র আমি নতুন ব্লগ খুলছিআমার আশা আমার এই ব্লগ থেকে আপনারাভাল কিছু উপভোগ করতে পারবেন।আমার এই ব্লগ শুধু আপনাদেরকে আনন্দ দেয়ার জন্য।আমার বয়স ১৭বছর।nআমার টাউন সিলেট থাকি সিলেট।nআমি ক্লাস ১০ এ পড়ি

:(মুক্তিযুদ্ধের::::::::ইতিহাস:::::;::১৯৭১""

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

,দেশ
মানুষের যতগুলো অনুভূতি আছে তার মাঝে সবচেয়ে
সুন্দর অনুভূতি হচ্ছে ভালোবাসা। আর এই
পৃথিবীতে যা কিছুকে ভালোবাসা সম্ভব তার
মাঝে সবচেয়ে তীব্র ভালোবাসাটুকু হতে পারে
শুধুমাত্র মাতৃভূমির জন্যে। যারা কখনো নিজের
মাতৃভূমির জন্যে ভালোবাসাটুকু অনুভব করেনি
তাদের মতো দুর্ভাগা আর কেউনেই। আমাদের খুব
সৌভাগ্য আমাদের মাতৃভূমির জন্যে যে
স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল তার ইতিহাস হচ্ছে
গভীর আত্মত্যাগের ইতিহাস, অবিশ্বাস্য সাহস
ও বীরত্বের ইতিহাস এবং বিশাল এক অর্জনের
ইতিহাস। যখন কেউ এই আত্মত্যাগ, বীরত্ব আর
অর্জনের ইতিহাস জানবে, তখন সে যে শুধুমাত্র
দেশের জন্যে একটি গভীরভালোবাসা আর মমতা
অনুভব করবে তা নয়, এই দেশ, এই মানুষের কথা
ভেবে গর্বে তার বুক ফুলে উঠবে।
পূর্ব ইতিহাস
যেকোনো কিছু বর্ণনা করতে হলে সেটি একটু আগে
থেকে বলতে হয়, তাই বাংলাদেশের ইতিহাস
জানার জন্যেও একটু আগে গিয়ে ব্রিটিশ আমল
থেকে শুরু করা যেতে পারে। ব্রিটিশরা এই
অঞ্চলটিকে প্রায় দুইশ’ বছর শাসন-শোষণ করেছে।
তাদের হাত থেকে স্বাধীনতার জন্যে হাজার
হাজার মানুষ প্রাণ দিয়েছে, জেলখেটেছে,
দ্বীপান্তরে গিয়েছে। ১৯৪০ সালে ‘লাহোর
প্রস্তাব’১-এ ঠিক করা হয়েছিল ভারতবর্ষের যে
অঞ্চলগুলোতে মুসলমান বেশি, সে রকম দুটি
অঞ্চলকে নিয়ে দুটি দেশ এবং বাকি অঞ্চলটিকে
নিয়ে আর একটি দেশ তৈরি করা হবে। কিন্তু ১৯৪৭
সালের ১৪ আগস্ট যে এলাকা দুটিতে
মুসলমানরা বেশি সেই এলাকা দুটিনিয়ে দুটি ভিন্ন
দেশ না হয়ে পাকিস্তান নামে একটি দেশ এবং
১৫ আগস্ট বাকি অঞ্চলটিকে ভারত নামে অন্য
একটি দেশে ভাগ করে দেয়া হলো। পাকিস্তান
নামে পৃথিবীতে তখন অত্যন্ত বিচিত্র একটি দেশের
জন্ম হলো, যে দেশের দুটি অংশ দুই জায়গায়। এখন
যেটি পাকিস্তান সেটির নাম পশ্চিম পাকিস্তান
এবং এখন যেটিবাংলাদেশ তার নাম পূর্ব
পাকিস্তান। মাঝখানে প্রায় দুই হাজার
কিলোমিটার দূরত্ব, এবং সেখানে রয়েছে ভিন্ন
একটি দেশ- ভারত!
বিভেদ, বৈষম্য, শোষণ আর ষড়যন্ত্র
পূর্ব আর পশ্চিম পাকিস্তানের মাঝে শুধু যে
প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরত্ব তা নয়,
মানুষগুলোর ভেতরেও ছিল বিশাল দূরত্ব। তাদের
চেহারা, ভাষা, খাবার, পোশাক, সংস্কৃতি,
ঐতিহ্য সবকিছু ছিল ভিন্ন, শুধু একটি বিষয়ে
সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষগুলোর মাঝে মিল ছিল- সেটি
হচ্ছে ধর্ম। এ রকম বিচিত্র একটি দেশ হলে
সেটিটিকিয়ে রাখার জন্যে আলাদাভাবে একটু
বেশি চেষ্টা করার কথা, কিন্তু পাকিস্তানের
শাসকেরা সেই চেষ্টা করল না। দেশভাগের সময়
পশ্চিম পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল দুই কোটি,
পূর্ব পাকিস্তানের ছিল চার কোটি, কাজেই সহজ
হিসেবে বলা যায় শিক্ষা-দীক্ষা, ব্যবসা-
বাণিজ্য, পুলিশ-মিলিটারি, সরকারি কর্মচারী-
কর্মকর্তাসবকিছুতেই যদি একজন পশ্চিম
পাকিস্তানের লোক থাকে, তাহলে সেখানে
দুইজন পূর্ব পাকিস্তানের লোক থাকা উচিত।
বাস্তবে হলো ঠিক তার উলটো, সবকিছুতেই পশ্চিম
পাকিস্তানের ভাগ ছিল শতকরা ৮০ থেকে ৯০
ভাগ। বাজেটের ৭৫% ব্যয় হতো পশ্চিম
পাকিস্তানে, ২৫% ব্যয় হতো পূর্ব পাকিস্তানে,
যদিও পূর্বপাকিস্তান থেকে রাজস্ব আয় ছিল
বেশি, শতকরা ৬২ ভাগ। সবচেয়ে ভয়ংকর ছিল
সেনাবাহিনীর সংখ্যা, পূর্ব পাকিস্তানের
তুলনায় পশ্চিম পাকিস্তানের সৈন্যের সংখ্যা
ছিল ২৫ গুণ বেশি!২
ভাষা আন্দোলন
অর্থনৈতিক নিপীড়ন থেকে অনেক বড়ো নিপীড়ন
হচ্ছে একটি জাতির ভাষা, সংস্কৃতি আর
ঐতিহ্যের ওপর নিপীড়ন, আর পশ্চিম
পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ঠিক সেটিই শুরু
করেছিল। পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল ১৯৪৭ সালে
আর ঠিক ১৯৪৮ সালেই পাকিস্তানের
প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা
এসে ঘোষণাকরলেন উর্দু হবে পাকিস্তানের
রাষ্ট্রভাষা।৩ সাথে সাথে পূর্ব পাকিস্তানের
বাঙালিরা তার প্রতিবাদ করে বিক্ষোভ শুরু করে
দিল। আন্দোলন তীব্রতর হয়ে ১৯৫২ সালের ২১ শে
ফেব্রুয়ারি সারা পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ
বিক্ষোভে ফেটে পড়ল। পুলিশের গুলিতে প্রাণ
দিয়েছিলেন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার এবং
আরোঅনেকে। তারপরেও সেই আন্দোলনকে থামানো
যায়নি, পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীকে শেষ
পর্যন্ত ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষাকে
রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিতে হয়েছিল।৪ যেখানে
আমাদের ভাষা শহীদরা প্রাণ দিয়েছিলেন,
সেখানে এখন আমাদের প্রিয় শহীদ মিনার, আর
২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখটি শুধু বাংলাদেশের
জন্যে নয়, এখনসারা পৃথিবীর মানুষের জন্যে
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
সামরিক শাসন
একেবারে গোড়া থেকেই পাকিস্তানে শাসনের
নামে এক ধরনের ষড়যন্ত্র হতে থাকে, আর সেই
ষড়যন্ত্রের সবচেয়ে বড়ো খেলোয়াড় ছিল
সেনাবাহিনী। দেশের বাজেটের ৬০% ব্যয় করা
হতো সেনাবাহিনীর পিছনে,৫ তাই তারা তাদের
অর্থ, বিত্ত, ক্ষমতা, সুযোগ-সুবিধার লোভনীয়
জীবন বেসামরিক মানুষের হাতে ছেড়ে
দিতেপ্রস্তুত ছিল না। নানারকম টালবাহানা
করে রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে ১৯৫৮ সালে
পাকিস্তানের সেনাপতি আইয়ুব খান
পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করে নেন। সেই
ক্ষমতায় তিনি একদিন দুইদিন ছিলেন না, ছিলেন
টানা এগারো বৎসর। সামরিক শাসন কখনো
কোথাও শুভ কিছু আনতে পারে না- সারা
পৃথিবীতেএকটিও উদাহরণ নেই যেখানে সামরিক
শাসন একটি দেশকে এগিয়ে নিতে পেরেছে- আইয়ুব
খানও পারেনি।
ছয় দফা
দেশে সামরিক শাসন, তার ওপর পূর্ব
পাকিস্তানের মানুষের ওপর এতরকম বঞ্চনা,
কাজেই বাঙালিরা সেটি খুব সহজে মেনে নিতে
প্রস্তুত ছিল না। বাঙালিদের সবচেয়ে বড়ো
রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের তেজস্বী
নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব
পাকিস্তানের মানুষের জন্যে স্বায়ত্তশাসন
দাবি করে ১৯৬৬ সালে ৬দফা৬ ঘোষণা করলেন।
ছয় দফা ছিল পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের
সবরকম অর্থনৈতিক শোষণ, বঞ্চনা আর নিপীড়ন
থেকে মুক্তির এক অসাধারণ দলিল।৭ তখন
পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের ওপর যে রকম
অত্যাচার-নির্যাতন চলছিল, তার মাঝে ছয়
দফা দিয়ে স্বায়ত্তশাসনের মতো একটি দাবি
তোলায় খুবসাহসের প্রয়োজন। ছয় দফার দাবি
করার সাথে সাথেই আওয়ামী লীগের ছোট বড়ো
সব নেতাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পুরে দেয়া হলো।
শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে একটি
কঠিন শাস্তি দেয়ার জন্যে তাঁকে আগরতলা
ষড়যন্ত্র মামলা নামে দেশদ্রোহিতার একটি
মামলার প্রধান আসামি করে দেয়া হলো।৮
পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা কিছুতেই এটা
মেনে নিল না এবং সারাদেশে আন্দোলন শুরু হয়ে
গেল। জেল-জুলুম, পুলিশ, ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান
রাইফেলস)-এর গুলি, কিছুই বাকি থাকল না,
কিন্তু সেই আন্দোলনকে থামিয়ে রাখা গেল না।
আন্দোলনের নেতৃত্ব দিল ছাত্রেরা, তাদের ছিল
এগারো দফা৯ দাবি। মওলানাআবদুল হামিদ
খান ভাসানী ছিলেন জেলের বাইরে, তিনিও
এগিয়ে এলেন। দেখতে দেখতে সেই আন্দোলন একটি
গণবিস্ফোরণে রূপ নিল- কার সাধ্যি তাকে
থামায়? ’৬৯-এর গণআন্দোলনে প্রাণ দিয়েছিল
ফুটফুটে কিশোর মতিউর, প্রাণ দিয়েছিল ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদ- যার নামে
আইয়ুব গেটের নাম হয়েছিলআসাদ গেট।
পাকিস্তান সরকার শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানসহ সব নেতাকে মুক্তি দিতে বাধ্য
হলো। শুধু তাই নয়, প্রবল পরাক্রমশালী
প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান পাকিস্তান
সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া
খানকে ক্ষমতা দিয়ে বিদায় নিল।
তারিখটি ছিল ১৯৬৯-এর ২৫ মার্চ, কেউ তখন
জানত না ঠিক দুই বছর পর একই দিনে এই দেশের
মাটিতে পৃথিবীর জঘন্যতম একটি গণহত্যা শুরু
হবে।
পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচন
জেনারেল ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় এসেই
পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম সাধারণ
নির্বাচন দেবার কথা ঘোষণা করে, তারিখটি শেষ
পর্যন্ত ঠিক করা হয় ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর।
নির্বাচনের কিছুদিন আগে ১২ নভেম্বর পূর্ব
পাকিস্তানের উপকূল এলাকায় পৃথিবীর
ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ
ঘটে গেল- একপ্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় দশ
লক্ষ লোক মারা গেল। এত বড়ো একটি ঘটনার পর
পাকিস্তান সরকারের যেভাবে সাহায্য
সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত ছিল, তারা
মোটেও সেভাবে এগিয়ে এল না। ঘূর্ণিঝড়ের পরেও
যারা কোনোভাবে বেঁচে ছিল তাদের অনেকে মারা
গেল খাবার আর পানির অভাবে।১০ ঘূর্ণিঝড়ে
কষ্টপাওয়া মানুষগুলোর প্রতি এ রকম অবহেলা
আর নিষ্ঠুরতা দেখে পূর্ব পাকিস্তানের
বাঙালিরা জেনারেল ইয়াহিয়া খানের
সরকারের প্রতি বিতৃষ্ণা আর ঘৃণায় ক্ষুব্ধ হয়ে
উঠল। প্রচ ক্ষোভে মওলানা ভাসানী একটি
প্রকাশ্য সভায় স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান দাবি
করে একটি ঘোষণা দিয়ে দিলেন।১১
১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে
সারা পাকিস্তানে প্রথম সাধারণ নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হলো। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বড়ো
বড়ো জেনারেলের রাজনৈতিক নেতাদের জন্যে
কোনো শ্রদ্ধাবোধ ছিল না। তারা ধরেই নিয়েছিল,
নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দল একক
সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না, তাই দলগুলো
নিজেদেরভেতর ঝগড়াঝাটি আর কোন্দল করতে
থাকবে আর সেটিকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে
সেনাবাহিনী ক্ষমতায় থেকে দেশটাকে লুটেপুটে
খাবে।১২ কাজেই নির্বাচনের ফলাফল দেখে
জেনারেল ইয়াহিয়া খানের মাথায় আকাশ
ভেঙে পড়ল, ফলাফলটি ছিল অবিশ্বাস্য- পূর্ব
পাকিস্তানের ১৬২ আসনের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর
আওয়ামী লীগবিপুল ভোটের ব্যবধানে ১৬০টি
আসন পেয়েছে। যখন সকল আসনে নির্বাচন শেষ হলো
তখন দেখা গেল, মনোনীত মহিলা আসনসহ
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ৩১৩টি আসনের
মাঝে পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ ১৬৭টি,
পশ্চিম পাকিস্তানে জুলফিকার আলী ভুট্টোর দল
পিপলস পার্টি ৮৮টি এবং অন্য সব দল মিলেপেয়েছে
বাকি ৫৮টি আসন।
সোজা হিসেবে এই প্রথম পাকিস্তান শাসন করবে
পূর্ব পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দ। বঙ্গবন্ধু পরিষ্কার
করে বলে দিলেন, তিনি ছয় দফার কথা বলে
জনগণের ভোট পেয়েছেন এবং তিনি শাসনতন্ত্র
রচনা করবেন ছয় দফার ভিত্তিতে, দেশ শাসিত হবে
ছয় দফার ভিত্তিতে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তখনই সিদ্ধান্ত
নিয়ে নিল, কোনোভাবেই বাঙালিদের হাতে
পাকিস্তানের শাসনভার তুলে দেয়া যাবে না।
নিজের অজান্তেই জেনারেল ইয়াহিয়া খান আর
তার দলবল ‘বাংলাদেশ’ নামে নতুন একটি
রাষ্ট্র জন্ম দেবার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল।
ষড়যন্ত্র
জেনারেলদের ষড়যন্ত্রে সবচেয়ে বড়ো
সাহায্যকারী ছিল সেনাশাসক আইয়ুব খানের
এক সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পশ্চিম
পাকিস্তানের পিপলস পার্টির সভাপতি
জুলফিকার আলী ভুট্টো। হঠাৎ করে জুলফিকার
আলী ভুট্টো জেনারেল ইয়াহিয়া খানকে
লারকানায় ‘পাখি শিকার’ করতে আমন্ত্রণ
জানাল। ‘পাখি শিকার’ করতেজেনারেল
ইয়াহিয়া খানের সাথে যোগ দিল পাকিস্তানের
বাঘা বাঘা জেনারেল। বাঙালিদের হাতে
কেমন করে ক্ষমতা না দেয়া যায় সেই ষড়যন্ত্রের
নীল নকশা সম্ভবত সেখানেই তৈরি হয়েছিল।১৩
ভেতরে ভেতরে ষড়যন্ত্র চলতে থাকলেও জেনারেল
ইয়াহিয়া খান সেটি বাইরে বোঝাতে চাইল না।
তাই সে ১৩ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করল ৩ মার্চ
ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন হবে। সবাই
তখন গভীর আগ্রহে সেই দিনটির জন্যে অপেক্ষা
করতে থাকে।
এর মাঝে ১৯৭১ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি
বাঙালিদের ভালোবাসা এবং মমতার শহীদ
দিবস উদ্যাপিত হলো অন্য এক ধরনের উন্মাদনায়।
শহীদ মিনারে সেদিন মানুষের ঢল নেমেছে, তাদের
বুকের ভেতর এর মাঝেই জন্ম নিতে শুরু করেছে
স্বাধীনতার স্বপ্ন। ২১শে ফেব্রুয়ারিতে
বাঙালিদের সেই উন্মাদনা দেখে
পাকিস্তানসেনাশাসকদের মনের ভেতরে যেটুকু
দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল সেটিও দূর হয়ে গেল। জুলফিকার
আলী ভুট্টো ছিল সংখ্যালঘু দলে, তার ক্ষমতার
অংশ পাবার কথা নয়, কিন্তু সে ক্ষমতার জন্যে
বেপরোয়া হয়ে উঠল। জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের
ঠিক দুই দিন আগে ১ মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া
খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতকরে দিল।
পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের বুকের ভেতর
ক্ষোভের যে বারুদ জমা হয়ে ছিল, সেখানে যেন
অগ্নিস্ফুলিঙ্গ স্পর্শ করল। সারাদেশে বিক্ষোভের
যে বিস্ফোরণ ঘটল তার কোনো তুলনা নেই।
উত্তাল মার্চ
জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত হয়ে গেছে, এ
ঘোষণাটি যখন রেডিওতে প্রচার করা হয়েছে, তখন
ঢাকা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের সাথে
কমনওয়েলথ একাদশের খেলা চলছে। মুহূর্তের
মাঝে জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, ঢাকা স্টেডিয়াম
হয়ে ওঠে একটি যুদ্ধক্ষেত্র। স্কুল-কলেজ, অফিস-
আদালত, দোকানপাট সবকিছু বন্ধহয়ে যায়। লক্ষ
লক্ষ মানুষ পথে নেমে আসে, পুরো ঢাকা শহর
দেখতে দেখতে একটি মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়ে
যায়। মানুষের মুখে তখন উচ্চারিত হতে থাকে
স্বাধীনতার স্লোগান : ‘জয় বাংলা’, ‘বীর
বাঙালী অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’
বঙ্গবন্ধু ঢাকা এবং সারাদেশে মিলিয়ে ৫ দিনের
জন্যে হরতাল ও অনির্দিষ্টকালের জন্যে অসহযোগ
আন্দোলনের ডাক দিলেন। সেই অহিংস অসহযোগ
আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান সরকারকে
কোনোভাবে সাহায্য না করার কথা বলেছিলেন
এবং তাঁর মুখের একটি কথায় সারা পূর্ব
পাকিস্তান অচল হয়ে গেল। অবস্থা
আয়ত্তেআনার জন্যে কারফিউ দেয়া হলো- ছাত্র
জনতা সেই কারফিউ ভেঙে পথে নেমে এল।
চারিদিকে মিছিল, স্লোগান আর বিক্ষোভ,
সেনাবাহিনীর গুলিতে মানুষ মারা যাচ্ছে,
তারপরেও কেউ থেমে রইল না, দলে দলে সবাই
পথে নেমে এল।
২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক
বটতলায় বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত
স্বাধীন বাংলার পতাকা তোলা হলো। ৩
মার্চ পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগের জনসভায়
জাতীয় সংগীত হিসেবে কবি রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি
নির্বাচন করা হলো।১৪
পাঁচদিন হরতালের পর ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু বর্তমান
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভাষণ দিতে এলেন।
ততদিনে পুরো পূর্ব পাকিস্তান চলছে বঙ্গবন্ধুর
কথায়। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর ভাষণ শুনতে
এসেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আক্ষরিক অর্থে
একটি জনসমুদ্র। বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে
ঘোষণা করলেন, ‘এবারের সংগ্রাম
আমাদেরমুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম
স্বাধীনতার সংগ্রাম।’১৫ পৃথিবীর ইতিহাসে
এ রকম ভাষণ খুব বেশি দেয়া হয়নি। এই ভাষণটি
সেদিন দেশের সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল এবং
স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় অকাতরে প্রাণ
দিয়ে দেশকে স্বাধীন করার শক্তি যুগিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে একদিকে যখন সারাদেশে অসহযোগ
আন্দোলন চলছে- অন্যদিকে প্রতিদিন দেশের আনাচে
কানাচে পাকিস্তান মিলিটারির গুলিতে শত শত
মানুষ মারা যাচ্ছে। পাকিস্তান মিলিটারির
গতিবিধি থামানোর জন্যে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা
পথে পথে ব্যারিকেড গড়ে তুলছে। সারাদেশে ঘরে
ঘরে কালো পতাকার সাথেস্বাধীন
বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে। দেশের ছাত্র-
জনতা স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্যে ট্রেনিং নিচ্ছে।
মওলানা ভাসানী ৯ মার্চ পল্টন ময়দানের
জনসভায় পরিষ্কার ঘোষণা দিয়ে বলে দিলেন,
পশ্চিম পাকিস্তানিরা যেন আলাদা করে তাদের
শাসনতন্ত্র তৈরি করে, কারণ পূর্ব পাকিস্তানের
জনগণ একটি স্বাধীন দেশের জন্ম দিয়েনিজেদের
শাসনতন্ত্র নিজেরাই তৈরি করে নেবে।১৬
ঠিক এই সময়ে জেনারেল ইয়াহিয়া খান
গণহত্যার প্রস্তুতি শুরু করে দিল। বেলুচিস্তানের
কসাই নামে পরিচিত জেনারেল টিক্কা খানকে
পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর করে পাঠাল, কিন্তু
পূর্ব পাকিস্তানের কোনো বিচারপতি তাকে
গভর্নর হিসেবে শপথ করাতে রাজি হলেন না।
ইয়াহিয়া খান নিজে মার্চের ১৫ তারিখ ঢাকায়
এসেবঙ্গবন্ধুর সাথে আলোচনার ভান করতে
থাকে, এর মাঝে প্রত্যেক দিন বিমানে করে
ঢাকায় সৈন্য আনা হতে থাকে। যুদ্ধজাহাজে
করে অস্ত্র এসে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে, কিন্তু
জনগণের বাধার কারণে সেই অস্ত্র তারা
নামাতে পারছিল না। ২১ মার্চ এই যড়যন্ত্রে
ভুট্টো যোগ দিল, সদলবলে ঢাকা পৌঁছে সে
আলোচনারভান করতে থাকে।
১৯ মার্চ জয়দেবপুরে বাঙালি সেনারা বিদ্রোহ
করে বসে। তাদের থামানোর জন্যে ঢাকা থেকে যে
সেনাবাহিনী পাঠানো হয় তাদের সাথে
সাধারণ জনগণের সংঘর্ষে অসংখ্য মানুষ প্রাণ
হারায়। ২৩ মার্চ ছিল পাকিস্তান দিবস কিন্তু
সেনাবাহিনীর ক্যান্টনমেন্ট আর গভর্নমেন্ট
হাউজ ছাড়া সারা বাংলাদেশে কোথাও
পাকিস্তানেরপতাকা খুঁজে পাওয়া গেল না।
১৭ ধানম-িতে বঙ্গবন্ধুর বাসাতেও সেদিন
‘আমার সোনার বাংলা’ গানের সাথে সাথে
স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তোলা হলো।১৮
পরদিন ২৪ মার্চ, সারাদেশে একটি থমথমে
পরিবেশ- মনে হয় এই দেশের মাটি, আকাশ, বাতাস
আগেই গণহত্যার খবরটি জেনে গিয়ে গভীর
আশঙ্কায় রুদ্ধ নিঃশ্বাসে অপেক্ষা করে ছিল।
গণহত্যার শুরু : অপারেশন সার্চলাইট
গণহত্যার জন্যে জেনারেল ইয়াহিয়া খান ২৫
মার্চ তারিখটা বেছে নিয়েছিল কারণ সে বিশ্বাস
করত এটা তার জন্যে একটি শুভদিন। দুই বছর আগে
এই দিনে সে আইয়ুব খানের কাছ থেকে ক্ষমতা
পেয়ে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হয়েছিল। ২৫ মার্চ
রাতে বাংলাদেশের ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম
গণহত্যার আদেশ দিয়ে সে সন্ধেবেলাপশ্চিম
পাকিস্তানে যাত্রা শুরু করে দিল। জেনারেল
ইয়াহিয়া খান সেনাবাহিনীকে বলেছিল, তিরিশ
লক্ষ বাঙালিকে হত্যা কর, তখন দেখবে তারা
আমাদের হাত চেটে খাবে!১৯ গণহত্যার নিখুঁত
পরিকল্পনা অনেক আগে থেকে করা আছে সেই
নীল নকশার নাম অপারেশন সার্চলাইট,২০
সেখানে স্পষ্ট করে লেখা আছে কেমনকরে আলাপ
আলোচনার ভান করে কালক্ষেপণ করা হবে,
কীভাবে বাঙালি সৈন্যদের নিশ্চিহ্ন করা হবে,
কীভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আক্রমণ করা
হবে, সোজা কথায়, কীভাবে একটি জাতিকে
ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
শহরের প্রতিটি রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে রাখা
হয়েছে, লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে দেরি হবে তাই নির্দিষ্ট
সময়ের আগেই রাত সাড়ে এগারোটায়
পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন
সার্চলাইটের কাজ শুরু করে দিল। শুরু হলো
পৃথিবীর জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ, এই হত্যাযজ্ঞের
যেন কোনো সাক্ষী না থাকে সেজন্যে সকল
বিদেশী সাংবাদিককেদেশ থেকে বের করে দেয়া
হয়েছিল। তারপরেও সাইমন ড্রিং নামে একজন
অত্যন্ত দুঃসাহসী সাংবাদিক জীবনের ঝুঁকি
নিয়ে ঢাকা শহরে লুকিয়ে এই ভয়াবহ গণহত্যার
খবর ওয়াশিংটন পোস্টের মাধ্যমে সারা
পৃথিবীকে জানিয়েছিলেন।২১
ঢাকা শহরের নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে
পড়ার আগে পাকিস্তান মিলিটারি সব বাঙালি
অফিসারকে হয় হত্যা না হয় গ্রেপ্তার করে নেয়,
সাধারণ সৈন্যদের নিরস্ত্র করে রাখে।
পিলখানায় ই.পি.আরদেরকে নিরস্ত্র করা হয়েছিল,
তারপরেও তাদের যেটুকু সামর্থ্য ছিল সেটি নিয়ে
সারারাত যুদ্ধ করেছে। রাজারবাগ
পুলিশলাইনে পুলিশদের নিরস্ত্র করা সম্ভব হয়নি
এবং এই পুলিশবাহিনীই সবার আগে পাকিস্তান
সেনাবাহিনীর সাথে সত্যিকার একটি যুদ্ধ শুরু
করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী অনেক ক্ষতি
স্বীকার করে পিছিয়ে গিয়ে ট্যাংক, মর্টার,
ভারি অস্ত্র, মেশিনগান নিয়ে পালটা আক্রমণ
করে শেষ পর্যন্ত রাজারবাগ পুলিশ লাইনের
নিয়ন্ত্রণ নেয়।২২
২৫ মার্চের বিভীষিকার কোনো শেষ নেই।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি দল ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এসে ইকবাল হল
(বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) আর
জগন্নাথ হলের সব ছাত্রকে হত্যা করল। হত্যার
আগে তাদের দিয়েই জগন্নাথ হলের সামনে একটি
গর্ত করা হয়, যেখানে তাদের মৃতদেহকে মাটি
চাপা দেয়াহয়। এই নিষ্ঠুর হত্যাকা-ের দৃশ্যটি
বুয়েটের প্রফেসর নুরুল উলা তাঁর বাসা থেকে যে
ভিডিও করতে পেরেছিলেন, সেটি এখন ইন্টারনেটে
মুক্তিযুদ্ধের আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে, পৃথিবীর
মানুষ চাইলেই নিজের চোখে সেটি দেখতে পারে।২৩
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ছাত্রদের নয়-
সাধারণ কর্মচারী এমনকি শিক্ষকদেরকেওতারা
হত্যা করে। আশেপাশে যে বস্তিগুলো ছিল সেগুলো
জ্বালিয়ে দিয়ে মেশিনগানের গুলিতে অসহায়
মানুষগুলোকে হত্যা করে। এরপর তারা পুরানো
ঢাকার হিন্দুপ্রধান এলাকাগুলো আক্রমণ করে,
মন্দিরগুলো গুঁড়িয়ে দেয়, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়।
যারা পালানোর চেষ্টা করেছে সবাইকে
পাকিস্তান মিলিটারি গুলি করে হত্যাকরেছে। ২৫
মার্চ ঢাকা শহর ছিল নরকের মতো, যেদিকে
তাকানো যায় সেদিকে আগুন আর আগুন,
গোলাগুলির শব্দ আর মানুষের আর্তচিৎকার।
অপারেশন সার্চলাইটের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা,
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি কমান্ডো দল
এসে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল। আগেই খবর
পেয়ে তিনি তাঁর দলের সব নেতাকে সরে যাবার
নির্দেশ দিয়ে নিজে বসে রইলেন নিশ্চিত মৃত্যুকে
আলিঙ্গন করার জন্যে।
স্বাধীন বাংলাদেশ
কমান্ডো বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে ধরে নিয়ে যাবার
আগে তিনি বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন দেশ
হিসেবে ঘোষণা করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর
হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে
গেলেন। তাঁর ঘোষণাটি তৎকালীন ই.পি.আর-এর
ট্রান্সমিটারে করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে
সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ল।২৪ যখন
ঘোষণাটিপ্রচারিত হয় তখন মধ্যরাত পার হয়ে ২৬
মার্চ হয়ে গেছে, তাই আমাদের স্বাধীনতা
দিবস হচ্ছে ২৬ মার্চ।
পূর্ব পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি পৃথিবীর
মানচিত্র থেকে চিরদিনের জন্যে মুছে গেল, জন্ম নিল
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। কিন্তু সেই
বাংলাদেশ তখনো ব্যথাতুর, যন্ত্রণাকাতর।
তার মাটিতে তখনো রয়ে গেছে পাকিস্তান
সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর দানবেরা।
প্রতিরোধ আর প্রতিরোধ
ঢাকা শহরে পৃথিবীর একটি নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞ
চালিয়ে ২৭ মার্চ সকাল আটটা থেকে বিকেল
তিনটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হলে শহরের
ভয়ার্ত নারী-পুরুষ-শিশু নিরাপদ আশ্রয়ের জন্যে
গ্রামের দিকে ছুটে যেতে লাগল। জেনারেল
টিক্কা খান ভেবেছিল সে যেভাবে ঢাকা শহরকে
দখল করেছে, এভাবে সারা
বাংলাদেশকেএপ্রিলের দশ তারিখের মাঝে দখল
করে নেবে। কিন্তু বাস্তবে সেটি হলো সম্পূর্ণ ভিন্ন-
বিভিন্ন এলাকা থেকে পালিয়ে আসা বাঙালি
সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা, এই দেশের ছাত্র-
জনতা সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত অবস্থায় যে প্রতিরোধ
গড়ে তুলেছিল তার কোনো তুলনা নেই।
চট্টগ্রামে বাঙালি সেনাবাহিনী এবং
ই.পি.আর বিদ্রোহ করে শহরের বড়ো অংশের নিয়ন্ত্রণ
নিয়ে নেয়। ২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান
চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আবার
স্বাধীনতার ঘোষণাটি পড়ে শোনান।২৫ এই
ঘোষণাটি সেই সময় বাংলাদেশের সবার ভেতরে
নূতন একটিঅনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছিল। চট্টগ্রাম
শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্যে পাকিস্তান
সেনাবাহিনীকে যুদ্ধজাহাজ থেকে গোলাবর্ষণ
করতে হয় এবং বিমান আক্রমণ চালাতে হয়।
বাঙালি যোদ্ধাদের হাত থেকে চট্টগ্রাম শহরকে
পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পাকিস্তান
সেনাবাহিনীর এপ্রিল মাসের ১০ তারিখ হয়ে
যায়। পাকিস্তানসেনাবাহিনী কুষ্টিয়া এবং
পাবনা শহর প্রথমে দখল করে নিলেও বাঙালি
সৈন্যরা তাদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে শহরগুলো
পুনর্দখল করে এপ্রিলের মাঝামাঝি নিজেদের
নিয়ন্ত্রণে রাখে। বগুড়া দিনাজপুরেও একই ঘটনা
ঘটে- বাঙালি সৈন্যরা পাকিস্তান
সেনাবাহিনীর হাত থেকে শহরগুলোকে পুনর্দখল
করে নেয়। যশোরে বাঙালিসৈন্যদের নিরস্ত্র করার
চেষ্টা করার সময় তারা বিদ্রোহ করে, প্রায়
অর্ধেক সৈন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে
প্রাণ হারালেও বাকিরা ক্যান্টনমেন্ট থেকে
মুক্ত হয়ে আসতে পারে। কুমিল্লা, খুলনা ও
সিলেট শহর পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিজেদের
দখলে রাখলেও বাঙালি সৈন্যরা তাদের
আক্রমণ করে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে।২৬
পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই সময়ে পাকিস্তান
থেকে দুইটি ডিভিশন বাংলাদেশে নিয়ে আসে। এ
ছাড়াও পরবর্তী সময়ে অসংখ্য মিলিশিয়া
বাহিনী আনা হয়, তার সাথে সাথে
যুদ্ধজাহাজে করে অস্ত্র আর গোলা-বারুদ।
বিশাল অস্ত্রসম্ভার এবং বিমানবাহিনীর
সাহায্য নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী
বাংলাদেশের ভেতরে ছড়িয়ে পড়তেথাকে। মে
মাসের মাঝামাঝি তারা শেষ পর্যন্ত
বাংলাদেশের বড়ো বড়ো শহর নিজেদের দখলে নিয়ে
আসতে পারে। ২৭
পাকিস্তান সরকার ১১ এপ্রিল টিক্কা খানের
পরিবর্তে জেনারেল এ.এ.কে. নিয়াজীকে
সশস্ত্রবাহিনীর দায়িত্ব দিয়ে পাঠায়।
মুক্তিযোদ্ধারা তখন যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু
করার জন্যে গেরিলা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
শরণার্থী
২৫ মার্চের গণহত্যা শুরু করার পর বাংলাদেশে
কেউই নিরাপদ ছিল না তবে আওয়ামী লীগের
কর্মী বা সমর্থক আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রাগ ছিল সবচেয়ে
বেশি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারে এ রকম
তরুণেরাও সেনাবাহিনীর লক্ষ্যবস্তু ছিল।
সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের মাঝে ছিল কমবয়সী
মেয়েরা।সেনাবাহিনীর সাথে সাথে
বাংলাদেশের বিহারি জনগোষ্ঠীও বাঙালি
নিধনে যোগ দিয়েছিল এবং তাদের ভয়ংকর
অত্যাচারে এই দেশের বিশাল এক জনগোষ্ঠী
পাশের দেশ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল।
জাতিসংঘ কিংবা নিউজ উইকের হিসেবে মোট
শরণার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় এক কোটি। সে
সময় বাংলাদেশের জনসংখ্যাইছিল মাত্র সাত
কোটি- যার অর্থ দেশের প্রতি সাতজন মানুষের
মাঝে একজনকেই নিজের দেশ ও বাড়িঘর ছেড়ে
শরণার্থী হিসেবে পাশের দেশে আশ্রয় নিতে
হয়েছিল।২৮
ভারত এই বিশাল জনসংখ্যাকে আশ্রয় দিয়েছিল
কিন্তু তাদের ভরণপোষণ করতে গিয়ে প্রচ- চাপের
মাঝে পড়েছিল। শুনে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে,
কিন্তু আগরতলায় মোট অধিবাসী থেকে
শরণার্থীর সংখ্যা ছিল বেশি। শরণার্থীদের
জীবন ছিল খুবই কষ্টের, খাবার অভাব, থাকার
জায়গা নেই, রোগে শোকে জর্জরিত, কলেরা
ডায়রিয়া এ রকম রোগে অনেক মানুষ মারা যায়।
ছোট শিশু এবং বৃদ্ধদের সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে
হয়েছিল। দেখা গিয়েছিল, যুদ্ধ শেষে কোনো কোনো
শরণার্থী ক্যাম্পে একটি শিশুও আর বেঁচে নেই!
বাংলাদেশ সরকার
একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের আকাঙ্ক্ষা এই
দেশের মানুষের বুকের মাঝে জাগিয়েছিলেন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কিন্তু স্বাধীনতা
যুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন পাকিস্তানের
কারাগারে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে যে
মানুষটি এই সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি
হচ্ছেন তাজউদ্দীন আহমদ। তিনি তাঁর
পরিবারেরসবাইকে তাঁদের নিজেদের ভাগ্যের ওপর
ছেড়ে দিয়ে ৩০ মার্চ সীমান্ত পাড়ি দেন। তখন
তাঁর সাথে অন্য কোনো নেতাই ছিলেন না, পরে
তিনি তাঁদের সবার সাথে যোগাযোগ করে
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন
করেন। এপ্রিলের ১০ তারিখ মুজিবনগর থেকে
ঐতিহাসিক স্বাধীনতার সনদ ঘোষণা করা হয়।
এই সনদটিদিয়েই বাংলাদেশ নৈতিক এবং
আইনগতভাবে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে
আত্মপ্রকাশ করেছিল। এই নূতন রাষ্ট্রে বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল
ইসলাম উপ-রাষ্ট্রপতি ও বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদ
প্রধানমন্ত্রী। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে (মেহেরপুরের
বৈদ্যনাথতলা) বাংলাদেশের প্রথম সরকার
দেশী বিদেশী সাংবাদিকদের সামনে শপথ গ্রহণ
করে তাদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে।২৯
তাদের প্রথম দায়িত্ব বাংলাদেশের মাটিতে রয়ে
যাওয়া পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে
সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনা করা।
পালটা আঘাত
মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধগুলো ছিল
পরিকল্পনাহীন এবং অপ্রস্তুত। ধীরে ধীরে
মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের সংগঠিত করে পালটা
আঘাত হানতে শুরু করে। বাংলাদেশ
সশস্ত্রবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফের দায়িত্ব
দেয়া হয় কর্নেল (অব.) এম. আতাউল গণি
ওসমানীকে, চিফ অফ স্টাফ করা হয় লে. কর্নেল
আবদুর রবকেএবং ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ গ্রুপ
ক্যাপ্টেন এ. কে. খন্দকারকে। পুরো বাংলাদেশকে
১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। ১নং সেক্টরের
(চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম) কমান্ডার
ছিলেন প্রথমে মেজর জিয়াউর রহমান, পরে মেজর
রফিকুল ইসলাম। ২নং সেক্টরের (নোয়াখালী,
কুমিল্লা, দক্ষিণ ঢাকা, আংশিক ফরিদপুর)
কমান্ডারপ্রথমে ছিলেন মেজর খালেদ মোশাররফ,
তারপর ক্যাপ্টেন আব্দুস সালেক চৌধুরী এবং
সবশেষে ক্যাপ্টেন এ. টি. এম. হায়দার। ৩নং
সেক্টরের (উত্তর ঢাকা, সিলেট ও ময়মনসিংহের
অংশবিশেষ) কমান্ডার প্রথমে ছিলেন মেজর কে.
এম শফিউল্লাহ্ এবং তারপর মেজর এ. এন. এম.
নূরুজ্জামান। ৪, ৫ এবং ৬নং সেক্টরের
(যথাক্রমে দক্ষিণ সিলেট, উত্তর সিলেট এবং
রংপুর, দিনাজপুর) কমান্ডার ছিলেন যথাক্রমে
মেজর সি.আর.দত্ত, মেজর মীর শওকত আলী এবং
উইং কমান্ডার এম. কে. বাশার। ৭নং সেক্টরের
(রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা) কমান্ডার ছিলেন
মেজর নাজমুল হক, একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় তাঁর
মৃত্যুর পর মেজর কাজী নুরুজ্জামানসেক্টর
কমান্ডারের দায়িত্ব নেন। ৮নং সেক্টরের
(কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুর) কমান্ডার প্রথমে
ছিলেন মেজর আবু ওসমান চৌধুরী, এবং তারপর
মেজর এম. এ. মনজুর। ৯নং সেক্টরের (খুলনা,
বরিশাল) কমান্ডার ছিলেন মেজর এম. এ. জলিল।
১০নং সেক্টর ছিল নৌ-অঞ্চলের জন্যে, সেটি ছিল
সরাসরি কমান্ডার ইন চিফেরঅধীনে। কোনো
অফিসার ছিল না বলে এই সেক্টরের কোনো
কমান্ডার ছিল না, নৌ-কমান্ডোরা যখন যে
সেক্টরে তাদের অভিযান চালাতেন, তখন সেই
সেক্টর কমান্ডারের অধীনে কাজ করতেন। এই
নৌ-কমান্ডোরা অপারেশন জ্যাকপটের অধীনে
একটি অবিশ্বাস্য দুঃসাহসিক অভিযানে অংশ
নিয়ে আগস্টের ১৫ তারিখেচট্টগ্রামে অনেকগুলো
জাহাজ মাইন দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।৩০ ১১নং
সেক্টরের (টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ) কমান্ডার
ছিলেন মেজর এম. আবু তাহের, নভেম্বরে একটি
সম্মুখযুদ্ধে আহত হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি এর
দায়িত্ব পালন করেন।
এই এগারোটি সেক্টর ছাড়াও জিয়াউর রহমান,
খালেদ মোশাররফ এবং শফিউল্লাহ্র নেতৃত্বে
তাঁদের ইংরেজি নামের অদ্যাক্ষর ব্যবহার করে
জেড ফোর্স, কে ফোর্স এবং এস ফোর্স নামে তিনটি
ব্রিগেড তৈরি করা হয়। এছাড়াও টাঙ্গাইলে
আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি
অঞ্চলভিত্তিক বাহিনী ছিল। তাঁর
অসাধারণনৈপুণ্যে তিনি যে শুধু কাদেরিয়া
বাহিনী নামে একটি অত্যন্ত সুসংগঠিত বাহিনী
গড়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ
করেছিলেন তা নয়, এই বাহিনীকে সাহায্য
করার জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও গড়ে
তুলেছিলেন।৩১ যুদ্ধের শেষের দিকে সশস্ত্রবাহিনীর
সাথে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীও যোগ দিয়েছিল
এবং এই যুদ্ধেপ্রথম বিমান আক্রমণের কৃতিত্বও
ছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর।৩২
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান মিলিটারির নাকের
ডগায় ঢাকা শহরে দুঃসাহসিক গেরিলা
অপারেশন করে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি
আকর্ষণ করেছিল ক্র্যাক প্লাটুন নামে
দুঃসাহসী তরুণ গেরিলাযোদ্ধার একটি দল।৩৩
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল সত্যিকার
অর্থে একটি জনযুদ্ধ। এই দেশের অসংখ্য ছাত্র-
জনতা-কৃষক-শ্রমিক যুদ্ধে যোগ দেয়। তাদের পায়ে
জুতো কিংবা গায়ে কাপড় ছিল না, প্রয়োজনীয়
অস্ত্র ছিল না- এমনকি যুদ্ধ করার জন্যে
প্রশিক্ষণ নেবার সময় পর্যন্ত ছিল না। খালেদ
মোশাররফের ভাষায়, যুদ্ধক্ষেত্রেই
তাদেরপ্রশিক্ষণ নিতে হয়েছিল। তাদের বুকের
ভেতরে ছিল সীমাহীন সাহস আর মাতৃভূমির
জন্যে গভীর মমতা,
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×