somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবুজ রক্ত দিন জীবন বাচান।

১৯ শে জুন, ২০১২ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি মুমূর্ষ জাতিকে বাঁচাতে রক্তের প্রয়োজন, রক্তের রং সবুজ। জীবন এর জন্য রক্তের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই জানি। রক্ত শূন্যতা আমাদের প্রথমে অসুস্থ করে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আমরা আমাদের পরিচিত অপরিচিত কাউকে রক্তের অভাবে মরে যেতে দিতে চাই না, আর সেইজন্য আমরা নিজের শরীর থেকে রক্ত দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করি একটি জীবন। আমাদের শহর আজ ভয়াবহ রক্ত শূন্যতায় ভুগছে। জরুরি ভিত্তিতে রক্ত দেয়া না গেলে মৃত্যু অবধারিত। আমরা যারা অন্যের প্রয়োজনে নিজের শরীর থেকে রক্ত দিতে দ্বিধা করি না, এই শহরের জীবন বাঁচাতে তাদেরকে প্রয়োজন। আমরা এবার সবুজ রক্ত দিবো আমাদের শহরকে বাঁচাতে। হ্যাঁ আমি গাছ লাগানোর কথা বলছি। গাছ কেমন করে শহরের রক্ত হয় এই প্রশ্ন অবান্তর, উত্তর আমি দিতে পারব না যেমন আমি উত্তর দিতে পারব না রক্ত কেমন করে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। রক্তের সঞ্চালন, পরিচালন ও পরিশোধন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করার জন্য বিজ্ঞানে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা জরুরি যা আমার নেই। শহরের রক্ত শূন্যতার ছবি প্রকাশিত হয়েছিল প্রথমআলো পত্রিকায়, জাতিসংঘ ও বিসিএএস এর গবেষণায় উঠে এসেছে সেই ভয়াবহ চিত্র।
১৯৫১ সালে ঢাকার আয়তন ছিল ৬০ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা ছিল ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার, ১৯৭৪ সালে ঢাকার আয়তন প্রায় ৪.৬ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮০ বর্গকিলোমিটার আর তার বিপরীতে জনসংখ্যা বেড়েছে ৪.৮ গুণ। পরবর্তীতে ২০০১ সালে ঢাকার আয়তন ৩৫৩ বর্গকিলোমিটার যা কিনা ১৯৭৪ সালের তুলনায় ১.৩ গুন, বিপরীতে জনসংখ্যা বেড়েছে ৫ গুন। ভয় পাওয়ার মত বিষয় বটে। পরের চিত্রটি আরও ভয়ঙ্কর ২০১২ সালে এই পরিসংখ্যান দাড়ায় এইরকমঃ আয়তন বেড়েছে ১.৪ গুন জনসংখ্যা ৩ গুণ। আপনি কি এইটা ভাবছেন যে ৫ গুণ থেকে ৩ গুণ ভয়ঙ্কর কেমন করে হয় ?১৬ লক্ষের ৫ গুণ আর ৮৪ লক্ষের ৩ গুণ অবশ্যই বেশি ভয়ঙ্কর। সবুজ নিয়ে কথা বলছিলাম, জনসংখ্যার পরিসংখ্যান দিচ্ছি, আমি মনে হয় ধান বানতে শিব এর গীত গাচ্ছি ? মোটেও না আয়তন, জনসংখ্যার সাথে সবুজের প্রয়োজনীয়তা ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। আমি পরিসংখ্যান টি বিশ্লেষণের আগে ফলাফল এর জন্য মোটেও প্রস্তত ছিলাম না।
১৯৭৪ সালে ৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকাতে ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার মানুষের জন্য যে পরিমাণ সবুজ ছিল আজ ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাতে ২ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ এর জন্য সেই পরিমাণ সবুজ নেই। ১৯৭৪ অনেক পুরনো কথা ২০০১ সালের একটা তুলনা মূলক চিত্রঃ আয়তন ৩৫৩ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা ৮৪ লক্ষ, সবুজ ২৮০ বর্গকিলোমিটার।
২০১২ সালঃ আয়তন ৫০০ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা ২ কোটি ৫০ লক্ষ, সবুজ ৭০ বর্গকিলোমিটার। আরও সুনির্দিষ্ট করে বলার প্রয়োজন আছে কি?
গত ১২ বছরে ঢাকার আয়তন বেড়েছে ২৪৭ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা বেড়েছে ১ কোটি ৬৬ লক্ষ আর সবুজ কমেছে ২১০ বর্গকিলোমিটার।
এই আড়াই কোটি মানুষ এর প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ঢাকার বাতাছে আছে কি।।? অপরন্ততু প্রতিদিন কার্বনডাইঅক্সাইড, কার্বনমনোক্সাইড, সি আফ সি, উৎপাদন কারি গাড়ি, এয়ারকন্ডিশন, ফ্রিজ এর সংখ্যা বারছে জ্যামিতিক হারে।
তাহলে আমরা বেঁচে আছি কেমন করে ? হ্যাঁ বিস্ময়কর বটে। আমরা কেমন করে বেঁচে আছি এই বিষয়ে এক বিদেশি কূটনীতিক কিছুদিন আগে ঢাকা সফর শেষে উম্মা প্রকাশ করে বলেছিলেন “আমি নাস্তিক, কিন্তু ঢাকা ভ্রমণ করে আমি বিশ্বাস করি কেবল মাত্র গড-ই পারেন তাদের কে বাঁচিয়ে রাখতে” কৌতুক হিসাবে চায়ের আসরে এই নিয়ে আমরা গল্প ও করেছি।নিজের শরীরের ক্যান্সার নিয়ে ও আমরা কৌতুক করতে পারি, আমরা রসিক বটে। কিন্তু কৌতুক করে কালক্ষেপণ করার সময় নেই বন্ধু, রক্তশূন্যতা আমাদের দেহের রন্দ্রে রন্দ্রে ক্যান্সার তৈরি করছে, আমারা ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে আছি। আমার মনে পরে ছোটবেলায় বাংলা সিনামায় ক্যান্সার নামক একটা অসুখ এর কথা শুনতাম। তখন থেকে জানি ক্যান্সার একটি ভয়ঙ্কর অসুখ মৃত্যু আবধারিত। আজ যদি একটু চারপাশে চোখ ভুলায় নিজের আত্মীয় স্বজন এর মধ্যে কয়েকজন ক্যান্সার রোগী দেখতে পাই।ব্লগে, সোশ্যাল মিডিয়াতে, মার্কেটে ক্যান্সার আক্রান্তের সাহায্যের জন্য মানবিক আবেদন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এই ক্যান্সার কি শুধু ক্যামিক্যাল যুক্ত খাবার এর জন্য ??? বাতাসের সিসা, কার্বনমনো অক্স্যাডের কি কোন ভূমিকা নেই? খাবারে বিষ(ফরমালিন) মেশানোর মত নৈতিক অবক্ষয়, ভালবাসার মানুষকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করার জন্য যে বিকৃত মানসিকতার প্রয়োজন তার পিছনে কি সবুজ বিহীন ইট কাঠ পাথর এর কোন প্রভাব কি থাকতে পারে? আমাকে ভাবাচ্ছে আপনি ও ভাবুন। গাছ লাগান যেইখানে পারেন গাছ লাগান। একটা সুস্থ, সবুজ পৃথিবী হোক আমার সন্তানের কাছে আমার অঙ্গীকার।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১২ সকাল ১১:৪৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×