somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীনতার "সেলফি"

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭১ সালে আমি স্কুল পডুয়া।মফস্বল শহরে থাকি।স্কুলে যাওয়া আসা পাঁয়ে হেঁটেই চলতো। তখনকার সময়ে সবশ্রেনীর স্কুল ছাত্ররদের একা একা এভাবে স্কুলে যাওয়া আসাটা ছিল স্বাভাবিক ।অভিবাবকরা ছেলে মেয়েদের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে এমন দৃশ্য কালে ভদ্রে দু- একটা চোখে পড়তো ।

স্বাধীনতা আন্দোলন তখন তুঙ্গে। সারাদিন মিছিল মিটিং।জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত চারিদিক।উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছে সবাই। আমরা ছোটরাও কম উত্তোজিত নই ।মিছিল দেখতাম মিটিং দেখতাম কিনতু যোগ দেওয়ার সাহস হতো না।অজানা একটা ভয় কাজ করতো্।তাছাড়া মফস্বল শহরে তখন অচেনা মনুষের চেয়ে চেনা মানুষের পরিধি অনেক বড় ছিল তাই যদি কেউ দেখে ফেলে এই ভয়টাও কাজ করতো।

একদিন এই ভয়টা আর রইল না। একটা মিছিলে ঢুকে পড়লাম ,চিৎকার দিয়ে শ্লোগান দিয়ে উঠলাম জয়য়য়য়য় বাংলা।
পরে বুঝেছিলাম সেদিন ঐ শ্লোগান দিয়ে আমি আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অংশীদার হয়ে গিয়েছিলাম।এটাই আমার জীবনের সবচেয়েে বড় গর্ব।

৭ ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষন স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্য মাত্রা যোগ করলো।আরো বেশি দুর্বার হয়ে উঠলো বাঙালি। ২৫শে মার্চে পাকিস্তানি হানাদারদের চরম নৃশংসতা বাঙালির সেই দুর্বার আন্দোলনকে ঠেকাতে পারলো না।স্বাধিনতা আন্দোলন পরিণত হলো স্বাধীনতার যুদ্ধে।

আমরা বিজয় নিয়ে ফিরলাম।
আমরা স্বাধীনতা নিয়ে ফিরলাম। মাত্র নয় মাসে যুদ্ধের ময়দান থেকে স্বাধীনতা নিয়েই ফিরলাম।

১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ ,জন্ম হলো একটি নতুন দেশের একটি নতুন স্বপ্নের।

১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ আমাদের স্বপ্ন দেখা শুরু।
১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ স্বপ্ন ভাঙ্গার শুরু।
ফিরে আসলো পাকিস্তানি স্টাইলের দুষ্ট সামরিক শাসন ও পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা !! সাথে যুক্ত হলো নষ্ট রাজনীতি ।

স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও সেই নষ্ট রাজনীতি আর পাকিস্তানি প্রেতাত্মার হাত থেকে আমাদের মুক্তি মিললো না। সমাজের -রাষ্ট্রের-ধর্মের আপদমস্তক ঢাকা পড়ে গেল দুর্নীতীর চাদরে।
২২ পরিবারকে হটিয়ে ২২ হাজার পরিবারের জন্ম হলো।
নয় মাসের মুক্তিযোদ্ধাদের পুরস্কার দেওয়া ৪৩ বছরেও শেষ করতে পারলাম না। তৈরী করে চলেছি ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষনে শেষ কথাটি ছিল "এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম"। যার শেষটা আমরা পেয়েছি কিন্তু শুরুটা পাইনি।

আজ আমরা ৪৪তম স্বাধীনতার বিজয় দিবস পালন করছি কিন্তু মুক্তির বিজয় আমাদের অধরাই থেকে গেল।

স্বাধীনতা আন্দোলনে সল্প উপস্থিতির যে গর্ব আমার আছে তা আমৃত্যু অমলিন হয়ে থাকবে।
কিন্তু ১৯৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বর যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখার শুরু করেছিলাম তা এখন আর অমলিন নেই !

আসলে "নয় মাস" স্বাধীনতার যুদ্ধের জন্য হয়তো যথেষ্ট সময় কিন্তু মুক্তি যুদ্ধের জন্য নয়।

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৫
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×