somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের অর্থনীতী ও জনশক্তি রপ্তানি।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭৩ সালে মধ্যপ্রাচ্য হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করে দিলে সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা টালমাটাল হয়ে উঠে । বিশেষ করে বাংলাদেশের মত সদ্য স্বাধীন ও বৈদেশিক মূদ্রাশুন্য দেশের অবস্থা একেবারে মাথা-গোবরে! উন্নত দেশগুলি উৎপাদিত পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে এই বিপর্যয় দ্রুত সামাল দিতে পারলেও বাংলা দেশের মত আমদানি নির্ভর দেশগুলিতে ঘটে যায় অর্থনেতিক এবং মানবিক বিপর্যয়।

সবাই ধরে নিয়েছিল এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে বাংলদেশের কয়েক দশক পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে কিন্তু দেখা গেল কয়েক বছর যেতে না যেতেই এই বিপর্যয় বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠলো।

তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারনে সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সমূহের অর্থনীতি অবিশ্বাস্য ভাবে এতটাই ফুলে-ফেঁপে উঠলো তারা আর কূটোটি নাড়তে রাজী নয়। উন্নয়ন শুরু হলো বিদ্যুত গতিতে।সাথে বাড়লো আরাম আয়েস।

প্রয়োজন হয়ে পড়ল নির্মান শ্রমিক সহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের জন্য দক্ষ শ্রমিক এবং পরিচ্ছনতা ও আরাম আয়েসের জন্য দরকার হলো অদক্ষ শ্রমিক ।

মূলত ১৯৭৬ সাল থেকেই এ দেশ থেকে শ্রমিক রপ্তানি শুরু হয় এবং তখন থেকে আজ পর্যন্ত যে ৯০ লাখের অধিক শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে গিয়েছে তার শতকরা ৮০ ভাগ শ্রমিকই অদক্ষ।

এই ৮০ ভাগ শ্রমিক কোনভবেই রাষ্ট্রের সম্পদ ছিল না । এরা ছিল রাষ্টের বোঝা। এই রাষ্ট্রের বোঝা লাঘব করার কৃতিত্ব সরকারে নয় এ কৃতিত্বের শতভাগ দাবী করতে পারে বেসরকারি খাতের রিক্রুটিং এজেন্সী।কারন জনশক্তি আমদানিকারক দেশ সমূহের যখন দক্ষ শ্রমশক্তির প্রয়োজন ছিল তখন বাংলাদেশের পক্ষে দক্ষ শ্রমিকের অপ্রতুলতার কারনে তা সরবরাহ করা সম্ভব ছিল না । তখন বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সী বিভিন্ন ভাবে লবিং করে এবং আরও বিভিন্ন অপ্রচলিত উপায়ে অদক্ষকে দক্ষ বানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক সরবরাহ অব্যাহত রাখে।
একথা না বললেই নয় যে জনশক্তি রপ্তানি যদি সরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকতো তাহলে কি হতো তা "জাতীয়করনকৃত" শিল্প-কারখানার দিকে তাকালেই বুঝা যায়।
তবে বেসরকারি খাতেও প্রতারনা কম হয় নি তবুও বলা যায় বেসরকারি খাত না হলে এত বিপুল সংখ্যক কর্মির মধ্যপ্রাচ্য যাওয়া সম্ভব হতো না।

১৯৭৩ সালের যে সব দেশের কারনে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিপর্যয় ঘটেছিল ১৯৭৬ এর পর থেকে সেসব দেশই হয়ে উঠলো বাংলাদেশের অর্থনীতির সহায়ক শক্তি।

বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে পাঠানো বিদেশি মূদ্রা বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।

অথচ একজন মন্ত্রীর খামখেয়ালি ও অদূরদর্শীতার কারনে সেই চালিকা শক্তির চাকায় জ্যাম লেগে গেছে।
জনশক্তি রপ্তানি প্রায় শূন্যের কোঠায় !!

মন্ত্রী বারবার ঘোষনা দিয়ে চলেছেন সরকারি ভাবে মাত্র ৩০/৪০ হাজার টাকায় বিদেশে শ্রমিক পাঠনো হবে।সরকারের এ ধরনের উদ্যেগকে সাধুবাদ জানতেই হয় কিন্তু এর বাস্তবায়নকে সাধুবাদ জানাবার কোন অবকাশ নেই্ কারন গত ছয় বছরে সরকারি ভাবে দশহাজার শ্রমিকও পাঠানো সম্ভব হয় নি বরং সরকারি বিধি-নিষেধ থাকা সত্বেও বেসরকারিভাবে অনেক অনেক বেশী শ্রমিক বিদেশে গিয়েছে ।উল্টো সরকারি বিধি-নিষেধর কারনে আগের চেয়ে অনেক বাড়তি টাকা গুনতে হয় বিদেশগামিদের।

বর্তমানে রিক্রুটিং এজেন্সীদের কার্যক্রম প্রায় বন্ধ বলা চলে ।মন্ত্রীর ভাষ্য তারা নাকি প্রতারক, জালিয়াত,অতিরিক্ত টাকা নেয়।কথা ধ্রুব সত্য কিন্তু সরকারের কোন কাজে দূর্নীতি,প্রতারনা ইত্যাদি হয় না ?যে কোন ধরনের একটি সরকারি চাকুরির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা "সালামি" দিতে হয়।যে কোন কাজে সরকারি অফিসে পিয়নকে পর্যন্ত "চা-পানি"দিতে হয়।

তা ছাড়া সরকার যদি অল্প টাকায় শ্রমিক পাঠাতে পারে মানুষ বেশি টাকায় রিক্রুরিটিং এজেন্সীর মাধ্যমে যাবে কেন ? মানুষ কি ৩০/৪০ হাজার আর ৬/৭ লক্ষ টাকার পার্থ্যক্য বুঝে না ?সরকার জামানত নিয়ে বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর জন্য রিক্রুটিং লাইসেন্স দিয়েছে ।

শ্রমিক রপ্তানি একটি ব্যবসা কোন সেবা মূলক কিছু নয় ।

যাদের পাঠানো টাকার এদেশের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে রয়েছে তাদের বিদেশ যাওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়ে মন্ত্রী নিজেই সবচেয়ে দুর্নীতি করে চলেছেন।দেশের ক্ষতি করে চলেছেন।

বেসরকারিভাবে প্রতারনা, জালিয়াতি হয় টাকা বেশী লাগে কিন্তু লোক যায়।
সরকারি ভাবে দুর্নীতি হয় প্রতারনা হয় স্বজনপ্রীতি হয়, টাকা কম লাগে কিন্তু লোক যায় না।

সরকারের বোধদয় হওয়া উচিত ।কারন জাতীয়করন বা সরকারিকরনের ফলে আমাদের শিল্প-প্রতিষ্ঠানের কি হাল হয় তার উদহারন এদেশের প্রতি কদমে কদমে বর্তমান।














১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×