somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেয়ালের বাচ্চা চুরি

১৬ ই মার্চ, ২০০৬ রাত ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি, খালাত ভাই পাপপু, রাসেল,সুমন,জহির সবাই ছোট বেলায় খুব দুরন্ত ছিলাম। একটা না একটা দুষ্ট বুদ্ধি সবসময় মাথায় আসবেই। আমাদের মস্তিস্ক নিসৃত সেইসব সু-বুদ্ধির মধ্যে(নাকি "কু") একটা হচ্ছে শেয়ালের বাচ্চা চুরি। আমাদের পাশের এলাকায় একজন মারমা বৈদ্ধ আছে। একদিন সুমন এসে খবর দিল মারমা বৈদ্য শেয়ালের বাচ্চা কিনে নেয়। প্রতিটা বাচ্চার জন্য সে একশ টাকা করে দেয়। খুশিতে আমরা সবাই ডিগবাজি খেলাম কিছুক্ষন। আমাদের গ্রামের পাশেই ছিল কবরস্থান। সেখানে দিনের বেলায় ও শেয়ালের আওয়াজ শোনা যায়। আমরা পাঁচ বন্ধু মিলে প্ল্যান করলাম আমাদের "শেয়ালের বাচ্চা সাপ্লাই" বিজনেস সম্পর্কে। প্ল্যান অনুযায়ী কিছু দড়ি আর সবাই হাতে একটা লাটি নিয়ে শুরু করলাম আমাদের মিশন " শেয়ালের বাচ্চা চুরি"। আমাদের গ্রামের কবরস্থানটা একটা দ্্বিপ। একটা বাঁধের মাধ্যমে মুল ভুমির সাথে সংযুক্ত। কবরস্থানে ঢুকে আমরা পুরনো ধ্বসে যাওয়া কবরগুলো খুঁজতে লাগলাম কারন শেয়ালের বাচ্চাগুলো কবরের গর্তের মধ্যেই থাকে। আমরা সবাই সারিবদ্ধভাবে একজনের পিছে একজন হাঁটছিলাম সবার পিছনে ছিল জহির। কিছুক্ষন পরে খেয়াল করলাম পিছনে জহির নেই। শেয়ালের বাচ্চা খুঁজব কি জহিরের খোঁজেই সবাই লেগে গেলাম। কিছুক্ষন খোঁজাখুঁজির পর পাশের একটা কবরের ভিতর থেকে গোঙ্গানির শব্দ শুনতে পেলাম। গিয়ে দেখি বেচারা জহিরের পা উপরের দিকে মাথা নিচের দিকে। ও হাঁটার সময় ভুলে একটা পুরনো কবরের উপর পা দিয়েছিল মাটি ধ্বসে কররের ভিতরে ঢুকে গেছে। রাসেল একটু রাগি স্বভাবের বলল " দেখে পা দিতে পারিসনা? এখন লটকে লটকে কংকালটাকে কিস দে"। যাই হোক ওকে টেনে তুলে আবার শেয়ালের বাচ্চার খোঁজে লেগে গেলাম। খুঁজতে খুঁজতে একসময় পেয়েও গেলাম দেখি একটা কবরের গর্তের মধ্যে তিনটা শেয়াল বসে আছে ব্যাস আর যায় কোথায় আমরা চারজন লাঠি উঁচিয়ে প্রস্তুত হয়ে রইলাম রাসেল দড়ির ফাঁস বানিয়ে গর্তের ভিতর ফেলল প্রথমটার পায়ে ফাঁস লাগিয়ে এবং দ্্বিতীয়টার গলায় লাগিয়ে তুলে ফেললাম। তৃতীয়টাকে ধরার জন্য দড়ি ফেলতেই বলা নেই কওয়া নেই হটাৎ লাফ দিয়ে এমন দৌড় দিল আমরাও ওটার পিছু নিলাম। আমাদের তাড়া খেয়ে ওটা দিল নদিতে ঝাঁপ সাথে সাথে পাপপু ও ঝাঁপ দিল সাঁতার কেটে গিয়ে ধরে নিয়ে আসল। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম ওগুলোকে পাপপুদের গরুর গোয়ালঘরের ভিতর বেঁধে রাখব। ওগুলোকে বেঁধে রেখে আমরা যার যার বাসাই চলে গেলাম। পরদিন সকালে এস দেখলাম এক মর্মান্তিক দৃশ্য তিনটার একটা মরে পড়ে আছে। একশ টাকার শোকে আমরা মুহ্যমান হয়ে গেলাম। কি আর করা বাকি দুইশ টাকায় সন্তুষ্ট থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে মরাটার গলা থেকে দড়ি খুলে দিলাম। কি অদ্ভুত! দড়ি খুলে দেওয়ার সাথে সাথেই আমাদের একশ টাকা জান হাতে নিয়ে এমন একটা দৌড় দিল অলিম্পিক গেমস হলে নিঘর্াত একটা সোনা পেয়ে যেত। অনেকেই হয়ত বইয়ে পড়েছেন শিয়াল খুব বুদ্ধিমান প্রানি। আমরা সেদিন চাক্ষুস দেখেছিলাম তাদের বুদ্ধির প্রমান। যাই হোক বাকি দুইটা মারমা বৈদ্য কে দিয়ে দুইশ টাকা নিলাম। আমরা পাঁচ জন টাকাটা ভাগ করে নিয়ে হাঁটা চলায় নবাব সিরাজউদ্দোলার ভাব(আসলে তখন পকেটে চলি্লশ টাকা থাকা মানে অনেক বড় কিছু মনে হত) নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০০৬ রাত ৩:০০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×