মাঝে মাঝে কিছু সময় আসে, পক্ষ আর বিপক্ষের মাঝে বিভেদরেখা স্পষ্ট হয়ে দাঁড়ায়। কোনটা ন্যায় আর কোনটা অন্যায় তার সংজ্ঞা যখন সুনির্দিষ্টভাবে চোখের সামনে চলে আসে তখন মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা মানে নিজের সাথেই প্রতারণা করা। প্রশ্ন যখন আপনার দেশকে নিয়ে, তখন এমন আত্মপ্রবঞ্চনা কি আপনাকে মানায়? ভেবে দেখুন তো একটি সেকেন্ড।
আজকে আপনাকে পক্ষ নিতে হবে, যেকোন একটি। আপনি, হ্যাঁ এই আপনাকেই আজ জোর গলায় জানিয়ে দিতে হবে, এই দেশে আপনি কাকে চান, কী চান। আপনার সন্তান লেখাপড়া করে যোগ্য ও দেশপ্রেমিক হয়ে বড় হোক এটা চান? নাকি বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরোধিতাকারীদের সদর্প আস্ফালনে আপনার সন্তান কুঁকড়ে থাক, তাই চান? এই সিদ্ধান্ত নেবার সময় এখন। এই ক্রান্তিকালে আপনার দোনামনা অবস্থান মানে আপনার নিজের সাথে প্রবঞ্চনা তো বটেই, এর মানে বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের আরো একটু শক্ত করে শেকড় গাড়তে সুযোগ করে দেয়া। আপনি কি সেটাই চান?
আর যদি সেটা না চান, তবে আমাদের সাথে আপনাকেও কণ্ঠ ছাড়তে হবে। আমরা চাই না নাঈমের মতো সাহসী ছেলেরা বুকের ভেতর জমিয়ে রাখুক কষ্টের পাহাড়। আমরা চাই না, স্বদেশের, জনকের অপমানের প্রতিওবাদ করায় আরো হাজার নাঈমের শিক্ষাজীবন ধ্বংস হোক। আমরা চাই, আর কোন রাজীব হাসনাত যেন বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল নিয়ে কোন বিরূপ মন্তব্য করা সাহস না পায়।
আমাদের চাওয়াগুলো খুব স্পষ্ট। এবং আমরা নিশ্চিত, এই দেশকে যদি ভালোবেসে থাকেন, যদি একাত্তরের চেতনাকে বুকে ধরে থাকেন, আমাদের এই দাবিগুলো ঠিক আপনারও দাবি হবে। আমরা খুব পরিস্কারভাবেই বলতে চাই,
Click This Link
১) বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জাতির জনক। যেহেতু সংবিধান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন, কাজেই বঙ্গবন্ধুর অবমাননা মানে বাংলাদেশের সংবিধানের অবমাননা। বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে সংবিধান অবমাননার জন্য রাজীব হাসনাকলে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
২) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এবং সুপ্রিম কোর্ট কাদের মোল্লাকে যে শাস্তি দিয়েছে তা বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন মেনে হয়েছে, সেই শাস্তি আইন মেনেই কার্যকর করা হয়েছে। একটি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে অবৈধ বলা মানে আদালত অবমাননা। গুরুতর এই আদালত অবমাননার দায়ে রাজীব হাসনাতকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
৩) একটি গণতান্ত্রিক দেশে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মাঝে থেকে যেকোন নাগরিক তার মতপ্রকাশের অধিকার রাখে। মোঃ নাঈম নামের ছাত্রট সেই অধিকার বলেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, জাতির জনক ও রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে করা অসম্মানজনক উক্তির বিরোধিতা করেছিলেন। এতে করে কোন আইন ভঙ্গ করা হয়নি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন নিয়ম ভাঙ্গা হয়নি। সম্পূর্ণ বিনা কারণে, শুধু নিজের নাগরিক অধিকার চর্চা করার কারণে একজন ছাত্রকে বহিস্কার করে তার শিক্ষাজীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়ার জন্য নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪) নাঈমকে এখন ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিলে সে যদি আবার একই বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করে, রাজীব হাসনাতের সমমনা শিক্ষকদের চক্ষুশূলে পরিণত হবে সে, এতে কোন সন্দেহ নেই। যে ক্ষতি তার হয়েছে তার সাথে বাড়তি হিসেবে তার অবশিষ্ট শিক্ষাজীবনও ধ্বংস করে দেয়া হতে পারে। অমানবিক্তা ও অবিচারের শিকার নাঈম যেন তার শিক্ষা জীবন অব্যাহত রাখতে পারে সেজন্য অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করা অনুমতি দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
যা বলেছিলাম,
চুপ থাকা মানেই আত্মপ্রবঞ্চনা, চুপ থাকা মানেই শত্রুকে সুযোগ করে দেয়া। এখন আপনিই সিদ্ধান্ত নিন। আপনার সন্তানের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ যদি আপনি রেখে যেতে চান, আজকের এই প্রতিবাদে আপনিও আমাদের সাথে গলা মেলান।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
ইভেন্টের ফেসবুক লিঙ্ক Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৪ ভোর ৫:৫৫