সাভারের দুর্ঘটনা আমাদের দেশে অনেক নব্য বুদ্ধিজীবীর জন্ম দিয়েছে। তারা এখন থেকে আমাদের দেশের গার্মেন্টসের কমপ্লাইঞ্চ কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে গুরুগম্ভীর পোস্ট দিয়ে ফেচবুকের মাঠ গরম করছে। যদিও ওদের ৯৯% গার্মেন্টস সেক্টরের বাইরের মানুষ। বুদ্ধিজীবীদের সাথে দ্বিমতে না গিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। আমাদের গার্মেন্টস শিল্পে এতগুলো বছর অতিক্রম করলাম। কিন্তু এখনও ক্রেতাদের অনেক অভিযোগ আমাদের নিয়ে। আমাদের গার্মেন্টসের মান ভাল না, আমরা কমিটমেন্ট রাখতে পারি না, দেরিতে শিপমেন্ট করি ব্লা ব্লা ব্লা।বায়ারের এই দাবিগুলোর সাথে কিন্তু আমরা দ্বিমত করতে পারিনা কারন এইসব অভিযোগ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সত্যি। তাহলে প্রশ্ন কেন ক্রেতারা আমাদের অর্ডার দিচ্ছে। কারন একটাই সস্তা স্রম! আমাদের দেশের বেশিরভাগ কারখানা এত কম দামে পোশাক তৈরি করে , যে মজুরির টাকা দিয়ে ব্যাংকের রক্তচোষা সুদ পরিশোধ করে অনেক সময় শ্রমিকের বেতন দেওয়াও সম্ভব হয় না। এখন সবাই একতরফা গার্মেন্টস মালিককে দোষ দিচ্ছে। সবাই বলছে এই শ্রমিকেরা গার্মেন্টস মালিকের লোভ লালসার শিকার, কিন্তু যারা আমাদের দেশ থেকে $১.৫ মজুরি আর ৳৮-১০ এ একটা প্যান্ট কিনে নিয়ে বিদেশে $৮০-$১০০ বিক্রি করছে তাদের কথা কেও বলছে না। আমরা যারা এই শিল্পের খুব কাছে থাকি তারা জানি একটা গার্মেন্টস কারখানা স্থাপন করতে কত টাকা লাগে, একটা অর্ডার সংগ্রহ করা কত কঠিন, একটি শিপমেন্ট জাহাজের বদলে বিমানে পাঠিয়ে কত শত শত মালিক পথে বসেছে। মাল স্টক হয়ে কত মালিক ফেরারি হয়েছে তার খবরও কেও রাখে না।
আসলে যে যাই বলুক , আমি মনে করি এত দুর্ঘটনার পরেও শ্রম পরিবেশের তেমন একটা পরিবর্তন হবে না। কারন বায়ার আমাদের বেশিরভাগ ফ্যাক্টরি কাছ থেকে বেশি দামে পোশাক কিনবে না। আর আমাদের এইসব অভাগা বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে এভাবেই পেটেভাতে কাজ করে যেতে হবে। হইত সচেতন হলে স্রমিক মৃত্যু ঠেকানো যাবে। কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তনের কোন আশা নেই।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:২৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






