লেখাটি আমার নিজের নয়। জনৈক ব্যক্তি লিখে ফেসুবুকে পোষ্ট করেছেন। এখানে কিছুৃ চমৎকার ও জ্ঞানগর্ভ কথা এসেছে। এ জন্য বিজ্ঞ পাঠকদের সম্মুখে তুলে ধরলাম।
গভীর ভাবনায় আস্তিকতা ও নাস্তিকতাঃ
১.১ কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে আপনি কি আস্তিক? আমি নিরব থাকি। আবার কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে আপনি কি নাস্তিক? তখনও আমি নিরব থাকি। কারন তখন আমার মনে প্রশ্ন জাগে প্রশ্নকারী আস্তিক, নাস্তিক বলতে কি বুঝেন তা আগে আমার জানা দরকার। অধিকন্তু "অজ্ঞেয়বাদী" শব্দটিতেও একেকজন একেক অর্থ বহন করে। অতএব, আস্তিক, নাস্তিক কিংবা অজ্ঞেয়বাদী প্রশ্নে আমার নিকট এক কথায় হ্যাঁ, না কোন জবাব নেই।
১.২ ধর্মে ধর্মেতো পার্থক্য আছেই,ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে ঈশ্বর ভাবনা কিংবা চিন্তায় পার্থক্য রয়েছে।প্রতিটি মানুষেরই ঈশ্বর চিন্তা পৃথক। পৃথিবীর ৮০০কোটি মানুষের ঈশ্বর ভাবনা ৮০০কোটি রকম। পৃথিবীর যেকোন দুইটি ব্যক্তি যদি ঈশ্বর ভাবনায় তর্ক-বিতর্ক কিংবা মত বিনিময় করে তবে তাদের ঈশ্বর ভাবনার পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে যাবে। চূড়ান্ত বিশ্লেষণে যেকোন দুইজন চিন্তাশীল ব্যক্তি ঈশ্বর ভাবনায় শতভাগ একমত পোষণ করতে পারবেনা!
১.৩ একজন স্পিরিচুয়ালিস্ট কিংবা একজন সর্বেশ্বরবাদী যিনি মনে করেন তিনি God বা ঈশ্বরের অংশ তাঁর নিকট " আপনি কি আস্তিক কিংবা নাস্তিক?" প্রশ্নটি অর্থহীন। কারন তিনি মনে করেন জগতই ঈশ্বর, ঈশ্বরই জগত! তারমতে নিজেকে বিশ্বাস করলেই ঈশ্বরে বিশ্বাস হয়ে যায়। পৃথক ভাবে ঈশ্বরকে বিশ্বাস করা মানে নিজেকে ঈশ্বর থেকে পৃথক ভাবা। তাঁর মতে জড়ীয়-অজড়ীয় কিংবা জৈব-অজৈব কিংবা বাস্তব-অবাস্তব প্রতিটি দৃশ্যমান/অদৃশ্যমান, মূর্ত-বিমূর্ত প্রতিটিই সত্তাই ঈশ্বরের অংশ। আস্তিক, নাস্তিক,অজ্ঞেয়বাদী, সংশয়বাদী ইত্যাদি বিষয়ক প্রশ্ন অর্থহীন!
১.৪ একজন বিজ্ঞান মনষ্ক ব্যক্তিরও ঈশ্বর বিষয়ক প্রশ্নের কোন সাইন্টিফিক উত্তর নেই। তিনি অবশ্যই ঈশ্বর সম্পর্কে দার্শনিক অভিমত ব্যক্ত করতে পারেন কিন্তু তা কখনও বৈজ্ঞানিক নয়!
১.৫ ঈশ্বর বিষয়ক প্রশ্ন করা যতটা সহজ ঠিক ততটাই কঠিন এর উত্তর দেওয়া। ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমান করা যতটা কঠিন ঠিক ততটাই কঠিন তার অনস্তিত্ব প্রমান করা!
১.৬ অতএব, ঈশ্বরের অস্তিত্ব ও অনস্তিত্ব থাকার সম্ভবনা ফিফটি-ফিফটি! সম্ভবত এই সম্ভবনা থাকবে অনন্তকাল কিংবা দেশ-কালহীনতায়!
১.৭ এই জন্যই আমি ঈশ্বর প্রশ্নে অজ্ঞেয়বাদী এবং আমি মনেকরি বিজ্ঞানের অবস্থানও তাই হওয়া উচিত!
মন্তব্যসমূহ:
Akkas Ali যুক্তির বিচারেও ঈশ্বরের থাকার বদলে ইশ্বর না থাকাটাই বেশি যৌক্তিক...
কেউ যদি বলেন এই জটিল ও বিশাল মহাবিশ্ব এমনি এমনি সৃষ্টি হওয়া সম্ভব না, কোন ঈশ্বর তাকে সৃষ্টি করেছেন...
আমি বলবো, যিনি এই জটিল মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা, তিনি তো এই মহাবিশ্বের তুলনায় কোটি কোটিগুন বেশি জটিল হবেন, তাই না?
তো, কোটিগুন বেশি জটিল ইশ্বর এমনি এমনি সৃষ্টি হওয়া বেশি যৌক্তিক, নাকি কোটিগুন কম জটিল মহাবিশ্ব এমনি এমনি সৃষ্টি হওয়া বেশি যৌক্তিক?
অবশ্যই কোটিগুন বেশি জটিল ইশ্বরের থেকে অপেক্ষাকৃত সরল মহাবিশ্ব এমনি এমনি সৃষ্টি হওয়াটাই বেশি যৌক্তিক...
জটিল অজানা কোন কিছু ব্যাখ্যা করতে না পারলেই আমরা সেখানে ধরে এনে এক ইশ্বরকে বসিয়ে দিয়ে তার সমাধান খুজে মনকে সান্ত্বনা দিই।
Jahangir Milton Akkas Ali ভাই, এই ঘোড়ার ডিমের সরলীকৃত ব্যখ্যায় ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমান বা অপ্রমান হয় না। মানুষ তাঁর সীমাবদ্ধতার নাম দিয়েছে ঈশ্বর, সেই সীমাবদ্ধতা এক মহাসত্য............... বিজ্ঞান ও অসহায় বোধ করছে বিগ ব্যাং এর পূর্বের অবস্থা কল্পনা করতে, কারণ সেখানে অভিজ্ঞতা কাজ করে না যা থেকে মানুষ অনুমান বা ধারণা করতে পারে............ ধর্মের ঈশ্বর একটা প্রাগৈতিহাসিক ধারণা তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করার ইচ্ছা নাই আমার, কিন্ত সৃষ্টির ব্যখ্যা ও মহাসম্প্রসারনের ও মহাসঙ্কোচনের ধারণার পিছনে যে কার্যকারণ প্রণোদনা তাঁর সুস্পষ্ট ব্যখ্যা নাই কোথাও............ আপনাআপনি বিস্ফোরিত হওয়ার কারণ আমাদের অভিজ্ঞতায় নাই বলে আমরা বুঝতে পারিনা জগত কীভাবে হল? কারণ জগতে আপনাআপনি কিছুই হয় না যদি না কোন বাহ্যিক শক্তি তাঁর উপর কাজ না করে............... জগত যদি আপনাআপনি শূন্য থেকে গঠিত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত বা সংকোচিত হয় শূন্যে ফিরে যায় [ যদিও হকিন্স প্রথমে তা মনে করলেও বর্তমানে তা মনে করছেন না......... মানে শেষ হয়ে তা কি হবে তাও অজানা] তবে এই আপনাআপনি সৃষ্টি বা ধবংসের ইচ্ছাশক্তি ত এমন এক মহাশক্তি যা আমাদের ধারণার জগতের বাইরে............... সেই কারণ ত বিগ ব্যাং এর আগের কিছু যার নাগাল আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে কখনই পেতে পারব না [ এটাও হকিন্সের ধারণা]........................ তাহলে সেই জগত সৃষ্টিকারী ইচ্ছাশক্তি কি? তাঁর নাম কি? ঈশ্বর বা ঘোড়ার ডিম বা সীমাবদ্ধতা যাই বলেন তাঁর অস্তিত্ব কি এড়িয়ে যাওয়া যাবে?
Saif Raju ভাল লাগল আপনার চমৎকার উপস্থাপনা। আর এইযে আমার ভাল লাগল এটা আরেকজনের খারাপ লাগতে পারে। তখনই প্রমাণিত হবে আপনি সঠিক কথাই বলেছেন।
আর একটা কথা না বলে পারছি না। তা হচ্ছে পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ বা গোষ্ঠী আছে যারা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করলেও কোন ধর্মকে বিশ্বাস করে না। এই বিষয়টাও ভাবনার দাবি রাখে। ধন্যবাদ।।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:০২