somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুর্ভাগা জাতির করোনা পরীক্ষা।

৩০ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা করো কাছেই আছে বলে আমার মনে হয় না। তবে আমাদের স্বাস্হ্য বিভাগ প্রতিদিন ই সরকারী ভাবে এক বিবৃতিতে আক্তান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নির্ধারণ করছে। তবে বেশ কয়েকদিন আগে আইসিডিডিআরবির এক তথ্য প্রকাশ হয়েছিল এক বিট্রিশ পত্রিকায় যা রীতিমত আঁতকে উঠার মত। যাক ওসব কথা। গত ০৮ মার্চ দেশের প্রথম করোনা রোগীর সন্ধান মিলে তার পর থেকেই প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। যদি অনেক অতি উৎসাহি কিছু মানুষ এই মৃত্যু কে আবার সংখ্যা দিয়ে বিবেচনায় ই বেশি আনন্দ পাচ্ছে। তাদের মতে অন্যান দেশের চেয়ে বাংলাদেশের আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হার অনেক কম। কোন মৃত্যুই কাম্য নয় আর মৃত্যু কখনোই সংখ্যা বিবেচনা করা কোন সুস্হ্য বিবেকবান মানুষের কাজ হতে পারে না।

প্রথম থেকেই আমাদের করোনার পরীক্ষা নিয়ে এক বিশৃংখলতা দেখে আসছি। মার্চ মাসে আমাদের শুনতে হয়েছে দেশে করোনা সনাক্তকরণ পরীক্ষার কিটের সংখ্যা সতেরশর ঘরে। তখন ও প্রতিদিন ই শত শত মানুষ করোনার পরীক্ষার জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রে ভিড় করলে ও সবাইকে বিনাপরীক্ষায় বাড়ী ফিরতে হয়। এর পর আমাদের মাঝে একটি বিশেষ অধ্যায় চলে আসলো করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু, করোনায় আক্রান্তদের উপর আমাদের সামাজিক পাশবিক নির্যাতন অসুস্হ্য রোগীদের নিয়ে স্বজনদের হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটাছুটি ও বিনাচিকিৎসায় মৃত্যু। রাতদুপুর থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য রোগীদের লাইনে দাড়ানোর চিত্র আজ ও প্রতিদিনের। দুই তিন হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিয়েও করোনা পরীক্ষার খবর আমাদের দেখতে হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমে। ধনীদের জন্য ব্যবস্হা করা হলো বিশেষ কয়েটা তথাকথিত আধুনিক হাসপাতাল। এর মধ্যে ঢাকারা ইউনাইটেড হাসপাতালে আগুনে পুরে মরলো করোনা ইউনিটের রোগীরা আর সামান্য চিকিৎসায় লাখ লাখ টাকা বিল ধরিয়ে দিয়ে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্হায় পূঁজিবাদীদের নগ্ন চেহারা দেখালো আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতাল । সব মিলিয়ে এক অস্হির অবস্হা।

ইতোমধ্যে সরকার ঘোষনা করেছেন এখন থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য সরকার ও টাকা নিবেন। পরীক্ষা ফি নির্ধারন করা হয়েছে বুথে গিয়ে নমুনা দিলে ২০০ টাকা, বাসা থেকে নমুনা নিলে ৫০০ টাকা। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর জন্যও ২০০ টাকা।
কারণ হিসাবে সরকার বলছেন এতদিন বিনামূল্যে পরীক্ষা জন্যই নাকি অনেকে উপসর্গ ছাড়া পরীক্ষা করিয়েছে। সরকারে এমন যুক্তি কতটুকু দেশের মানুষের প্রয়োজনে কতটুকু যুক্তিসংগত তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন আছে। সরকার বলছে উপসর্গ ছাড়া ই মানুষ করোনা পরীক্ষা করচ্ছেন। আমাদের দেশের মানুষ সম্ভবতব এতটা বিকৃতমস্তিকের হয়ে যান নি যে কোন উপসর্গ ছাড়া ই শুধু মজার ছলে রাত দুপুরে কোন হাসপাতের সামনে গিয়ে লাইলে দাড়াবেন করেনা পরীক্ষার জন্য। আর সবারই করোনার সংক্রামন সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা আছে। তারা জানেন যে যেখানে পরীক্ষার জন্য লাইনে দাড়াচ্ছেন সেখানে কেউ না কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থাকতে পারেন যার থেকে তিনি ও সংক্রামিত হতে পারেন। সরকারে যুক্তি সঠিক হিসেবে ভাবলে ও প্রশ্ন হলো
তাহলে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর টেস্ট করাতে টাকা কেন লাগবে? কেউ কি উপসর্গ ছাড়াই শখের বশে হাসপাতালে ভর্তি হয়? বা উপসর্গ ছাড়া লোককে হাসপাতাল ভর্তি করে ?

করোনা ভাইরসের জন্ম বাংলাদেশে নয় এটা আমাদের একটি আমদানী করা ভাইরাস ও রোগ। যার জন্ম সুদুর চীন দেশে সেখান থেকে ইউরোপ ও অন্যান দেশ হয়ে আামাদের দেশে। তার মানে এই করোনার জন্য আমরা সাধারন মানুষ মোটেও দায়ী না। এর সম্পুর্ন দায় ই সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত আমলাতান্ত্রিক স্থবিরতা। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ ই যখন করোনা মোকাবিলায় ব্যস্ত তখন আমাদের রাষ্টযন্ত্রের ব্যস্ততা ছিলেন অন্য কিছু নিয়ে। স্হল নৌ ও বিমান বন্দর দিয়ে কারা কোন দেশ থেকে কি অবস্হায় ঢুকছে তার কোন ই খোঁজ ছিলনা আমাদের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের । চীনের উহানে অবস্হানরত প্রবাসীদের দেশে এনে যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইনের ব্যবস্হা করতে পারলে ও পরবর্তীতে ইতালি বা ইউরোপের অন্যান দেশ সহ সারা বিশ্ব থেকে আগত বিদেশী ও প্রবাসীদের কাগজে কলমে হোম কোয়ারেন্টিনের কথা বলে ছেড়ে দেয়া হয় দেশের বিবিন্ন প্রান্তে। তার পরে সরকারী ছুটি গার্মেন্টস শ্রমিকদের কর্মস্থলে আনা এর পর ঘরে ফেরানো পিপিই কেলেংকারী সব ই আমাদের জানা। তার জন্য সরকার কোন দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা না নিয়ে বরং এমন আচরন করছে যে করোনায় আক্রমনের জন্য সম্পুর্ন দায় ই যেন আমাদের সাধারন মানুষের।

পৃথিবীর অন্যান দেশের মত আমাদের দেশে ও করোনা চিকিৎসা সম্পুর্ন বিনামূল্যে করার ব্যবস্হা ছিল জরুরী হউক সেটা সরকারী কিংবা বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু আমাদের সাধারন মানুষের আজ ভাগ্য খারাপ টাকা ছাড়া আমাদের কিছু ভাবাই আজ অসম্ভব। সবাই ছুটছে আজ টাকার পিছনে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটের চিকিৎসক নার্স সহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট দুই শত জনের এক মাসের খাবারের বিল নাকি হয়েছে বিশ কোটি টাকা।
ভারতের পশ্চিম বঙ্গে র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্টের ব্যবস্হা হলেও আমাদের গনস্বাস্হ্যের র‌্যাপিড এন্টিজেন কিট নিয়ে চলছে নানান তালবাহানা। আমরা বাংলাদেশীর সত্যি হতভাগা জাতি বক্তৃতা আমারা অনেক ধনী অনেক সুখী হলে ও তা মুষ্টিমেয় কয়েক জনের জন্য। তবে অন্যের সুখ দেখে নিজের হতাশা বাড়িয়ে কোন লাভ নেই। কষ্ট বুকে জীবন গড়ার চর্চাই আমাদের জন্য শ্রেয়।

৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×