আচ্ছা, “রাষ্ট্রধর্ম” ইসলাম আছে, এইটাকে এইভাবেই রাখতে আপনার সমস্যাটা কৈ??? এরশাদ করে রেখে গিয়েছলো বলে আপনার গাঁ জ্বলছে??? এরশাদতো টিভিতে আযানের প্রথাও চালু করে রেখে গিয়েছিল, সেটা নিয়ে গাঁ জ্বলাটা এখনো শুরু হয়নি? “শুরু হবে, যদি রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বাদ দিতে পারি”- তাইতো ??? ভাই, থামেন, এইখানেই অফ যান, পারবেন না ।।
ধর্মের কথা এলো বলেই বলি, এইটা কোন ব্যাপার না আপনি কোন ধর্মের মানুষ, আপনার ধর্ম কখনই আপনাকে শেখাবেনা কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে, কিন্তু এইটাও সত্যি, এই ধর্মকে পুঁজি করে ব্যাপক ব্যাবসা-বাণিজ্য চলছে, চলবেও। হ্যাঁ, চলবেও, এইটা সব ধর্মের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তাহলে কী এটার প্রতিবাদ করব না!!! অবশ্যই করা উচিৎ, কিন্তু এটা করতে গেলে যা করতে আর দুর্নীতি দূর করতে গেলে যা করতে হবে, দুইটাই এক, “মনুষ্যত্বের জাগরণ” করতে হবে। এইটা আমাদের মাধ্যমিক স্কুলের বইগুলো শিখিয়েছে।
এখন আপনাদের একটা মুদ্রার গল্প শুনাই, যে মুদ্রার ২ টা পিঠ। একটা পিঠ অপরটাকে দেখতে পারে না। কিন্তু তারা কিন্তু একই মুদ্রার, পরস্পরের সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে তারা। তারপরেও দেখতে পারে না।
যাইহোক, মুদ্রার একটা দিক (ধরি ক) একটু অল্প শিক্ষিত, তার অনুসারীরা শিক্ষিতই না, যারাও বা অল্পশিক্ষিত, তারা যে পদ্ধতিতে শিক্ষাটা নিয়েছেন তাতে করে আপনি শিক্ষিত হতে গেলে আপনার শিক্ষার পূর্ণতা আসবে একেবারে শেষে, সে কারনে এই পদ্ধতির অনেক শিক্ষার্থীই অকালে ঝরে যায়। আর সে কারনেই অনুসারীরা শিক্ষিতই নয়। কিন্তু পাঠক, মানুষকে মানুষ রাখতে এদের ভূমিকা অপরিসীম। উদাহরন দেব, ধৈর্য ধরুন।
এবারে আসি মুদ্রার অপর পিঠ(ধরি খ পিঠ), এরা গঠনমূলক সমালচনায় পারদর্শী, শৈল্পিক, কিন্তু এদের খুব বড় সমস্যা হচ্ছে এরা নিজেরেকে “শিক্ষিত” বলে বড় বেশী অহংকার করে। আর প্রায়ই এই অহংকারের বলি হয়।
পাঠক, মজার ব্যাপার কী জানেন, এই দুই পিঠই মারাত্মক “গোঁড়া”, মাথায় একবার যা ঢুকিয়ে দেয়া যায়, নিয়ে বসেই থাকে, এমনকি এইটাকে নিয়ে যে একটু ঘেঁটে দেখবে, তারও প্রয়োজন বোধ করে না!এই ব্যাপারটাই কিন্তু তাদেরকে এক করেছে!
যাইহোক, ক= ইসলামী দল, খ= বামদল/ব্লগার/নাস্তিক/ প্রগতিশীল (যে যা নামে চেনেন)
পাঠক, আপনি যাই বলেন, দিনের শেষে আপনাকে মানতে হবে, আপনি একবার হলেও বলেছেন,
“ওরে আল্লাহ!” কিংবা “আল্লাহ কত মহান!”
এই “ওরে আল্লাহ” কিংবা “আল্লাহ কত মহান!”- এইটার পেছনে কিন্তু মাদ্রাসার মানুষগুলোর ভূমিকা আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না, তারা সরাসরি আপনাকে শিক্ষাটা না দিলেও ওরাই কিন্তু এইটার বাহক।। পাশাপাশি এরা অল্প শিক্ষিত, কেন জানেন! এদের শিক্ষা ব্যবস্থাটা একেবারেই ভাল না। এই কারনেই কোন নাস্তিকে দাঁত ভাঙা জবাব দিতে পারে না। এমনকি বড় বড় হুজুরগুলাও, আর বাচ্চাগুলার দৌড়,“বড় হুজুর বলছেন” পর্যন্ত। অথচ আল্লাহর সৃষ্টির
সাথে বিজ্ঞানের কী অপূর্ব মিল! অল্পবিদ্যা বলেই তারা আজকে জবাবটা দিতে পারে না।
পাঠক, লক্ষ করুন, এইযে বললাম, বাচ্চাগুলার দৌড়,“বড় হুজুর বলছেন” পর্যন্ত। এই ব্যাপারটাই সবচেয়ে বড় ঝামেলা এদের। এরা না করতে চায় শিক্ষার সংস্কার না চায় চাকরী, কিন্তু এই ধর্মকেই পূঁজি করেই জীবন ধারন করতে হয় এদের! যখন অর্থনৈতিক টানা পোড়ন চলে তখন এদেরকে যে যে তার তার মত ব্যাবহার করে। এটা কিন্তু আপনাকে মানতেই যে আমাদের দেশের বেশির ভাগ মাদ্রাসার ছাত্রের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল না। সুতরাং তারা হয়ে যায় সস্তা অস্র। এখন এই অস্রের ব্যাবহার কোথায়?
এখানেই আসে মুদ্রার খ পিঠ, তারা সমালোচনা করতে করতে যখন সমালোচনার বাজার না পায় তখন একটু খোঁচা দিয়ে সমালোচনা করা শুরু করে, যেটা অল্প জানে সেটা নিয়েই দৌড়ায়। লক্ষ করুন, এমন অবস্থায় এই শিক্ষিত সমাজ কিন্তু নিজের স্তর থেকে নিজেকে নিচে নামিয়ে এসে ফোকাসে আসার চেস্টা করছে।
ভাই,বলাই হয়েছে যে কোরআনকে অন্য কোন ভাষায় রূপান্তর করলে এর সঠিক অর্থ পাবেন না। সুতরাং এই গ্রন্থ নিয়ে কিছু বলতে যাওয়ার আগে এটা শিখে নেন। কিন্তু কে শোনে
কার কথা! আরে ভাই, শুনবেই বা কেনো! তার তো ফোকাসে আসাটা মুল লক্ষ্য, আপনার কথা শোনা না, এই সব কথা শুনলে কী আর জার্মানির ভিসা পাওয়া যায়? ফোকাসে আসতে পারলে পাওয়া যায়!!! সৌভাগ্য এটাই যে এখনো “ভিসা প্রেমী বিপ্লবী” ছাড়াও কিছু বিপ্লবী এখনো আছে যারা সবসময় সঠিক সমালচনা করে আসছেন।
যাইহোক, ওইযে একটু আগে বলছিলাম, বাচ্চা ছেলেটার কথা, ওইযে অস্র বললাম যাকে, সস্তা অস্র, ওই ছেলেটাকে পাঠানো হয় এইরকম ময়লা পরিস্কার করতে।। এইরকম “ভিসা প্রেমী বিপ্লবী”দের হত্যা করতে পাঠানো হয় এদের, এর ফলে এরা মনে করে হত্যা করে “জিহাদ” করে ফেললাম, কিন্তু হায়! আমার ধর্মেই বলা আছে আল্লাহ নিজেই কোরআনের রক্ষাকারী! – ওই অস্র ধারী বাচ্চাটা কিন্তু এটা না জেনেই হত্যাকাণ্ডে জোগ দিতে গেল!
আমার মনে আছে, অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পরে ঢাকার একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি বলেছিল, “একটা একটা মুসলিমকে সে দেখে নিবে।।” পাঠক, ভাবুন একটা বার, একে যদি ওই বাচ্চা কিংবা বুড়ো মাদ্রাসার ছেলেটা কুপিয়ে এসে বলে, “হ্যাঁ, আমি হত্যাকারী, কিন্তু আমি সময়ের প্রয়োজনে হত্যা করেছি।” আপনার কী কোন কিছু বলার স্থান থাকবে?
মজার ব্যাপার হচ্ছে কী জানেন, এদের দুর্বল স্থানও একটাই। এরা কেউই দেওয়ান বাগীকে কিছু বলে না! একটা লোক নিজেকে “নবী” দাবি করছে, এই নবীকে নিয়ে সমালোচকদের কোন মাথা ব্যাথা নেই, এমনকি ইসলামী দলগুলরও না! এটা কী করে সম্ভব! কেউতো কিছু বলেন একে ............!!! পাঠক, তাহলে কী মুদ্রাটার উভয় পিঠই দেওয়ান বাগির মতই ভণ্ড???
বিঃদ্রঃ পাঠক, কারো ধর্মই বলে না ধ্বংস কর, ধর্মর সৃষ্টিই শান্তির জন্য, নাক না গলানোটাই কী সবচেয়ে ভাল না?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৫