দীর্ঘদিন হলো ব্লগে লিখি না।কিন্তু কায়রোতে বৃষ্টি দেখে ব্লগ লেখার লোভ সামলাতে পারলাম না।নীলনদ আর পিরামিডের দেশে এই অধমের আগমন ঘটে গত সেপ্টেম্বর মাসের বিশ তারিখে।এখানে এসেছি মিশর সরকারের বৃত্তি নিয়ে লেখাপড়া করতে।এর আগে মালয়েশিয়াতে কিছুদিন লেখাপড়া করেছিলাম।মালয়েশিয়াতে প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন বৃষ্টির দেখা পেতাম।কোন কোন সপ্তাহে পাঁচদিন।সে কি মুষলধারে বৃষ্টি!!কিন্তু কায়রোতে (ঈজিপ্ট) আসার পর থেকে সবার কাছ থেকে শুনতে পাচ্ছিলাম কায়রোতে বৃষ্টির দেখা পাওয়া মানে আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া।এমনিতে এখানে বাংলাদেশের মতো এতো ধূলাবালি না হলেও আশেপাশে মরুভূমি থাকার কারনে রাস্তাঘাটে ধূলাবালি ভালই হয়।পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করেও লাভ নেই।হঠাৎ করে এক বালুঝর এসে বালুর পাহাড় বানিয়ে দিয়ে যাবে রাস্তাঘাটে।আর এর একমাত্র কারন হচ্ছে বৃষ্টির অভাব।নিয়মিত বৃষ্টি হলে এদেশটা কত সুন্দর থাক্ত! সবার মুখে শুনতে পেলাম বৃষ্টি নিয়ে নানান কথা।কখনো বৃষ্টি হলে কায়রোর ছেলেমেয়েরা নাকি আনন্দে সবাই রাস্তায় নেমে আসে।আমিও ভাবতাম....ইস্! কায়রোতে যদি বৃষ্টি হতো কতই না মজা হত! যাইহোক,আজকে দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে গেলাম এক বড় ভাইয়ের রুমে।কথার মাঝে এক পর্যায়ে জানালার গ্লাস দিয়ে উকি মেরে দেখি একি আল্লাহ! বৃষ্টি...!! মন বলছিলো চিৎকার করে বলে উঠি,কোথায় তোরা হাবিবি (বন্ধুরা)...আয় আজ সকলে মিলে বৃষ্টিতে ভিজি।কিন্তু হায়! কিভাবে বৃষ্টিতে ভিজি...? শিতের কারনে যে অনেকের ফরজ গোসল করতেও জীবন যায় যায় অবস্থা
ভাবতে লাগলাম....আল্লাহ তায়ালার কি খেলা! আল্লাহ তায়ালা আমাদের দেশে এতো বৃষ্টি দিয়েছেন যার ফলে আমাদের জীবনযাত্রা মাঝে মাঝে স্থবির হয়ে পড়ে।অতিবৃষ্টির ফলে প্রবল জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।ঘর থেকে বের হতে পারিনা।বসে বসে বৃষ্টিকে গালিগালাজ করি।আর এ দেশের মানুষ এক মিনিটের বৃষ্টি পেয়ে কত আনন্দিত!
রাতে রুমে এসে জানালা খুলেই রুমমেট বলতে লাগলো দেখ্ দেখ্,বৃষ্টির ফোটা!! তাকে বললাম দেশে এই বৃষ্টিকে কত গালিগালাজ করতি (আমি সহ),আর এখন আমাকে বৃষ্টির ফোঁটা দেখাস।তারপর দুজন বসে দেশের স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করতে লাগলাম আর মনটাও একটু খারাপ হয়ে গেলো।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



