একটা দেশের পররাষ্ট্রনীতি কি হবে সেটা নিজেরাই ঠিক করার কথা। ভারতের সেভেন সিষ্টার্সের স্বাধীনতাকামী মুক্তিবাহিনীকে (উলফাসহ অন্যান্যরা) সাহায্য করার বিষয়ে বাংলাদেশ যদি নীতি গ্রহন করে, তাতে দোষের কিছু নাই। ভারত ১৯৭১ সালের বহু আগে থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিকামীদের সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করেছে। যেমন “আগরতলা ষড়যন্ত্র”, পরে মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন-সহযোগিতা-সর্বশেষে সক্রিয় যুদ্ধ করে বাংলাদেশের জন্ম দেয়া, আবার চাপে রাখার জন্য শান্তিবাহিনী সৃষ্টি ও লালন করা, ইচ্ছেমত তথাকথিত শান্তি চুক্তি - সবই দাদাদের অবদান! ১৯৭৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশের সকল সরকারগুলো উলফাকে সাহায্য করেছে, এমনকি ১৯৯৬সালের হাসিনার সরকারও।
বিপত্তি বাধে কেবল ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসের ১ তারিখ রাতে, যখন ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান ধরা পড়ে। ওই ঘটনার পর থেকেই দিল্লির সকল প্রভাবশালী পত্রিকাগুলো একের পর এক খবর, নিবন্ধ ছাপতে থাকে এ নিয়ে। এমনকি খুব দ্রুততার সাথে এর রহস্য উদঘাটন করে খবরও ছাপে! বাংলাদেশের দক্ষিণ-পুর্বাঞ্চলে অস্ত্রের ফ্রি মার্কেট আর বাংলাদেশ দক্ষিন এশিয়া তথা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি এমন প্রচারনা দিল্লি থেকে ওয়াশিংটন পর্যন্ত পৌছে যায়। এর পরে শুরু হয় তখনকার সরকারটি ফেলে দেয়ার চুড়ান্ত তৎপরতা। একটি কথা বলা হয়ে থাকে, ভারতীয় ‘র’ ঐ ঘটনার পিছে লেগে থেকে তা ধরিয়ে দেয়। আমার ধারনা, ‘র’ নয় বরং দশট্রাক অস্ত্র ধরিয়ে দেয়ার কাজটি বাংলাদেশের গোয়েন্দারই করেছে বা জেনারেল মইন (তখনকার চট্টগ্রামের জিওসি) করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না (ছবিটি দেখুন, কি খুশী খুশী মুখ!) ভারতের ‘র’ যদি এটার পিছনে খাকত, তাহলে আমরা এতদিনে জানতে পারতাম কোন্ জাহাজে করে এগুলো আনা হয়েছিলো (সেটা সা.কা. চৌধুরীর জাহাজ কি না?) এ তথ্যটিও ‘র’য়ের কাছে থাকার কথা। আর ‘র’ ধরিয়ে দিয়ে থাকলে অস্ত্রের চালানটি বর্ডার পার হয়ে ভারতে ঢোকার সমযে আটক করে নিজের দখলে নিতে পারত ভারত। কিন্ত তাহলে তো বিএনপি সরকারকে এতটা দোষে ফেলা যেতো না। আরো অনেক যুক্তিতর্ক আছে। এখন তা আর উঠাতে চাইনা।
আমার প্রশ্ন অন্যত্র। বিষয়টা সক্ষমতার। উলফাকে সাহায্য করবেন? ভালো কথা। সেজন্য আপনার রণসক্ষমতা, কুটণীতি ও ষ্ট্রাটেজিক ক্যাপাবিলি আছে তো? ২০০৫ সালে মনমোহন সিং যখন জর্জ বুশের সাথে একান্তে ২৭ মিনিট সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশকে “আন্তর্জাতিক টেরোরিষ্ট কান্ট্রি” বানিয়ে এবং আমেরিকার হিটলিষ্টে ঢুকিয়ে আসলো, তখন বাংলাদেশের বীরবিক্রম রাষ্ট্রদূত ওয়াশিংটনে কি মদ-মাগী নিয়ে চুড় হয়েছিলো? না কি তার কোনো তৎপরতা ছিলো? দিল্লি চাইলো, ২০০৭ সালে খালেদার সরকারে আসার রাস্তা বল্ধ করে দিলো> মইনদ্দিরে দিয়া। নোয়াখাইল্যা জেনারেল ভাবলো, তারে বুঝি চেয়ারটা দিবে। আরে গাধা, কেনো বুঝলি না, তুই হইলি নোয়াখাইল্যা মোসলমান। তোরে দিয়া কি আবার কি আরেকটা পারভেজ মোশারফ বানাইবো?
চার্জশীট দিলেও দশট্রাক অস্ত্রের মূল ঘটনা এখনও চাপা থাকলো! জেনারেল রেজ্জাকুল, ব্রিগেডিয়ার রহিমসহ ডিজিএফআই-এনএসআইর অফিসারদের মামলায় জড়িয়ে ভারতীয় গোয়েন্দাদের দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এটা বুঝানো হলো, তোরা যেই হোস না কেনো কাউকে ছাড়া হবে না। কাজেই সামনে এ কাজ আর কেউ করতে যাবা না। আমরা দেশ স্বাধীন করে দিয়েছি, তোদের আবার কিসের সার্বভৌমত্ব, আর স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি? তোরা হবি আমাদের পুরিপুরক; এমনটাই কথা ছিলো। কিন্তু ডিজিএফআই প্রধান সাদিক হাসান রুমী তাহলে বাদ পড়লো কেমনে? কি শর্তে এ কম্প্রোমাইজ? সে যে ১/১১র এক কূশীলব, এ কথা কি ভুলে গেছেন সবাই? অর্থাৎ ১/১১র ঘটকরা থাকবে ধরা ছোয়ার বাইরে- সেটা যত অপরাধই করুক না কেনো! এখানেই ঘটনার মূল সূত্র। আরেকটা বিষয়, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে ধরা পড়লো দশট্রাক। আর ঐ মাসেই জলিলের সেই ট্রাম কার্ড, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে খালেদাকে ফেলে দেয়া হবে সরকার থেকে, পয়লা মে খালেদা হবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। আমরা ভুলি নাই কোনো কিছু। কেবল মিলিয়ে নিন।
গোপনেই থাকলো দশ ট্রাক অস্ত্রের রহস্য: মিলিয়ে নিন কিছু ঘটনা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?
সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন
চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়
অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঘুষের ধর্ম নাই
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।
হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।
পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??
সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন